নন্দীগ্রাম গণহত্যা
নন্দীগ্রাম গণহত্যা পশ্চিমবঙ্গের নন্দীগ্রামে সংঘটিত একটি গণহত্যামূলক হিংসাত্মক ঘটনা। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার হলদিয়া শহরের নিকটস্থ নন্দীগ্রামে পশ্চিমবঙ্গ সরকার ইন্দোনেশীয় সালেম গোষ্ঠীর জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড বা সেজ) গঠন করার উদ্দেশ্যে ১০,০০০ একর জমি অধিগ্রহণ করতে চাইলে স্থানীয় মানুষেরা প্রতিবাদ আন্দোলন শুরু করেন। এই আন্দোলন দমনের জন্য সরকার চার হাজারেরও বেশি সশস্ত্র পুলিশের একটি বাহিনী ওই অঞ্চলে প্রেরণ করে। ২০০৭ সালের ১৪ মার্চ পুলিশের সঙ্গে স্থানীয় গ্রামবাসীদের সংঘাত বাধলে পুলিশের গুলিতে চোদ্দো জন গ্রামবাসী নিহত হন।

নন্দীগ্রাম পূর্ব মেদিনীপুর জেলার একটি বর্ধিষ্ণু গ্রাম। একটি বিশেষ সেজ নীতির আওতায় এই অঞ্চলে সরকার ইন্দোনেশিয়ার সালেম গোষ্ঠীকে[1][2][3] একটি কেমিক্যাল হাব গঠন করতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে এই সেজ বিতর্কের সূত্রপাত হয়। বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা গ্রামের সঙ্গে প্রশাসনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন এবং গ্রামে প্রবেশের সব রাস্তা কেটে দেওয়া হয়। কলকাতার দ্য টেলিগ্রাফ পত্রিকায় এই সংবাদ প্রকাশিত হয় ফলস অ্যালার্ম স্পার্কস ক্ল্যাশ (ভ্রান্ত সতর্কবার্তায় ছড়িয়ে পড়ল বিবাদ) শিরোনামে। ওই সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবর অনুসারে, যে গ্রাম পঞ্চায়েত সভায় নন্দীগ্রামের জমি অধিগ্রহণের কথা ঘোষণা করা হয়েছিল, সেটি আসলে ছিল নন্দীগ্রামকে “পরিচ্ছন্ন গ্রাম” ঘোষণার সভা (যার অর্থ, উক্ত গ্রামের সব বাড়িতে স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগার বর্তমান)। প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয় নন্দীগ্রামে ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির (বিইউপিসি) প্রতিরোধ ভেঙে দেওয়ার জন্য। ২০০৭ সালের ১৪ মার্চ কমপক্ষে তিন হাজার সশস্ত্র পুলিশ অপারেশন চালায় নন্দীগ্রামে। এই অভিযানের খবর কোনোভাবে বিইউপিসির কর্ণগোচর হয় এবং তারা প্রায় ২০০০ গ্রামবাসীকে নিয়ে একটি পাল্টা প্রতিরোধ বাহিনী গড়ে তোলেন। এই বাহিনীর পুরোভাগে ছিলেন মহিলা ও শিশুরা। এই সংঘাতে প্রাণ হারান চোদ্দোজন গ্রামবাসী। নিহতদের একজনের কোন পরিচয় পাওয়া যায়নি। ধারনা করা হয় সে মাওবাদী দলের নেতা ছিল। তবে ইদানীং সিবিআই তদন্তে সিপিআই(এম) দলের বিরুদ্ধে কোন প্রমাণ তারা দাখিল করতে পারেনি বলে তৃনমুল দলের পক্ষ থেকে সিবিআই তদন্ত দলের সমালোচনা করা হয়েছে।
পটভূমি
নন্দীগ্রামে প্রস্তাবিত কেমিক্যাল হাব গড়ার বরাত পেয়েছিল সালেম গোষ্ঠী। ইন্দোনেশিয়ার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি সুহার্তোর ঘনিষ্ঠ সুদোনো সালেম ছিলেন এই গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা। প্রস্তাবিত কেমিক্যাল হাবটির জন্য প্রয়োজন ছিল ১৪,০০০ একর বা ৫৭ বর্গকিলোমিটার জমি। মোট ২৯টি মৌজা নিয়ে এই কেমিক্যাল হাব গড়ে ওঠার কথা ছিল। এর মধ্যে ২৭টি মৌজাই ছিল নন্দীগ্রামে।[4] জেলার ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিআই) সাংসদ প্রবোধ পান্ডা জানিয়েছিলেন, যে জমিটি অধিগৃহীত হতে চলেছে তা বহুফসলি জমি এবং সেই জমি অধিগৃহীত হলে চল্লিশ হাজারেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হবে।[4] স্বাভাবিক কারণেই তাই জমি ও জীবিকা হারানোর ভয়ে এলাকার কৃষিজীবী দরিদ্র মানুষ অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে একজোট হন।[5] এই গ্রামবাসীদের মধ্যে কেবলমাত্র বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যরাই নয়, বরং শাসক সিপিআই(এম)-এর কর্মী-সমর্থকেরাও ছিলেন। তারা সকলেই ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি (বিইউপিসি) নামক এক নবগঠিত সংগঠনের যৌথ ব্যানারে আন্দোলনে সামিল হন।[6]
