সিলেটি নাগরী
সিলেটি নাগরী (সিলেটি: ꠍꠤꠟꠐꠤ ꠘꠣꠉꠞꠤ Silôṭi Nagôri) বা নাগরী লিপি বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলে এবং ভারতের আসাম রাজ্যের বরাক উপত্যকায় ব্যবহৃত একটি লিপি। সিলেটের বাইরে বাংলাদেশের ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ জেলায় এই লিপির প্রচলন ছিল বলে জানা যায়। এই লিপি দিয়ে প্রমিত বাংলা, সংস্কৃত কিংবা প্রাকৃত নয়, বরং সিলেটি ভাষাই লেখা হত।[1]
সিলেটি নাগরী | |
---|---|
ধরন | আবুগিদা
|
ভাষাসমূহ | সিলেটি, বাংলা |
সময় কাল | আনুমানিক ১৩০৩ খ্রিস্টাব্দ |
দিক | বামদিক থেকে ডানদিকে |
আইএসও ১৫৯২৪ | Sylo, 316 |
ইউনিকোড উপনাম | Syloti Nagri |
ইউনিকোড পরিসীমা | U+A800–U+A82F |
ঐতিহ্যগতভাবে বিশ্বাস করা হয়, ব্রাহ্মী লিপি, হিন্দুধর্মমতে স্রষ্টা ব্রহ্মার পক্ষ থেকে দেওয়া একটি লিপি, তাই সিলেটের মুসলমানগণ এই লিপি ব্যবহার করে তাদের সাহিত্যরচনা কিংবা লেখালেখি করতে অস্বীকৃত হন। আর তাই ধর্মীয় অনুভূতিকে প্রাধান্য দিয়ে তাঁরা আরবি আর ফার্সি হরফকে নিজেদের হরফ বলে ধরে নিয়ে আলাদা একটি লিপি তৈরি করে নেওয়ার তাড়না অনুভব করেন। এরই ধারাবাহিকতায় জন্ম হয় নাগরী লিপির। যদিও জন্মগতভাবে সিলেটি নাগরী একটি ব্রাহ্মী লিপি এবং বিহারের কায়থী লিপির এবং বাংলা বর্ণমালার সাথে এ লিপির ব্যাপক মিল লক্ষণীয়।
নামকরণ
নাগরী লিপি, সিলেটি নাগরী ছাড়াও জালালাবাদী নাগরী, ফুল নাগরী[2], মুসলমানী নাগরী[1], মোহাম্মদী নাগরী নামে পরিচিত ছিল। তবে যে নামে পরিচিতি থাকুক না কেন নামের সাথে 'নাগরী' শব্দটি যুক্ত ছিলই।[3]
উদ্ভব

এই লিপির উৎস সম্পর্কে পরস্পর-বিরোধী বিভিন্ন ধারণামূলক ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। সাধারণ ধারণা হলো সিলেটের মুসলমানরাই এই লিপির উদ্ভাবক, তবে তুলনামূলক নিচু জাতের লোকেরা এই লিপির চর্চা করতেন। আবার ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় প্রমুখের মতে, বিখ্যাত ধর্মীয়-পরিব্রাজক জনাব শাহ জালাল [রহ.] ত্রয়োদশ-চতুর্দশ শতাব্দিতে যখন সিলেট আগমন করেন, তিনিই এই লিপি সাথে করে নিয়ে এসেছিলেন। নাগরী লিপিতে রচিত বিপুল সংখ্যক এবং সিংহভাগ সাহিত্যকর্মই সুফিবাদ অনুসরণ করে বলে এই ধারণা অমূলক মনে হয় না। অন্যদিকে ড. আহমদ হাসান দানীর মতে, আফগান শাসনের