রূপসা নদীর বাঁকে
রূপসা নদীর বাঁকে একটি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাসংশ্লিষ্ট জীবন কাহিনী ভিত্তিক, আসন্ন বাংলাদেশী পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। বাংলাদেশ সরকারের অনুদানপুষ্ট চলচ্চিত্রটির চিত্রনাট্য রচনা ও পরিচালনা করছেন একুশে পদক বিজয়ী[1] নির্মাতা তানভীর মোকাম্মেল।[2] বিভিন্ন বয়সে একজন বামপন্থীর জীবনে ঐতিহাসিক ঘটনাবলীর সম্পৃক্ততা- এই চলচ্চিত্রের মূল উপজীব্য। গল্পের মূল চরিত্রে বয়স অনুযায়ী অভিনয় করেছেন জাহিদ হাসান শোভন, খায়রুল আলম সবুজ ও তাওসিফ সাদমান তূর্য্য।[3] এটা তানভীর মোকাম্মেল পরিচালিত সপ্তম চলচ্চিত্র।[4]
রূপসা নদীর বাঁকে | |
---|---|
পরিচালক | তানভীর মোকাম্মেল |
প্রযোজক | সাজ্জাদ খান |
রচয়িতা | তানভীর মোকাম্মেল |
চিত্রনাট্যকার | তানভীর মোকাম্মেল |
কাহিনীকার | তানভীর মোকাম্মেল |
শ্রেষ্ঠাংশে |
|
সুরকার | সৈয়দ সাবাব আলী আরজু |
সম্পাদক | মহাদেব শী |
প্রযোজনা কোম্পানি | কিনো আই ফিল্মস |
দৈর্ঘ্য | ১২০ মিনিট |
দেশ | ![]() |
ভাষা | বাংলা |
নির্মাণব্যয় | ৯৬ লক্ষ টাকা |
প্রেক্ষাপট ও কাহিনীসুত্র
—বিডিনিউজ২৪ কে দেয়া তানভীর মোকাম্মেলের সাক্ষাৎকার[5]
দুই ঘন্টা দৈর্ঘ্যের[5][6] এই চলচ্চিত্রে তিরিশ দশক হতে ১৯৭১ পর্যন্ত স্বদেশী আন্দোলন, তেভাগা আন্দোলন, ১৯৫০ সালের ২৪ এপ্রিল রাজশাহী জেলা কারাগারের খাপড়া ওয়ার্ডে ৭ জন বামপন্থীদের হত্যাসহ[7] বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য ঘটনাসমূহ একজন দেশপ্রেমীক, ভাগ্যতাড়িত চিরকুমার বামপন্থী নেতা- মানবরতন মুখোপাধ্যায়ের জীবনের পরিপ্রেক্ষিতে বর্ণিত হয়েছে, যিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় রাজাকারদের হাতে নিহত হন।[3]
মানবরতন মুখোপাধ্যায় খুলনা জেলার রূপসা নদীর পারে কর্ণপাড়া গ্রামে এক ক্ষয়িষ্ণু সামন্ত পরিবারে বৃটিশ আমলে জন্ম গ্রহণ করেন। শৈশবে পিতৃহীন হন এবং তরুণ বয়সে ‘অনুশীলন’ সমিতি ও পরে বামপন্থী আন্দোলনে যোগ দেন। তিনি কৃষক আন্দোলনে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন তাই এলাকার সবার কাছে ‘কমরেড মানবদা’ নামে পরিচিত ও সম্মানিত হয়ে ওঠেন। দরিদ্র নম:শুদ্র কৃষকদের থেকে পান ‘কমরেড ঠাকুর’ উপাধি। বৃটিশ সরকারের হাতে নিগৃহিত ও দেশ বিভাগের পর পাকিস্তান আমলে জেল-জুলুম-নির্যাতন ও নানা সংগ্রামের মাঝে ঝঞ্ঝাবিক্ষুদ্ধ জীবন অতিবাহিত করেন। যার করুণ সমাপ্তি হয় ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে।[8]
প্রাক-প্রযোজনা
তানভির মোকাম্মেল চলচ্চিত্রটি নির্মাণের জন্য ২০১৬-এর পূর্ব হতে পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য সরকারী অনুদানের জন্য আবেদন করলে ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে চলচ্চিত্রটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন, রুচিশীল ও শিল্পমান বিবেচনায় বাংলাদেশে সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয় হতে পঞ্চাশ লক্ষ টাকা অনুদান পায়।[9] চলচ্চিত্রটি নির্মাণে ছিয়ানব্বই লক্ষ টাকা ব্যয় হয়। অনুদা ছাড়া অবশিষ্ট অর্থ গণ-অর্থায়নের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়।[4][8] ১৩ ফেব্রুয়ারি,২০১৮ তারিখে ধানমন্ডির বাংলাদেশ ফিল্ম ইন্স্টিটিউটে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে চলচ্চিত্রটির শুভ মহরত অনুষ্ঠিত হয়।[10][11]
নির্মাণ
চিত্রগ্রহণ ও দৃশ্যধারণ
২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ তারিখে খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার ঝুপঝুপিয়া নদীর পাড় সংলগ্ন ওয়াপদা বাঁধে চলচ্চিত্রটির চিত্রগ্রহণ শুরু হয়[12][13] পরবর্তীতে ফুলতলা উপজেলার গ্রামাঞ্চল, দৌলতপুর রেল স্টেশন, কুমিল্লা ও ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ছবিটির দৃশ্য ধারণ করা হয়।[8] ২০১৮ সালে ছবিটির নব্বই শতাংশ চিত্র ধারণ সম্পন্ন হয়।[6] ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ তারিখে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে দৃশ্য ধারণের মাধ্যমে এই চলচ্চিত্রের চিত্রগ্রহণ সম্পন্ন হয়।[3][7][8]
কুশীলব
অভিনয় শিল্পী
গল্পের মূল চরিত্র মানবরতন মুখোপাধ্যায়ের মধ্যবয়স রূপদান করেছেন জাহিদ হাসান শোভন[12], বৃদ্ধ সময়ে খায়রুল আলম সবুজ ও তরুণ সময়ের রূপদান করেন তাওসিফ সাদমান তূর্য্য।[8]
