অস্কার পিস্টোরিয়াস

অস্কার লিওনার্দ কার্ল পিস্টোরিয়াস (ইংরেজি: Oscar Leonard Carl Pistorius; জন্ম: ২২ নভেম্বর, ১৯৮৬) দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত দৌড়বিদ। তার দুই পা নেই; ফলে তিনি টি৪৩ শ্রেণীভূক্ত হওয়া স্বত্ত্বেও টি৪৪ শ্রেণীভূক্ত দলের দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি টি৪৪ শ্রেণীর প্রতিযোগিতায় ২০০ মিটার৪০০ মিটার দৌঁড় বিষয়ে বিশ্বরেকর্ডের অধিকারী। এছাড়াও, যুগ্মভাবে টি৪৩ শ্রেণীর ১০০ মিটার দৌড়ের বিশ্বরেকর্ডেও ভাগ বসিয়েছেন।

এই নিবন্ধের শিরোনামের সাথে মিল আছে এমন নিবন্ধের এমন নিবন্ধের জন্য অস্কার (দ্ব্যর্থতা নিরসন) দেখুন।
অস্কার পিস্টোরিয়াস
দক্ষিণ কোরিয়ার দেইগুতে ২০১১ সালের বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশীপে পিস্টোরিয়াস
ব্যক্তিগত তথ্য
ডাকনামব্লেড রানার; পা-বিহীন দ্রুততম মানব; "ওজ" পিস্টোরিয়াস[1]
জন্ম (1986-11-22) ২২ নভেম্বর ১৯৮৬
স্যান্ডটন, জোহান্সবার্গ, ট্রান্সভাল প্রদেশ (বর্তমানে গোটেং প্রদেশ), দক্ষিণ আফ্রিকা
অ্যালমা ম্যাটারপ্রিটোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়
উচ্চতা১.৮৪ মিটার (৬ ফুট  ইঞ্চি) in prosthetics[2]
ওজন৮০.৬ কেজি (১৭৮ পা) (২০০৭)[3]
ওয়েবসাইটwww.oscarpistorius.com
ক্রীড়া
দেশ দক্ষিণ আফ্রিকা
ক্রীড়াদৌড়
ঘটনাসমূহস্প্রিন্ট (১০০, ২০০, ৪০০ মিটার)
সাফল্য ও খেতাব
বিশ্ব ফাইনাল২০০৫ প্যারালিম্পিক বিশ্বকাপ: ১০০ মি (টি৪৪) – স্বর্ণ; ২০০ মি (টি৪৪) – স্বর্ণ
জাতীয় ফাইনাল২০০৭ সাউথ আফ্রিকান সিনিয়র অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশীপ: ৪০০ মি (টি৪৪) – স্বর্ণ
প্যারালিম্পিক ফাইনাল২০০৪ গ্রীষ্মকালীন প্যারালিম্পিক্‌স: ১০০ মি (টি৪৪) – ব্রোঞ্জ; ২০০ মি (টি৪৪) – স্বর্ণ

২০০৮ গ্রীষ্মকালীন প্যারালিম্পিক্‌স: ১০০ মি (টি৪৪) – স্বর্ণ, 200 মি (টি৪৪) – স্বর্ণ; 400 মি (টি৪৪) – স্বর্ণ

২০১২ গ্রীষ্মকালীন প্যারালিম্পিক্‌স: ২০০ মি (টি৪৪) – রৌপ্য; ৪ × ১০০ মি রীলে – স্বর্ণ; পুরুষদের ৪০০ মি (টি৪৪) – স্বর্ণ
সর্বোচ্চ বিশ্ব স্থান১০০ মি: ১ম (২০০৮)[4]

২০০ মি: ১ম (২০০৮)[4]

৪০০ মি: ১ম (২০০৮)[5]
ব্যক্তিগত সেরা১০০ মি (টি৪৪): ১০.৯১ সে (২০০৭, বি.রে.)[6]

২০০ মি (টি৪৪): ২১.৩০ সে (২০১২, বি.রে.)[7]

৪০০ মি: ৪৫.০৭ সে[8]
6 September 2012তে হালনাগাদ

প্রারম্ভিক জীবন

হেঙ্ক ও শীলা পিস্টোরিয়াস দম্পতির সন্তান অস্কার পিস্টোরিয়াস ২২ নভেম্বর, ১৯৮৬ সালে জোহান্সবার্গের স্যান্ডটনে জন্মগ্রহণ করেন।[1] এরপর এক খ্রিস্টান বাড়িতে বেড়ে ওঠেন।[9] তার কার্ল নামীয় এক জ্যেষ্ঠ ভাই ও এইমি নামে ছোট বোন আছে।[10][11] পিস্টোরিয়াসের মা ৪৩ বছর বয়সে মারা যান; তখন তার বয়স ছিল ১৫ বছর যা তার জীবনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেছিল।[12][13] তার প্রমাতামহ ইতালিয় অভিবাসী হিসেব কেনিয়ায় এসেছিলেন।[14][15]

