তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়ন

তেওয়ারীগঞ্জ বাংলাদেশের লক্ষ্মীপুর জেলার অন্তর্গত লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার একটি ইউনিয়ন

তেওয়ারীগঞ্জ
ইউনিয়ন
১৯নং তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ
তেওয়ারীগঞ্জ
বাংলাদেশে তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২২°৫৩′২৩″ উত্তর ৯০°৫৩′২৪″ পূর্ব
দেশ বাংলাদেশ
বিভাগচট্টগ্রাম বিভাগ
জেলালক্ষ্মীপুর জেলা
উপজেলালক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা
প্রতিষ্ঠাকাল২০০৮
সরকার
  চেয়ারম্যানওমর হোসাইন ভুলু
জনসংখ্যা (২০১১)
  মোট২৬,৯১১
সাক্ষরতার হার
  মোট৩৬.১০%
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
পোস্ট কোড৩৭০২
ওয়েবসাইটপ্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট

আয়তন

জনসংখ্যা

২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের জনসংখ্যা ছিল ২৬,৯১১ জন।[1] এর মধ্যে পুরুষ ১৩,০৭৬ জন এবং নারী ১৩,৮৩৫ জন।

অবস্থান ও সীমানা

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার সর্ব-দক্ষিণে তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের অবস্থান। এ ইউনিয়নের পূর্বে কুশাখালী ইউনিয়ন, উত্তরে মান্দারী ইউনিয়নলাহারকান্দি ইউনিয়ন, পশ্চিমে ভবানীগঞ্জ ইউনিয়ন, দক্ষিণ-পশ্চিমে কমলনগর উপজেলার তোরাবগঞ্জ ইউনিয়ন এবং দক্ষিণে নোয়াখালী জেলার নোয়াখালী সদর উপজেলার আণ্ডারচর ইউনিয়ন অবস্থিত।

ইতিহাস

সুলতানি এবং মুঘল সাম্রাজ্যের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ ভুলুয়া রাজ্যের "শহর কসবা" নৌঘাঁটি তথা বর্তমান তেওয়ারীগঞ্জ। ভবানীগঞ্জ প্রতিষ্ঠার প্রায় ৬০০ বছর পূর্বে ভুলুয়া রাজ্যের গোড়াপত্তন হয়। যদিও রানী ভবানী উনবিংশ শতকের কোন এক সময় ভবানীগঞ্জ নামক এলাকার পত্তন করেন। তারপর ভবানীগঞ্জ এলাকা অনেকটা বাজার হিসেবে চাঙ্গা হয়ে ওঠে। কিন্তু একথা সত্য যে শহর কসবার (বর্তমান তেওয়ারীগঞ্জের) রয়েছে হাজার বছরের ইতিহাস। এশিয়া মহাদেশীয় মূল ভূখণ্ডের সর্বদক্ষিণ অংশ হলো বর্তমান লক্ষ্মীপুর জেলা। কেননা এই জেলার দক্ষিণে রয়েছে মেঘনা এবং তারপরেই বঙ্গোপসাগর। বিখ্যাত চীনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাঙ ৬৩৮ খ্রিষ্টাব্দে বাংলা ভ্রমণ করেন। এ সময় প্রবল প্রতাপের সাথে হর্ষবর্ধন বাংলা শাসন করেন। হিউয়েন সাঙ সমতটকে তার ভাষায় 'সান-মো-তা-চা' (সমতট) বলে উল্লেখ করেন। তিনি এর পরিসীমা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন এ দেশটির পরিসীমা তিন হাজার লি (ছয় লি-তে এক মাইল) এবং এটি বিশাল সাগর তটে অবস্থিত। সাং তার 'সিউতী' নামক ভ্রমণ বৃত্তান্তে 'কমলাঙ্ক'কে সমুদ্র তীরবর্তী বলে উল্লেখ করেন। হিউয়েন সাঙ এর বর্ণনা অনুযায়ী এ কথাই প্রতীয়মান হয় যে ৬৩৮ খ্রিষ্টাব্দের বহু পরে ও ১২০০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে সমতটের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল তথা ভুলুয়া রাজ্য সমুদ্র বক্ষ থেকে জেগে ওঠে। এর মাঝামাঝি প্রায় অষ্টম শতক থেকে ধীরে ধীরে সমতটের এই অংশে মানব পদচারণা শুরু হয়। তবে ভুলুয়া রাজ্য তথা বর্তমান তেওয়ারীগঞ্জের মূল ইতিহাস শুরু হয় ১২০৩ খ্রিষ্টাব্দে বিশ্বম্ভর শূরের ভুলুয়া রাজ্য পত্তনের মধ্য দিয়ে। ২০০৮ সালে ১৭নং ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নকে ভাগ করে ১৯নং তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়ন গঠিত হয়।

