লরেট্টা ইয়ং

লরেট্টা ইয়ং (ইংরেজি: Loretta Young; জন্ম: গ্রেচেন ইয়ং, ৬ জানুয়ারি ১৯১৩১২ আগস্ট ২০০০)[1] ছিলেন একজন মার্কিন অভিনেত্রী। শিশু অভিনেত্রী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করা ইয়ং ১৯১৭ থেকে ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ সময় বৈচিত্রময় চরিত্রে অভিনয় করেছেন। তিনি ১৯৪৮ সালে দ্য ফারমার্স ডটার চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর জন্য একাডেমি পুরস্কার অর্জন করেন এবং ১৯৪৯ সালে কাম টু দ্য স্টেবল চলচ্চিত্রে অভিনয় করে অপর একটি অস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।

লরেট্টা ইয়ং
Loretta Young
১৯৪০-এর দশকে ইয়ং-এর স্টুডিও প্রচারণামূলক ছবি
জন্ম
গ্রেচেন ইয়ং

(১৯১৩-০১-০৬)৬ জানুয়ারি ১৯১৩
সল্ট লেক সিটি, উটাহ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
মৃত্যু১২ আগস্ট ২০০০(2000-08-12) (বয়স ৮৭)
লস অ্যাঞ্জেলেস, ক্যালিফোর্নিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
সমাধিহলিক্রস সেমেটারি, কালভার সিটি, ক্যালিফোর্নিয়া
পেশাঅভিনেত্রী
কার্যকাল১৯১৭-১৯৯৪
দাম্পত্য সঙ্গীগ্র্যান্ট উইদার্স
(বি. ১৯৩০; সমাপ্তি ১৯৩১)

টম লুইস
(বি. ১৯৪০; বিচ্ছেদ. ১৯৬৯)

জিন লুইস
(বি. ১৯৯৩; মৃ. ১৯৯৭)
সন্তান

ইয়ং তৎকালীন নতুন মাধ্যম টেলিভিশনে কাজ শুরু করেন এবং সেখানে ১৯৫৩ থেকে ১৯৬১ সাল পর্যন্ত অমনিবাস ধারাবাহিক দ্য লরেটা ইয়ং শো-তে কাজ করেন। এই কাজের জন্য তিনি তিনটি প্রাইমটাইম এমি পুরস্কার অর্জন করেন। ১৯৮৬ সালে তিনি ক্রিসমাস ইভ টেলিভিশন ধারাবাহিকে অভিনয় করে একটি গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার অর্জন করেন।

প্রারম্ভিক জীবন

ইয়ং ১৯১৩ সালের ৬ই জানুয়ারি উটাহের সল্ট লেক সিটিতে জন্মগ্রহণ করেন। তার প্রকৃত নাম গ্রেচেন ইয়ং। তার মাতা গ্লাডিস রয়্যাল এবং পিতা জন আর্ল ইয়ং।[2] কনফারমেশনে তিনি মিশেলা নাম গ্রহণ করেছিলেন। যখন তার দুই বছর বয়স, তখন তার পিতামাতা আলাদা হয়ে যান। যখন তার বয়স তিন বছর, তারা সপরিবারে হলিউডে চলে যান।[3] তার বোন পলি অ্যান ও এলিজাবেথ জেন (স্যালি ব্লেন নামে পরিচিত) এবং তিনি শিশু অভিনেত্রী হিসেবে কাজ শুরু করেন।[2]

ইয়ং মাত্র তিন বছর বয়সে নির্বাক চলচ্চিত্র সুইট কিটি বেলায়ার্স-এ অভিনয় করেন। ১৯১৭ সালে তিনি গ্রেচেন ইয়ং নামে নির্বাক চলচ্চিত্র প্রিমরোজ রিং-এ পরী চরিত্রে[3] এবং সাইরেনস অব দ্য সি-এ অভিনয় করেন। তিনি রামোনা কনভেন্ট সেকেন্ডারি স্কুলে পড়াশোনা করেন।

কর্মজীবন

চলচ্চিত্র

১৯২৭ সালে পরিচালক মারভিন লেরয় তার বোন পলি অ্যানকে একটি চলচ্চিত্রে নেওয়ার জন্য তাদের বাড়িতে যান। পলির ব্যস্ততার কারণে তাকে বাদ দিয়ে গ্রেচেন এই চরিত্রে তাকে নেওয়ার কথা বলেন। নির্বাক হাস্যরসাত্মক নটি বাট নাইস ছবিটিতে তিনি নির্বাক চলচ্চিত্রের তারকা অভিনেত্রী কলিন মুরের সাথে অভিনয় করেন।[3] মুর তার নাম পরিবর্তন করে লরেট্টা নাম প্রদান করেন। ইয়ং পরবর্তীকালে এই সম্পর্কে বলেন মুরের প্রিয় পুতুলের নাম ছিল লরেট্টা।[4] কিশোরী ইয়ংয়ের অভিনয়ের সম্ভাবনা দেখে মুরের স্বামী জন ম্যাকরমিক তাকে মেট্রো-গোল্ডউইন-মেয়ার স্টুডিওর সাথে চুক্তিবদ্ধ করান। ১৯২৮ সালে তিনি প্রথম লরেট্টা ইয়ং নামে দ্য উইপ ওম্যান ছবিতে অভিনয় করেন। একই বছর তিনি লন চেনির সাথে এমজিএমের লাফ, ক্লাউন, লাফ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। পরের বছর তিনি ডব্লিউএএমপিএএস শিশু তারকা হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন।[5]

