বেগম ফজিলাতুন্নেসা

শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব (৮ আগষ্ট ১৯৩০ - ১৫ আগস্ট ১৯৭৫) ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম ফার্স্ট লেডি এবং প্রথম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান এর স্ত্রী। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তাকে তার স্বামী, তিন পুত্র এবং দুই পুত্রবধূর সাথে হত্যা করা হয়।[1]

শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব
জন্ম৮ আগষ্ট,১৯৩০
টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ তৎকালীন বৃহত্তর ফরিদপুর জেলা, বাংলাদেশ।
মৃত্যু১৫ আগস্ট ১৯৭৫(1975-08-15) (বয়স ৪৪–৪৫)
মৃত্যুর কারণহত্যা
দাম্পত্য সঙ্গীশেখ মুজিবুর রহমান (১৯৪১-১৯৭৫)
সন্তানশেখ হাসিনা (মেয়ে)
শেখ কামাল(ছেলে)
শেখ জামাল(ছেলে)
শেখ রেহানা (মেয়ে)
শেখ রাসেল(ছেলে)

প্রাথমিক জীবন

তিনি ১৯৩০ সালে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন।[2] পাঁচ বছর বয়সে তার বাবা-মা মারা যান। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ২৫ মার্চ থেকে ১৭ ডিসেম্ভর পর্যন্ত তিনি সন্তানদের সাথে গৃহবন্দী ছিলেন।[3]

হত্যাকান্ড

১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট, এক দল নিম্নপদস্থ সেনা কর্মকর্তারা রাষ্ট্রপতির বাসভবন আক্রমণ করে শেখ মুজিব, তার পরিবার এবং ব্যাক্তিগত কর্মচারিদের হত্যা করে। শুধুমাত্র তার কন্যাদ্বয় শেখ হাসিনা ওয়াজেদ এবং শেখ রেহানা প্রাণরক্ষা পান সেসময় পশ্চিম জার্মানি সফর থাকাকালে। তাদেরকে বাংলাদেশ আসতে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। বাকি সবাইকে হত্যা করা হয় যার মধ্যে ফজিলাতুন্নেছার দশ বছরের ছেলে শেখ রাসেলও ছিল, তার বাকি দুই ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল, পুত্রবধু সুলতানা কামাল এবং রসি জামাল, ভাই আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, দেবর শেখ নাসের, ভাতিজা শেখ ফজলুল হক মণি এবং তার স্ত্রী আরজো মণি।[4] এই অভ্যুত্থান পরিকল্পনা করে অসন্তুষ্ট আওয়ামী লীগের সহকর্মি এবং সেনা কর্মকর্তারা, যার মধ্যে ছিল মুজিবের সহকর্মী এবং প্রাক্তণ বিশ্বাসপাত্র খন্দকার মোশতাক আহমদ যে তৎক্ষণাৎ তার উত্তরসূরি হয়।ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র এর রাষ্ট্রদূত এর ‘ঢাকা ইউজিন বোস্টার’ বক্তব্যের উপর ভিত্তি করে লরেন্স লিফশুলজ অভিযুক্ত করেন সিআইএকে এই অভ্যুত্থান এবং হত্যার জন্য।[5]

মুজিব হত্যার ফলে সারাদেশ কয়েক বছরের রাজনৈতিক অশান্তির মধ্যে নিমগ্ন হয়। অভ্যুত্থান এর নেতাদের সিংহাসনচুত্য করা হয় ক্রমানুয়িক পাল্টা অভ্যুত্থানের মাধ্যামে এবং রাজনৈতিক হত্যার ফলে দেশটি অচল হয়ে পড়ে। ১৯৭৭ সালে আরেকটি অভ্যুত্থানের পর শৃঙ্খলা পুনস্থাপিত হয় এবং সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমান ক্ষমতা পান। ১৯৭৮ সালে জিয়া নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করে নিরাপত্তা অধ্যাদেশ জারি করেন এবং মুজিব হত্যার মূল পরিকল্পনাকারীকে খালাশ দেন।

স্মৃতিচিহ্ন

বঙ্গবন্ধু মেমরিয়াল ট্রাস্ট মালেশিয়ান হাসপাতাল কেপিজে এর সাথে একত্রিত হয়ে ‘শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমরিয়াল কেপিজে স্পেশালাইজড হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজ’ প্রতিষ্ঠা করে তার স্মরণে।[6] হাসপাতালটি প্রবর্তিত করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং মালেশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজ্জাক।[7] একটি পূর্ণাঙ্গ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইডেন কলেজে একটি ছাত্রাবাস তার নামে নামকরণ করা হয়।[8] শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল হচ্ছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়-এর একটি ছাত্রীনিবাস।[9] শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মহিলা কলেজ টাংগাইল এ অবস্থিত।[10]

তথ্যসূত্র

  1. "new age"newagebd.net। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-১২-০৯
  2. "Begum Mujib: A tribute"The Daily Star। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৩-২৩
  3. "Sheikh Fazilatunnesa Mujib's 81st birth anniversary today"archive.thedailystar.net। The Daily Star। সংগ্রহের তারিখ ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬
  4. Mahbub, Sumon। "Bangladesh plunges into mourning Bangabandhu on his 40th death anniversary"bdnews24.com। সংগ্রহের তারিখ ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬
  5. "In MOURNING, In RAGE"The Daily Star। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-১২-০৯
  6. "PM to take all treatment at home"dhakatribune.com। BSS। সংগ্রহের তারিখ ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬
  7. "Hasina, Malaysian PM unveil plaque"archive.thedailystar.net। Unb। সংগ্রহের তারিখ ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬
  8. "Eden College dormitory emptied as it develops cracks after earthquake"bdnews24.com। সংগ্রহের তারিখ ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬
  9. "9th RU convocation held"dhakatribune.com। Dhaka Tribune। সংগ্রহের তারিখ ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬
  10. "Schoolgirls get karate training"archive.thedailystar.net। The Daily Star। সংগ্রহের তারিখ ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

বহি:সংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.