বিভব শক্তি

পদার্থবিজ্ঞানে বিভব শক্তি (ইং: Potential energy) বলতে কোন বস্তু বা কোন ব্যবস্থা তার স্বাভাবিক অবস্থা বা অবস্থানের বা বস্তুর কণাসমূহের বিন্যাসের পরিবর্তনের জন্য কাজ করার যে সামর্থ্য অর্থাৎ শক্তি লাভ করে তা বোঝানো হয়। Potential energy শব্দটি ১৯ শতকে স্কটিশ প্রকৌশলী এবং পদার্থবিজ্ঞানী উইলিয়াম র‌্যাঙ্কিন সর্বপ্রথম প্রচলন করেন। বিভব শক্তি পরিমাপের আন্তর্জাতিক একক জুল

চিরায়ত বলবিদ্যা

নিউটনের দ্বিতীয় সূত্র
চিরায়ত বলবিদ্যার ইতিহাস

বিভব শক্তি অনেকক্ষেত্রেই প্রত্যয়নী বল দ্বারা অর্জিত হয়। যেমন বাহ্যিক বল প্রয়োগের মাধ্যমে স্প্রিং-এর প্রান্ত টেনে এর দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি করা হলে বা অভিকর্ষের বিরুদ্ধে কোন বস্তুকে ভূমি থেকে উত্তোলন করা হলে কোন বস্তু বিভব শক্তি উপার্জন করে।

বলের বিরূদ্ধে কাজ করে কোন বস্তুকে অন্য অবস্থা বা অবস্থানে আনতে যে পরিমাণ কাজ করা হয় তা বস্তুর মধ্যে বিভব শক্তি রূপে জমা থাকে। বস্তুটি যখন আবার তার পূর্বের অবস্থা বা অবস্থানে ফিরে আসে তখন বস্তুটি ঐ পরিমাণ বিভব শক্তি ভিন্নরূপ শক্তিতে রূপান্তরিত হয়।

বিভব শক্তির পরিমাণ ভূপৃষ্ঠ থেকে বস্তুর উচ্চতার উপর নির্ভর করে।উচ্চতা যত বেশি, বিভব শক্তি তত বেশি।একইভাবে বস্তুর ভরের উপরও নির্ভরশীল।

উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে, কোন ২ কেজি ভরের বস্তুকে অভিকর্ষ বলের বিরূদ্ধে যদি ভূমি থেকে ৫ মিটার উচ্চতায় তোলা হয় তবে বস্তুটিকে ঐ উচ্চতায় উঠানোর ফলে ৯৮ জুল পরিমাণ বিভব শক্তি জমা হবে যার ব্যাখ্যা নিম্নরূপ:

সম্পাদিত কাজ = বল × সরণ = ভর × ত্বরণ × সরণ

অভিকর্ষজ ত্বরণ = ৯.৮ মিটার/বর্গসেকেন্ড

ভর = ২ কেজি

সরণ = ৫ মিটার

সুতরাং, সম্পাদিত কাজ = ২ × ৫ × ৯.৮ = ৯৮ জুল।

অর্থাৎ বস্তুটিতে ৯৮ জুল পরিমাণ বিভব শক্তি জমা হবে। এখন বস্তুটিকে অভিকর্ষের প্রভাবে মুক্তভাবে পড়তে দেয়া হলে এর বিভব শক্তি ভূমিস্পর্শের আগেই অন্যান্য শক্তিতে রূপান্তরিত হতে থাকবে। বিভব শক্তি গতিশক্তি, আলো, তাপ, শব্দ, তড়িৎ ইত্যাদি শক্তিতে রূপান্তর যোগ্য। পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্রে পানির বিভব শক্তিকে গতিশক্তিতে রূপান্তর করা হয়। গতিশক্তির সাহায্যে টারবাইনে ঘূর্ণন গতিশক্তির সৃষ্টি করা হয় এবং তা থেকে ডায়নামোর সাহায্যে তড়িৎ শক্তি উৎপাদন করা হয়।

তথ্যসূত্র

    This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.