পাটলী ইউনিয়ন

পাটলী ইউনিয়ন বাংলাদেশের সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার অন্তর্গত একটি ইউনিয়ন পরিষদ

পাটলী ইউনিয়ন
ইউনিয়ন
২ নং পাটলী ইউনিয়ন পরিষদ
বাংলাদেশে পাটলী ইউনিয়নের অবস্থান
পাটলী ইউনিয়ন
পাটলী ইউনিয়ন
বাংলাদেশে পাটলী ইউনিয়নের অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২৪°৪৮′১৪.০০০″ উত্তর ৯১°৩৫′১৫.০০০″ পূর্ব
দেশ বাংলাদেশ
বিভাগসিলেট বিভাগ
জেলাসুনামগঞ্জ জেলা
উপজেলাজগন্নাথপুর উপজেলা
সরকার
  চেয়ারম্যানমোহাম্মদ সিরাজুল হক
আয়তন
  মোট৩২.৫২ কিমি (১২.৫৬ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা
  মোট২১,৩৮৩
সাক্ষরতার হার
  মোট৪৭.৮১
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
৬০ ৯০ ৪৭ ৬৬
ওয়েবসাইটপ্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট

অবস্থান ও সীমানা

পাটলী ইউনিয়নের পূর্বে মীরপুর ইউনিয়ন পশ্চিমে কলকলিয়া ইউনিয়ন, দক্ষিণে জগন্নাথপুর পৌরসভা, উত্তরে ভাতগাঁও ইউনিয়ন (ছাতক)।

ইতিহাস

জগন্নাথপুর উপজেলার পাটলী গ্রাম প্রাচিন ঐতিহ্যবাহি গ্রাম। ১১৯১ খ্রিষ্টাব্দে লাউড় রাজ্যের রাজা বিজয় মাণিক্য জগন্নথপুরের পান্ডুয়া (বর্তমান পেরুয়া) নামে লাউড় রাজ্যের অধিনে এক শাখা রাজ্যের স্থাপনা করেন। জগন্নাথপুরের পাণ্ডুয়া রাজ্য থেকে রাজা বিজয় মাণিক্য সেই সময় নিজ নামের সঙ্গে দুই স্ত্রীর নাম যুক্ত করে ১১৯১ খ্রিষ্টাব্দে সিক্কা মুদ্রা প্রকাশ করেছিলেন। সেই সিক্কা মুদ্রাই রাজা বিজয় মাণিক্যের রাজ্যের প্রমাণ। পান্ডুয়া রাজ্যের বিবরণে পাওয়া যায়; বঙ্গের সে সময়কার রাজা বল্লাল সেন কর্তৃক বঙ্গ থেকে বিতাড়িত ব্রাহ্মণদেরকে রাজা বিজয় মাণিক্য জগন্নাথপুরে স্থাপন করেন এবং উচ্চ পর্যায়ের বাহ্মণদেরকে অনেক লাখে রাজ ভূমিও দান করেন। উল্লেখ্য যে, বঙ্গের পাটলীপুত্র থেকে আগত পণ্ডিত শ্রেণীর বাহ্মণদের যে স্থানে স্থপনা গড়ে দিয়েছিলেন, সে স্থানই বাহ্মণ পণ্ডিতদের পৈত্রিক নিবাস পাটলীপুত্রের স্মৃতি বহন করে সেই নামানুসারে পরিচিত হয়। পরবর্তিকালে এটি পাটলী নামে রূপান্তর হয়।[1][2] কালের পরিবর্ততে ১২০৪ খ্রিষ্টাব্দে ইখতিয়ার উদ্দীন মোহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজির বঙ্গবিজয়ের মধ্য দিয়ে শ্রীহট্ট মুসলমানদের অধিকৃত হয় এবং ১৩০৩ খ্রিষ্টাব্দে আউলিয়া শাহ জালাল (রহ:) দ্বারা শ্রীহট্টের গৌড় রাজ্য বিজিত হলে, দিল্লীর সুলতানদের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয়ভাবে মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। তারই ধারাবাহিকতায় হযরত শাহ জালাল (রঃ) এর সঙ্গীঅনুসারিগণদের মধ্য হতে ইসলাম ধর্ম প্রচারে আট জন আউলিয়া জগন্নাথপুর রাজ্যে আসেন। এভাবে সোলতানি আমল অতিবাহিত হয়ে মোঘল সোলতানাতের আবির্ভাব ঘটে। শতের শতকের শেষ দিগে পরিবারিক অন্তকোহলে জগন্নাথপুর রাজ্যে পরিসমাপ্তি হয়। শতরে'শ শতকের পরে লাউড় ও জগন্নাথপুর রাজ্য স্বাধীনতা হারায় এবং মোঘলরা এর নিয়ন্ত্রক হন। তখন পাটলীর রাজ্য আশ্রিত বাহ্মণ অনেকেই সুবিদা বঞ্চিত হয়ে মোঘলদের হতে জায়গা-জমি ইজারা-বন্ধবস্ত গ্রহণ করে বসবাস করেন। ১৭৬৫ খ্রিষ্টাব্দে সিলেট বিভাগ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর অধিকারভূক্ত হয় ১৭৭২ খ্রিষ্টাব্দে গঠিত হয় (সাবেক) সিলেট জেলা। ১৮৭৭ খ্রিষ্টাব্দে সুনামগঞ্জকে মহকুমায় উন্নীত করা হলে প্রশাসনিক ব্যবস্থা প্রশারে বাংলাদেশের পল্লী অঞ্চলের সর্বনিম্ন প্রশাসনিক ইউনিট ইউনিয়ন গঠিত হয়। গ্রাম চৌকিদারি আইনের ১৮৭০ এর অধীনে ১৮৭০ সালে কিছু পল্লী সংস্থা গঠনের উদ্যোগ নেয়া হলে ইউনিয়নের সৃষ্টি। তারই ধারাবাহিকতায় গ্রামাঞ্চলে আইনের পাহারা টহল ব্যবস্থা চালু করায় বিভিন্ন অঞ্চলের প্রাচিন গ্রামাদির নামের ভিত্তিতেই ইউনিয়ন নাম রাখা হয়।[2] এভাবে পাটলী গ্রামের নামে পাটলী ইউনিয়নের নাম করণ করা হয়।

