পাগল পীর
পাগল পীর (পাগলা পীর, পাগলা বাবা, পাগল ঠাকুর, পীর পাগল গাজী সাহেব নামেও পরিচিত) বাংলার মুসলিম জনসমাজের কল্পিত এক পীর। এই পীর আসলে হিন্দুদের উপাস্য ভোলানাথ শিবের রূপান্তর। পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার বারাসতের ঝালগাছি ও বসিরহাটের বেনিয়াবৌ গ্রামে পাগল পীরের দরগাহ অবস্থিত। এটি লোকায়ত স্তরে হিন্দু ও মুসলমানের মধ্যে দেবদেবীর আদান-প্রদান এবং ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার এক অভূতপূর্ব সমন্বয়ের দৃষ্টান্ত।[1]
পাগল পীরের দরগাহ
বসিরহাটের বেনিয়াবৌ গ্রামে অবস্থিত এই দরগাহে ২ হাত×১ হাত ক্ষেত্রবিশিষ্ট একটি পিঁড়ির চারকোণে চারটি লোহার ত্রিশূল প্রোথিত আছে। সঙ্গে একটি হিন্দু বরের টোপরের আদলে সোলার টোপরও বিদ্যমান। দরগাহে বেশ কিছু ফকিরের আস্তানা আছে। প্রতি সন্ধ্যায় পীরের নিকট ধূপ-বাতি জ্বালিয়ে প্রার্থনা জানানো হয়।[1]
পাগল পীরের উদ্ভবের ইতিহাস
জনশ্রুতি আছে, বাদুড়িয়া থানার অন্তর্গত সরফরাজ গ্রামে এক মুসলমান ভোলানাথ শিবের স্বপ্নাদেশ পান; স্বপ্নে শিব তাকে অবিলম্বে বেনিয়াবৌ গ্রামে প্রতিষ্ঠা করে নিত্যসেবার ব্যবস্থা করতে বলেন। এরপর ঐ মুসলিম ব্যক্তি বেনিয়াবৌ গ্রামে উপস্থিত হয়ে এক স্থানে একটি পিঁড়িতে চারটি ত্রিশূল পুঁতে ভোলানাথ মহেশ্বরকে প্রতিষ্ঠা করেন (ইসলামী বিধিনিষেধের জন্য মূর্তি স্থাপনা সম্ভব হয়নি)। মুসলমান প্রতিষ্ঠিত এই "ত্রিশূলরূপী শিব" কালক্রমে মুসলিম জনসমাজের কাছে পীরসাহেবে পরিণত হন এবং "পাগলা ভোলা" নাম থেকে "পাগলা পীর" নাম হয়।[1]
তথ্যসূত্র
- ঘোষ, বিনয়, "পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি" (তৃতীয় খন্ড), প্রথম সংস্করণ, প্রকাশ ভবন, পৃষ্ঠা: ২১৬-২১৭
বঙ্গের সংস্কৃতি |
---|
বিষয় সম্পর্কিত ধারাবাহিক |
![]() |
ইতিহাস |
ভাষাতত্ত্ব
বর্ণমালা
|
ঐতিহ্য বাঙালি বিবাহ
|
শিল্প
|
ইতিহাস
ধরণ প্রতিষ্ঠান
পুরস্কার
|
|