ইতঃপূর্বে বামফ্রন্ট সরকারের অন্যান্য শরিক দলগুলি, এমনকি সিপিআই(এম)-এর ভূমি ও ভূমি সংস্কার মন্ত্রী রেজ্জাক মোল্লাও এই প্রকল্পের সাফল্যের ব্যাপারে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন।[7] কিন্তু রাজ্য সরকার এই প্রকল্পের সমর্থনে জানান যে নয়টি রাজ্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতার পর তারা এই কেমিক্যাল হাব গঠনের সুযোগ পেয়েছেন।[8] নিকটবর্তী হলদিয়ায় পেট্রোরসায়ন শিল্প ও তৈল সংশোধনাগার থাকার কারণে কাঁচামাল সরবরাহের সুবিধার দিকটি মাথায় রেখেই রাজ্য সরকার নন্দীগ্রামকে কেমিক্যাল হাবের জন্য উপযুক্ত মনে করেছিলেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সিপিআই(এম)-এর দাবি অনুযায়ী, হলদিয়ার পূর্বোক্ত প্রকল্পগুলি এক লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থানে সক্ষম হয়েছিল।[9]
একাধিক উচ্চপর্যায়ের প্রকল্পের জন্য সালিম গোষ্ঠীকে মোট ৩৫,০০০ একর (১৪০ বর্গ কিলোমিটার) জমি দেওয়ার কথা হয়।[10] পশ্চিমবঙ্গ শিল্পোন্নয়ন নিগমের সঙ্গে ৫০:৫০ শেয়ারে যৌথ উদ্যোগে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ছাড়াও একটি ১০০ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ১০০ মিটার প্রশস্ত ইস্টার্ন লিঙ্ক এক্সপ্রেসওয়ে ও হলদিয়া ও নন্দীগ্রামকে সংযোগকারী হলদি নদীর উপর একটি চার লেনের সড়কসেতু নির্মানেরও পরিকল্পনাও গৃহীত হয়। প্রস্তাবিত সেতুটির হলদিয়া ও নন্দীগ্রামে প্রস্তাবিত সেজ-এর মধ্যে সংযোগ রক্ষা করার কথা ছিল।[11] বারাসাত-রায়চক এক্সপ্রেসওয়ে ও রায়চক-কুকড়াহাটি সেতুর দ্বারা হলদিয়ার সঙ্গে ৩৪ নং জাতীয় সড়ককে যুক্ত করার কথাও ছিল।
তবে সালেম গোষ্ঠীকে এক্সপ্রেসওয়ের বরাত দেওয়ার সিদ্ধান্তটিও ছিল বিতর্কিত।[12] কারণ, কার্যকারিতা সমীক্ষা[13] সহ এই প্রকল্পের প্রাথমিক কাজগুলি করার বরাত এর আগে দেওয়া হয় স্বনামধন্য জাপান ইন্টারন্যাশানাল কর্পোরেশন এজেন্সি (জেআইসিএ)-কে।[14] মুখ্যমন্ত্রী সর্বসমক্ষে প্রকল্পটি ঘোষণার আগে পর্যন্ত জেআইসিএ-কে এই ব্যাপারে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রাখা হয়েছিল।[15]
হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদ ২০০৭ সালের ৩ জানুয়ারি তারিখে জমি অধিগ্রহণের নোটিশ জারি করে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই পর্ষদের চেয়ারম্যান হলদিয়ার স্থানীয় সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠ। যদিও পরে মুখ্যমন্ত্রী মৌখিকভাবে[16] জানিয়েছিলেন যে তিনি এই নোটিশের ব্যাপারে অবগত ছিলেন না। কিন্তু কোনো পরবর্তী নোটিশ জারি করে উক্ত নোটিশটি খারিজ করা হয়নি। অনেক পরে সিপিআই(এম)-এর ইংরেজি মুখপত্র পিপলস ডেইলি-র ১৮ নভেম্বর, ২০০৭ সংখ্যায় লেখা হয়েছিল যে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন কেমিক্যাল হাব নন্দীগ্রামে হবে না ; হবে হুগলির মোহনার কাছে অবস্থিত নয়াচর নামে একটি জনবিরল নদীচরে। যাই হোক, প্রস্তাবিত হাবের জন্য জমি অধিগ্রহণের ইস্যুতে নন্দীগ্রাম অশান্ত হয়ে ওঠে। এদিকে জমি হারানোর ভয়ে গ্রামবাসীরা সন্ত্রস্ত হয়ে আন্দোলনে সামিল হন। রাস্তাঘাট খুঁড়ে, সংযোগকারী তার কেটে ফেলে নন্দীগ্রামকে জমি অধিগ্রহণ সহ সকল প্রকার সরকারি হস্তক্ষেপরহিত এক মুক্তাঞ্চল বলে ঘোষণা করা হয়।[17]
ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি
"ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরক্ষা কমিটি" (বিইউপিসি) নন্দীগ্রামের সেজ-বিরোধী কৃষক আন্দোলনের নেতৃস্থানীয় যৌথ সংগঠন। ২০০৭ সালের ৫ জানুয়ারি এই অঞ্চলের তিনটি সেজ-বিরোধী সংগঠন যৌথভাবে আন্দোলন পরিচালনার লক্ষে একত্রিত হয়ে এই কমিটি গড়ে তোলেন। যে তিনটি সংগঠন নিয়ে বিইউপিসি গঠিত হয়, সেগুলি হল ২০০৬ সালের অগস্ট মাসে এসইউসিআই ও ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠিত 'কৃষক উচ্ছেদ বিরোধী ও জনস্বার্থ রক্ষা কমিটি', সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস প্রতিষ্ঠিত 'কৃষি জমি রক্ষা কমিটি' এবং জামাত-এ-উলেমা-এ-হিন্দ ও পিসিসি, সিপিআই(এমএল) প্রতিষ্ঠিত 'গণ উন্নয়ণ ও জন অধিকার সংগ্রাম সমিতি'।[18][19] বিইউপিসি-র আহ্বায়ক ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক শিশির অধিকারী[20] ও যুগ্মসচিব ছিলেন এসইউসিআই নেতা নন্দ পাত্র।[21]
২০০৭ সালের ১৪ মার্চের ঘটনা
প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয় নন্দীগ্রামে বিইউপিসি-র প্রতিরোধ গুঁড়িয়ে দেওয়ার জন্য। ৩০০০ পুলিশ সমন্বিত এক বিশাল বাহিনীর অভিযান চালানো হয়। সঙ্গে যোগ দেয় পুলিশের ইউনিফর্মে সজ্জিত একদল সশস্ত্র ও প্রশিক্ষিত সিপিআইএম ক্যাডার।[22] যদিও অভিযানের সংবাদ জানাজানি হওয়ায় বিইউপিসি-ও প্রায় ২০০০ গ্রামবাসীকে একত্রিত করে প্রতিরোধ বাহিনী গড়ে তোলে। যাদের সম্মুখভাগে রাখা হয় মহিলা ও শিশুদের। এই প্রতিরোধ বাহিনীর উপর পুলিশ গুলি চালালে অন্তত পক্ষে চোদ্দো জনের মৃত্যু হয়।[23]
এই গণহত্যা সংগঠনের অব্যবহিত পরেই চিকিৎসকদের একটি স্বেচ্ছাসেবী দল নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্যকেন্দ্র, তমলুকের জেলা হাসপাতাল ও পরে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতাল পরিদর্শন করে একটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট প্রস্তুত করেন।[24]
সিপিআইএম-এর ক্যাডাররা গ্রামে ঢোকার পথে “চেকপোস্ট” বসিয়ে সাংবাদিকদের গতি রুদ্ধ করেন।[25] অল্প কয়েকজন সাংবাদিকই মূল ঘটনাস্থলে পৌঁছতে পেরেছিলেন। একটি নিউজ চ্যানেলের দুই সাংবাদিককে সাময়িকভাবে অপহরণও করা হয়।[26]
ঘটনার ভয়াবহতায় সমগ্র রাজ্য স্তম্ভিত হয়ে যায়। তৃণমূল কংগ্রেস পঞ্চাশজন মৃত বলে দাবি করে। বামফ্রন্টের অন্যতম শরিক রেভোলিউশনারি সোশালিস্ট পার্টি সদস্য তথা পুর্তমন্ত্রী ক্ষিতি গোস্বামীও জানান ৫০টি দেহ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে প্রকৃতপক্ষে কত জন মারা গিয়েছেন তা বলা যাচ্ছে না।[27] এর প্রতিক্রিয়ায় অঞ্চলের মানুষ সিপিআইএম সমর্থকদের ও তাদের পরিবারবর্গকে এলাকা থেকে বের করে দিয়ে তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিতে থাকে। ১৪ মার্চের সংঘর্ষের এক সপ্তাহ পর দ্য হিন্দু পত্রিকার হিসেব অনুযায়ী দেখা যায় ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির ভয়ে প্রায় ৩৫০০ জন আশ্রয় নিয়েছেন শরণার্থী শিবিরে।[28]
সিপিআইএম অবশ্য হিংসা ছড়ানোর জন্য জমি অধিগ্রহণ বিরোধী সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চ ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটিকেই দায়ী করে। তারা অভিযোগ করে কমিটি শরণার্থী শিবিরে আক্রমণ চালানোয় তিন জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং একটি গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।[29]
