উমর (টিভি ধারাবাহিক)

ওমর (ইংরেজি: Omar); (আরবি: عُمَرْ) অথবা ফারুক ওমর (ফার্সি: عمر فاروق) হল একটি ঐতিহাসিক আরব টেলিভিশন ড্রামা সিরিজ যেটি প্রযোজনা এবং সম্প্রচার করেছিল মিডিল ইস্ট ব্রডকাস্টিং সেন্টার-১। সিরিজটি পরিচালনা করেন সিরিয়ান পরিচালক হাতিম আলী।

উমর
ওমর
ধরণইতিহাস, জীবনী, নাটক
রচনাওয়ালিদ সাঈফ
পরিচালকহাতেম আলী
অভিনয়েঘাসান মাসউদ, সামির ইসমাইল
কণ্ঠ প্রদানকারীআসাদ খালিফা
রচয়িতাফাহির আতাকোগলু
প্রস্তুতকারক দেশআরব বিশ্ব
মূল ভাষাআরবী
মৌসুম সংখ্যা
পর্বসংখ্যা৩১
নির্মাণ
প্রযোজকমিডল ইস্ট ব্রডকাস্টিং সেন্টার, কাতার টিভি, নিসমা টিভি
অবস্থানসৌদি আরব, মরোক্কো
ব্যাপ্তিকাল৪৫ মিনিট
সম্প্রচার
মূল চ্যানেলমিডিল ইস্ট ব্রডকাস্টিং সেন্টার-১
ছবির ফরম্যাটএইচডিটিভি
মূল প্রদর্শনী0২০১৯-07-20জুলাই ২০
ক্রমধারা
পরবর্তীআহমাদ ইবনে হাম্বল

একত্রিশ পর্বের এই সিরিজটি ইসলাম ধর্মের দ্বিতীয় খলিফা হযরত ওমর ফারুক (রাঃ)-এর জীবনের আঠারো বছর থেকে শুরু করে মৃত্যুকালীন সময়ের মধ্যকার প্রবাহমান প্রাসঙ্গিক ও পারিপার্শীয় সমসাময়িক ঘটনাবলির উপর ভিত্তি করে নির্মাণ করা হয়। এই ধারাবাহিকটি ইসলামিক ব্যক্তিত্ব ইউসূফ আল-কারযাভি ও সালমান আল আওদাহ-এর প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতায় নির্মিত হয়, পাশাপাশি পুরো আরব ও ইসলামিক বিশ্বজুড়ে এটি ব্যাপক বিতর্ক এবং আলোচনা-সমালচনার জন্ম দেয়। মরোক্কোতেই সিরিজটি্র সকল দৃশ্যের শ্যুটিং হয় এবং মারাক্কেশ, তাঞ্জিয়ার, এল জাদিদা, কাসাব্লাংকা এবং মহাম্মাদিয়ায় এর প্রধান দৃশ্যগুলো ধারণ করা হয়। ২০১২ সালের ২০শে জুলাই থেকে অর্থাৎ রমজানের ত্রিশদিন ব্যাপী মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমূহে এবং একইসঙ্গে তুরস্কের এটিভিইন্দোনেশিয়ার এমএনসিটিভিতে প্রচারিত হয়। এছাড়াও ইউটিউবে এর পর্বগুলো টেলিভিশনে প্রচারের পরপরই ইংরেজি সাবটাইটেল সহ প্রকাশ করা হয়। বলা হয়ে থাকে যে, ২০ কোটি সৌদি রিয়াল ব্যয়ে নির্মিত এ টিভি ধারাবাহিকটি হল এপর্যন্ত নির্মিত আরবি ভাষার সবচেয়ে ব্যয়বহুল টিভি ধারাবাহিক ও আরব বিশ্বে এযাবতকালে নির্মিত সবচেয়ে বড় মাপের টিভি নাট্যকর্ম।[1][2]

