লিবিয়া

লিবিয়া (আরবি: ليبيا; দাওলাত লিবীয় আরবি: دولة ليبيا) উত্তর আফ্রিকাতে ভূমধ্যসাগরের দক্ষিণ তীরে অবস্থিত একটি রাষ্ট্র। লিবিয়ার উত্তরে ভূমধ্যসাগর, পূর্বে মিশর, দক্ষিণ-পূর্বে সুদান, দক্ষিণে চাদনাইজার, এবং পশ্চিমে আলজেরিয়াতিউনিসিয়া অবস্থিত। ভূমধ্যসাগরের তীরে অবস্থিত ত্রিপোলি শহর লিবিয়ার বৃহত্তম শহর ও রাজধানী।

লিবিয়া
পতাকা জাতীয় মর্যাদাবাহী নকশা
নীতিবাক্য: স্বাধীনতা, সমাজতন্ত্র, একতা
জাতীয় সঙ্গীত: Allahu Akbar
God is the Greatest
"আল্লাহ্‌ মহান"
লিবিয়ার অবস্থান
লিবিয়ার অবস্থান
রাজধানী
এবং বৃহত্তম নগরী
ত্রিপোলি
৩২°৫৪′ উত্তর ১৩°১১′ পূর্ব
সরকারি ভাষা আরবি[a]
Spoken languages
  • লিবীয় আরবি
  • Tamazight
  • Italian (historical ties with Italy)
জাতীয়তাসূচক বিশেষণ লিবীয়
স্বাধীনতা
   ইতালি ত্যাগ করেছে ১০ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৭ 
   From যুক্তরাজ্য এবং ফ্রান্স under United Nations Trusteeship
২৪ ডিসেম্বর ১৯৫১ 
   মোট ১৭,৫৯,৫৪১ কিমি (16th)
৬,৭৯,৩৫৯ বর্গ মাইল
জনসংখ্যা
   ২০০৯ আনুমানিক ৬,৪২০,০০০[1] (১০৫তম)
   ২০০৬ আদমশুমারি ৫,৬৭০,৬৮৮1
মোট দেশজ উৎপাদন
(ক্রয়ক্ষমতা সমতা)
২০০৯ আনুমানিক
   মোট $৯১.০৭ বিলিয়ন[2] (৬৮তম)
   মাথা পিছু $১৪,৩৮০.৮৫[2] (৫৮তম)
মোট দেশজ উৎপাদন (নামমাত্র) ২০০৯ আনুমানিক
   মোট $৬০.৬০৯ বিলিয়ন[2] (৫৯তম)
   মাথা পিছু $৯,৫৭০[2] (৪৮তম)
মানব উন্নয়ন সূচক (2014) 0.724[3]
উচ্চ · 94th
মুদ্রা দিনার (LYD)
সময় অঞ্চল EET (ইউটিসি+২)
গাড়ী চালনার দিক right
কলিং কোড ২১৮
ইন্টারনেট টিএলডি .ly

লিবিয়া আফ্রিকার বৃহত্তম রাষ্ট্রগুলির একটি। আকারে বিশাল হলেও লিবিয়াতে জনবসতি খুবই লঘু। দেশের বেশিরভাগ অংশ জুড়ে রয়েছে সাহারা মরুভূমি। লিবিয়ার প্রায় সমস্ত লোক উপকূলবর্তী অঞ্চলে বাস করে। লিবিয়ার তিনটি প্রধান অঞ্চল হল ত্রিপোলিতানিয়া, ফেজ, ও সিরেনাইকা

বার্বার জাতির লোকেরা লিবিয়ার আদিবাসী। খ্রিস্টীয় ৭ম শতকে এখানে আরবদের আগমন ঘটে। বর্তমান লিবিয়ার অধিবাসীরা এই দুই জাতের লোকের মিশ্রণ। স্বল্পসংখ্যক বার্বার এখনও দেশের দক্ষিণ প্রান্তসীমায় বাস করে। লিবিয়ার সংখ্যাগুরু লোক ইসলাম ধর্মাবলম্বী। ইসলাম এখানকার রাষ্ট্রধর্ম এবং আরবি ভাষা সরকারি ভাষা।

১৯৫০-এর দশকে খনিজ তেল আবিষ্কারের আগে লিবিয়া একটি দরিদ্র রাষ্ট্র ছিল। পেট্রোলিয়ামের বিরাট মজুদ আবিষ্কারের পর থেকে লিবিয়া আফ্রিকার সবচেয়ে ধনী দেশগুলির একটি। তবে এখনও এখানকার অনেক লোক এখনও খামার ও পশুচারণের কাজে নিয়োজিত, যদিও ভাল খামারভূমির পরিমাণ অত্যন্ত কম।

লিবিয়াতে প্রাচীনকালে ফিনিসীয়, রোমান ও আরবেরা বসতি স্থাপন করেছিল। ২০শ শতকের প্রথমভাগে ইতালীয়রা দেশটিকে একটি উপনিবেশে পরিণত করে। ১৯৫১ সালে দেশটি একটি স্বাধীন রাজতন্ত্রে পরিণত হয় এবং ১৯৬৯ সালে তরুণ সামরিক অফিসার মুয়াম্মার আল-গাদ্দাফি ক্ষমতা দখল করেন। গাদ্দাফি তাঁর সমাজতন্ত্র ও আরব জাতীয়তাবাদের তত্ত্ব অনুযায়ী এক নতুন লিবিয়া গঠন করেন। তিনি লিবিয়াকে একটি সমাজতান্ত্রিক আরব গণপ্রজাতন্ত্র আখ্যা দেন। তবে লিবিয়ার বাইরের লোকদের কাছে দেশটি একটি সামরিক একনায়কতন্ত্র হিসেবেই বেশি পরিচিত।

