হিউ টেফিল্ড
হিউ যোসেফ টেফিল্ড (ইংরেজি: Hugh Tayfield; জন্ম: ৩০ জানুয়ারি, ১৯২৯ - মৃত্যু: ২৪ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৪) ডারবানে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত দক্ষিণ আফ্রিকান আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন। দলে তিনি মূলতঃ অফ স্পিনার ছিলেন। ডানহাতে অফ ব্রেক বোলিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে সক্ষমতা দেখিয়েছেন হিউ টেফিল্ড। দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলের পক্ষে ১৯৪৯ থেকে ১৯৬০ সময়কালে ৩৭ টেস্টে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পান। তাকে দক্ষিণ আফ্রিকার ইতিহাসে অন্যতম ‘সেরা অফ স্পিনার’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে।
![]() | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | হিউ যোসেফ টেফিল্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | ডারবান, দক্ষিণ আফ্রিকা | ৩০ জানুয়ারি ১৯২৯|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ২৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৪ ৬৫) হিলক্রেস্ট, কোয়াজুলু-নাটাল, দক্ষিণ আফ্রিকা | (বয়স|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ডাকনাম | টোয়ি টেফিল্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি অফ ব্রেক | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | বোলার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
সম্পর্ক | এসএইচ মার্টিন (কাকা), এ টেফিল্ড (ভ্রাতা), সি টেফিল্ড (ভ্রাতা), এইচ মার্টিন (কাকাতো ভাই), আইআর টেফিল্ড (কাকাতো ভাই) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় পার্শ্ব |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ১৭৩) | ২৪ ডিসেম্বর ১৯৪৯ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ১৮ আগস্ট ১৯৬০ বনাম ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৩ মার্চ ২০১৭ |
প্রারম্ভিক জীবন
ক্রিকেটপ্রিয় পরিবারের সন্তান ছিলেন তিনি। হিউ’র কাকা সিডনি মার্টিন ওরচেস্টারশায়ারের পক্ষে ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন। দুই ভাই আর্থার ও সিরিল উভয়েই ট্রান্সভালের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দুই কাকাতো ভাইও তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করেছেন।
১৯৪৫-৪৬ মৌসুমে ১৭ বছর বয়সে নাটালের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ১৮ বছর বয়সে ট্রান্সভালের বিপক্ষে তিনি হ্যাট্রিক করেন।
প্রত্যেক বল ডেলিভারি দেয়ার পূর্বে মাঠে পায়ের পাতা অল্প স্পর্শ করার কারণে তিনি ‘টোয়ি টেফিল্ড’ ডাকনামে পরিচিতি লাভ করেন। এছাড়াও নতুন ওভার শুরুর পূর্বে টুপিতে বাঁধা বেজে চুমু খেতেন। এরপর তা আম্পায়ারের কাছে হস্তান্তর করতেন।
খেলোয়াড়ী জীবন
অ্যাথল রোয়ান আঘাতপ্রাপ্ত হলে তাকে তড়িঘড়ি করে ১৯৪৯-৫০ মৌসুমে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলার জন্য টেস্ট দলে অন্তর্ভূক্ত করা হয়। পাঁচ টেস্ট সিরিজের সবকটিতেই তিনি অংশগ্রহণ করেন। ডারবানের অনুপযোগী উইকেটেও ৭/২৩ নিয়ে লিন্ডসে হ্যাসেটের নেতৃত্বাধীন অস্ট্রেলিয়ার ৩১/০ থেকে ৭৫ রানে অল-আউট করে দেন। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার দলনেতা ডাডলি নোর্স বৃষ্টির পূর্বাভাষ পেয়ে তাদেরকে ফলো-অনে পাঠানোর সুযোগ না দেয়ায় দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামে ও ৯৯ রানে গুটিয়ে যায়। এরপর নীল হার্ভে ঐ সুযোগ গ্রহণ নিয়ে অপরাজিত ১৫১* রান করে অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটের জয়লাভে প্রভূতঃ সহায়তা করেন।[1]
১৯৫১ সালে ইংল্যান্ড সফরে খেলার সুযোগ পাননি। রোয়ানের স্থলাভিষিক্ত হবার পর তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার প্রধান স্তম্ভ হিসেবে বিবেচিত হন। ১৯৫২-৫৩ মৌসুমে জ্যাক চিদামের নেতৃত্বে অস্ট্রেলিয়া সফরে যান। ঐ সিরিজে তিনি ৩০ উইকেটের সন্ধান পান। তন্মধ্যে মেলবোর্ন টেস্টে ১৩ উইকেট তুলে নিয়ে ৪২ বছরের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম টেস্ট জয় করে। ১৯৫৫ সালে ইংল্যান্ডে অধিকতর সাফল্য ধরা দেয়। ঐ সফরে তিনি ১৪৩ উইকেট পান। সিরিজে ২৬ উইকেট নেয়ার পাশাপাশি হেডিংলিতে দক্ষিণ আফ্রিকার জয়ে তিনি নয় উইকেট পেয়েছিলেন। রাবার নির্ধারণী খেলায় ওভাল টেস্টে তার দল পরাজিত হলেও ৫৩.৩ ওভারে ৫/৬০ পান।[2]
১৯৫৬-৫৭ মৌসুমে হিউ টেফিল্ড প্রথমবারের মতো ৬/৭৮ পেয়েছিলেন। পরবর্তীতে ছয় বা ততোধিক উইকেট লাভের ক্ষেত্রে ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকান স্পিনারদের মধ্যে ১৯৬৩-৬৪ মৌসুমে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ডেভিড পিদি ৬/৫৮ ও ১৯৯৬-৯৭ মৌসুমে পল অ্যাডামস ৬/৫৫ পেয়ে এ সাফল্য অর্জন করেছিলেন।
১৯৫৬-৫৭ মৌসুমে সফরকারী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অবিস্মরণীয় সাফল্য পান। জোহেন্সবার্গের চতুর্থ টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসের শেষ দিনে বোলিং অপরিবর্তিত থেকে তার সঙ্গীদের কাছ থেকে সম্পূর্ণ পৃথক রাখেন নিজেকে। খেলায় তিনি ৯/১১৩ পান। ৬৮ রান তুলে দলের সর্বোচ্চ সংগ্রাহক ডগ ইনসোলের উইকেটটি ট্রেভর গডার্ড লাভ করেন।[3]
অর্জনসমূহ
দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে টেস্টে সবচেয়ে কমসংখ্যক খেলায় অংশ নিয়ে ১০০ উইকেট দখল করেন। পরবর্তীতে তার এ অর্জনটুকু ২ মার্চ, ২০০৮ সালে প্রখ্যাত ফাস্ট বোলার ডেল স্টেইনের নৈপুণ্যের কাছে ম্লান হয়ে যায়।[4] ১৯৫৬ সালে উইজডেন কর্তৃক বর্ষসেরা ক্রিকেটার হিসেবে মনোনীত হন।[5]
ব্যক্তিগত জীবন
ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত টেফিল্ড পাঁচবার বিবাহ-বিচ্ছেদের সাথে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেন।[6] ২৪ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৪ তারিখে ৬৫ বছর বয়সে ডারবানের হিলক্রেস্টের একটি হাসপাতালে তার দেহাবসান ঘটে।[2] এ সময় তিনি বারবারা মেটকাফের রবার্ট নামীয় সন্তান রেখে যান। নাতি ডেরেক ও জানা এবং তাদের সন্তান ইভেঞ্জলাইন ও কারেন ছিলেন।[7]
২০১৫ সালে বারবারা মেটকাফের পুত্রবঁধু সুসান ‘দ্য রেড সুটকেস’ শিরোনামে বারাবারা ও হিউ টেফিল্ডের বাগদান, বিবাহ ও বিবাহ-বিচ্ছেদ পরবর্তী জীবন নিয়ে উপন্যাস আকারে প্রকাশ করে।[8]
তথ্যসূত্র
- "South Africa v Australia, Durban 1949-50"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ১৭ অক্টোবর ২০১৫।
- "Hugh Tayfield"। ESPN Cricket Info। সংগ্রহের তারিখ ১০ সেপ্টেম্বর ২০১২।
- "CRICKETER OF THE YEAR 1956: Hugh Tayfield"। ESPN Cricket Info। ১৯৫৬। সংগ্রহের তারিখ ১০ সেপ্টেম্বর ২০১২।
- "Matches taken to reach 100 wickets in Tests"। Cricinfo। সংগৃহীত ৩ মার্চ, ২০১৭।
- "Wisden Cricketers of the Year"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০২-২১।
- Wisden 1995, pp. 1395-96.
- "South Africa, Natal Province, Civil Marriages"।
- "The Red Suitcase"। www.amazon.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-১৯।
আরও দেখুন
বহিঃসংযোগ
- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে হিউ টেফিল্ড
(ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে হিউ টেফিল্ড
(সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)
- উইজডেনে হিউ টেফিল্ডের স্মরণিকা (ইংরেজি)