সময়, অর্থাৎ আফগানরা যখন সিলেটে অবস্থান করতেন, ঐ সময়ই তাঁদের দ্বারা এই লিপির উদ্ভব ও বিকাশ ঘটে। এই মতকে পৃষ্ঠপোষকতা দেয় আফগান মুদ্রায় উল্লেখিত লিপি, যার সাথে সিলেটি নাগরীর কয়েকটি বর্ণের মিল রয়েছে। তাছাড়া সিলেটে আফগান অভিবাসীও সংখ্যায় অনেক ছিলেন। এই দুই ব্যাখ্যা সিলেটি নাগরীর উদ্ভবের ইতিহাস হিসেবে প্রাধান্য পেলেও আরো যেসব মতামত প্রচলিত আছে সেগুলো হলো:[3]
- দেবনাগরীর সঙ্গে যেহেতু সিলেটবাসী পরিচিত ছিলেন, তাই দেবনাগরীর আদলেই এই লিপি সিলেটিরা তৈরি করে নিয়েছিলেন;
- প্রতিবেশী নেপাল ইত্যাদি দেশ থেকে আগত বৌদ্ধ ভিক্ষুদের মাধ্যমে এই লিপি সিলেটে উদ্ভাবিত হয়;
- সম্ভবত সপ্তদশ-অষ্টাদশ শতাব্দিতে বিহার যুক্তপ্রদেশ থেকে আগত মুসলমান সিপাহী ও বিদেশাগত মুসলমানদের সুবিধার জন্য সিলেটি নাগরী লিপির সৃষ্টি হয়[4]
- যৌক্তিকতা কিংবা উৎস নির্দেশ না করেই বলা হয় কোনো এক সুচতুর মুসলমান মুসলিম জনগণের মধ্যে সাধারণ লেখাপড়া চালু করার নিমিত্তে বাংলা লিপি থেকেই এই নাগরী লিপি তৈরি করে নেন। এটা মূলত লৌকিক বিশ্বাস।[5]
তবে সব মতামত যাচাই করে বিশেষজ্ঞগণ সাকুল্যে তিনটি মতকেই প্রাধান্য দিয়েছেন: শাহ জালালের [রহ.] সময়ে তাঁর অনুসারীদের দ্বারা, আফগান শাসনামলে আফগানদের দ্বারা কিংবা দোভাষী পুঁথির সমান্তরালে সিলেটেই এর সূত্রপাত।[3]
লিপি পরিচিতি
সিলেটি নাগরী লিপি খুবই সরল স্বভাবের একটি লিপি ছিল। এর অক্ষর সংখ্যা ছিল বাংলা লিপির চেয়েও কম। তাছাড়া এই লিপিতে ছিল না কোনো যুক্তাক্ষরও।[4] নাগরী লিপিতে বর্ণমালার সংখ্যা সাধারণভাবে ৩২টি, "ং" (অনুস্বার)-কে "০" হিসেবে ধরে এর সংখ্যা ৩৩টি; এর মধ্যে স্বরবর্ণ ৫টি, ব্যঞ্জণবর্ণ ২৮টি।
স্বরবর্ণ
নাগরী লিপির সর্বসম্মত স্বরবর্ণ সংখ্যা ছিল ৫টি। যদিও বিভিন্ন গ্রন্থে আরো ক'টি স্বরবর্ণের উল্লেখ পাওয়া যায়। যেমন: শ্রী অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি প্রণীত শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত বইয়ের পরিশিষ্টে "শ্রীহট্টের মোসলমানী নাগরাক্ষর" শিরোনামে উল্লেখ করা নাগরী বর্ণমালায় স্বরবর্ণ দেখা যায় ৬টি। সেখানে সর্বসম্মত ৫টি বর্ণের পাশাপাশি "ঐ" উচ্চারণের আরেকটি চিহ্নের উল্লেখ আছে। উল্লেখ্য যে, বর্ণমালার স্বরবর্ণের অক্ষরসমূহের ধারবাহিকতা হুবহু বাংলা বর্ণমালার ধারাবাহিকতা অনুসরণ করে না।