নন্দীগ্রামে নতুন করে হিংসাত্মক ঘটনার সূত্রপাত হয় ২৯ এপ্রিল। ফলে পশ্চিমবঙ্গ মানবাধিকার কমিশনকে নিয়োগ করা হয় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য।[30] কলকাতা থেকে বিদ্বজ্জন ও নাট্যব্যক্তিত্বদের একটি প্রতিনিধিদল রাজ্যের নানা জায়গা থেকে সংগৃহীত ত্রাণসামগ্রী নন্দীগ্রামে পৌঁছে দিয়ে ফেরার পথে সিপিআইএম-এর ক্যাডারবাহিনীর দ্বারা আক্রান্ত হয়।[31]
নন্দীগ্রামের এই গণহত্যা ভারতের বামপন্থীদের কার্যকলাপ নিয়ে একটি বিরাট বিতর্কের জন্ম দেয়।[32] কারণ, যুক্তরাষ্ট্রীয় তদন্ত সংস্থা ঘটনাস্থল থেকে যে বুলেটগুলি উদ্ধার করে, তা পুলিশের ব্যবহার্য বুলেট নয়। এই ধরনের বুলেটের বহুল ব্যবহার দেখা যায় কেবলমাত্র অপরাধ দুনিয়াতেই।[33]
প্রতিক্রিয়া
পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল তথা মহাত্মা গান্ধীর পৌত্র গোপালকৃষ্ণ গান্ধী একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে নন্দীগ্রামে রাজ্য সরকার কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেন। তার বক্তব্যকে “স্বতঃপ্রবৃত্ত গ্রাহ্যতা” বা suo moto cognisance ধরে নিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনকে (সিবিআই) তদন্তের কাজে নিয়োগ করেন।[34] যদিও পরে সিবিআইকেও ঠিকমতো তদন্ত করতে না পারায় জন্য দোষারোপ করা হয়।[35]
ভূতপূর্ব মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল র্যাম্জি ক্লার্ক নন্দীগ্রামের ঘটনাকে বর্ণনা করেন “বর্বরোচিত ও গ্রহণ অযোগ্য” বলে। তিনি তার বক্তব্যে সিপিআইএম চালিত বামফ্রন্ট সরকারের নীতিকে প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ চালিত মার্কিন প্রশাসনের নীতির সঙ্গে তুলনা করেন।[36][37] তিনি সোশ্যালিস্ট ইউনিটি সেন্টার অফ ইন্ডিয়া (এসইউসিআই) নেতৃবৃন্দের সঙ্গে এই অঞ্চল ঘুরে দেখেন এবং সকল স্তরের শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষদের নন্দীগ্রাম ও অন্যান্য অঞ্চলে প্রসারিত দলীয় সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে আহ্বান করেন।[38]
প্রবীন সিপিআইএম নেতা ও প্রাক্তন বামফ্রন্ট অর্থমন্ত্রী ডক্টর অশোক মিত্র সরকার ও তার দলের সমালোচনা করে বলেন যে নন্দীগ্রামের ঘটনা নিয়ে মুখ বন্ধ রাখলে আমৃত্যু তিনি বিবেকের কাছে অপরাধবোধে বিদ্ধ হবেন। তিনি বলেন, সিপিআইএম নেতৃবৃন্দ লোভে অন্ধ হয়ে গেছেন। আর পার্টিও পরিণত হয়েছে সমাজবিরোধীদের দ্বারা চালিত তোষামোদকারী ও ভাঁড়েদের খোলা মাঠে।[39]
দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকার সম্পাদকীয়তে লেখা হয়, পার্টির গঠনযন্ত্র পরিণত হয়েছে “এমন এক অর্থনৈতিক নীতি কার্যকর করার তরবারিতে যেটি সম্পত্তির অধিকার সংক্রান্ত জটিল সমস্যাগুলির জন্ম দিচ্ছে।” [40]
বিশিষ্ট ঔপণ্যাসিক তথা মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বন্ধু সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় রাজ্যে শিল্পায়নের প্রয়োজনীয়তার কথা বললেও এই রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসকে বর্বরোচিত বলে মনে করেন।[41] সমাজসেবী মেধা পাটকর ২০০৬ সালের ৭ ডিসেম্বরেই জমি অধিগ্রহণের বিরোধিতা করে নন্দীগ্রাম ঘুরে যান।[42] পরে ১৪ মার্চের গণহত্যার পর অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও প্রতিবাদ আন্দোলনে সামিল হন। তাদের মধ্যে ছিলেন ম্যাগসেসে ও জ্ঞানপীঠ পুরস্কার জয়ী সাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবী, বুকার পুরস্কার জয়ী সাহিত্যিক অরুন্ধতী রায়, চিত্র-পরিচালক ও অভিনেত্রী অপর্ণা সেন, নাট্যব্যক্তিত্ব শাঁওলি মিত্র ও বিভাস চক্রবর্তী, চিত্রকর শুভাপ্রসন্ন, সংগীতশিল্পী কবীর সুমন প্রমুখ।
