আনাতোলীয় বেইলিক

আনাতোলীয় বেইলিক (তুর্কী: Anadolu beylikleri, উসমানীয় তুর্কি: Tevâif-i mülûk, Beylik তুর্কি উচ্চারণ: [bejlic]) দ্বারা আনাতোলিয়ার বে শাসিত ক্ষুদ্র রাজ্যসমূহকে বোঝানো হয়। ১১শ শতাব্দীর শেষ দিকে প্রথম বেইলিকটি প্রতিষ্টিত হয়েছিল। ১৩শ শতাব্দীতে সেলজুক সাম্রাজ্যের পতনের সময় আরো অনেক বেইলিক প্রতিষ্ঠিত হয়।

১৪শ শতাব্দীর প্রথমভাগে আনাতোলিয়ার স্বাধীন তুর্কি বেইলিকসমূহের মানচিত্র।
History of the Turkic peoples
History of the Turkic peoples
Pre-14th century
Turkic Khaganate 552–744
  Western Turkic
  Eastern Turkic
Avar Khaganate 564–804
Khazar Khaganate 618–1048
Xueyantuo 628–646
Great Bulgaria 632–668
  Danube Bulgaria
  Volga Bulgaria
Kangar union 659–750
Turgesh Khaganate 699–766
Uyghur Khaganate 744–840
Karluk Yabgu State 756–940
Kara-Khanid Khanate 840–1212
  Western Kara-Khanid
  Eastern Kara-Khanid
Gansu Uyghur Kingdom 848–1036
Kingdom of Qocho 856–1335
Pecheneg Khanates
860–1091
Kimek Khanate
743–1035
Cumania
1067–1239
Oghuz Yabgu State
750–1055
Shatuo dynasties 923–979
  Later Tang
  Later Jin
  Later Han (Northern Han)
Ghaznavid Empire 963–1186
Seljuk Empire 1037–1194
  Seljuk Sultanate of Rum
Khwarazmian Empire 1077–1231
Delhi Sultanate 1206–1526
  Mamluk dynasty
  Khilji dynasty
  Tughlaq dynasty
Golden Horde | [1][2][3] 1240s–1502
Mamluk Sultanate (Cairo) 1250–1517
  Bahri dynasty

বেইলিক দ্বারা বে কর্তৃক শাসিত অঞ্চল বোঝানো হয়। ১৬শ শতাব্দীর উসমানীয় সরকারি প্রতিষ্ঠানে এর ব্যবহার ছিল।[4]

ইতিহাস

আনাতোলিয়ার বেইলিক ও অন্যান্য রাজ্য, আনুমানিক ১৩০০

১০৭১ সালে বাইজেন্টাইনদের সাথে মালাজগির্দের যুদ্ধে সেলজুকরা জয় এবং পরবর্তী বিজয়ের ফলে অগুজ তুর্কি গোত্র বর্তমান তুরস্কে বসতি স্থাপন শুরু করে। সেলজুকদের কেন্দ্র ছিল কোনিয়া। তারা এসব গোত্রকে শাসনকাজে ব্যবহার করেছিল। এসব গোত্র সেলজুকদের প্রতি আনুগত্য ও সেবার বিনিময়ে সামরিক ও আর্থিক সহায়তা পেত।

পূর্ব দিক থেকে মঙ্গোল হামলার ফলে সেলজুকদের শক্তি কমে যেতে শুরু করেছিল। আনাতোলিয়ার ইলখানাত কমান্ডারদের কর্তৃত্ব অর্জনের ফলে বেরা স্বাধীন হতে উৎসাহিত হয়েছিল। তারা নিজস্ব আমিরাত স্থাপন করে। মঙ্গোলদের হামলার ফলে পারস্য ও তুর্কিস্তান থেকে আগত যোদ্ধাদেরকে আমিররা নিযুক্ত করেছিলেন। বাইজেন্টাইনদের সাথে লড়াইয়ে তাদের নিয়োজিত করা হয়েছিল। ফলে বেইলিকসমূহের প্রভাব বৃদ্ধি পায়।