পরবর্তী দুই বছরে তিনি ১৫টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন, তন্মধ্যে রয়েছে গ্র্যান্ট উইদার্সের সাথে দ্য সেকেন্ড ফ্লোর মিস্ট্রি[3] ১৯৩০ সালে ১৭ বছর বয়সে তিনি ২৬ বছর বয়সী উইদার্সের সাথে পালিয়ে যান এবং তারা অ্যারিজোনার ইউমায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। মাত্র আট মাস পর ১৯৩১ সালে তাদের বিবাহের সমাপ্তি ঘটে,[3] কাকতালীয়ভাবে তাদের দুজনের দ্বিতীয় চলচ্চিত্র টু ইয়ং টু ম্যারি (বিয়ের জন্য খুবই তরুণ)-এর মত। ১৯৩৫ সালে তিনি ক্লার্ক গেবল ও জ্যাক ওয়াকির সাথে উইলিয়াম ওয়েলম্যানের দ্য কল অব দ্য ওয়াইল্ড ছবিতে অভিনয় করেন।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে ইয়ং লেডিস কারেজিয়াস (১৯৪৪) ছবিতে অভিনয় করেন। ১৯৪৭ সালে তিনি দ্য ফারমার্স ডটার ছবিতে একজন সুয়েডীয় গৃহকর্মী ক্যাটি হলস্ত্রোম চরিত্রে অভিনয় করেন। দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস-এ সমালোচক বসলি ক্রাউদার লিখেন, "সুয়েডীয় নারী হিসেবে তিনি কিছুটা কৃশকায় ও লম্বা, তবে গুরুত্বপূর্ণ এই চরিত্রটিতে তিনি নিজেকে মানিয়ে নিয়েছেন।"[6] ইয়ং এই ছবিতে তার অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি পুরস্কার অর্জন করেন।[7] একই বছর তিনি ক্যারি গ্র্যান্টডেভিড নিভেনের সাথে দ্য বিশপ্‌স ওয়াইফ ছবিতে অভিনয় করেন। ১৯৪৯ সালে তিনি কাম টু দ্য স্টেবল ছবিতে একজন নান চরিত্রে অভিনয় করে অপর একটি একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।[3] ১৯৫৩ সালে তার অভিনীত শেষ চলচ্চিত্র ইট হ্যাপেনস এভরি থার্সডে মুক্তি পায়। এতে তার সহশিল্পী ছিলেন জন ফরসিথ।

তথ্যসূত্র

  1. "Leading Ladies: The 50 Most Unforgettable Actresses of the Studio Era।" নিউ ইয়র্ক: ক্রনিকল, ২০০৬।
  2. স্পাইসার, ক্রিস্টোফার জে. (২০০২)। Clark Gable: Biography, Filmography, Bibliography (ইংরেজি ভাষায়)। ম্যাকফারল্যান্ড। পৃষ্ঠা ১১৩। আইএসবিএন 9780786411245। সংগ্রহের তারিখ ৮ জানুয়ারি ২০১৯
  3. স্মিথ, জে. ওয়াই. (১৩ আগস্ট ২০০০)। "Oscar Winner Loretta Young Dies at 87"দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৮ জানুয়ারি ২০১৯
  4. ডিক, বার্নার্ড এফ.। Loretta Young (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৮ জানুয়ারি ২০১৯
  5. লো, ডেনিস (২০০৫)। An Encyclopedic Dictionary of Women in Early American Films, 1895–1930। রুটলেজ। পৃষ্ঠা ৬৭। আইএসবিএন 0-7890-1843-8।
  6. ক্রাউদার, বসলি (২৬ মার্চ ১৯৪৭)। "' Farmer's Daughter,' Mixture of Romance and Politics, Bill at Rivoli--Loretta Young and Joseph Cotten Share Honors"দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৮ জানুয়ারি ২০১৯
  7. মোরহাউজ, তৃতীয় ওয়ার্ড (১৩ আগস্ট ২০০০)। "'FARMER'S DAUGHTER' STAR LORETTA YOUNG DEAD AT 87"নিউ ইয়র্ক পোস্ট (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৮ জানুয়ারি ২০১৯

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.