বীজগণিত
বীজগণিত গণিতের একটি শাখা যেখানে গাণিতিক সমীকরণে অজানা সংখ্যাকে প্রতীকের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়। বীজগণিতে পাটিগণিতের মৌলিক অপারেশনগুলি যেমন- যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ, ইত্যাদি প্রক্রিয়া প্রতীক বা নির্দিষ্ট সংখ্যা ব্যবহার না করেই সম্পাদন করা যায়।বীজগণিতে অনেক সমস্যা সমাধানে বীজগাণিতিক সূত্র ব্যবহৃত হয়। আবার অনেক বীজগাণিতিক রাশি বিশ্লেষণ করে উৎপাদকের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়।অর্থাৎ, প্রক্রিয়া চিহ্ন এবং সংখ্যানির্দেশক অক্ষর প্রতীক এর অর্থবোধক বিন্যাসকে বীজগাণিতিক রাশি বলা হয়। প্রাত্যহিক জীবনের নানা গণনায় বীজগণিত কাজে আসে। কোনো গাণিতিক সম্পর্ককে সাধারণ সূত্রের আকারে পাটিগণিতের সাহায্যে প্রকাশ করা সম্ভব নয়। পাটিগণিত এরকম কোনো সম্পর্কের একটি নির্দিষ্ট উদাহরণ প্রকাশ করতে সক্ষম। কিন্তু বীজগণিতে প্রতীকের সাহায্যে কোনো গাণিতিক সম্পর্ক একটি সাধারণ বিবৃতি আকারে প্রকাশ করা সম্ভব। যেমন,"একটি সংখ্যা x এর পাঁচগুণ থেকে 25 বিয়োগ করলে বিয়োগফল হবে 190" এই গাণিতিক সম্পর্কটির বীজগাণিতিক প্রকাশ হবে 5x-25=190.[1]
ইতিহাস
১৯ শতক
১৯ শতকের শুরুতে বীজগণিত আধুনিক যুগে পদার্পণ করে। এর প্রথম উদ্ভব হয় গণিতবিদ মুসা আল-খোয়ারিজমির হাত ধরে। তার লেখা 'কিতাব আল জাবর ওয়াল মুকাবিলা' বই এ তিনি সর্বপ্রথম রৈখিক বীজগণিত ধারণার অবতারনা করেন। সংখ্যা ও বহুপদী রাশি সমাধানের পরিবর্তে বীজগণিতবিদদের দৃষ্টি নিক্ষিপ্ত হয় বিভিন্ন বিমূর্ত গাণিতিক সংগঠনের উপর, যেগুলির আচরণবিধি অন্যান্য গাণিতিক বস্তুর আচরণের সাথে সম্পর্কিত। এরকম একটি বিমূর্ত গাণিতিক সংগঠন হল গ্রুপ; গ্রুপ হচ্ছে কতগুলি উপাদান ও অপারেশনের একটি সেট, যা যেকোন সেট থেকে দুইটি উপাদান নেয় ও ৩য় একটি উপাদান গঠন করে। গ্রুপসমূহ সংখ্যা ব্যবস্থাসমূহের কিছু কিছু ধর্ম অনুসরণ করে, কিন্তু অনেক দিক থেকে এগুলির চেয়ে আলাদা। ১৯শ শতকের গণিতে গ্রুপ প্রধান একীকারক ধারণার একটিতে পরিণত হয়। ফরাসি গণিতবিদ এভারিস্ত গালোয়া ও ওগুস্তাঁ কোশি, ব্রিটিশ গণিতবিদ আর্থার কেলি, নরওয়েজীয় গণিতবিদ নিল্স হেনরিক আবেল ও সোফুস লি গ্রুপসমূহের গবেষণায় উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন।
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
- গণিত বই, সপ্তম শ্রেণি। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড।