গ্যাসের গতিতত্ত্ব

গ্যাসের গতিতত্ত্ব বা গ্যাসের আণবিক গতিতত্ত্ব(ইংরেজি: Kinetic theory) অনুযায়ী সব বস্তুই বহুসংখ্যক ক্ষুদ্র কণার (অণুর) সমন্বয়ে গঠিত। এই তত্ত্ব অনুযায়ী অণুগুলি সর্বদা অনিয়মিতভাবে গতিশীল। সতত গতিশীল এই কণাগুলির অনবরত পরস্পরের সঙ্গে ও ধারক পাত্রের দেওয়ালের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়ে চলে। কোনো গ্যাসীয় ব্যবস্থায় কোন কোন অণু বর্তমান ও তাদের গতির ধারণা ব্যবহার করেই এই তত্ত্ব দিয়ে ওই ব্যবস্থার সমষ্টিগত ধর্মগুলি, যেমন চাপ, তাপমাত্রা, অথবা আয়তন ব্যাখা করা যায়। এককথায় এই তত্ত্বানুযায়ী স্থির বিকর্ষণ নয়, যা কিনা নিউটনের অনুমান ছিল, বিভিন্ন গতিবেগে ছুটে চলা অণুগুলির মধ্যে সংঘর্ষই চাপের কারণ।

এই নিবন্ধটি গ্যাসের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য; আরো জানতে দেখুন কঠিন বস্তুর গতিতত্ত্ব
পরিসংখ্যান সংক্রান্ত বলবিদ্যা
তাপগতিবিজ্ঞান · গ্যাসের গতিতত্ত্ব

গ্যাসের কণাগুলির আয়তন খালি চোখে দেখা না গেলেও, পরাগরেণু অথবা ধূলিকণার বিক্ষিপ্ত গতি বা ব্রাউনীয় গতি, অণুবীক্ষণযন্ত্রে দেখা যায়। তা থেকে এটা জানা গেছে যে এই গতির উৎস পরাগরেণু অথবা ধূলিকণার ক্রমাগত সংঘর্ষ। ১৯০৫ খ্রীস্টাব্দে অ্যালবার্ট আইনস্টাইন গতিতত্ত্বের এই পরীক্ষামূলক প্রমাণ প্রকাশ করেন। এটিকেই পরমাণু ও অণুর অস্তিত্বের স্বপক্ষের প্রমাণ হিসেবেও গণ্য করা হয়।

স্বতঃসিদ্ধ

আদর্শ পারমাণবিক গ্যাসের তাপমাত্রা তার গতিশীল অণুগুলির গড় গতিশক্তির পরিমাপ। ছবিতে ১৯৫০ বায়ুমণ্ডলীয় চাপে হিলিয়াম অণুর আপেক্ষিক অবস্থান দেখানো হয়েছে। ঘরের তাপমাত্রায় এই অণুগুলির কিছু নির্দিষ্ট গড় দ্রুতি আছে (যা ছবিতে প্রায় ১০১২ গুণ কমিয়ে দেখান হয়েছে)।

আদর্শ গ্যাসের তত্ত্বে নিম্নলিখিত পূর্বধারণাগুলি ধরে নেওয়া হয়:

  • সব গ্যাসই খুব ক্ষুদ্র ও ভর বিশিষ্ট কণা দ্বারা গঠিত।
  • খালি চোখে দৃশ্যমান কোন একটি ব্যবস্থায় অণুর সংখ্যা এতই বেশি যে সংখ্যাতত্ত্বের প্রয়োগ করা যায়।
  • এই অণুগুলি সর্বদা বিক্ষিপ্তভাবে গতিশীল। এইভাবে ইতস্ততঃ ছুটে চলা কনাগুলি পাত্রের দেওয়ালে ক্রমাগত ধাক্কা খায়।
  • ধারক পাত্রের দেওয়ালের সঙ্গে গ্যাস অণুগুলির সংঘর্ষ সম্পূর্ণরূপে স্থিতিস্থাপক।
  • সংঘর্ষ ব্যতিরেকে অণুগুলির পারস্পরিক সম্পর্ক নগন্য (একে অপরের ওপর কোনরূপ বল প্রয়োগ করেনা)।
  • ধারক পাত্রের আয়তনের তুলনায় পৃথকভাবে প্রতিটি অণুর সর্বমোট আয়তন নগন্য। এর অর্থ, গ্যাস অণুগুলির মধ্যেকার গড় দূরত্ব তাদের আয়তনের তুলনায় অনেক বেশী।
  • অণুগুলি সম্পূর্ণরূপে গোলকীয় আকৃতির এবং স্থিতিস্থাপক।
  • গ্যাস অণুগুলির গড় গতিশক্তি কেবলমাত্র ব্যবস্থার তাপমাত্রার ওপরেই নির্ভরশীল।
  • আপেক্ষিক প্রভাব নগন্য।
  • কণাবাদী বলবিদ্যার প্রভাবও নগন্য। অর্থাৎ দু'টি কণার মধ্যেকার দূরত্ব তাপীয় ডি-ব্রয় তরঙ্গদৈর্ঘ্যের চেয়ে অনেক বেশি এবং অণুগুলির ওপর চিরায়ত বলবিদ্যার নিয়ম প্রয়োগ করা চলে।
  • পরপর দু'টি সংঘর্ষের মধ্যেকার সময়, কণাগুলির পাত্রের দেওয়ালে সংঘর্ষের সময়ের চেয়ে অনেক বেশী।
  • অণুগুলির গতির সমীকরণগুলি সময়ের সাপেক্ষে উলটানো সম্ভব।

এই ক্ষেত্রে অগ্রগতির সাথে সাথে এই অনুমানগুলি অনেকাংশে শিথিল করা সম্ভব হয়েছে। বর্তমান অনুমানগুলি বোল্টজ়ম্যান সমীকরণের ওপর ভর করেই বলা হয়। এই অনুমানগুলির সাহায্যে একটি মোটামুটি ঘন গ্যাসের ধর্মগুলি যথাযথভাবে ব্যাখা করা যায়। এর মধ্যে আবশ্যক অনুমানটি হল কণাবাদী তত্ত্বের অনুপস্থিতি ও স্থূল ধর্মগুলির কম পরিবর্তনের হার। চাপ ও তাপমাত্রাকে সংখ্যাঘনত্বের উচ্চঘাতে প্রসারণের জন্যে ভিরিয়াল প্রসারণ ব্যবহৃত হয়। (অসম্পূর্ণ নিবন্ধ)

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

    বহিঃসংযোগ

    This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.