হরফ | কার | বাংলা লিপ্যন্তর | রোমান লিপ্যন্তর | আইপিএ |
---|---|---|---|---|
ꠀ | ꠣ | আ | a | /a/ |
ꠁ | ꠤ | ই | i | /i/ |
ꠃ | ꠥ | উ | u | /u/ |
ꠄ | ꠦ | এ | e | /e/ |
ꠅ | ꠧ | ও | o | /o/ |
N/A | ꠂ | ঐ | ôi | /ɔi/ |
ব্যঞ্জণবর্ণ
নাগরী লিপিতে ২৭টি ব্যঞ্জণবর্ণ রয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন প্রতীক এই লিপির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
হরফ | বাংলা লিপ্যন্তর | রোমান লিপ্যন্তর | আইপিএ |
---|---|---|---|
ꠇ | ক | kô | /xɔ/ |
ꠈ | খ | khô | /xɔ/ |
ꠉ | গ | gô | /gɔ/ |
ꠊ | ঘ | ghô | /gɔ/ |
ꠌ | চ | cô | /sɔ/ |
ꠍ | ছ | chô | /sɔ/ |
ꠎ | জ | jô | /zɔ/ |
ꠏ | ঝ | jhô | /zɔ/ |
ꠐ | ট | ṭô | /ʈɔ/ |
ꠑ | ঠ | ṭhô | /ʈɔ/ |
ꠒ | ড | ḍô | /ɖɔ/ |
ꠓ | ঢ | ḍhô | /ɖɔ/ |
ꠔ | ত | tô | /t̪ɔ/ |
ꠕ | থ | thô | /t̪ɔ/ |
ꠖ | দ | dô | /d̪ɔ/ |
ꠗ | ধ | dhô | /d̪ɔ/ |
ꠘ | ন | nô | /nɔ/ |
ꠙ | প | pô | /ɸɔ/ |
ꠚ | ফ | phô | /fɔ/ |
ꠛ | ব | bô | /bɔ/ |
ꠜ | ভ | bhô | /bɔ/ |
ꠝ | ম | mô | /mɔ/ |
ꠞ | র | rô | /ɾɔ/ |
ꠟ | ল | lô | /lɔ/ |
ꠠ | ড় | ṛô | /ɽɔ/ |
ꠡ | শ | shô | /ʃɔ/ |
ꠢ | হ | hô | /ɦɔ/ |
ধ্বনিনির্দেশক চিহ্ন
চিহ্ন | রোমান লিপ্যন্তর | আইপিএ |
---|---|---|
꠆ | – | – |
ꠋ | ngô | /ŋɔ/ |
꠨ | – | – |
꠩ | – | – |
꠪ | – | – |
꠫ | – | – |
সংখ্যা পদ্ধতি
সিলেটি নাগরী লিপিতে বাংলা সংখ্যা পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
সিলেটি সংখ্যা | হিন্দু-আরবি সংখ্যা | রোমান লিপ্যন্তর | আইপিএ |
---|---|---|---|
০ | 0 | shuinnô | /ʃuinːɔ/ |
১ | 1 | ex | /ex/ |
২ | 2 | dui | /d̪ui/ |
৩ | 3 | tin | /t̪in/ |
৪ | 4 | sair | /saiɾ/ |
৫ | 5 | fas | /ɸas/ |
৬ | 6 | sôy | /sɔe̯/ |
৭ | 7 | hat | /ɦat̪/ |
৮ | 8 | aṭ | /aʈ/ |
৯ | 9 | nôy | /nɔe̯/ |
১০ | 10 | dôsh | /d̪ɔʃ/ |
ব্যাপ্তি
আগেই উল্লেখ করা হয়েছে নাগরী লিপি সিলেট ছাড়াও তৎসংলগ্ন অন্যান্য এলাকায়ও ব্যাপ্ত ছিল। মুদ্রণজনিত কারণে পরিব্যাপ্ত হয়েছিল কলকাতা, শিলং প্রভৃতি স্থানে। পন্ডিতদের লেখনী থেকে বাঁকুড়ায় এই লিপির ব্যাপ্তি ছিল বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে বিভিন্ন উৎস থেকে জানা যায় নাগরী লিপি সিলেট সংলগ্ন এলাকা ছাড়াও দূরবর্তি অঞ্চল যেমন: বরিশাল, চট্টগ্রাম, নোয়াখালি প্রভৃতি অঞ্চলেও ব্যাপৃত ছিল।[3] শ্রীপদ্মনাথ দেবশর্ম্মা'র বিবরণী থেকে পাওয়া যায়:
“ | পূর্ব্বে এই অক্ষর শ্রীহট্ট সহরের আশে পাশে প্রচলিত ছিল। ছাপার পর এইক্ষণে শ্রীহট্ট জেলার সমগ্র, কাছাড়, ত্রিপুরা, নোয়াখালি, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও ঢাকা অর্থাৎ পদ্মার পূর্ব্বদিকে বঙ্গভূমির সর্ব্বত্র এই অক্ষর মোসলমান জনসাধারণের মধ্যে প্রচলিত হয়েছে।[6] | ” |
চট্টগ্রাম ও বরিশালে লিপির ব্যপ্তি হয়েছে নৌপথের যাত্রীদের মাধ্যমে বলে অনেকে ধারণা পোষণ করেন। এছাড়াও সিলেটের প্রচুর লোক যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমানোর মাধ্যমে সেখানেও সাম্প্রতিককালে এর পরিচিতি ছড়িয়ে পড়েছে।[3]
ব্যবহার
ধর্মীয় ভাবকে পুঁজি করে যেখানে এই লিপির জন্ম, সেখানে ধর্মীয় সাহিত্য রচিত হওয়ার পাশাপাশি সিলেটি নাগরী স্থান করে নিয়েছিল সিলেটিদের দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন কার্যাকার্যে। এই লিপিতে লেখা হয়েছে চিঠি, হিসাবপত্র, এমনকি সরকারি দলিল-দস্তাবেজের মার্জিনে সাক্ষীরা স্বাক্ষরও করেছেন। তৎকালীন বিভিন্ন প্রসিদ্ধ সাহিত্য হালতুননবী, জঙ্গনামা, মহব্বতনামা, নূর নছিহত, তালিব হুছন ছাড়াও রচিত হয়েছে চিকিৎসাশাস্ত্র, জাদুবিদ্যার পুস্তক। রচিত হয়েছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কবিতা। সিলেটি আঞ্চলিক শব্দ ও বাক্যভাণ্ডার দিয়ে রচিত লেখনী ছাড়াও অ-সিলেটি, অ-বাংলা রচনাও রচিত হয়েছে সিলেটি নাগরী লিপিতে। তবে প্রতিষ্ঠানবিরোধী চরিত্র এই লিপির জন্ম থেকে সম্পৃক্ত ছিল বলে কখনও বিদ্যায়তনে আনুষ্ঠানিক শিক্ষায় পাঠ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়নি এই লিপি। তবুও সাধারণ্যের সরল জীবনে ছড়িয়ে যেতে এই লিপির বাধা পেতে হয়নি।[3] এমনকি বাংলা লিপিতে লেখা জানতেন না এমন অনেক স্বল্প শিক্ষিত কিংবা অশিক্ষিত ব্যক্তি নাগরী লিপিতে লিখতে জানতেন কিংবা স্বাক্ষর করতে পারতেন।[4]
নাগরী সাহিত্য

