হালিমা আস সাদিয়া

হালিমা বিনতে আবি যুয়ায়েব বা হালিমা সাদিয়া ছিলেন ইসলামের নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর দুধমা। ৮ দিন বয়সে তিনি মুহাম্মদের দায়িত্ব নেন, এবং দুই বছরের কিছু অধিক সময় পর্যন্ত তাকে মদীনায় নিজ বাড়িতে লালন পালন করে তার মা আমিনার কাছে ফিরিয়ে দেন।

মুহাম্মাদকে গ্রহণ

আরব সমাজে তখন এক গোত্রের শিশুকে ভিন্ন গোত্র বাল্যকালে লালন পালনের জন্য পাঠাতো হত যাতে তারা বিশুদ্ধ ও প্রাঞ্জলভাষী হতে পারে। সেই হিসাবে হালিমা ও তার গোত্র আরবের কুরাইশ গোত্রের নিকট গিয়েছিল যাতে কোন সন্তান লালন-পালনের জন্য পাওয়া যায় কিনা।

ইসলাম গ্রহণ

হালিমা বিনতে আবি যুবায়েবের ইসলাম গ্রহণ বিষয়ে অধিকাংশ আলেমগন ঐক্যমত প্রকাশ করেছেন। [2] এছাড়াও তার স্বামী ও সন্তানেরা সবাই ইসলাম গ্রহণ করে।[3]

সন্তানাদি

হালিমার স্বামীর নাম হারিস ইবনে আবদিল উযযা ইবনে রিফায়া আস সাদি। এদের সন্তানরা হলেন :

  • আবদুল্লাহ
  • উনাইসা ও
  • আশ শায়মা অথবা খুযাইমা মতান্তরে হুযাফা। মুহাম্মাদ(সঃ) ও আবদুল্লাহ একই সাথে দুধ পান করেন।[4]

মুহাম্মাদ(সা) চাচাতো ভাই আবু সুফিয়ান ইবনে হারিসকেও হালিমা দুধ পান করান।[5] এবং হামযাকে একদিন দুধ পান করান।[6][7]

হালিমা ও মুহাম্মাদ(সঃ)

মুহাম্মাদ(সঃ) তার দুধ মাতা হালিমাকে সবসময় সশ্রদ্ধ সন্মান করতেন।[8] একবার নিজের চাদরে তাকে বসতে দিয়েছিলেন।[9][10][11] তাকে বিভিন্ন অভাবের সময় উপকৌঠন পাঠিয়েছেন। একবার খাদিজা(রাঃ) তাকে ৪০টা ছাগল ও একটি উট দান করেছিলেন।[12][13]

বর্ণিত রয়েছে,মুহাম্মাদ(সঃ) হালিমার ঘরে লালিত পালিত হওয়ার কারণেই অন্ত্যন্ত বিশুদ্ধভাষী ছিলেন।[14][15] এই হালিমা সাদিয়ার ঘরে অবস্থান কালেই মুহাম্মাদ(সঃ) এর প্রথম বক্ষ বিদারণের ঘটনা ঘটে।[16][17][18]

ইবনে ইসহাক বলেন, শিশু মুহাম্মাদকে নিয়ে একবার যখন হাবশায় যান। সেখানে এক খ্রিষ্টান আলেম মুহাম্মাদকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে বলেন,এই বালক ভবিষ্যতে বড় কিছু হবে।[19]

মৃত্যু

আহমাদ যীনী দাহলাম বলেছেন, তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন, মদিনায় হিজরত করে সেখানে ৮ম হিজরিতে মৃত্যু বরণ করেন, জান্নাতুল বাকী গোরস্তানে দাফন করা হয়।[20] তবে বালাযুরীর বলেছেন,হালিমা মদিনায় হিজরত করেননি এবং মক্কা বিজয়ের পূর্বে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।[21]

তথ্যসুত্র

  1. [আনসার আল-আশরাফ -১/৯৩-৯৪]
  2. [আস-সারাহ আল-হালাবিয়্যা-১/৩২]
  3. [নিসা মিন ’আসর আন-নুবুওয়াহ্, পৃ.১৫,]
  4. [প্রাগুক্ত; আনসাবুল আশরাফ -১/৯০-৯১]
  5. [সীরাতু ইবন হিশাম-১/১৬১; টীকা নং-৬]
  6. [রিজানুল মুবাশশিরূন বিল জান্নাহ-১/৭, ২/১৮৯]
  7. [নিসা’ মিন আসর আন-নুবুওয়াহ পৃ. ১১]
  8. [উসুদুল গাবা-৫/৪২৮]
  9. [তাবাকাত-১/১১৪]
  10. [আশ-শিফা-১/২৬০]
  11. [আল-ইসী‘আব-৪/২৬২]
  12. [নিসা’ মুবাশশারাত বিল জান্নাহ্-১/৩২]
  13. [আনসাবুল আশরাফ-১/৯৫]
  14. [ইবন কাছীর, আস-সীরাহ্ আন-নাবাবিয়্যা-১/১১৫]
  15. [আস-সীরাহ্ আল-হালাবিয়্যা-১/১৪৬]
  16. [সহীহ মুসলিম-১/১০১]
  17. [ইবন কাছীর, আস-সীরাহ্-১/১৩]
  18. Barkatullah, Abid। "প্রথম বক্ষ বিদারণ | নবীজি সা." (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১১-১৯
  19. [সীরাতু ইবন হিশাম-১/১৬৭]
  20. [নিসা‘ মিন ‘আসর আন-নুবুওয়াহ্, পৃ.১৭]
  21. [আনসাবুল আশরাফ, পৃ.৯১]
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.