এছাড়াও অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন রামেন্দু মজুমদার, নাজিবা বাশার(উর্মিমালা)[15], চিত্রলেখা গুহ, ঝুনা চৌধুরী, আফজাল কবির, রাজীব সালেহীন, মাসুম বাশার, অলোক বসু,[3] বৈশাখী ঘোষ[16], ইকবাল আহমেদ,[8] আবদুল্লাহ রানা, মহসিন শামীম, শরীফ হোসেন ইমন, মাহমুদ আলম, পার্থ প্রতিম, দেবাশীষ ঘোষ, খন্দকার সোহান, পংকজ মজুমদার, ইব্রাহীম বিদ্যুৎ, মিলি বাশার, শ্যামল বিশ্বাস, সঙ্গীতা চৌধুরী, স্বপন গুহ, সুশীল সাহা, জাহাঙ্গীর হোসেন, আছিরউদ্দীন মিলন, মেহেদী আল আমীন, আবদুস সেলিম, নবকুমার সরকার; শিশু শিল্পী হিয়া, হিমু প্রমুখ অভিনয় শিল্পীরা।[5][17] একটি পুলিশ সুপারের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন যুক্তরাজ্যের অভিনেতা অ্যান্ড্রু জোনস।[18][19]
অন্যান্য কলাকুশলী
চিত্রগ্রহণ করেছেন দশবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া মাহফুজুর রহমান খান।[8] নির্বাহী প্রযোজক ছিলেন সাজ্জাদ খান[13] সম্পাদনা করেছেন মহাদেব শী, শিল্পনির্দেশক ও প্রধান সহকারী পরিচালক ছিলেন উত্তম গুহ। পোশাক ও কাস্টিং ডিরেক্টরের দায়িত্ব পালন করছেন চিত্রলেখা গুহ; এছাড়াও পরিচালনায় ছিলেন রানা মাসুদ ও সগীর মোস্তফা[20] বাংলাদেশ ফিল্ম ইনস্টিটিউটের আটজন সাবেক শিক্ষার্থী চলচ্চিত্রটিতে তানভীর মোকাম্মেলের সহকারী হিসেবে কাজ করেছেন।[5]
মুক্তি ও প্রচারণা
ডিসেম্বর,২০১৯-এ চলচ্চিত্রটি মুক্তি দেয়ার প্রাথমিক পরিকল্পনা পিছিয়ে মার্চ,২০২০ করা হয়।[4][18]
তথ্যসুত্র
- "একুশে পদক প্রদান করেছেন প্রধানমন্ত্রী"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-১৩।
- "'রূপসা নদীর বাঁকে'র শুটিং সমাপ্তির পথে"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-১৩।
- "'রূপসা নদীর বাঁকে'র শুটিং শেষ"। www.dainikamadershomoy.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-১৩।
- "তানভীর মোকাম্মেলের রূপসা নদীর বাঁকে'র নির্মাণ শেষের পথে"। DailyInqilabOnline। ২০১৯-০৭-০৮। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-১৩।
- "আসছে তানভীর মোকাম্মেলের 'রূপসা নদীর বাঁকে'"। bangla.bdnews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-১৩।
- "অবশেষে শুটিং শেষ | banglatribune.com"। Bangla Tribune। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-১৩।
- "Shooting for 'Rupsha Nodir Baankey' wraps up"। The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৯-১০-০৩। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১১-০১।
- "শেষ হলো রূপসা নদীর বাঁকে সিনেমার শুটিং"। jagonews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-১৩।
- "সরকারি অনুদান পাচ্ছে ৬ চলচ্চিত্র"। Risingbd.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-১৩।
- "গণ অর্থায়নে তানভীর মোকাম্মেলের নতুন ছবি"। বেঙ্গল বারতা। ২০১৮-০২-১৫। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-১৩।
- "রুপসা নদীর বাকে সিনেমার মহরত | Rupsha Nodir Bake Mohorot | Buddhadeb | 13Feb18"।
- "নতুন ছবির কাজ শুরু করলেন শোভন"। মানবজমিন। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-১৩।
- "শুরু হলো তানভীর মোকাম্মেলের 'রুপসা নদীর বাঁকে'"। bangla.bdnews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-১৩।
- "'রূপসা নদীর বাঁকে' নিয়ে চিন্তিত নির্মাতা"। Bhorer Kagoj। ২০১৮-০৬-২৭। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-১৩।
- "'বাবা-মাকে আঙ্কেল-আন্টি ডেকেছি'"। NTV Online। ২০১৮-০৪-১৬। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-১১।
- "সাপলুডুতে মহুয়া একটা ফাঁদ"। www.kholakagojbd.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-১৪।
- "বামপন্থী বিপ্লবের গল্প 'রূপসা নদীর বাঁকে' | banglatribune.com"। বাংলা ট্রিবিউন। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-১৩।
- "'রূপসা নদীর বাঁকে' আসছে মার্চে"। bangla.bdnews24.com। ২০১৯-১২-২৮। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-২৯।
- "আসছে 'রূপসা নদীর বাঁকে'"। www.dainikamadershomoy.com। ২০১৯-১২-২৯। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-২৯।
- "তানভীর মোকাম্মেলের 'রূপসা নদীর বাঁকে'"। RTV Online। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-১৩।