সিলেটি নাগরী লিপির সহজবোধ্যতা আর সহজসাধ্যতা সাধারণ্যের সাহিত্য রচনার দুয়ার উন্মোচন করেছিল, আর তারই ফলশ্রুতিতে রচিত হয়েছে বিপুল সংখ্যক নাগরী সাহিত্য। তৎকালীন শ্রীহট্ট শহরের ইসলামীয়া প্রেস, সারদা প্রেস ও কলিকাতার জেনারেল প্রিন্টিং প্রেসে নাগরী লিপিতে লেখা ছাপা হতো। নাগরী লিপিতে রচিত পুঁথি কিছুটা গল্প ও উপন্যাস-শ্রেণীর।[4] তবে কবিতাও কম রচনা হয়নি এই লিপিতে। এসকল কবিতা যথেষ্ট ভাবমন্ডিত। নাগরী লিপিতে পএআর ছন্দে লেখা সিলেটি ভাষার একটি কবিতার প্রথম ৮ চরণ এরকম:
“ | ওহে মন বুইদধি জদি থাকে তর মাজে। মিলিওনা তুমি কভু নাদান শমাজে। |
” |
কম্পিউটার ফন্ট
সিলেটি নাগরী লিপির কোনো কম্পিউটার ফন্ট ছিল না। পরবর্তিতে ১৯৮০'র দশকের শেষাংশে ফকির আবদুল ওহাব চৌধুরীর উত্তরপুরুষ যুক্তরাজ্যপ্রবাসী জলিল চৌধুরী তাঁর ভাতিজা এনায়েত চৌধুরীকে দিয়ে সিলেটি নাগরী লিপির একটি কম্পিউটার সফটওয়্যার তৈরি করিয়ে নেন। তাঁরা এই সফটওয়্যার দিয়ে সিলেটি নাগরী লিপি শিক্ষার একটি পুস্তিকাসহ আবদুল ওহাব চৌধুরীর বেশ কিছু বইও প্রকাশ করেন। ওদিকে যুক্তরাজ্যস্থ সংগঠন সিলেটি ট্রান্সলেশন এ্যান্ড রিসার্চ (STAR)-এর জেমস লয়েড উইলিয়ামস ও ড. সু লয়েড উইলিয়ামস দম্পতি, এবং রজার গোয়েন নাগরী লিপির জন্য আলাদাভাবে আলাদাভাবে পৃথক দুটি সফ্টওয়্যার তৈরি করেন। তবে উদ্ভাবিত সিলেটি নাগরীর সফ্টওয়্যার ও ফন্টগুলো পাশাপাশি নিলে STAR কর্তৃক প্রণীত "New Surma" ফন্টটিই সিলেটি নাগরীর সাথে যথেষ্ট সাজুয্যপূর্ণ। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ফন্টের বাঁকা (italic) রূপটিই মূল সিলেটি নাগরীর সবচেয়ে কাছাকাছি।[3]
ইউনিকোড সিলটি নাগরী
সিলেটি নাগরী লিপিকে, সিলেটি ট্র্যান্সলেশন এ্যান্ড রিসার্চ (STAR) সরবরাহকৃত "New Surma Font"-এর সহায়তা নিয়ে[9] ইউনিকোড কনসোর্টিয়াম ইউনিকোডে অন্তর্ভুক্ত করেছে। যদিও সেখানে "সিলেটি নাগরী" নয়, বরং "সিলটি নাগরী" বা "ছিলটি নাগরী" (Syloti Nagri) নামে স্থান দেয়া হয়েছে এই লিপিকে। ইউনিকোড U+A800 থেকে U+A82F পর্যন্ত স্থান পেয়েছে সিলেটি নাগরীর ৪৪টি হরফ এবং চিহ্ন। সর্বশেষ ইউনিকোড ভার্ষণ 6.0-তে এই ফন্টগুলো পাওয়া যায়।[10]
সিলেটি নাগরী[১][২] অফিসিয়াল ইউনিকোড কনসোর্টিয়াম কোড চার্ট (PDF) | ||||||||||||||||
0 | 1 | 2 | 3 | 4 | 5 | 6 | 7 | 8 | 9 | A | B | C | D | E | F | |
U+A80x | ꠀ | ꠁ | ꠂ | ꠃ | ꠄ | ꠅ | ꠆ | ꠇ | ꠈ | ꠉ | ꠊ | ꠋ | ꠌ | ꠍ | ꠎ | ꠏ |
U+A81x | ꠐ | ꠑ | ꠒ | ꠓ | ꠔ | ꠕ | ꠖ | ꠗ | ꠘ | ꠙ | ꠚ | ꠛ | ꠜ | ꠝ | ꠞ | ꠟ |