বাইজেন্টাইনদের ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যাওয়ায় এশিয়া মাইনরে তাদের শহরগুলি বেইলিকসমূহকে প্রতিহত করতে পারেনি। অনেক তুর্কি এসময় পশ্চিম আনাতোলিয়ায় বসতি স্থাপন করে।[5] এসব নতুন স্থানে আরো অনেক বেইলিক স্থাপিত হয় এবং তারা বাইজেন্টাইন, জেনোইজ ও নাইটস টেম্পলারদের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জড়িয়ে পড়ে। পাশাপাশি আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বও দেখা দেয়।

১৩০০ সাল নাগাদ তুর্কিরা এজিয়ান উপকূলে পৌছে যায়। উসমানীয়রা উত্তরপশ্চিমে সোগুতের কাছে ক্ষুদ্র শক্তি হিসেবে টিকে ছিল; তারা পরবর্তীতে উসমানীয় সাম্রাজ্য স্থাপন করে। এজিয়ান উপকূলে আরো অনেক এরূপ রাজ্যের অস্তিত্ব ছিল। জানদারিরা কাস্তামোনু ও সিনোপের কৃষ্ণ সাগর অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করত।[6]

১৪শ শতাব্দীর প্রথম দশকগুলিতে উসমানীয় সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা উসমান তার বেইলিককে দক্ষিণ ও পশ্চিমে বাইজেন্টাইন এলাকায় প্রসারিত করেন। দ্রুত তারা শক্তিশালি হয়ে উঠে এবং শক্তিশালী কারামানিদের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লিপ্ত হয়। ১৪শ শতাব্দীর শেষদিকে উসমানীয়রা আনাতোলিয়ার আরো ভেতরে প্রবেশ করে ক্রয় বা মিত্রতার মাধ্যমে বিভিন্ন শহর অধিকার করে। এসময় কারামানিরা অন্যান্য বেইলিক, মামলুক, আক কোয়ুনলু, বাইজেন্টাইন, পন্টাস ও হাঙ্গেরীয়দের সহায়তায় বেশ কয়েকবার উসমানীয়দের উপর হামলা চালায়। শতাব্দীর শেষ নাগাদ উসমানীয়রা কারামানি ও অন্যান্য ক্ষুদ্র বেইলিকসমূহের কাছ থেকে বিশাল এলাকা জয় করে নেয়। পরবর্তীতে ১৪০২ সালে আঙ্কারার যুদ্ধে তৈমুরের কাছে উসমানীয়দের পরাজয়ের ফলে এসব এলাকা পুনরায় তাদের হস্তগত হয়।

এরপর সুলতান প্রথম মুহাম্মদদ্বিতীয় মুরাদের নেতৃত্বে উসমানীয়রা পুনরায় তাদের সাবেক বিজিত এলাকা ফিরে পায়। দ্বিতীয় মুহাম্মদ কারামানিদের উপর চূড়ান্ত আক্রমণ করে আনাতোলিয়াকে একক শাসনের অধীনে আনেন। পরবর্তীতে প্রথম সেলিম ও তার ছেলে প্রথম সুলাইমান সাম্রাজ্য আরো বিস্তৃত করেছেন। অনেক সাবেক বেইলিক উসমানীয় সাম্রাজ্যের প্রশাসনিক বিভাগে পরিণত হয়।

ভাষা ও অবদান

আনাতোলীয় বেইলিকসমূহ আনাতোলিয়ায় তুর্কি ভাষা ও ইসলামের বিস্তার ঘটিয়েছে।[7] ইতিপূর্বে সেলজুক তুর্কিদের সময় সরকারি ভাষা ফার্সি হলেও আনাতোলীয় রাজ্যে তুর্কি ভাষাকে শিক্ষার ভাষা হিসেবে গ্রহণ করা হয়।[7] তুর্কি ভাষা এসব রাজ্যে ব্যাপক বিস্তারলাভ করে এবং উসমানীয় যুগে সুউচ্চ সমৃদ্ধি লাভ করে।[7]

