ভারতের আধাসামরিক বাহিনী

ভারতের আধাসামরিক বাহিনী (আধাসেনা) ভারত সরকার কর্তৃক নিযুক্ত সেই সকল এজেন্সি যারা ভারতের সামরিক বাহিনীইন্ডিয়ান পুলিস সার্ভিস সহ অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীকে তাদের বিভিন্ন অপারেশনে সহায়তা করে থাকে। দশ লক্ষাধিক সক্রিয় জওয়ান সংবলিত ভারতের আধাসামরিক বাহিনী পৃথিবীর বৃহত্তম আধাসেনাগুলির অন্যতম।[1]

ভারতের এক আসাম রাইফেলস জওয়ান, দিল্লির ইন্ডিয়া গেটের নিরাপত্তায় নিযুক্ত

কেন্দ্রীয় আধাসামরিক বাহিনী (সিপিএফ)নিয়ে আধাসেনার প্রথম স্তর ও কেন্দ্রীয় পুলিস সংগঠন (সিপিও) নিয়ে আধাসেনার দ্বিতীয় স্তরটি গঠিত। এই দুই বাহিনীর মধ্যে প্রাথমিক পার্থক্য এই যে সিপিএফ ভারতের সামরিক বাহিনীর (যথা ভারতীয় সেনাবাহিনী, ভারতীয় বিমানবাহিনীভারতীয় নৌবাহিনী) সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতায় কাজ করে; স্বাধীনভাবে বা অন্যদিকে সিপিও ইন্ডিয়ান পুলিশ সার্ভিস ও অন্যান্য আইনরক্ষক এজেন্সির সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করে। যুদ্ধের সময় সিপিএফ সামরিক বাহিনীর প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণাধীনে কাজ করে, যা সিপিও করে না। ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনী ছাড়া আধাসেনার সবকটি শাখাই ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এজেন্সি। উপকূলরক্ষী বাহিনী আধাসেনার অঙ্গ হলেও এটি ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের এজেন্সি যা ভারতীয় নৌবাহিনীর সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করে।

বিভিন্ন ভূমিকা পালনের জন্য ভারতীয় আধাসেনার অনেকগুলি শাখা রয়েছে। এগুলির অধিকাংশই যদিও জেন্ডারমেরি জাতীয় দায়িত্ব ভাগ করে নেয় এবং সাধারণত রাষ্ট্রদ্রোহবিরোধী বা সন্ত্রাসবাদবিরোধী ভূমিকা পালন করে থাকে। আবার বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স বা ইন্দো-তিব্বতীয় সীমান্ত পুলিশের মতো কয়েকটি শাখা ভারতের আন্তর্জাতিক সীমানা প্রহরায় সেনাবাহিনীকে সহায়তা করে। সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স প্রাথমিকভাবে ভারতীয় পুলিশকে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে সাহায্য করে। ভারতের আধাসামরিক বাহিনীগুলির মধ্যে এটিই বৃহত্তম।[2]

কেন্দ্রীয় আধাসামরিক বাহিনীর তালিকা

  • জাতীয় রাইফেলস: ৪০,০০০ জওয়ান
  • অসম রাইফেলস: একজন লেফটেন্যান্ট-জেনারেলের অধীনস্থ ৪৬টি ব্যাটেলিয়নে বিভক্ত ৪০,০০০ জওয়ান
  • ডিফেন্স সিকিওরিটি কর্পস : ৩০,০০০ জওয়ান যারা প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের ভবন ও স্থাপনাসমূহের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিযুক্ত
  • ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ডস: ৩০,৫০০ জওয়ান
  • ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী: ১৮০,০০০ জওয়ান
  • সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্স: ১০৫,০০০ জওয়ান
  • ইন্দো-তিব্বতি সীমান্ত পুলিশ: ৪০,০০০ জওয়ান

কেন্দ্রীয় পুলিশ সংগঠনের তালিকা

  • রেলওয়ে প্রোটেকশন ফোর্স – ৪৫,০০০ জওয়ান যারা ভারতীয় রেলে নিরাপত্তা পুলিশ ও নিরাপত্তা রক্ষী হিসেবে কাজ করে
  • ইন্ডিয়ান হোমগার্ড: ৪০০ থেকে ৬০০,০০০ জওয়ান
  • সিভিল ডিফেন্স
  • সশস্ত্র সীমা বল: 32,500 personnel which guard the Indo-Nepal and Indo-Bhutan Borders ৩২,৫০০ জওয়ান যারা ভারত-নেপাল ও ভারত-ভুটান সীমান্ত প্রহরা দেয়
  • স্পেশাল প্রোটেকশন গ্রুপ: ৩০০০ জওয়ান
  • স্পেশাল ফ্রন্টিয়ার ফোর্স – ১০,০০০ জওয়ান
  • বিশেষ সশস্ত্র পুলিশ: ২৫০ থেকে ৩০০,০০০ জওয়ান। এটি সংরক্ষিত ভ্রাম্যমাণ রক্ষীবাহিনী। এরা কয়েকটি রাজ্যের নির্বাচিত ক্ষেত্রে ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল বা তদুর্ধ কোনো পদাধিকারীর অধীনেই কাজ করে। এরা সচরাচর সাধারণ মানুষের জন্য নিযুক্ত হয় না। অবশ্য ভিআইপিদের নিরাপত্তা, মেলা, উৎসব, ক্রীড়ানুষ্ঠান ও নির্বাচনের প্রহরাদান বা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সময় এদের নিয়োগ করা হলে এরা জনসংযোগে আসে। ছাত্রসংঘর্ষ, শ্রমিক অসন্তোষ, সংগঠিত অপরাধ ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার ক্ষেত্রেও এদের পাঠানো হয়। পরিস্থিতি বিবেচনা করে এদের হাতে কেবল লাঠি বা সাধারণ আগেয়াস্ত্র দেওয়া হয়।
  • সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স: ২০০টি ব্যাটেলিয়নে বিভক্ত ১৭২,০০০ জওয়ান
    • র‌্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স - সিআরপিএফ-এর ১০ ব্যাটেলিয়নের অর্ধ-স্বাধীন অংশ। ক্ষেত্রীয় হিংসার ঘটনায় প্রেরিত এই পুলিশ ভারতীয় সংঘের দাঙ্গাবিরোধী পুলিশ।
    • কমব্যাট ব্যাটেলিয়ন ফর রেজোলিউট অ্যাকশন (কোবরা): ১০,০০০ জওয়ান সংবলিত শক্তিশালী নকশালবিরোধী বাহিনী যা সিআরপিএফ-এর নিয়ন্ত্রণ ও নির্দেশের অধীনে কাজ করে।[3]

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

তথ্যপঞ্জি

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.