ফিবুলাবিহীন অবস্থায় পিস্টোরিয়াস জন্মগ্রহণ করেন। ১১ মাস বয়সে হাঁটু ও পায়ের গোড়ালি অংশ বিচ্ছিন্ন করতে হয়।[3] কন্সট্যাশিয়া ক্লোফ প্রাইমারি[16] ও প্রিটোরিয়া বয়েজ হাই স্কুলে অধ্যয়ন করেন।[1][17] সেখানে তিনি ১১ থেকে ১৩ বছর বয়সের মধ্যে সময়কালে রাগবি ইউনিয়ন, ওয়াটার পোলোটেনিস খেলায় অংশ নেন। পাশাপাশি ক্লাব পর্যায়ের অলিম্পিক কুস্তিতেও খেলেন।[18][19][20] দক্ষিণ আফ্রিকার প্রিটোরিয়ায় জেনি ব্রুক্স গ্যারেজের জিমে প্রশিক্ষণ নেন।[21] ২০০৩ সালে হাটুতে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্তি ঘটে তার। এরপর তিনি ২০০৪ সালের জানুয়ারি মাসে দৌড় খেলায় অংশ নেন।[22] কোচ অ্যাম্পি লো তাকে সহযোগিতা করেন। এরপর তিনি আর পিছনে ফিরে তাকাননি।[19] দক্ষিণ আফ্রিকার ফ্রাঙ্কোইজ ভ্যান্ডারওয়াট তার পা হিসেবে ব্লেড আকৃতির অতিরিক্ত অংশ স্থাপন করেন। দৌড়ের উপযুক্ত ব্লেডের অভাবে ভ্যান্ডারওয়াট স্থানীয় প্রকৌশলীদের সাথে আলাপ করে তা তৈরীর জন্য ফরমায়েশ দাখিল করে। কিন্তু ব্লেডগুলো দ্রুত ভেঙ্গে যাওয়ায় আমেরিকান স্প্রিন্টার ব্রায়ান ফ্রেজারের কাছে তাকে পাঠানো হয় ও আইসল্যান্ডের ওসার কোম্পানি উপযুক্ত ব্লেড তৈরী করে।[23]

বিতর্ক

১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ তারিখে পিস্টোরিয়াসকে খুনের দায়ে অভিযুক্ত করা হয়। রীভা স্টীনক্যাম্প নাম্নী তার মেয়েবন্ধুকে প্রিটোরিয়ায় সকালে নিজ বাড়িতে গুলি করে হত্যা করেন।[24] কিছু প্রচারমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয় যে, তিনি ভুলবশতঃ এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। কিন্তু স্থানীয় কর্তৃপক্ষ থেকে এ তথ্যের সত্যতা প্রকাশ পায়নি।[25] তারা আরো বলেন, যদি ভুলবশত হত্যাকাণ্ড ঘটান তবে তিনি ১ টি গুলি অথবা সর্বোচ্চ ২ টি গুলি করবেন। সেখানে তিনি ৬ টি গুলি করেছেন। এরপর রীভা স্টীনক্যাম্প নিজের জীবন বাঁচাতে তিনি গোসল খানায় ঢোকেন। কিন্তু পিস্টোরিয়াস সেখানেও গুলি করেন ও ক্রিকেট ব্যাট দিয়ে তার মাথায় পেটান এবং তার মৃত্যু ঘটে।