এরপরে সিপিআইএম সর্বসমক্ষে ঘোষণা করে, নন্দীগ্রামে অধিবাসীদের সম্মতি ছাড়া জমি অধিগ্রহণ করা হবে না। প্রস্তাবিত সেজটির রূপায়নও এই পুলিশ অভিযানের ফলে স্থগিত করে দেওয়া হয়।[43] যদিও স্থানীয়, জেলা ও রাজ্য প্রশাসন বলতে থাকে যে নন্দীগ্রামেই প্রস্তাবিত প্রকল্পটির কাজ শুরু হবে। পুর্তমন্ত্রী ক্ষিতি গোস্বামীও সিপিআইএম-এর বিরোধিতা করে বলেন, সেই দল নন্দীগ্রামে প্রতিবাদ সত্ত্বেও সেজ স্থাপনের চেষ্টা চালাচ্ছে।[44]
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সরকারের ১৪ মার্চের অভিযানের শেষ পরাজয়টি ঘটে কলকাতা হাইকোর্টে। ২০০৭ সালের ১৬ নভেম্বর বিচারপতি এস এস নিঝ্ঝর ও বিচারপতি পিনাকীচন্দ্র ঘোষের এক যৌথ বেঞ্চ ঘোষণা করেন,
“ | ১৪ মার্চ, ২০০৭ তারিখে পুলিশ বিভাগ নন্দীগ্রামে যে গুলিচালনার ঘটনা ঘটিয়েছে, তা সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক ও আইনের কোনো ধারা অনুসারে বিধিবদ্ধ নয়।... সার্বভৌম প্রতিবাদের ক্ষেত্রে পুলিশের এই কাজকে ছত্রছায়া দান বা যথাযথ বলে বিবেচনা করা চলে না।... এই কাজ অপরাধী কার্যক্রম বিধির কোনো ধারা বা ১৮৬১ সালের পুলিশ আইন অথবা ১৯৪৩ সালের পুলিশ রেগুলেশন দ্বারা সমর্থিত নয়।... আমরা পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে এই মর্মে নির্দেশ দিচ্ছি ১৪ মার্চ, ২০০৭ রারিখে পুলিশের গুলিচালনায় মৃতের ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারবর্গকে প্রতিক্ষেত্রে অবিলম্বে পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিক।... আমরা রাজ্য সরকারকে এই ঘটনায় ব্যক্তিদেরও অবিলম্বে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিচ্ছি এবং সেই ক্ষতিপূরণের অর্থমূল্য এক লক্ষ টাকার কম হওয়া উচিত নয়।... এছাড়াও আমরা রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিচ্ছি, যাঁরা এই ঘটনায় ধর্ষিতা হয়েছেন তাঁদের যথাযথভাবে চিহ্নিত করে প্রত্যেককে দুই লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার। | ” |
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশানাল এই মর্মে উদ্বেগ প্রকাশ করেন যে পশ্চিমবঙ্গ সরকার সকল রাজ্যবাসীকে জোর করে উৎখাত ও অঞ্চলছাড়া করার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না। যাঁরা হিংসাত্মক ঘটনার প্রেক্ষিতে জমি থেকে উৎখাত হচ্ছেন তারাও জীবনধারণের জন্য ন্যূনতম প্রয়োজনীয় খাদ্য, আশ্রয়, জল ও শৌচালয় পরিষেবা, স্বাস্থ্য পরিষেবা, শিক্ষার সুযোগ এবং তারই সঙ্গে নিঃশর্ত প্রত্যাবর্তন, পুণরায় বসতিস্থাপন ও সমন্বয়ের অধিকার লাভে বঞ্চিত হচ্ছেন।[45]
স্থান পরিবর্তন
এই রক্তক্ষয়ী হিংসাত্মক ঘটনার পরে জমি অধিগ্রহণ বিতর্ক নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস ও সোশ্যালিস্ট ইউনিটি সেন্টার অফ ইন্ডিয়া (এসইউসিআই) প্রভৃতি বিরোধী দল ও আরএসপি, ফরওয়ার্ড ব্লক প্রভৃতি বাম শরিক দলগুলির ক্রমাগত চাপে মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ৩ সেপ্টেম্বর কেমিক্যাল হাবের স্থান হিসেবে সরকারের নতুন পছন্দের জায়গার কথা ঘোষণা করেন। এই জায়গাটি হলদিয়া থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে নয়াচর নামে একটি জনবিরল দ্বীপে অবস্থিত।[46][47]