প্রাপ্তি

ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানসমূহ:নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানসমূহ
সালমান আল আওদাইউসূফ আল-কারযাভি সালিহ আল ফাউজান[3]সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতি[3]
আদিল আল কালবানিমুহাম্মাদ আল দিদো আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়আব্দুল আজিজ বিন ফাহাদ[4]
আবদুল ওয়াহাব আল তুরাওয়ারীআলী আল সাল্লাবী মুহাম্মদ আল মুনাজিদআব্দুল্লাহ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান[5]
সালেহ আল মাঘামসিমোহাম্মদ হাসান)

অভিনয়ে

  • রফিক আল-সুবেয়ী - ওয়ারাকাহ ইবন নওফল চরিত্রে
  • ঘাজি হুসেইন - উমাইয়াহ ইবন খালাফ চরিত্রে
  • জালাল আল-তাওয়ীল - সালমান আল ফারিসী চরিত্রে
  • জিয়াদ তোয়াতি - ওয়াহশি ইবন হার্ব চরিত্রে
  • বাসেম দাকাক - ওয়ালিদ ইবন উতবাহ চরিত্রে
  • মাই স্কাফ - হিন্দ বিন্ত উতবাহ চরিত্রে
  • বার্নাদেত্তে হুদেইব - রায়াহানা বিন্ত জায়েদ চরিত্রে
  • ফাদি সবীহ - সাফোয়ান ইবন উমাইয়া চরিত্রে
  • মহম্মদ হাদ্দাকি - উমাইর ইবন ওয়াহব চরিত্রে
  • নাদেরা ইমরান - সাজাহ বিন্ত আল-হারিথ চরিত্রে
  • খালেদ আল-কাইশ - আইয়াশ ইবন আবি রাবিয়াহ চরিত্রে
  • আব্দেল-সালাম বু হুসেইনি - আব্দুল্লাহ ইবন সুহায়ল চরিত্রে
  • মাজদ ফাধা - আবু জানদাল ইবন সুহায়ল চরিত্রে
  • জাবের জৌখদার - আব্দুল্লাহ ইবন মাসুদ চরিত্রে
  • ঘাজোয়ান আল-সাফাদি - ওয়ালিদ ইবন আল-ওয়ালিদ চরিত্রে
  • মাহমুদ নাস্র - জায়েদ ইবন আল-খাত্তাব চরিত্রে
  • আলফাত ওমর - আতিকা বিন্ত জায়েদ চরিত্রে
  • সিহাম আসীফ - লায়লা বিন্ত আল-মিনহাল চরিত্রে
  • নাজাহ সাফকুনি - সুহেল ইবন আমর চরিত্রে
  • আব্দেল-করিম আল-কাওয়াসমি - ওয়ালিদ ইবন আল-মুঘিরা চরিত্রে
  • রামি খালাফ - সাঈদ বিন জৈদ চরিত্রে
  • ইউসুফ আল-মুকবিল - উয়াইনাহ ইবন হাসন আল-ফাজারি চরিত্রে
  • ঘাসান আজব - হুইয়েই ইবন আখতাব চরিত্রে
  • রিয়াধ উর্দিয়ানি - ইবনে সালুল চরিত্রে
  • নাসের উর্দিয়ানি - খাত্তাব ইবন নুফাইল চরিত্রে
  • মুনা ওয়াসেফ - আল-শিফা'-বিন্ত আব্দুল্লাহ চরিত্রে
  • আব্দেল-হাকিম কুতেইফান - মালিক ইবন নুওয়াইরাহ চরিত্রে
  • মহম্মদ কুতেইশ - আল-মুথান্না ইবন হরিথা চরিত্রে
  • ফতেন শাহীন - উম জামিল চরিত্রে
  • আন্দ্রে স্কাফ - সুরাকা বিন মালিক চরিত্রে
  • ফতিমাহ সাদ - সুমাইয়াহ বিন্ত খাইয়াত চরিত্রে
  • ইয়াসের আব্দেল লতিফ - সাহামা চরিত্রে
  • কামার মুর্তাধা - সালমা উম্ম-উল-খাইর চরিত্রে
  • নাসর শামা - উথমান আবু কুহাফা চরিত্রে
  • মুর্শাদ দেরঘাম - মুঘিরা ইবন শু'বা চরিত্রে
  • রান্দি হালাবি - ইয়াজিদ ইবন আবি সুফিয়ান চরিত্রে
  • ওমর আজুজি - আল-'আস ইবন ওয়া'ইল চরিত্রে
  • আরীজ খাদ্দুর - ফতিমাহ বিন্ত আল-খাত্তাব চরিত্রে
  • আমন আল-আর্নেদ - সলিম মাওলা আবু হুদায়ফা চরিত্রে
  • ইয়াসের আব্দেল-লতিফ - নাজ্জাশী চরিত্রে
  • আমের আলী - তৃতীয় ইয়াজদেগার্দ চরিত্রে
  • জয় আব্দো সত্রপ চরিত্রে
  • ইয়াদ আবু আল-শামাত - হোরমুজান চরিত্রে
  • জামাল আব্বাসি - মুসাইলিমা চরিত্রে
  • মহম্মদ আল-রাশি - পিরুজ নাহবন্দি চরিত্রে
  • সুজান নাজম আলদীন - বুরানদাখত চরিত্রে
  • জুলিয়েট আওয়াদ - আল-খানসা চরিত্রে
  • মহম্মদ কুরি'আহ - হেরাক্লীয়াস চরিত্রে