তথ্যসূত্র

  1. Mr. Oscar "Oz" PISTORIUS, Who's Who of Southern Africa, 24.com, ২৭ এপ্রিল ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ১৮ মে ২০০৭
  2. John Leicester (৫ সেপ্টেম্বর ২০১২), "Column: History-maker Pistorius a hypocrite, too?", The Huffington Post, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা
  3. Josh McHugh (মার্চ ২০০৭), "Blade Runner", Wired, নং 15.03
  4. World wide ranking: T44 male 100 2008, International Wheelchair and Amputee Sports Federation, সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুলাই ২০০৮
  5. World wide ranking: T44 male 400 2008, International Wheelchair and Amputee Sports Federation, সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুলাই ২০০৮
  6. De Jongh Borchardt (১৯ মার্চ ২০০৭), Oscar reaches for his dream, News24
  7. Michael Phillips (৪ জুলাই ২০০৮), "Pistorius trails home fourth and a long way short of Beijing", The Guardian. See also Oscar Pistorius looks to one last chance in Lucerne to earn Olympics place, The Canadian Press, ৪ জুলাই ২০০৮, সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০০৮
  8. Jon Mulkeen (১৯ জুলাই ২০১১), Pistorius gets world and Olympic qualifier in Lignano: Double-amputee sprinter clocks 45.07 to guarantee his major champs selection, Athletics Weekly, ৭ আগস্ট ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা; Oscar Pistorius closer to fulfilling Olympic dream, BBC Sport, ১৯ জুলাই ২০১১; Double amputee Pistorius qualifies for track worlds, CBC Sports, ১৯ জুলাই ২০১১, ৭ আগস্ট ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা; "Blade Runner Pistorius hails 'dream race' after Olympic-qualifying run", The Guardian, London, ২০ জুলাই ২০১১, ২৭ জুলাই ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা; Gene Cherry (২০ জুলাই ২০১১), "Blade Runner Pistorius's dream comes true", Mail & Guardian, ৭ আগস্ট ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা; Johnette Howard (৫ আগস্ট ২০১১), The Olympics loom for Oscar Pistorius: The next year will be fascinating now that he's met the qualifying standard, ESPN.com, ৭ আগস্ট ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা
  9. Nico Bougas (৯ জুন ২০১২), Enabled not disabled: Oscar Pistorius: 'The fastest thing on no legs', Assistnews.net, ৪ আগস্ট ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা
  10. De Jong Borchardt (১৮ জুন ২০০৮), 30 minutes with Oscar Pistorius, University of Pretoria, ২৭ আগস্ট ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা
  11. Robert Philip (২৭ এপ্রিল ২০০৫), "Pistorius masters quick step", The Daily Telegraph, London
  12. Paralympics 2012: Oscar Pistorius beaten by Alan Oliveira in 200m, BBC Sport, ২ সেপ্টেম্বর ২০১২
  13. Tom English (৫ আগস্ট ২০১১), "London 2012 Olympics: 'Blade runner' Oscar Pistorius becomes first amputee to qualify for Olympic heat", The Scotsman
  14. Gennaro Bozza (১১ জুলাই ২০০৭), "Pistorius bionico? 'No, solo un uomo' [Pistorius bionic? 'No, just a man']", La Gazzetta dello Sport [Sports Gazette], সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০০৮ (Italian)
  15. Gennaro Bozza (১১ জুলাই ২০০৭), Oscar Pistorius: "Tifo per la Lazio" ["Fan of Lazio"], Lazio.net, সংগ্রহের তারিখ ৮ জানুয়ারি ২০০৯
  16. Oscar Pistorius; Rebecca Servadio-Kenan, transl. (২০০৯), Blade Runner, London: Virgin Books, পৃষ্ঠা 33, আইএসবিএন 978-0-7535-1939-4
  17. Gareth A. Davies (৬ অক্টোবর ২০০৪), "Olympics within amputee's reach", The Daily Telegraph, London
  18. Jeré Longman (১৫ মে ২০০৭), "An amputee sprinter: Is he disabled or too-abled?", The New York Times, পৃষ্ঠা A1 & A21
  19. Gareth A. Davies [interviewer] (২৩ মে ২০০৭), "My sport: Oscar Pistorius", The Daily Telegraph, London
  20. Oscar Pistorius, Össur, সংগ্রহের তারিখ ২২ মার্চ ২০০৮
  21. Martha Kelner (২৫ আগস্ট ২০১২), "How Paralympic legend Pistorius found nothing is impossible", Daily Mail, সংগ্রহের তারিখ ২৫ আগস্ট ২০১২
  22. Mike Moon (২০১২), "Blade Runner: Oscar Pistorius is forcing the world to rethink what it means to be disabled", Readers' Digest Asia, ২৯ আগস্ট ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ২৯ আগস্ট ২০১২
  23. Felix Gillette (১০ নভেম্বর ২০০৪), "Racing tall: A Paralympian stands accused of getting an illegal leg up", Slate, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা
  24. "Ocar Pistorius charged with murder"। BBC News। ২০১৩-০২-১৪। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০২-১৪
  25. "Oscar Pistorius 'shot girlfriend': report"The Sydney Morning Herald। ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৩।
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.