মণিপুর
মণিপুর হল ভারতের উত্তর-পূর্ব ভারত একটি রাজ্য। মণিপুরের রাজধানী ইম্ফল।[5] এই রাজ্যের উত্তরে নাগাল্যান্ড, দক্ষিণে মিজোরাম, পশ্চিমে অসম ও পূর্বদিকে মায়ানমার। এই রাজ্যের আয়তন ২২,৩২৭ বর্গকিলোমিটার (৮,৬২১ মা২)।
মণিপুর মণিপুর | ||
---|---|---|
রাজ্য | ||
| ||
![]() ভারতের মানচিত্রে মণিপুর | ||
![]() মণিপুরের মানচিত্র | ||
স্থানাঙ্ক (ইম্ফল): ২৪.৮১৭° উত্তর ৯৩.৯৫° পূর্ব | ||
দেশ | ![]() | |
প্রতিষ্ঠা | ২১ জানুয়ারি ১৯৭২ | |
রাজধানী | ইম্ফল | |
বৃহত্তম শহর | ইম্ফল | |
জেলা | ৯ | |
সরকার | ||
• রাজ্যপাল | নাজমা হেপতুল্লা[1] | |
• মুখ্যমন্ত্রী | এন. বিৰেন সিং (বিজেপি) | |
• বিধানসভা | এক-কক্ষবিশিষ্ট (৬০ আসন) | |
• লোকসভা কেন্দ্র | ২ | |
• হাইকোর্ট | গুয়াহাটি হাই কোর্ট | |
আয়তন | ||
• মোট | ২২৩৪৭ কিমি২ (৮৬২৮ বর্গমাইল) | |
এলাকার ক্রম | 23rd | |
জনসংখ্যা (2011[2]) | ||
• মোট | ২৮,৫৫,৭৯৪ | |
• ক্রম | 22nd | |
• জনঘনত্ব | ১৩০/কিমি২ (৩৩০/বর্গমাইল) | |
সময় অঞ্চল | IST (ইউটিসি+05:30) | |
আইএসও ৩১৬৬ কোড | IN-MN | |
HDI | ![]() | |
Literacy | ৭৯.৮৫% (২০১১ জনগণনা) | |
সরকারি ভাষা | মৈতৈ[3][4] | |
ওয়েবসাইট | Manipur Official Website |
মৈতেই[6] উপজাতির মানুষেরা প্রধানত রাজ্যের উপত্যকা অঞ্চলে বাস করে। এরাই রাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী (জনসংখ্যার ৬০%)। মৈতেইরা পাঁচটি সামাজিক গোষ্ঠীতে বিভক্ত – মৈতেই মারুপ (এরা মৈতেই সংস্কৃতি ও মৈতেই ধর্মে বিশ্বাস করে), মৈতেই খ্রিস্টান, মৈতেই গৌর চৈতন্য (মৈতেই ধর্ম ও হিন্দুধর্ম উভয়েই বিশ্বাস করে), মৈতেই ব্রাহ্মণ (স্থানীয় নাম "বামোন" ও মৈতেই মুসলমান (স্থানীয় নাম মিয়া মৈতেই বা পাঙ্গাল)। মৈতেই বা মণিপুরি ভাষা তাদের মাতৃভাষা এবং এই রাজ্যের প্রধান সংযোগরক্ষাকারী ভাষা (লিঙ্গুয়া ফ্রাঙ্কা)।
জনসংখ্যার উপাত্ত
জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার | |||
---|---|---|---|
Census | Pop. | %± | |
1951 | ৫,৭৮,০০০ | — | |
1961 | ৭,৮০,০০০ | 34.9% | |
1971 | ১০,৭৩,০০০ | 37.6% | |
1981 | ১৪,২১,০০০ | 32.4% | |
1991 | ১৮,৩৭,০০০ | 29.3% | |
2001 | ২২,৯৪,০০০ | 24.9% | |
2011 | ২৮,৫৫,৭৯৪ | 24.5% | |
Source:Census of India |
২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে জনসংখ্যা ২,৮৫৫,৭৯৪ জন।[7]
ভাষা
ধর্ম
মণিপুরে তিন গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের বাস: বিষ্ণুপ্রিয়া, মৈতৈ ও পাঙান।
গন্ধর্বদের রাজত্বকালে মহাভারত-খ্যাত পঞ্চপাণ্ডবদের তৃতীয় ভ্রাতা অর্জুন মণিপুর রাজ্যে পরিভ্রমণে গিয়ে গন্ধর্ব রাজকন্যা চিত্রাঙ্গদার রূপে মুগ্ধ হয়ে তাঁকে বিয়ে করেন। অর্জুনের সঙ্গে ক্ষত্রিয় যোদ্ধা যারা মণিপুর গিয়েছিল, তাদের অনেকে গন্ধর্ব কন্যাদের বিয়ে করে সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে থাকে। অর্জুন ও চিত্রাঙ্গদার একমাত্র ঔরসজাত সন্তান বভ্রূবাহন মণিপুরের সিংহাসনে অধিপতি হন। মণিপুরে গন্ধর্বদের পরে আর্য-ক্ষত্রিয়দের শাসন শুরু হয়। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের পর যুধিষ্টির অশ্বমেধ যজ্ঞ করলে রাজা বভ্রূবাহন সেই যজ্ঞে যোগদান করতে মিথিলার রাজধানী হস্তিনায় গমন করেন। যজ্ঞশেষে মণিপুরে ফেরার সময় বভ্রূবাহন হস্তিনার বিষ্ণুপ্রিয়া মন্দিরস্থ অনন্তশায়ী সুবর্ণ ও বিশাল বিষ্ণুমূর্তি সঙ্গে নিয়ে আসেন। বিষ্ণুবিগ্রহ স্থাপনের পর থেকে মণিপুরের রাজধানী ‘বিষ্ণুপুর’ নামে পরিচিতি লাভ করতে থাকে। অর্জুনের বংশধর ক্ষত্রিয় বংশী এবং বিষ্ণুর উপাসক বলে তাদেরকে বিষ্ণুপ্রিয়া বলা হয়।
