দৈনিক আজাদ

দৈনিক আজাদ বিংশ শতাব্দীর ব্রিটিশ-শাসিত ভারতে প্রবর্তিত একটি বাংলা দৈনিক পত্রিকা। ৩১ অক্টোবর ১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দ তারিখে কলকাতা থেকে সর্বপ্রথম এটি প্রকশিত হয়। দৈনিক আজাদের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন মওলানা মুহাম্মদ আকরাম খাঁ। প্রথম দিকে এই পত্রিকাটি বঙ্গ এবং আসামের মুসলমানদের বক্তব্যকে প্রতিনিধিত্ব করছে বলে মনে করা হত। ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দে সম্পাদক ছিলেন শিশু সাহিত্যিক মোহাম্মদ মোদাব্বের। সেসময় মোহাম্মদ মোদাব্বের এবং তার ছেলের প্রচেষ্টায় এই পত্রিকাটি নিয়মিত প্রকাশিত হত। সদরুল আনাম খান এবং নাজির আহমেদও এই প্রকাশনার সাথে যুক্ত ছিলেন। এই পত্রিকায় ঢাকার প্রতিদিনকার সংবাদের পাশাপাশি আঞ্চলিক প্রতিবেদক খাইরুল কবিরের পাঠানো বিভিন্ন সংবাদও ছাপানো হত।

ভারত বিভাগের পর ১৯৪৮ সালের ১৯ অক্টোবর পত্রিকার সকল কার্যক্রম ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। আবুল কালাম সামসুদ্দিনকে সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন খায়রুল কবির নিউজ এডিটর, মুজিবুর রহমান খান এবং আবু জাফর সামসুদ্দিন ছিলেন সম্পাদকীয় বিভাগে। এর অল্প কিছুদিনের মধ্যেই দৈনিক আজাদ পূর্ব পাকিস্তানের অন্যতম প্রধান সংবাদপত্রে পরিণত হয়।

১৯৪৯ সালে সরকার বিরোধি সংবাদ প্রকাশের কারণে দৈনিক আজাদের প্রকাশনায় বাধা দেয়া হয়। এবং এই পত্রিকায় সরকারের পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপন দেয়া বন্ধ করে দেয়া হয়। বাংলা ভাষা আন্দোলনের সময় এই পত্রিকা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। আজাদ এই আন্দোলনের সমর্থনে ছিলো এবং সরকারের কার্যক্রমের সত্যতা তুলে ধরছিলো। ২১ ফেব্রুয়ারীর হত্যার পরপরই ২২ তারিখে এই ঘটনার প্রেক্ষিতে একটি বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করা হয়েছিল। এই হত্যকান্ডের প্রতিবাদ স্মরূপ আবুল কালাম সামসুদ্দিন গণপরিষদ থেকে পদত্যাগ করেন। তিনি সেই সময় দৈনিক আজাদের সম্পাদক ছিলেন। যদিও এটি তখন মুসলিম লীগ ভিত্তিক পত্রিকা ছিল কিন্তু বাংলা ভাষা আন্দোলনের প্রতি সম্মান দেখানো হয়েছিল এই পত্রিকায়। এর ফলস্রুতিতে আজাদ এই ঐতিহাসিক ঘটনাগুলো সংকলনের অন্যতম প্রধান সূত্র ছিল। যদিও বিভিন্ন সময় এটির প্রচারনার উদ্দেশ্য পরিবর্তিত হয়েছিল। বিশেষত ১ মার্চের পর এটি সরকারের পক্ষে প্রচার করতে থাকে। আইয়ুব খানের শৈরাচারী আচরণের কারণে দৈনিক আজাদ আবার সরকারের বিপক্ষে প্রচার শুরু করে। সরকারের দুর্ণীতি এবং অনৈতিক আচরনগুলো তুলে ধারা হয় এই পত্রিকায়।[1] এই সময় পত্রিকার নেতৃত্বে ছিলেন মওলানার ছোট ছেলে মোহাম্মদ কামরুল আনাম খান।

আরও দেখুন

  1. Al Helal, Bashir, Bhasha Andoloner Itihas. pp-513

৩০/১২/১৯৮৫ প্রকাশিত পত্রিকা প্রয়োজন

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.