২০০৭ সালের নভেম্বর মাসের হিংসাত্মক ঘটনা
২০০৭ সালের নভেম্বর মাসে ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি যাঁদের গ্রাম ছাড়া করেছিল, তারা গ্রামে ফিরতে শুরু করলেই নন্দীগ্রামে নতুন করে হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। সেজ প্রকল্প বাতিল হয়ে যাওয়ার পরেও বিইউপিসি নন্দীগ্রামকে কার্যত মুক্তাঞ্চল করেই রেখে দেয়। এই সময় শাসকদলের ক্যাডারদের সঙ্গে বিইউপিসি-র ক্যাডাররা সংঘাতে জড়িয়ে পড়লে আবার হিংসাত্মক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এই প্রত্যাবর্তনকে গণমাধ্যম ব্যাখ্যা করেছিল সিপিআইএম-এর নন্দীগ্রাম “পুনর্দখল” হিসেবে।[48] বিভিন্ন তথ্যপ্রমাণ থেকে জানা যায়, রাজ্য প্রশাসনকে সম্পূর্ণ অকার্যকর করে রেখে পার্টির পক্ষ থেকে এই অভিযান চালানো হয়েছিল। পার্টি এই অভিযানের শুধু প্রশংসাই করেনি, পার্টি চেয়ারম্যান একে “নতুন সূর্যোদয়” ও মুখ্যমন্ত্রী এটিকে “ওদের ইঁটের বদলে পাটকেল ছোঁড়া” বলে বর্ণনা করেন।[49] শেষ মন্তব্যটি প্রাথমিকভাবে সম্ভবত মাওবাদীদের উদ্দেশ্য করে করা হয়, যাঁরা, সিপিআইএম-এর দাবি অনুযায়ী, নন্দীগ্রামে সক্রিয় ছিল। কিন্তু সরকার এই দাবি সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন।[50] ঘটনাটিকে “লাল সন্ত্রাস”-এর অন্যতম বলে বর্ণনা করা হয়।[51] ভারতের মানবাধিকার কমিশনকে লিখিত একটি বার্তায় মেধা পাটকর বলেন, নন্দীগ্রামের এই সংঘর্ষ পরিস্থিতি ওই অঞ্চলে হাজার হাজার সিপিআইএম ক্যাডারদের অবস্থানের কারণেই বজায় আছে। পুলিশ অফিসাররা ওই অঞ্চলে উপস্থিত আছেন বটে, কিন্তু তারাও নন্দীগ্রাম আক্রমণের কর্মসূচিটি সমর্থন করছেন।[52]
এই নতুন ঘটনার পর জাতীয় স্তরে প্রতিবাদ শুরু হয়।[53] ১২ নভেম্বর, ২০০৭ তারিখে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে নন্দীগ্রামের পরিস্থিতির উপর একটি তথ্যগত রিপোর্ট পেশ করতে বলে।[54] চিত্রপরিচালক অপর্ণা সেন ও ঋতুপর্ণ ঘোষ প্রতিবাদে কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসব বয়কট করেন।[55] অপর্ণা সেন বলেন, “নন্দীগ্রাম কসাইখানায় পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন সেখানে রক্তপাত ঘটছে। সিপিএম এখনও সবকিছুর নিয়ন্ত্রক হতে পারে, কিন্তু রাজ্যটা আমাদের।” [55]
ভারতের সংসদ নন্দীগ্রামের বিষয়টি গুরুত্বসহকারে আলোচনার সিদ্ধান্ত নেয়। সিপিআইএম ও বিরোধীদলের সংসদদের মধ্যে দুই দিন বিবাদ ও অচলাবস্থা চলার পর ২১ নভেম্বর, ২০০৭ তারিখে নিয়মিত প্রশ্নোত্তর পর্বের সময় ছেঁটে এই নিয়ে আলোচনা হয়। ইউপিএ সদস্য সহ সব দল গণহত্যার বিরুদ্ধে সমগ্র জাতির ধিক্কারকে সমর্থন করলে সিপিআইএম একঘরে হয়ে পড়ে।[56]
২০০৮ সালের হিংসাত্মক ঘটনা
২০০৮ সালের মে মাসে আবার ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি ও সিপিআইএম কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে নতুন করে হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। দুই পক্ষ থেকেই অপর পক্ষের দিকে ব্যাপক বোমাবাজি ও গুলি ছোঁড়া হয়।[57]
৫ মে সিপিআইএম-এর মিছিলে যেতে অনিচ্ছুক তিন মহিলার শ্লীলতাহানি ঘটানো হয়।[58][59] এর বিরুদ্ধে ব্যাপক রাজনৈতিক ও নাগরিক বিক্ষোভের মুখে দাঁড়িয়ে রাজ্য সরকার ঘটনার পূর্ণাঙ্গ সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দেয়।[60][61] সিপিআইএম নেতৃত্ব অভিযোগ অস্বীকার করে একে অপপ্রচারমূলক প্রচারাভিযান বলে বর্ণনা করে।[59].
কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি এবং অপর্ণা সেন সহ বিদ্বজ্জন সমাজের এক প্রতিনিধি দল দুটি পৃথক প্রেস বক্তব্যে দাবি করেন নন্দীগ্রামে অনুষ্ঠিতব্য পঞ্চায়েত নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া হোক। কারণ, এই সন্ত্রাসের পরিমণ্ডলে ভোট হলে তা আদৌ শান্তিপূর্ণ ও অবাধ হবে না।[62]
২০০৮ সালের নির্বাচন
পঞ্চায়েত নির্বাচন
নন্দীগ্রামের ভোটাররা কৃষিজমি অধিগ্রহণ করে সরকারি শিল্পায়ন নীতি এবং অন্যান্য সন্ত্রাস সৃষ্টির প্রক্রিয়াকে সমর্থন করলেন না। ১১ মে, ২০০৮ তারিখে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিরোধী দল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের ৫৩টি আসনের মধ্যে ৩৫টি দখল করে নিল। যা বামশাসিত পশ্চিমবঙ্গের ইতিহাসে এক অভাবনীয় ঘটনা। এর আগে ২০০৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল ৫১টির মধ্যে মাত্র দুটি আসন জিতেছিল। ভোটের ফল দাঁড়ায়: তৃণমূল কংগ্রেস – ৩৫, এসইউসিআই – ১, সিপিআইএম – ১৪, সিপিআই – ২ ও ডিএসপি – ১। নন্দীগ্রাম ১ ও নন্দীগ্রাম ২ ব্লকের চারটি কেন্দ্রে কেমিক্যাল হাবের জন্য জমি অধিগ্রহণের কথা ছিল। এই চারটি আসনেই একজন হেভিওয়েট নেতা সহ সব সিপিআইএম প্রার্থীরা তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীদের হাতে পরাস্ত হন। তৃণমূল সমর্থিত বিইউপিসি নেতা শেখ সুফিয়ান সিপিআইএম প্রার্থী অশোক জানাকে তেরো হাজারেরও বেশি ভোটে হারান। অন্যদিকে অপর তৃণমূল নেতা পীযূষ ভূঁইয়া সিপিআইএম জোনাল কমিটি সেক্রেটারি অশোক বেরাকে একুশ হাজারেরও বেশি ভোটে পরাস্ত করেন।[63]
বিধানসভা উপনির্বাচন
তৃণমূল কংগ্রেসের ফিরোজা বিবি বিধানসভা উপনির্বাচনে বামফ্রন্ট প্রার্থী পরমানন্দ ভারতীতে ৩৯,৫৫১ ভোটের ব্যবধানে পরাস্ত করে নন্দীগ্রামের বিধায়ক নির্বাচিত হন। উল্লেখ্য ফিরোজা বিবির কিশোর পুত্র ২০০৭ সালের ১৪ মার্চে নন্দীগ্রাম গণহত্যায় নিহত হয়েছিল।[64],[65]
আরও দেখুন
- আবাহলালি বেসএমজনডোলো, দক্ষিণ আফ্রিকা
- ইজেডএলএন, মেক্সিকো
- ফানমি লাভালাস, হাইতি
- হোমলেস ওয়ার্কার্স মুভমেন্ট, ব্রাজিল
- ল্যান্ডলেস পিপলস মুভমেন্ট, দক্ষিণ আফ্রিকা
- ল্যান্ডলেস ওয়ার্কার্স মুভমেন্ট, ব্রাজিল
- নর্মদা বাঁচাও আন্দোলন, ভারত
- পশ্চিম অন্তরীপ উচ্ছেদ-বিরোধী প্রচারাভিযান, দক্ষিণ আফ্রিকা
তথ্যসূত্র
- For more information on the Salim Group please see Sudono Salim
- Asia Week
- Far Easter Economic Review October 1998
- The Telegraph, 4 January 2007
- "The Statesman, 15 November 2006"। ১৩ জানুয়ারি ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০০৯।
- "The Statesman, 7 January 2007 Nandigram forms anti-landgrab front"। ১৩ জানুয়ারি ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০০৯।
- "Tehelka.com, August 26 2006"। ৫ এপ্রিল ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০০৯।
- "The Statesman"। ১৩ জানুয়ারি ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০০৯।
- "CPI (M) org"। ২৩ নভেম্বর ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০০৯।
- One India 16 June 2006
- "The Hindu Business Line, 1 August 2006"। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০০৯।
- The Telegraph, 03 August 2006 Double-deal bridge ache
- "JICA" (PDF)। ২৮ সেপ্টেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০০৯।
- JICA For more information on JICA visit the JICA website
- The Indian Express, 09 September 2006
- The Hindu January 10, 2007
- Sub-Inspector killed in Nandigram, The Hindu February 08, 2007
- Microsoft Word - full report_wtfig
- Nandigram: Scare still looms large
- Peace returns to Nandigram, Khejuri after war-like situation
- The Statesman
- The Telegraph
- "Red-hand Buddha: 14 killed in Nandigram re-entry bid"। The Telegraph। 15 March 2007। সংগ্রহের তারিখ 2007-03-15। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - Medical Team Report from Nandigram with names, locations, and injuries - April 5.