মোঙ্গলীয় তিব্বতিবর্মী-পরিবারের কুকি-চীন গোত্রভুক্ত মৈতৈগণ দশম-ত্রয়োদশ শতাব্দীর কোনো এক সময় চীন দেশ থেকে মণিপুরে প্রবেশ করেন। পৈরিতন নামে এক দলপতির নেতৃত্বে তারা মণিপুরের উত্তরে অবস্থিত কবরু পর্বতে উপনিবেশন স্থাপন করে। মৈতৈ মণিপুরীরা বিষ্ণুর উপাসক বিষ্ণুপ্রিয়া ও মৈতৈরা সনাতন বৈষ্ণব ধর্মে দীক্ষিত বলে পেঁয়াজ, রসুন ও মাংস খায় না।
পাঙান
কথিত আছে যে, মণিপুর রাজ্যে ভারতবর্ষের কোনো এক অঞ্চলের পাঠান মুসলিম ব্যবসা-বাণিজ্য করতে মণিপুর গেছেন। তাঁদের একজন এক মৈতৈ মণিপুরী মেয়ের সঙ্গে প্রেমে আবদ্ধ হন এবং তাঁকে বিবাহ করে সন্তানাদিসহ সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে থাকেন। মা মৈতৈই ও পিতা পাঠান মুসলিম বংশোদ্ভূত সম্প্রদায়কে পাঙান জাতি বলে। তাদেরকে মণিপুরী মুসলিমও বলা হয়। তারা মায়ের ভাষায় কথা বলে এবং পিতার ইসলাম ধর্ম পালন করে। তারা পেঁয়াজ, রসুন ও মাংসভোজী। তাদের মেয়েরাও বিষ্ণুপ্রিয়া ও মৈতৈই মেয়েদের মতো নিজস্ব উৎপাদিত পোশাক-পরিচ্ছদ পরিধান করে।
সনাতনধর্মী মণিপুরীরা সাধারণত সাংস্কৃতিক জাতি হিসেবে উদারপন্থী। তাদের নারী-পুরুষদের মধ্যে মানববন্ধনে যুবক-যুবতী/নারী-পুরুষ একসঙ্গে খেলাধুলা, গান-বাজনা ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে স্বাভাবিক চলাফেরা ও মেলামেশায় অভ্যস্ত। তাদের ছেলে-মেয়ে, নারী-পুরুষ সবাই নৃত্যগীতে অংশ গ্রহণ করে। পাঙান সম্প্রদায়ের মেয়ে-ছেলে ইসলামিক শরিয়ত অনুসরণ করার চেষ্টা করে।
পর্যটন
মণিপুরের শহরগুলি
মণিপুরের নামকরা শহরগুলোর নাম নিচে দেয়া হলো:
- আন্দ্রো
- ইম্ফল
- ইয়াইরিপোক
- ঐনাম
- ওয়াংজিং
- ওয়ানই
- কাকচিং
- কাকচিং খুনৌ
- কুম্বি
- কোয়াক্তা
- খংমান
- জিরিবাম
- তোরবান
- থংখং লক্ষ্মীবাজার
- থৌবাল
- নাওরিয়া পাখাংলাকপা
- নাম্বোল
- নিংথুখং
- পরম্পত
- বিষ্ণুপুর
- মৈরাং
- মায়াং ইম্ফল
- মোরেহ্
- লামজাওতোংবা
- লামশাং
- লামাই
- লিলং (থৌবাল)
- লিলং (পিছ ইম্ফল)
- সামুরৌ
- সিখং সেকমাই
- সুগ্নু
- সেকমাই বাজার
- হেরিওক
পরিবহণ
রেল
মনিপুরে খুব দ্রুত রেলওয়ে লাইনের বিকাশ হচ্ছে। জিরিবাম মনিপুরের প্রারম্ভিক রেল স্টেশন। লাইনটি বঙ্গাইচুংপাও পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয়েছে।
তথ্যসূত্র
- "Guv Dr Najma Heptulla presents Ustad Bismillah Khan Puraskar"। United News of India। ১৯ আগস্ট ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ১৮ অক্টোবর ২০১৯।
- "Manipur Population Sex Ratio in Manipur Literacy rate data"। census2011.co.in। ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ সেপ্টেম্বর ২০১৫।
- "At a Glance « Official website of Manipur"। ৫ মার্চ ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ ডিসেম্বর ২০১৬।
- Abstract of speakers' strength of languages and mother tongues – 2000 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৮ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে, Census of India, 2001
- Manipur : treatise & documents। Sanajaoba, Naorem. (1st ed সংস্করণ)। New Delhi, India: Mittal Publications। ১৯৯৩। আইএসবিএন 8170993997। ওসিএলসি 29793061।
- "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১১ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ ডিসেম্বর ২০১৩।
- "Manipur Population Census data 2011"। Census 2011। ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ সেপ্টেম্বর ২০১৭।
- http://www.censusindia.gov.in/2011census/C-16.html