ট্রিভিয়া

সিরিজটির ২ জন অভিনেতা, হাসান আল-জুন্দি ও মুনা ওয়াসেফ, উভয়েই আবু জাহল এবং হিন্দ বিন্ত উতবাহ চরিত্রে মোস্তফা আক্কাদের মুহাম্মদ, মেসেঞ্জার অফ গড চলচ্চিত্রের আরবী সংস্করণে অভিনয় করেছিলেন।

আবহ সঙ্গীত

ধারাবাহিকটির আবহ সঙ্গীত পরিচালনা করেন তুর্কি মিউজিশিয়ান ফাহির আতাকোগলু, যিনি জনপ্রিয় তুর্কি ধারাবাহিক সুলতান সুলেমানের সঙ্গীতায়োজনের জন্য প্রসিদ্ধ। সিরিজের সর্বশেষ পর্বে ওমর(রাঃ) এর ছুরিকাঘাতে আহত হওয়ার পর মৃত্যূর পূর্বমূহুর্ত দৃশ্যায়নে "সালামুন" শিরোনামে একটি নাশিদ আবহসঙ্গীত হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে যাতে কন্ঠ দিয়েছেন কুয়েতের বিখ্যাত ক্বারী, তারাবীহ ইমাম ও নাশিদশিল্পী মিশারী রাশিদ আল-আফাসি।

আন্তর্জাতিক সম্প্রচার

সিরিজটি সমসাময়িকভাবে এবং পরবর্তীতে ইরান, মিশর, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, তিউনিসিয়া সহ বিভিন্ন দেশের টিভি চ্যানেলে সম্প্রচারিত হয়।

দেশ টিভি চ্যানেল সম্প্রচার শুরু
 Arab Leagueএমবিসি১, কাতার টিভিজুলাই ২০, ২০১২
 Indonesiaএমএনসিটিভিজুলাই ২০, ২০১২
 Tunisiaনেসমা টিভিজুলাই ২০, ২০১২
 Turkeyএটিভি, ক্যানাল ৭জুলাই ২০, ২০১২; ৭ জুন ২০১৬
 Iranনূর টিভিআগস্ট, ২০১৩