প্রসানিক কাঠামো

এই ইউনিয়ন ৯টি ওয়ার্ড, ২৯টি মৌজা ও ৫০টি গ্রাম নিয়ে গঠিত।[3]

  • ১ নং ওয়ার্ড: রামেশ্বরপুর, লামারসুলগঞ্জ বাজার, বনগাঁও, নুরবালা, লাউতলা, রাধুনী কোনা, রসুলপুর
  • ২ নং ওয়ার্ড: হামিদপুর, প্রভাকরপুর
  • ৩ নং ওয়ার্ড: শাসন, ইসলামপুর, নন্দীরগাঁও, সাচায়ানী, আলীপুর
  • ৪ নং ওয়ার্ড: চানপুর, চকাছিমপুর, আসামপুর, পরমেশ্বরপুর, সোনাপুর, কবিরপুর
  • ৫ নং ওয়ার্ড: পূর্ব ফরিদপুর, মিনাজপুর, সুলেমানপুর, একাবর, সাতহাল
  • ৬ নং ওয়ার্ড: জঙ্গলগাঁও, মক্রমপুর, পাটলী, মগুরজানা, ফতেপুর
  • ৭ নং ওয়ার্ড: চানপুরচক, দরিখুঞ্জনপুর, দিঘারকুল, সইজপুর, রসুলগঞ্জ বাজার
  • ৮ নং ওয়ার্ড: গোয়ালকুড়ি, কামিনীপুর, সামাট
  • ৯ নং ওয়ার্ড: লোহারগাঁও, ক্ষেত্রপাশা, শ্রীকরপুরবাদ, মোহাম্মদপুরসেরা, কড়িয়াইন, ধনঞ্জয়পুর

জনপ্রতিনিধি

বর্তমান পরিষদ
ক্রমিক নং নাম পদবী
মোহাম্মদ সিরাজুল হক চেয়ারম্যান
ওয়ার্ড মোঃ সোনা মিয়া সদস্য
ওয়ার্ড ছায়াদুর রহমান সদস্য
ওয়ার্ড ছায়াদ মিয়া সদস্য
ওয়ার্ড সুরুক মিয়া সদস্য
ওয়ার্ড জসিম উদ্দিন আহমদ ফারুক সদস্য
ওয়ার্ড ওয়াহিদুর রাজা সদস্য
ওয়ার্ড খালিদ হাসান খালেদ সদস্য
ওয়ার্ড মোঃ মতিন আহমদ সদস্য
ওয়ার্ড মোঃ এখলাছুর রহমান সদস্য
মহিলা সদস্য
ওয়ার্ড ফেরদৌসি বেগম তানিয়া সদস্য
ওয়ার্ড রোজিনা বেগম সদস্য
ওয়ার্ড লক্ষী রানী দাস সদস্য

কৃতি ব্যক্তিত্ব

দর্শনীয় স্থান

আরো দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. সিলেট বিভাগের ইতিবৃত্ত: প্রাচীন ইতিহাসে সিলেট বিভাগ নিবন্ধ, মোহাম্মদ মুমিনুল হক, গ্রন্থ প্রকাশকাল: সেপ্টেম্বর ২০০১; পৃষ্ঠা ৩৩।
  2. শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত পূর্বাংশ, দ্বিতীয় ভাগ, প্রথম খণ্ড, প্রথম অধ্যায়, অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি; প্রকাশক: মোস্তফা সেলিম; উৎস প্রকাশন, ২০০৪।
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.