U+A82x | ꠠ | ꠡ | ꠢ | ꠣ | ꠤ | ꠥ | ꠦ | ꠧ | ꠨ | ꠩ | ꠪ | ꠫ | ||||
টীকা |

তথ্যসূত্র
- "সিলেটি নাগরী", মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম; বাংলাপিডিয়া, ১০ম খণ্ড; বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা। মার্চ ২০০৩ খ্রিস্টাব্দ। পৃষ্ঠা ১৯৭। পরিদর্শনের তারিখ: মে ৬, ২০১১ খ্রিস্টাব্দ।
- "শ্রীহট্টে নাগরী সাহিত্য (জন্মকথা)", এম. আশরাফ হোসেন সাহিত্যরত্ন; শ্রীহট্ট সাহিত্য-পরিষৎ-পত্রিকা, ১ম বর্ষ ৩য় সংখ্যা; ১৩৪৩ বঙ্গাব্দ; পৃষ্ঠা ৯৮। উদ্ধৃতি: "সহজ ও সুন্দর বলিয়া জনসাধারণ ইহার অপর এক নাম দিয়াছিলেন সিলেটে 'ফুল নাগরী'।"
- "সিলেটি নাগরী:ফকিরি ধারার ফসল", মোহাম্মদ সাদিক; বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা; ডিসেম্বর ২০০৮; ISBN 984-300-003029-0। পরিদর্শনের তারিখ: ৫ মে ২০১১ খ্রিস্টাব্দ।
- "হজরত শাহ্ জালাল ও সিলেটের ইতিহাস", সৈয়দ মুর্তাজা আলী; উৎস প্রকাশন, ঢাকা; জুলাই ২০০৩; আইএসবিএন ৯৮৪-৮৮৯-০০০-৮ ISBN বৈধ নয়; পৃষ্ঠা ১৪৮ (২০০)। পরিদর্শনের তারিখ: ০৬ মে ২০১১ খ্রিস্টাব্দ।
- "শ্রীহট্ট-নাগরী লিপির উৎপত্তি ও বিকাশ", আহমদ হাসান দানী; বাঙলা একাডেমী পত্রিকা, প্রথম বর্ষ, দ্বিতীয় সংখ্যা, ভাদ্র-অগ্রহায়ণ, ১৩৬৪ বঙ্গাব্দ; পৃষ্ঠা ১।
- "সিলেট নাগরী", শ্রী পদ্মনাথ দেবশর্ম্মা; সাহিত্য-পরিষৎ-পত্রিকা, ৪র্থ সংখ্যা; ১৩১৫ বঙ্গাব্দ, পৃষ্ঠা ২৩৬।
- "সিলেটের আঞ্চলিক ভাষার অভিধান"(পরিশিষ্ট ৬), সংকলন, গ্রন্থনা ও সম্পাদনা: আহমেদ আমিন চৌধুরী; উৎস প্রকাশন, ঢাকা; নভেম্বর ২০০৯। ISBN 984-701-830015-6। পরিদর্শনের তারিখ: ৬ মে ২০১১ খ্রিস্টাব্দ।
- "সিলেটের নাগরীর পহেলা কিতাব ও দুইখুরার রাগ", সম্পাদনা: অনুরাধা চন্দ্র; দে'জ পাবলিশিং, কলকাতা, ভারত।
- ফন্ট এ্যাকনোলেজমেন্ট্স, www.unicode.org। পরিদর্শনের তারিখ: ৫ মে ২০১১ খ্রিস্টাব্দ।
- Syloti Nagri (ইউনিকোড তালিকা, version 6.0), ইউনিকোড কনসোর্টিয়াম। পরিদর্শনের তারিখ: ৫ মে ২০১১ খ্রিস্টাব্দ।
বহিঃসংযোগ
- একটি সম্পূর্ণ নাগরী আর্কাইভ
- সিলেটি নাগরী, ওমনিগ্লট.কম।
- সিলেটি নাগরী বিষয়ক বাংলা নিবন্ধ, বাংলাপিডিয়া (অনলাইন সংস্করণ)।
- New Surma ফন্ট বৃত্তান্ত (নাগরী লিপির সবচেয়ে কাছাকাছি পিসি ফন্ট), www.sylhety.org.uk।
- সিলেটি নাগরি: ইউনিকোড, ইউনিকোড কনসোর্টিয়াম।