- The Times of India 15 March 2007 Nandigram: Mediapersons roughed up by CPM activists
- Tara TV
- Nandigram turns Blood Red
- The Hindu : National : Nandigram victims narrate their tales of woe
- "nandigram"। ৩ জুলাই ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০০৯।
- Zee News
- "Sify"। ২৭ সেপ্টেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০০৯।
- "Nandigram and the deformations of the Indian left"। International Socialism। 2 July 2007। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - BBC
- "The Statesman"। ১৪ নভেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০০৯।
- "The Statesman"। ১৪ নভেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০০৯।
- "Nandigram people's struggle "heroic" : Clark"। ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০০৯।
- Nandigram says 'No!' to Dow's chemical hub
- Ramsey Clark's visit to Nandigram
- Dr. Ashok Mitra (Former Left Front Finance Minister) on Nandigram
- Indian Express
- "Daily India"। ১৩ জানুয়ারি ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০০৯।
- India eNews.com 7 December 2006
- "The Statesman"। ২৯ সেপ্টেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০০৯।
- WB PWD Minister against CPI(M)
- "Report on Nandigram by Amnesty International: Urgent need to address large scale human rights abuses during Nandigram recapture"। ২৮ মে ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০০৯।
- Nandigram Chemical hub shifted
- Nandigram will remain a black mark
- "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২৩ নভেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০০৯।
- NDTV November 14, 2007
- "Sify.com November 13, 2007"। নভেম্বর ১৬, ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ জানুয়ারি ১৬, ২০০৯।
- "Red terror continues Nandigram's bylanes"।
- "NHRC sends notice to Chief Secretary, West Bengal, on Nandigram incidents: investigation team of the Commission to visit the area"। ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০০৯।
- Nandigram | Top News
- "National Human Rights Commission"। ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০০৯।
- "CPM cadres kill 3 in Nandigram"। ১৭ এপ্রিল ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০০৯।
- Lok Sabha to discuss Nandigram today
- Fresh violence in Nandigram, two injured. The Times of India. 5 May 2008.
- CPM mob strips woman in Nandigram, probe on. The Times of India. 7 May 2008.
- Women activists blame CPM of beating in Nandigram. Economic Times. 7 May 2008.
- CID probe ordered into stripping of women at Nandigram. Sify News. 7 May 2008.
- Intellectuals Meet West Bengal Poll Panel Over Nandigram. News Post India. 7 May 2008.
- Fresh attempt to cut off Nandigram.The Hindu. 7 May 2007
- ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৫ জুলাই ২০০৯ তারিখে ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৫ জুলাই ২০০৯ তারিখে. The Statesman.
- Nandigram nightmare continues for CPM, Trinamool wins Assembly bypoll
- Trinamool Congress wins Nandigram assembly by-election
বহিঃসংযোগ
- Most comprehensive database on "Nandigarm" at Sanhati
- "Nandigram" photos, links to videos, reports - a comprehensive archive at Counterviews
- Nandigram links, photos, videos and regular updates from Sacred Media Cow
- Nandigram Information - facts, details, accounts - updated regularly
- Nandigram Documentary by Medical Service Centre
- Lessons from Nandigram : What Next
- Arundhathi Roy says CM used Taslima to shift focus from Nandigram
- Sara Flounders member of the Workers World Party secretariat speaks of her experience after visiting Nandigram
- Nandigram Movement Timeline