ব্রেন্ডন কুরুপ্পু

ডন সার্ধ ব্রেন্ডন প্রিয়ন্তা কুরুপ্পু (তামিল: பிரண்டன் குருப்பு; জন্ম: ৫ জানুয়ারি, ১৯৬২) কলম্বোয় জন্মগ্রহণকারী প্রথিতযশা সাবেক শ্রীলঙ্কান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। দলে তিনি মূলতঃ উইকেট-রক্ষণের কাজে নিয়োজিত থাকতেন। পাশাপাশি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবেও সফলতা পেয়েছেন ব্রেন্ডন কুরুপ্পু

ব্রেন্ডন কুরুপ্পু
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামডন সার্ধ ব্রেন্ডন প্রিয়ন্তা কুরুপ্পু
জন্ম (1962-01-05) ৫ জানুয়ারি ১৯৬২
কলম্বো, শ্রীলঙ্কা
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই
ম্যাচ সংখ্যা ৫৪
রানের সংখ্যা ৩২০ ১০২২
ব্যাটিং গড় ৫৩.৩৩ ২০.০৩
১০০/৫০ ১/০ ০/৪
সর্বোচ্চ রান ২০১* ৭২
বল করেছে
উইকেট
বোলিং গড়
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট -
সেরা বোলিং
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১/০ ৩০/৮
উৎস: ক্রিকইনফো[1], ১৩ ডিসেম্বর ২০১৬

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

৫ জানুয়ারি, ১৯৬২ তারিখে কলম্বোয় জন্মগ্রহণ করেন ব্রেন্ডন কুরুপ্পু। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ব্লুমফিল্ড ক্রিকেট ও অ্যাথলেটিক এবং বার্গার রিক্রিয়েশন ক্লাবে খেলেন।[2] ১৯৮৩ থেকে ১৯৯০ সময়কালে ৫৪টি একদিনের আন্তর্জাতিকে নিয়মিত অংশগ্রহণ করেছেন। কিন্তু টেস্ট জীবনে তেমন সফলতা লাভ করতে পারেননি। তবে, কলম্বোয় একটি কার্যকরী ইনিংস খেলেছেন। টেস্ট ক্রিকেট অভিষেকে ২০১ রান তুলে নিজস্ব প্রথম সেঞ্চুরি ও শ্রীলঙ্কার পক্ষে অভিষেকে প্রথম ডাবল করেছেন তিনি।[2]

ক্রিকেট বিশ্বকাপ

ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ১৯৮৩ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে অংশগ্রহণ ঘটে তার। পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই ছক্কা ও সাত চার সহযোগে নিজস্ব সেরা ৭২ রান তুলেন। কিন্তু তার দল ৫০ রানের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিল। পরবর্তী তিন খেলায় তার ভূমিকা সন্তোষজনক ছিল না। ৩০-এর কোটা অতিক্রম করতে ব্যর্থ হন। সবগুলোতেই তার দল পরাজিত হয়েছিল। কিন্তু ডার্বিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পুণরায় নিজের ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনে এগিয়ে আসেন ও ৬২ রান তুলেন। ১৮২ রানের লক্ষ্যমাত্রায় শ্রীলঙ্কা ৩ উইকেটে জয় পায় যা প্রতিযোগিতার একমাত্র জয় ছিল।

বিশ্বকাপের পর কুরুপ্পু দলে আসা-যাওয়ার পালায় ছিলেন। ১৯৮৬ সালের পূর্ব-পর্যন্ত দলের নিয়মিত উইকেট-রক্ষক হিসেবে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। এশিয়া কাপে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলার সুযোগ ঘটে তার। উভয় খেলায় দল জয় পেলেও নিজের সামর্থ্যতার প্রকাশ ঘটাননি।