ঐতিহ্যবাহী ঐতিহাসিক সত্যতা ও দৃশ্যায়ন-সম্পর্কিত সমালোচনা

সিরিজটি নিয়ে অধিক বিতর্কের প্রধান কারণ ছিল চার খলিফার প্রত্যক্ষ চরিত্রায়ন, যা পূর্বের কোন সিরিয়ালে করা হয় নি। মুহাম্মাদ (সাঃ) এর সময়কালের দৃশ্যায়নে, তার স্ত্রীগণ ও সন্তানগণকে দেখানো হয় নি কিন্তু তার অনেক কর্ম বা কথা পরোক্ষভাবে তার নিকটস্থ সাহাবার কথা ও কাজের মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে, কারণ ইসলামী বিশ্বে নবী মুহাম্মাদ (সাঃ) ও তার পরিবারের চিত্রায়ন ধর্মীয় নিষেধাজ্ঞা ও তাদের সম্মানের খাতিরে যথাসম্ভব সীমিত এবং সমগ্র বিশ্বেই তা ব্যাপক অস্থিতিশীলতার কারণ হিসেবে বিবেচিত হয়। যদিও আবু বকরের মৃত্যুর পূর্বের একটি দৃশ্যে আয়েশা (রাঃ) কে ছায়া আকারে তার পিতার সঙ্গে নিঃশব্দে আলাপরত অবস্থায় দেখানো হয়। এছাড়া খলিফা ওমরের চরিত্রে অভিনয়কারী অভিনেতা সামের ইসমাইলের ধর্মমত কি তা জানতে সমসাময়িক আরব গনমাধ্যমে যথেষ্ট আলোচনা হয়, তবে সামের ইসমাইল তার সকল সাক্ষাৎকারে এ প্রশ্নের উত্তর দিতে অস্বীকার করেন, বলেন যে, এটি তার ব্যক্তিগত বিশ্বাস, যা অভিনেতা হিসেবে তার পেশাগত অবস্থানের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক নয়। এছাড়া ইউটিউবে অবমুক্ত দৃশ্যধারণের ভিডিওতে দেখা যায়, পরিচালক হাতেম আলী ধূমপানরত অবস্থায় শিল্পীদের বিভিন্ন নির্দেশনা দিচ্ছেন। নাটকে গোড়ালির নিচে পুরুষ সাহাবীদের কাপড় পরিহিত দেখানো হয়, যা ইসলামে নিষিদ্ধ। ইয়ামামার যুদ্ধে খালিদ ও অন্যান্য সাহাবা, ইয়া মুহাম্মাদা বা হে মুহাম্মাদ বলে তাকবীর দেয়, যার ঐতিহাসিক সত্যতা সালাফি আলেমদের নিকট বিতর্কিত, কারণ আল্লাহ ছাড়া অন্য কারও নামে তাকবীর বলা শিরকের অন্তর্ভূক্ত। ঐতিহাসিক সূত্রে বলা আছে উমাইয়া ইবনে খালাফকে বদরের যুদ্ধে দুজন আনসার সাহাবী বিলাল (রাঃ)-র নির্দেশনা অনু্যায়ী হত্যা করেছিল, কিন্তু সিরিজে উমাইয়াকে বিলাল নিজ হাতে হত্যা করতে দেখানো হয়েছে।

আরো দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. বিতর্কের মুখে হযরত ওমর'কে নিয়ে তৈরি নাটক, ডয়চে ভেলে বাংলা
  2. "Ramadan tv - 30 days Omar"ঢাকা ট্রিবিউন। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৯-০২
  3. "هل يُشعل مسلسل الفاروق عمر مزيدا من الفرقة بين المسلمين؟"। ২৬ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪
  4. "الأمير عبد العزيز بن فهد يؤكد أنه سيبذل كل الجهود لإيقاف بث مسلسل عمر ويطالب متابعيه على تويتر بالدعاء له."। ১৮ জুলাই ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪
  5. عمر: أول 'هزيمة' للأزهر على يد الدراما العربية.

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.