শিল্প

ইজমিরের নিকটে সেলচুকে ঈসা বে মসজিদ, ১৩৭৫ সালে আইদিনি বেইলিক কর্তৃক নির্মিত হয়।

সীমিত সুযোগ সত্ত্বেও আনাতোলীয় বেইলিকসমূহে শিল্পের প্রসার ঘটেছিল। এই সময়কালকে সেলজুক থেকে উসমানীয় যুগে উত্তরণের মধ্যবর্তী সময় হিসেবে গ্রহণ করা যায়। এযুগে নতুন রীতি গৃহিত হয়। শিল্পী ও স্থপতিরা নতুন ধারণাকে ছড়িয়ে দিতে সহায়তা করেছেন। কাঠ ও পাথর খোদাইসহ বিভিন্ন শিল্পরীতি এসময় ব্যবহার হত।

এই যুগের স্থাপত্য নিদর্শনের মধ্যে রয়েছে আইদিন বেইলিক কর্তৃক ১৪০৪ সালে নির্মিত বালাতের ইলিয়াস বে মসজিদ, ১৩৭৫ সালে নির্মিত সেলচুকের ঈসা বে মসজিদ, ১৩১২ সালে নির্মিত বিরগির উলুজামি মসজিদ। এসব মসজিদের স্থাপত্য সেলজুক স্থাপত্যের অনুসারী হলেও এতে অলঙ্করণে ভিন্নতা রয়েছে। কারামান বেইলিকও স্থাপত্যে উল্লেখযোগ্য নিদর্শন রেখেছে যেমন ১৩০২ সালে নির্মিত এরমেনেকের উলুজামি মসজিদ, ১৩৮২ সালে নির্মিত কারমানের খাতুনিয়া মাদ্রাসা, ১৪০৯ সালে নির্মিত নিগদের আকমেদ্রেসে মাদ্রাসা। এসব স্থাপনায় নতুন স্থাপত্য বৈশিষ্ট্য সংযোজিত হয়েছে। এসময় উসমানীয় স্থাপত্যের ভিত্তি স্থাপিত হয়।

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. Marshall Cavendish Corporation (২০০৬)। Peoples of Western Asia। পৃষ্ঠা 364।
  2. Bosworth, Clifford Edmund (২০০৭)। Historic Cities of the Islamic World। পৃষ্ঠা 280।
  3. Borrero, Mauricio (২০০৯)। Russia: A Reference Guide from the Renaissance to the Present। পৃষ্ঠা 162।
  4. (limited preview) Mohamed Hedi Cherif - Daniel Panzac (১৯৯৫)। Histoire économique et sociale de l'Empire ottoman et de la Turquie (1326-1960) আইএসবিএন ৯০-৬৮৩১-৭৯৯-৭ (French ভাষায়)। Peeters Publishers।
  5. A process described in the pioneering work, Speros Vryonis, The decline of medieval Hellenism in Asia Minor: and the process of Islamization from the eleventh through the fifteenth century, (Berkeley: University of California, 1971) আইএসবিএন ৯৭৮-১৫৯৭৪০৪৭৬১
  6. (limited preview) Kate Fleet (১৯৯৯)। European and Islamic Trade in the Early Ottoman State: The Merchants of Genoa and Turkey আইএসবিএন ০-৫২১-৬৪২২১-৩। Cambridge University Press।
  7. Encyclopedia of the Ottoman Empire, Gábor Ágoston, Bruce Alan Masters, page 40

উৎস

  • Mehmet Fuat Köprülü (translated by Gary Leiser) (১৯৯২)। The Origins of the Ottoman EmpireState University of New York Press। আইএসবিএন 0-7914-0819-1। (limited preview)
  • Westermann Großer Atlas zur Weltgeschichte (জার্মান)

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.