টেস্ট ক্রিকেট

শীত মৌসুমে ১৬ এপ্রিল, ১৯৮৭ তারিখে সফরকারী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে কলম্বো ক্রিকেট ক্লাব গ্রাউন্ডে টেস্ট ক্রিকেট অভিষেক ঘটে তার। গাই ডি অলউইসের ব্যাটে ব্যর্থতায় দল নির্বাচকমণ্ডলী তাকে এ সুযোগ দেয়। বৃষ্টিবিঘ্নিত খেলায় সিরিজের প্রথম টেস্টে রিচার্ড হ্যাডলিইয়ান চ্যাটফিল্ডের ন্যায় প্রতিষ্ঠিত বোলারদেরকে মোকাবেলা করে কুরুপ্পু দ্বিতীয় দিনে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে তার প্রথম সেঞ্চুরি হাঁকান। ১৯৮৪ সালে সিদাথ ওয়েতিমুনি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৯০ রান তোলার পর তিনি টেস্টে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ অপরাজিত ২০১ রান তুলে নতুন শ্রীলঙ্কান রেকর্ড গড়েন। দীর্ঘ ৭৭৭ মিনিট ক্রিজে অবস্থান করে প্রথম শ্রীলঙ্কান হিসেবে টেস্টে দ্বি-শতক হাঁকান। পরবর্তীতে আরও ছয়জন ব্যাটসম্যান এ কীর্তিগাঁথায় নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছেন। তবে দ্বি-শতকধারী ব্যাটসম্যানদের মধ্যে কুরুপ্পু সবচেয়ে কম টেস্টে অংশ নিয়েছেন।

হোটেলে অবস্থানকারী নিউজিল্যান্ড দলের কাছাকাছি এলাকায় বোমা বিস্ফোরণ ঘটলে নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে উভয় দল পারস্পরিক সম্মতিক্রমে সিরিজের বাদ-বাকী খেলাগুলো থেকে নিজেদেরকে বিরত রাখে। তাস্বত্ত্বেও তার অবদানের কথা স্বীকার করে নির্বাচকমণ্ডলী জানুয়ারি, ১৯৮৮ সালে ত্রি-দেশীয় বিশ্ব সিরিজ প্রতিযোগিতা শেষে তাকে ওডিআই দলে নিয়মিতভাবে রাখেন। কিন্তু ব্যাট হাতে তেমন কিছু করতে পারেননি।

ছন্দপতন

অক্টোবর, ১৯৮৯ সালে নেহেরু কাপে পুণরায় বিপর্যস্ত হন। সর্বসাকুল্যে পাঁচ খেলায় তিনি মাত্র ৩৬ রান তুলতে পেরেছিলেন। পাশাপাশি ছয়-দেশীয় ঐ প্রতিযোগিতায় শ্রীলঙ্কা দল সর্বনিম্ন স্থান দখল করে। স্বাভাবিকভাবেই কুরুপ্পুকে দল থেকে বাদ দেয়া হয় ও হাসান তিলকরত্নের দলে প্রবেশের সুযোগ লাভ হয়।

পরবর্তীতে অবশ্য ১৯৯১ সালে তাকে শেষবারের মতো ইংল্যান্ড সফরে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানরূপে টেস্ট খেলতে দেখা যায়। শ্রীলঙ্কা ১৩৭ রানের ব্যবধানে হারে ও তিনি ৫ এবং ২১ রান তুলেছিলেন।

অবসর

ক্রিকেট খেলা থেকে দূরে চলে গেলেও শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখেন। ২০০৪ সালের শেষদিকে পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড সফরে অন্তর্বর্তীকালীন দলীয় ম্যানেজার মনোনীত হন। বর্তমানে মালদ্বীপ জাতীয় ক্রিকেট দলের কোচের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি।

তথ্যসূত্র

  1. ক্রিকইনফো প্রোফাইল
  2. Smyth, Rob। "Player Profile: Brendon Kuruppu"। CricInfo। সংগ্রহের তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০০৯

আরও দেখুন

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.