নামকরণ

লিবিয়া একটি আদিবাসী (অর্থাৎ বর্বর) শব্দ, যার উদ্ভব হয়েছে আদি মিশরীয় লেখনী , R'bw (= লিবু) থেকে, যা দ্বারা নীল নদের পশ্চিমে বসবাসকারী বর্বর জাতির একটি গোত্রের লোকদের বোঝানো হয়। গ্রিক ভাষায় এই শব্দটি পরিনত হয় লিবিয়া নামে। প্রাচীণ গ্রীসএ উত্তর আফ্রিকামিশর, এমনকি কখনো কখনো আফ্রিকা মহাদেশের সম্পূর্ণ এলাকাকেই লিবিয়া বলে অভিহিত করা হত।

ইতিহাস

প্রথমে রোম, কার্থেজ এবং ভ্যান্ডালস দের দ্বারা পরপর শাসিত হয়। মধ্য যুগে আরব, মরক্কো এবং মিশর আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করে। ১৬শ শতাব্দি তে স্পেন এবং মাল্টার নাইট গণ কিছুদিনের জন্য এর উপর কর্তৃত্ব করে। ১৫৫১ থেকে ১৯১১ সাল পর্যন্ত লিবিয়া তুর্কি দের অধীনে ছিল। এরপর ইতালির অধীন হয়। ২য় বিশ্বযুদ্ধে লিবিয়া ছিল একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। ১৯৫১ সালের ২৪শে ডিসেম্বর স্বাধীনতা লাভ করে। লিবিয়া ১৯৫৩ সালে আরব লীগ এবং ১৯৫৫ সালে জাতিসংঘের সদস্য হয়।

রাজনীতি

লিবিয়ায় সরকারের দুইটি স্তর - একটি 'বিপ্লবী অংশ' যা বিপ্লবী নেতা মুয়াম্মর আল-গাদ্দাফি, বিপ্লবী কমিটিসমূহ এবং ১৯৬৯ এ গঠিত বিপ্লবী নিয়ন্ত্রণ পরিষদের (Revolutionary Command Council) অবশিষ্ট ১২ জন সদস্য নিয়ে গঠিত আর অপরটি আইনপ্রণয়নকারী অংশ যা 'স্থানীয় গণ কংগ্রেস'সমূহ (Local People's Congresses), 'শাবিয়াত গণ কংগ্রেস'সমূহ (Sha'biyat People's Congresses) এবং জাতীয় সাধারণ গণ কংগ্রেস (National General People's Congress)।

ঐতিহাসিক বিপ্লবী নেতৃত্ব নির্বাচিত নয় এবং বিপ্লবে তাদের অংশগ্রহণের কারণে কখনোই ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতা হতে সরানো সম্ভব নয়।

১,৫০০টি শহুরে ওয়ার্ডের প্রত্যেকটির জন্য একটি করে স্থানীয় গণ কংগ্রেস রয়েছে। অপরদিকে ৩২টি অঞ্চল/পৌরসভা/উপবিভাগ বা শাবিয়াতের প্রত্যেকটির জন্য রয়েছে একটি করে 'শাবিয়াত' গণ কংগ্রেস। আর রয়েছে একটি জাতীয় সাধারণ গণ কংগ্রেস। এই আইন প্রণয়নকারী অংশগুলোকে আবার প্রতিনিধিত্ব করে নির্বাহী অংশ অর্থাৎ স্থানীয় গণ কমিটিসমূহ, 'শাবিয়াত' গণ কমিটিসমূহ এবং জাতীয় সাধারণ গণ কমিটি/কেবিনেট।

প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহ

প্রধান শহর: ত্রিপলি , বেন্ গাজি।

ভূগোল

অর্থনীতি

লিবিয়ার অর্থনীতি সমাজতান্ত্রিক মডেল অনুসরণ করে এবং পেট্রোলিয়াম খাতের উপর নির্ভরশীল। লিবিয়ার প্রায় সমস্ত বৈদেশিক মুদ্রা পেট্রোলিয়াম রপ্তানি করে অর্জন করা হয়। পেট্রোলিয়াম রপ্তানি করে প্রাপ্ত অর্থ জিডিপির অর্ধেকের যোগান দেয়। লিবিয়ার জনসংখ্যা অল্প বলে দেশটির মাথাপিছু জিডিপির পরিমাণ আফ্রিকার সর্বোচ্চগুলির একটি। ২০০০ সাল থেকে লিবিয়ার জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার আশাব্যঞ্জক। ২০০৬ সালে এই হার ছিল ৮.১%।

== জনসংখ্যা ==হহহভ

লিবিয়ার ভাষা

আরবি ভাষা লিবিয়ার সরকারি ভাষা। লিবিয়ার বেশির ভাগ লোক আরবি ভাষাতে কথা বলেন। এছাড়া এখানে কিছু স্থানীয় ভাষাও প্রচলিত। এদের মধ্যে তামাশেক ভাষাতেদা ভাষা উল্লেখযোগ্য। আন্তর্জাতিক কাজকর্মে ইংরেজি ভাষা ব্যবহার করা হয়।

সংস্কৃতি

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. Department of Economic and Social Affairs Population Division (2009). "World Population Prospects, Table A.1" (.PDF). 2008 revision. United Nations. Retrieved on 2009-03-12.
  2. "Libya"। International Monetary Fund। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-১০-০১
  3. "2015 Human Development Report" (PDF)। United Nations Development Programme। ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ডিসেম্বর ২০১৫

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.