প্রশাসনিক কাঠামো

তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়ন লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার আওতাধীন ১৯নং ইউনিয়ন পরিষদ। এ ইউনিয়নের প্রশাসনিক কার্যক্রম লক্ষ্মীপুর সদর থানার আওতাধীন। এটি জাতীয় সংসদের ২৭৬নং নির্বাচনী এলাকা লক্ষ্মীপুর-৩ এর অংশ। এটি ১১টি মৌজা নিয়ে গঠিত। এ ইউনিয়নের গ্রামসমূহ হল:

  • পূর্ব চর উভূতি
  • দক্ষিণ আঁধারমানিক
  • পূর্ব ধর্মপুর
  • ধর্মপুর
  • আঁধারমানিক
  • হোসেনপুর
  • চর মনসা
  • মধ্য চর মনসা
  • পূর্ব চর মনসা
  • বিনোদ ধর্মপুর
  • শহর কসবা

শিক্ষা ব্যবস্থা

তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের সাক্ষরতার হার ৩৬.১০%। এ ইউনিয়নে ২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১টি দাখিল মাদ্রাসা, ১০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৫টি নূরানী মাদ্রাসা রয়েছে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

  • শহীদ শেখ রাসেল উচ্চ বিদ্যালয়
  • হোসেনপুর উচ্চ বিদ্যালয়
  • বাদশা মিয়া তালিমুল কোরআন নূরানী মাদ্রাসা
  • বিনোদ ধর্মপুর তারতীলুল কুরআন মাদ্রাসা

যোগাযোগ ব্যবস্থা

খাল ও নদী

হাট-বাজার

  • পুরাতন তেওয়ারীগঞ্জ বাজার
  • নতুন তেওয়ারীগঞ্জ বাজার
  • ভবেরহাট বাজার
  • নুরুল্লা গোডাউন

দর্শনীয় স্থান

কৃতী ব্যক্তিত্ব

  • বিশ্বম্ভর শূর - আদিশূরের নবম পুত্র, ভুলুয়া রাজ‍্যের প্রতিষ্ঠাতা।
  • একরাম আলী হাওলাদার - জমিদার, শহর কসবা।
  • ঠাকুদ্দিন তেওয়ারী - জমিদার, তেওয়ারীগঞ্জের প্রতিষ্ঠাতা।
  • পদ্মলোচন তেওয়ারী - জমিদার, তেওয়ারীগঞ্জের প্রতিষ্ঠাতা।
  • উজির আলী হাওলাদার - জমিদার, গন্ধর্ব্যপুর।
  • সুজায়েত উল্লাহ ভূঁঞা - জমিদার, সাবেক ভবানীগঞ্জ ইউনিয়ন বোর্ডের প্রেসিডেন্ট (ধর্মপুর)।
  • খালেদ মোহাম্মদ আলী - অল পাকিস্তান ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক-১৯৬৭, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক (ধর্মপুর)।
  • ড. আবু হেনা আবদুল আউয়াল - কবি, লেখক, নজরুল গবেষক, নজরুল পদক প্রাপ্ত (গন্ধর্ব‍্যপুর)।
  • মাছুম জুলকারনাইন - একজন মঞ্চ অভিনেতা, (নাটক: "দিন বদলের পালা", "লাল সবুজ", "দহল") কবি, জেলার শ্রেষ্ঠ আবৃত্তি শিল্পী ২০১৭,২০১৮ এবং ২০১৯

জনপ্রতিনিধি

  • বর্তমান চেয়ারম্যান: ওমর হোসাইন ভুলু
  • সফি উল্লাহ বিএ.বি.এড - সাবেক চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠাতা ১৯ নং তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়ন
  • মোখলেছুর রহমান হারুন - সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. Population & Housing Census-2011 [আদমশুমারি ও গৃহগণনা-২০১১] (পিডিএফ) (প্রতিবেদন)। জাতীয় প্রতিবেদন (ইংরেজি ভাষায়)। ভলিউম ২: ইউনিয়ন পরিসংখ্যান। ঢাকা: বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। মার্চ ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.