আফগানিস্তান–বাংলাদেশ সম্পর্ক

আফগানিস্তান–বাংলাদেশ সম্পর্ক বলতে বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান রাষ্ট্রদ্বয়ের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে বুঝানো হয়।

আফগানিস্তান–বাংলাদেশ সম্পর্ক

আফগানিস্তান

বাংলাদেশ

ইতিহাস

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে আফগানিস্তান রাজতন্ত্র পশ্চিম পাকিস্তান থেকে এ দেশের সাধারণ মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়ের যোগান দিয়েছিল। আফগানিস্তানের পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি নতুন প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র বাংলাদেশকে দ্রুত স্বীকৃতি দিয়েছিল ।[1]

২০১০ সালে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে নিযুক্ত সাবেক মার্কিন বিশেষ দূত রিচার্ড হোলব্রুক বাংলাদেশকে আফগানিস্তানে যুদ্ধ সৈন্য পাঠানোর জন্য অনুরোধ করেন।[2] এর কিছু দিন পর সাইট ইনস্টিটিউট "Afghan Taliban reacts to US requesting troops from Bangladesh" শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।[3] দুইদিন পর, মার্কিন দূতাবাস ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন এ পুনরায় অনুরোধ জানিয়ে বলেন "মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে বৈশ্বিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য বাংলাদেশের অংশগ্রহণের বিষয়ে তার তীব্রতর করেছে।"[4] ঐ সময়ে বাংলাদেশের সাধারন মানুষ সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ঐকমত পোষণ করেছিলেন যে জাতিসংঘের ম্যান্ডেট ছাড়া আফগানিস্তানে বাংলাদেশের সৈন্য পাঠানো উচিত না। [3] পরবর্তীতে, বাংলাদেশ সরকার ঘোষণা করে যে তারা আফগানিস্তানে সৈন্য পাঠাবেনা কিন্তু বাংলাদেশ যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ পুনর্বাসন এবং পুনর্নির্মাণের সহায়তা প্রদান করতে চায়।[5]

আফগানিস্তানের পুনর্গঠনে সহযোগিতা

আফগানিস্তানের পুনর্গঠন প্রক্রিয়াতে বাংলাদেশ সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিল, আফগান রাষ্ট্রপতি হামিদ কারজাই নিজে এর প্রশংসা করেছেন।[6] বাংলাদেশ আফগানিস্তানের সরকারি কর্মচারী, পুলিশ কর্মকর্তা ও কূটনীতিকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে একটি দক্ষ কর্মসংস্থান তৈরির প্রস্তাব দিয়েছিল। বাংলাদেশ আফগানিস্তানকে ব্যাংকিং, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, কৃষি ইত্যাদির ক্ষেত্রে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ প্রদানের ক্ষেত্রে আগ্রহ প্রকাশ করে।[7]

বেশিরভাগ বাংলাদেশী এনজিও আফগানিস্তানের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য কাজ করছে। বাংলাদেশ ভিত্তিক ব্র্যাক ২০০২ সাল থেকে আফগানিস্তানে কাজ করছে। ২০১২ সালের হিসাবে, সারা দেশে ১৭৩ টি অফিস ছিল, যা প্রায় ২৯.৮ মিলিয়ন মানুষের জীবন প্রভাবিত করছিল।[8]

আফগানিস্তান তার শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে বাংলাদেশের সহায়তা চেয়েছে।[9] ২০০৯ সালে আফগানিস্তানের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল উচ্চ শিক্ষা ব্যবস্থার অভিজ্ঞতা লাভের জন্য ঢাকায় এসেছিলেন।[10] ২০১১ সালের হিসাবে, ৩৫জন আফগান ছাত্র বাংলাদেশী বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে অধ্যয়নরত ছিল।[11]

অর্থনৈতিক সম্পর্ক

আফগান বাজারে বাংলাদেশী পাট, সিরামিক ও ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্যের বেশ ভাল চাহিদা রয়েছে।[12] আফগানিস্তান তার পুনর্নির্মাণ প্রচেষ্টার জন্য বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি নিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে।[13] দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্প্রসারণের উদ্দেশে আফগানিস্তান বাংলাদেশের সঙ্গে সরাসরি ব্যবসায়িক সংযোগ তৈরির ও প্রস্তাব করেছে।[14]

তথ্যসূত্র

  1. অ্যান্থনি অ্যারনল্ড। Afghanistan's Two-Party Communism: Parcham and Khalq (ইংরেজি ভাষায়)। হুভার প্রেস। পৃষ্ঠা 173। আইএসবিএন 978-0-8179-7793-1।
  2. "US asks for Bangladeshi troops in Afghanistan" (ইংরেজি ভাষায়)। The Daily Star। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুন ২০১৪
  3. "Taliban warn Bangladesh" (ইংরেজি ভাষায়)। The Daily Star। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুন ২০১৪
  4. "US keen about Bangladeshi troops in Afghanistan" (ইংরেজি ভাষায়)। Bdnews24.com। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুন ২০১৪
  5. "Bangladesh would not send troops to Afghanistan: Hasina" (ইংরেজি ভাষায়)। The Indian Express। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুন ২০১৪
  6. "Karzai praises Bangladesh's Afghanistan rebuilding role" (ইংরেজি ভাষায়)। The Daily Star। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুন ২০১৪
  7. "Afghanistan to overcome challenges: Dr Dipu Moni" (ইংরেজি ভাষায়)। Bangladesh Sangbad Sangstha। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুন ২০১৪
  8. "Afghan Taliban kill BRAC official" (ইংরেজি ভাষায়)। New Age। ২০১৪-০৬-১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুন ২০১৪
  9. "Afghan envoy meets DU VC" (ইংরেজি ভাষায়)। Daily Sun। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুন ২০১৪
  10. "Bangladesh to help rebuild Afghanistan" (ইংরেজি ভাষায়)। The Daily Star। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুন ২০১৪
  11. "Efforts underway to enhance ties with Bangladesh" (ইংরেজি ভাষায়)। Pajhwok Afghan News। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুন ২০১৪
  12. "Kabul keen to import jute, ceramics, drugs from Bangladesh" (ইংরেজি ভাষায়)। Daily Sun। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুন ২০১৪
  13. "Afghanistan keen to recruit manpower from Bangladesh" (ইংরেজি ভাষায়)। The Daily Star। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুন ২০১৪
  14. "Kabul for more trade with Dhaka" (ইংরেজি ভাষায়)। New Age। ২০ জুলাই ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুন ২০১৪
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.