মিনার

মিনার (/ˌmɪnəˈrɛt, ˈmɪnəˌrɛt/;[1] ফার্সি: مناره menare, তুর্কী: minare,[2] from আরবি: منارة manāra) হল মসজিদের সাথে যুক্ত স্থাপত্য। এতে থাকে ভিত্তি, উথিত অংশ ও একটি গ্যালারি।[3] মিনারের শীর্ষভাগ মসজিদের থেকে উচু হয়। এর শীর্ষভাগ সূচালো বা পেয়াজাকৃতির হয়ে থাকে। আজানের আওয়াজ দূরে পৌছানোর জন্য মিনারের ব্যবহার হয়।

ব্যবহার

মূলত আজানের শব্দ দূরে পৌছানোর জন্য মিনারের ব্যবহার শুরু হয়। দিনে পাঁচবার নামাজের সময় আজান দেয়া হয়। আধুনিক যুগে মাইকের সাহায্যে আজান দেয়া হয়। তবে এরপরও মসজিদের স্থাপত্যে মিনারের ব্যবহার রয়েছে। মিনারের শীর্ষে মাইক যুক্ত করে শব্দ দূরে পৌছানো যায়।

ইতিহাস

তিউনিসিয়ার উকবা মসজিদের মিনার। প্রাচীন মিনারগুলোর মধ্যে টিকে থাকার মধ্যে এটি সর্বপ্রাচীন।[4]

প্রথমদিকে মদিনায় মিনারের ব্যবহার ছিল না।[5] সেসময় ছাদের উপর থেকে আজান দেয়া হত। মুহাম্মদ (সা) এর মৃত্যুর অনেক বছর পর মিনারের ব্যবহার শুরু হয়।

তিউনিসিয়ার উকবা মসজিদের বড় মিনারটি পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন টিকে থাকা মিনার।[4][6] ৮৩৬ সালে এর নির্মাণ সম্পন্ন হয়।[7] এটি মুসলিম বিশ্বের পশ্চিমভাগের মিনারের জন্য মডেল হিসেবে বিবেচিত হয়। এছাড়া পরবর্তী অনেক মিনারের জন্য এই মিনার মডেল হিসেবে কাজ করেছে।[7]

সর্বোচ্চ মিনারটি মরক্কোর কাসাব্লাংকায় দ্বিতীয় হাসান মসজিদে অবস্থিত। এর উচ্চতা ২১০ মিটার (৬৮৯ ফুট)। ইট নির্মিত সর্বোচ্চ মিনার হল ভারতের দিল্লির কুতুব মিনার

কিছু পুরনো মসজিদ, যেমন দামেস্কের উমাইয়া মসজিদে মিনার ওয়াচটাওয়ার হিসেবেও কাজ করত।

নির্মাণ

মিনারে মূলত তিনটি অংশ থাকে, যথা, ভিত্তি, উপরে উত্থিত অংশ ও গ্যালারি। মাটি খুড়ে শক্ত ভিত্তি নির্মাণ করতে হয়। মিনার বর্গাকার, বেলনাকার বা বহুভুজাকার হতে পারে। উত্থিত অংশ জুড়ে পেচানো সিড়ি কাঠামোকে অতিরিক্ত মজবুত হতে সাহায্য করে। শীর্ষভাগে গ্যালারি থেকে মুয়াজ্জিন আজান দেন। মিনার বিভিন্নভাবে অলংকরণ করার রীতি রয়েছে।

স্থানীয় শৈলী

অঞ্চল ও যুগ ভেদে মিনারের স্থাপত্যশৈলী ভিন্ন হতে পারে। নিচে এমন কিছু মিনারের নাম দেয়া হল:

সামারা জামে মসজিদের মিনার (মালউইয়া)

তিউনিসিয়া

(৭ম শতাব্দী) উকবা মসজিদের চতুর্ভুজাকার মিনার। এটি বিশ্বের সর্বপ্রাচীন মিনার।

তুরস্ক (১১শ শতাব্দী)

১,২,৪ বা ৬টি মিনার মসজিদের আকারের মত। সরু, গোলাকার মিনার আকৃতির মিনার নির্মিত হত।

মিশর (৭ম শতাব্দী)/সিরিয়া (১৩শ শতাব্দী পর্যন্ত)

মসজিদের চার কোণে নিচু বর্গাকার মিনার।

ইরাক

কোণাকৃতির মুক্তভাবে দাঁড়ানো মিনার। সাথে পেচানো সিড়ি যুক্ত।

মিশর (১৫শ শতাব্দী)

অষ্টভুজাকার। উপরে ও নিচে মোট দুটি বারান্দার মধ্যে উপরেরটি নিচেরটির তুলনায় ছোট। মুকারনাস যুক্ত ও সূচালো শীর্ষ।

পারস্য (১৭শ শতাব্দী)

সাধারণত মসজিদের প্রবেশপথে দুই জোড়া সরু নীল টাইলস যুক্ত মিনার।

তাতারস্তান (১৮শ শতাব্দী)

তাতার মসজিদ: ছাদের কেন্দ্রে একটি মূল মিনার।

মরক্কো

সাধারণত একটি বর্গাকার মিনার। ব্যতিক্রম ক্ষেত্রে উত্তরের শহরগুলোতে কয়েকটা অষ্টাভুজাকার মিনার ও মওলা ইদ্রিসে গোলাকৃতির মিনার দেখা যায়।

দক্ষিণ এশিয়া

অষ্টাভুজাকার, সাধারণত তিনটি বারান্দা যুক্ত, শীর্ষভাগে সূচালো পেয়াজাকৃতির গম্বুজ থাকে।

উদাহরণ

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. "minaret". Random House Webster's Unabridged Dictionary.
  2. "minaret." Online Etymology Dictionary. Douglas Harper, Historian. 21 Mar. 2009.
  3. Dynamic response of masonry minarets strengthened with Fiber Reinforced Polymer (FRP) composites (Natural উHazards and Earth System Sciences) p. 2012
  4. Titus Burckhardt, Art of Islam, Language and Meaning: Commemorative Edition. World Wisdom. 2009. p. 128
  5. Donald Hawley, Oman, pg. 201. Jubilee edition. Kensington: Stacey International, 1995. আইএসবিএন ০৯০৫৭৪৩৬৩৬
  6. Linda Kay Davidson and David Martin Gitlitz, Pilgrimage: from the Ganges to Graceland: an encyclopedia, Volume 1. ABC-CLIO. 2002. p. 302
  7. "Minaret of the Great Mosque of Kairouan (Qantara Mediterranean Heritage)"। ১১ মে ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ মার্চ ২০১৫

আরও পড়ুন

  • Jonathan M. Bloom (1989), Minaret, symbol of Islam, Oxford University Press. আইএসবিএন ৯৭৮-০-১৯-৭২৮০১৩-৩

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.