জেফ স্টলমেয়ার

জেফ্রি ব্যাক্সটার স্টলমেয়ার (ইংরেজি: Jeff Stollmeyer; জন্ম: ১১ মার্চ, ১৯২১ - মৃত্যু: ১০ সেপ্টেম্বর, ১৯৮৯) ত্রিনিদাদের সান্তা ক্রুজ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী প্রথিতযশা ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যানের দায়িত্ব পালন করতেন। পাশাপাশি লেগ ব্রেক গুগলি বোলিংয়েও পারদর্শী ছিলেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে ৩২ টেস্টে অংশগ্রহণ করে ১৩টিতেই অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছিলেন জেফ স্টলমেয়ার। এছাড়াও তিনি সিনেটর ছিলেন।[2]

জেফ্রি স্টলমেয়ার
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামজেফ্রি ব্যাক্সটার স্টলমেয়ার
জন্ম(১৯২১-০৩-১১)১১ মার্চ ১৯২১
সান্তা ক্রুজ, ত্রিনিদাদ
মৃত্যু১০ সেপ্টেম্বর ১৯৮৯(1989-09-10) (বয়স ৬৮)
মেলবোর্ন, ফ্লোরিডা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনলেগ ব্রেক গুগলি
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় পার্শ্ব
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৪৭[1])
২৪ জুন ১৯৩৯ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টেস্ট২৬ এপ্রিল ১৯৫৫ বনাম অস্ট্রেলিয়া
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৩২ ১১৭
রানের সংখ্যা ২১৫৯ ৭৯৪২
ব্যাটিং গড় ৪২.৩৩ ৪৪.৬১
১০০/৫০ ৪/১২ ১৪/৩৮
সর্বোচ্চ রান ১৬০ ৩২৪
বল করেছে ৯৯০ ৪৪১৩
উইকেট ১৩ ৫৫
বোলিং গড় ৩৯.০০ ৪৫.১২
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৩/৩২ ৩/৩২
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ২০/০ ৯২/০
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

খেলোয়াড়ী জীবন

১৯৩৯ সালে ইংল্যান্ড সফরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে লেসলি হিল্টনের উপেক্ষার বিষয়টি জ্যামাইকার গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিবাদের ঝড় উঠে। ত্রিনিদাদের কুইন্স পার্ক ক্লাবের প্রভাব এ সফরে পড়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। তার পরিবর্তে ১৮ বছর বয়সী ত্রিনিদাদীয় নবীন ব্যাটসম্যান হিসেবে জেফ্রি স্টলমেয়ারকে স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছিল।

আঠারো বছর বয়সে প্রথম টেস্ট খেলায় অংশগ্রহণ করেন। স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লর্ডসে অনুষ্ঠিত অভিষেক ইনিংসটিতে ৫৯ রান তুলেন তিনি। ১৯৫১-৫২ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া সফরে পঞ্চম টেস্টে দলের অধিনায়কত্ব করার গৌরব অর্জন করেন। নিয়মিত অধিনায়ক জন গডার্ডের স্থলাভিষিক্ত হন তিনি। জেফ স্টলমেয়ার দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করলেও ২০২ রানে পরাজিত হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল। তাস্বত্ত্বেও দলকে ৪-১ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে। পরবর্তী তিন সিরিজেও এ দায়িত্ব পালন করেছিলেন। সবগুলো সিরিজই নিজ দেশে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

মেলবোর্নের চতুর্থ টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এক উইকেটের জয়ে বিতর্ক শুরু হয়। গডার্ড স্টলমেয়ারের সাথে ফিল্ডিং করা থেকে বিরত থাকেন ও জেরি গোমেজ বল করতে অস্বীকৃতি জানান ও ৩৯ ওভার বোলিংকারী সনি রামাদিন ৩ উইকেট পেলেও রাগে অগ্নিশর্মা ধারন করে মাঠ থেকে চলে যান। এ সফরের পর ভারত, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড সফরে দলের সহঃ অধিনায়কের দায়িত্ব পালনকারী স্টলমেয়ার বলেন যে, ১৯৫০ সালের সফরে দলের সফলতায় জন গডার্ডই কেবলমাত্র নিজের কৃতিত্ব প্রদর্শনে অগ্রসর হয়েছেন। দলের অন্যান্য জ্যেষ্ঠ খেলোয়াড়েরা এ কৃতিত্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। তার এ মন্তব্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে দীর্ঘস্থায়ী মনোবল হারায় ও দ্বিধাবিভক্তিতে ফেলে দেয়। ১৯৫৭ সালে গডার্ডকে ইংল্যান্ড সফরে অধিনায়কের দায়িত্ব দেয়া হলে স্টলমেয়ার চিরতরে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটকে বিদায় জানান।

