শঙ্খনীল কারাগার

শঙ্খনীল কারাগার বাংলাদেশী লেখক হুমায়ূন আহমেদের একটি সমকালীন উপন্যাস। এটি ১৯৭৩ সালে প্রকাশিত হয়।

শঙ্খনীল কারাগার
শঙ্খনীল কারাগার বইয়ের প্রচ্ছদ
লেখকহুমায়ূন আহমেদ
প্রচ্ছদ শিল্পীকাইয়ুম চৌধুরী
দেশবাংলাদেশ
ভাষাবাংলা
ধরননাট্য
পটভূমিঢাকা
প্রকাশকখান ব্রাদার্স, অন্যপ্রকাশ
প্রকাশনার তারিখ
১৯৭৩
পৃষ্ঠাসংখ্যা৮৫
আইএসবিএন9789845021166
পূর্ববর্তী বইনন্দিত নরকে 

কাহিনী

উপন্যাসের কথক ‘খোকা’। তারা ছয় ভাইবোন। তার বড় বোন রাবেয়া। তার বাবা আর রাবেয়ার বাবা ভিন্ন দুই ব্যক্তি। রাবেয়ার মায়ের আগে এক ধনীর সাথে বিয়ে হয়েছিল। সেই পরিবারে জন্মায় রাবেয়া। রাবেয়ার বাবার সাথে রাবেয়ার মায়ের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়।

রাবেয়ার মায়ের বাবার বাড়ি অভিজাত শ্রেণীর। রাবেয়ার মায়ের জীবন, রূপলাবণ্য সবই ছিল বড়লোকি। তিনি ভালো গান করতে জানতেন। তার বাবার বাড়ি আশ্রয় নেন গরীব শিক্ষার্থী আজহার হোসেন। একদিন তিনি রাবেয়ার মায়ের মুখে গান শুনে তার প্রেমে পড়ে যান। তার কয়েকমাস বাদে রাবেয়ার মায়ের সাথে বিয়ে হয় তার। রাবেয়ার মা তার বাবার বাড়ির সবকিছু ছেড়ে আজহার সাহেবের সংসারে যান।

দীর্ঘ ২৩বছরের সংসারে একে একে খোকা ও তার বাকি চার ভাইবোন জন্মায়। সবচেয়ে ছোট মেয়ে নিনুর জন্মের সময় মারা যান খোকার মা। খোকার মা যেহেতু জন্মগত অভিজাত শ্রেণীর এবং খোকার বাবা যেহেতু দরিদ্র ঘরের ছেলে সেহেতু খোকার মায়ের সাথে তার অন্তরঙ্গ হতো না। তবুও তিনি পছন্দ এবং সম্মান করতেন তার স্ত্রীকে। কিন্তু তার স্ত্রী থাকতেন চুপচাপ, গম্ভীর। রাবেয়া ছাড়া তার অন্যান্য সন্তানরাও তার স্নেহ পায়নি তেমন। তার মনে খুব দুঃখ থাকতো লুকিয়ে। সেজন্যই গানপাগলী হয়েও তিনি সংসারে ২৩ বছরের জীবনে আর কখনও গান করেন নি।

খোকা তার ছোটখালার মেয়ে কিটকিকে ভালোবাসতো। কিটকিও খোকাকে ভালোবাসতো। কিন্তু তারা সপরিবারে পাঁচবছরের জন্য ম্যানিলায় যায়। সেখান থেকে একসময় ফিরে আসে, কিন্তু তার সাথে খোকার বিয়ে হয় না।

খোকার ছোটবোন রুনু বিয়ের আসরে বসলেও তার বিয়া হয় না মনের মানুষের সাথে। সে দুঃখে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে অসুস্থ হয়ে মারা যায়। রাবেয়ারও বিয়ে হয় না। কারণ তার গায়ের রং কালো।

খোকার ছোট ভাই মন্টু লেখাপড়ায় অমনোযোগী। কিন্তু সে একজন কবি। তার চমৎকার সব কবিতা ছাপা হতো পত্রিকায়। এভাবেই দিন চলে যেতে থাকে তাদের। কাছের মানুষগুলো ধীরে ধীরে দূরে সরে যেতে থাকে। রাবেয়া শহরের এক মহিলা হোস্টেলের সুপারিন্টেনডেন্ট হয়ে পরিবার থেকে কিছুটা দূরে চলে যায়। মন্টুও তার সদ্য যৌবনের বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। আর খোকা ক্রমেই পুরানো দিনের প্রাচুর্যতার স্মৃতি অন্তরে জমিয়ে রেখে নিঃসঙ্গতার বেদনায় ডুবতে থাকে।

চরিত্র

  • খোকা (কথক)
  • রাবেয়া
  • মন্টু
  • রুনু
  • ঝুনু
  • কিটকি
  • নিনু
  • ওভারশীয়ার কাকু
  • সুহাসিনী মাসি
  • শিরিন সুলতানা (খোকার মা)
  • খোকার ছোটখালা
  • খোকার বড়মামা, মনসুর
  • আজহার হোসেন (খোকার বাবা)
  • আবিদ হোসেন (রাবেয়ার আসল বাবা)

চলচ্চিত্ররূপ

শঙ্খনীল কারাগার ১৯৯২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলাদেশী বাংলা ভাষার সামাজিক চলচ্চিত্র। প্রখ্যাত বাংলাদেশী সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস শঙ্খনীল কারাগার অবলম্বনে চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন মুস্তাফিজুর রহমান।[1] মধ্যবিত্ত সমাজের গল্প[2] নিয়ে নির্মিত এই চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন ডলি জহুর, আসাদুজ্জামান নূর, সুবর্ণা মুস্তাফা, চম্পা। চলচ্চিত্রটি শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রসহ চারটি বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করে।[3]

তথ্যসূত্র

  1. "চলচ্চিত্রে হুমায়ূন, হুমায়ূনের চলচ্চিত্র"। দেশে বিদেশে। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মে ২০১৬
  2. "হুমায়ুন আহমেদ এর শঙ্খনীল কারাগার ছবির কিছু কথা"। আমার ব্লগ। ২০ জুলাই ২০১৩। ২৫ আগস্ট ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মে ২০১৬
  3. "মাছরাঙ্গায় শঙ্খনীল কারাগার"। সাতদিন। ১৯ জুলাই ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মে ২০১৬

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.