দৈনিক গণকণ্ঠ

দৈনিক গণকণ্ঠ স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে বাঙলা ভাষায় প্রকাশিত একটি দৈনিক পত্রিকা। ১৯৭২ সালে ১০ই জানুয়ারী ঢাকা থেকে পত্রিকাটির প্রকাশনা শুরু হয়। এর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক কবি আল মাহমুদ। এটি প্রকাশিত হতো জনতা প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজেস লিঃ থেকে। প্রকাশক হিসাবে নাম ছিল মনিরুল ইসলাম-এর। সম্পাদকীয় দপ্তর ছির র‌্যাংকিন স্ট্রীটে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আফতাব আহমদ এই পত্রিকা প্রকাশে বিশেষ ভূমিকা রেখেছিলেন। তিনিই ছিলেন কার্যনির্বাহী সম্পাদক।

দৈনিক গণকণ্ঠ
ধরনদৈনিক সংবাদপত্র
প্রতিষ্ঠাতাকবি আল মাহমুদ
প্রকাশকমোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন জিটু
সম্পাদকমোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন জিটু
প্রতিষ্ঠাকাল১০ই জানুয়ারি, ১৯৭২
ভাষাবাংলা
সদরদপ্তর
ঢাকা
বাংলাদেশ
দাপ্তরিক ওয়েবসাইটhttps://www.gonokantho.com/

পত্রিকাটির সরকারী-বিরোধী সাহসী অবস্থান সকলের দৃষ্টি কাড়ে। পরবর্তীতে পত্রিকাটি বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের বিশ্বাসীদের মুখপত্র বিশেষ করে জাতীয় সমাজতন্ত্রিক দল-এর মুখপত্র হিসেবে বিবেচিত হয়। ১৮ই মার্চ ১৯৭৪ সাল তারিখে সরকার পত্রিকাটি বন্ধ করে দেয়। পত্রিকার সম্পাদক আল মাহমুদকে গ্রেপ্তার করা হয়।[1] এর ফরে দেশব্যাপী তীব্র পত্রিক্রিয়া হয়। সরকার ১৩ই এপ্রিল ১৯৭৪ তারিখে প্রতিকাটি পুনঃপ্রকাশের সুযোগ প্রদান করে। তিন দিন পর ১৮ এপ্রিল ১৯৭৪ তারিখে পত্রিকাটি চিরতরে বন্দ করা দেয়া হয়।

পত্রিকা বন্ধের সংবাদ

দৈনিক গণকণ্ঠ পত্রিকা বন্ধের বিবরণ তৎকালীন প্রভাবশাল দৈনিক পত্রিকায় নিম্নরূপ প্রচারিত হয়েছিলঃঅচিরেই পত্রিকার সম্পাদক আল মাহমুদকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং

'গত ১৭ই মার্চ রাত ৩ টার সময় তিন ট্রাকবোঝাই রক্ষীবাহিনী ও পুলিশ দৈনিক গণকণ্ঠ কার্যালয়ে প্রবেশ করে এবং সোমবার প্রকাশিতব্য শেষ ফর্মা (১ম ও ৮ম পাতার) মেশিন হইতে নামাইয়া ফর্মাটি ভাঙ্গিয়া ফেলে। তারা কার্যালয়ের প্রতিটি কক্ষের জিনিসপত্র তছনছ করে এবং কর্মরত-কর্মচারীদের ওপর নির্যাতন চালাইয়া ৭ জনকে গ্রেফতার করে। একই সময় বাসভবন হইতে গণকণ্ঠ সম্পাদক কবি আল মাহমুদকেও গ্রেফতার করা হয়। একই সময় ছাপাখানা হইতেও সোমবারের শেষ ফর্মার সিলোফিন পেপারসহ প্লেটটি আটক করে। সোমবারের পত্রিকা প্রকাশ কার্যত বন্ধ করিয়া দেওয়া হইয়াছে। সোমবার ও মঙ্গলবার সারাদিন ও রাত ধরিয়া পুলিশ ও রক্ষীবাহিনী কিছুক্ষণ পর পর গণকণ্ঠ কার্যালয়ে যাইয়া সেখানে কর্মরত সাংবাদিক ও কর্মচারীদের প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হইয়াছে। পত্রিকার বার্তা সম্পাদকসহ অন্য সাংবাদিকরা বাড়ি-ঘর ছাড়িয়া অন্যত্র রাত কাটাইতে বাধ্য হইতেছেন। রিপোর্টাররা সংবাদ সংগ্রহ করিতে যাইয়া হুমকির সম্মুখীন হইতেছেন। কারাগারে গণকণ্ঠ সম্পাদকের সহিত সাক্ষাতের চেষ্টা ব্যর্থ হইয়াছে। তাহাকে কেন্দ্রীয় কারাগারে সাধারণ কয়েদিদের সঙ্গে রাখা হইয়াছে বলিয়া খবর পাওয়া গিয়াছে। তাহা ছাড়া মফস্বল সংবাদদাতাসহ গণকণ্ঠ কার্যালয় থেকে গ্রেফতারকৃতদের কোনো সন্ধান পাওয়া যাইতেছে না।[2]

তথ্যসূত্র

  1. "সাংবাদিক আল মাহমুদ"। ২৯ ডিসেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১১
  2. দৈনিক ইত্তেফাক, ১ম পাতা, ২১ মার্চ্চ, ১৯৭৪
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.