অবসর

খেলোয়াড়ী জীবন শেষে স্টলমেয়ার দীর্ঘদিন ধরে ক্রিকেট প্রশাসনে বর্ণাঢ্যময় জীবনে অতিবাহিত করেন। ১৯৭৪ থেকে ১৯৮১ সময়কালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ কন্ট্রোল বোর্ডের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। এ সময়ে অনুষ্ঠিত ক্যারি প্যাকারের বিশ্ব সিরিজ ক্রিকেট প্রতিযোগিতার তীব্র বিরোধিতা করেন। ১৯৭৯ সালে ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর চাকোনিয়া স্বর্ণপদক পান। ১৯৮৩ সালে ‘এভরিথিং আন্ডার দ্য সান’ শিরোনামীয় আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ প্রকাশ করেন। জুন, ১৯৮৮ সালে বার্বাডোস ক্রিকেট বাকলের পার্শ্বে $২.৫০ ত্রিনিদাদ ও টোবাগো স্ট্যাম্পে তার প্রতিকৃতি থাকে।

লেসলি হিল্টনের দূর্ভাগ্যজনক মৃত্যুর বিষয়ে লিয়ারি কনস্ট্যান্টাইন তার বিভিন্ন ক্রিকেটবিষয়ক লেখনীর কোনটিতেই প্রসঙ্গ টেনে আনেননি।[3] শুধুমাত্র হিল্টনের সমসাময়িক হিসেবে তিনি সংক্ষিপ্ত আকারে হিল্টনের সম্পর্কে কলম ধরেছিলেন।[4]

ব্যক্তিগত জীবন

পোর্ট অব স্পেনের নিজ বাড়ী থেকে কিছুটা দূরে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি তাকে পাঁচবার গুলি ও মাথায় আঘাত করলে তিনি গুরুতরভাবে আহত হন।[5] এরপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা এলাকার মেলবোর্নের একটি হাসপাতালে ১০ সেপ্টেম্বর, ১৯৮৯ তারিখে ৬৮ বছর বয়সে তার দেহাবসান ঘটে। স্টলমেয়ারের ছোট ভাই ভিকও টেস্ট ক্রিকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে খেলতেন। অপর ভাই হিউ ত্রিনিদাদের অন্যতম চিত্রকর ছিলেন ও ক্যারিবীয় চিত্রকলা আন্দোলনের অন্যতম প্রভাববিস্তারকারী। স্টলমেয়ারের ভাইপো জন সাবেক ফুটবলার হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে ৩১ খেলায় অংশ নেন।[6]

তথ্যসূত্র

  1. "List of West Indies Test Cricketers"Cricinfo (ইংরেজি ভাষায়)।
  2. "Jeffrey Stollmeyer at Cricinfo"Cricinfo (ইংরেজি ভাষায়)।
  3. Browne 2012
  4. Stollmeyer 1983, পৃ. 38–40।
  5. "Stollmeyer's obituary in 1990 Wisden"Cricinfo (ইংরেজি ভাষায়)।
  6. William Gildea (৭ জুন ১৯৯০)। "U.S. Cup Trio Goes Right to the Top for Help"The Washington Post (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

আরও দেখুন

বহিঃসংযোগ

পূর্বসূরী
জন গডার্ড
ওয়েস্ট ইন্ডিজের টেস্ট ক্রিকেট অধিনায়ক
১৯৫১/৫২ - ১৯৫৪/৫৫
উত্তরসূরী
ডেনিস অ্যাটকিনসন
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.