কাঁঠালিয়ার পুতুল, মুর্শিদাবাদ

কাঁঠালিয়ার পুতুল মুর্শিদাবাদ জেলার বিখ্যাত পুতুল।[1][2] প্রায় তেরোশো বছরের প্রাচীন এই পুতুল তৈরির ধারা। খ্রিস্টিয় সপ্তম শতক[3] থেকে এই পুতুল তৈরী হয়ে আসছে। খুবই কম কুম্ভকার সম্প্রদায় আজও বিলুপ্তপ্রায় এই পুতুল তৈরী করেন। তবে এই পুতুল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের সাহায্যে পুনরায় হৃত গরিমা ফিরে পেয়েছে।[1] পুতুলের গায়ে লাল-কালো ডোরা কাটা দাগ এই পুতুলের শনাক্তকারী চিহ্ন। বর্তমানে সাধন পাল ও তার পরিবারের লোকেরা এই ধরনে পুতুল তৈরী করেন।[4]

কাঁঠালিয়ার পুতুল
উৎপত্তিকাল৭ম শতাব্দী
উৎপত্তিস্থলকাঁঠালিয়া, মুর্শিদাবাদ জেলা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত
উপাদানমাটি
আকৃতিমনুষ্য মূর্তি
রংসাদা, লাল-কালো ডোরা কাটা দাগ
ব্যবহারঘর সাজানো

ইতিহাস

রাজা শশাঙ্কের আমল[3] থেকে এই পুতুল তৈরির ইতিহাস চলে আসছে। খ্রিস্টিয় সপ্তম শতক[3] থেকে এই শিল্প চলে আসছে। শশাঙ্ক পোড়ামাটির শিল্পের উপর জোর দিয়ে ছিলেন। নানা উত্কীর্ণ লিপিতে এর নানা উল্লেখ পাব যায়। রাজা শশাঙ্কের ভাবনার বাস্তবায়নে উঠে পড়ে লেগেছিল কাঁঠালিয়ার মতো কয়েকটি গ্রাম।[3] শুধু মাটির থালা, গ্লাস নয়, এই গ্রামে একসময় গড়ে উঠেছিল পুতুল তৈরির কারখানা। অতীতের স্মৃতি বহন করে এখনও নানা পুরনো বাড়িতে লাল-সাদা পুতুলগুলো অন্দরসজ্জার অঙ্গ হিসেবে শোভা পায়। কলকাতার শিল্পগ্রামে ইতিহাসের সাক্ষী হিসেবে শশাঙ্কের আমলের পোড়া মাটির সামগ্রী বাসনকোসন রাখা রয়েছে।[3]

উপজীব্য

এখানকার পুতুল সাধারণ জনজীবনের নানা ঘটনা প্রতিভাত করে। জাতা পেশাই রত মহিলা সহ ধান্ভান্গার সময়ের বা দুজন মহিলার চুল বেঁধে দেওয়ার মত নানা নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা এখানে তুলে ধরা হয়।

এখানকার পুলিশ বা দারোগা পুতুলও খুব বিখ্যাত। ব্রিটিশ আমলের নানা দারোগাদের এখনো এই পুতুলের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়। চন্দ্র শেখর, বৈদ্যনাথ, যাদবচন্দ্রএর মত দারোগার পুতুল এখানে বানানো হয়।[5]

প্রস্তুত প্রণালী

এখানকার পুতুলগুলোকে প্রথমে চাকায় গড়ে নিয়ে পরে হাতে সুষম সঠিক আকার দেওয়া হয়। অভ্র মেশানো রং এই পুতুলকে অভাবনীয় সুন্দর করে তুলেছে। পুতুলের গায়ে ডোরা কাটা দাগ কাঁঠালিয়ার পুতুলের বিশেষ চিহ্ন।[1][2]

তথ্যসূত্র

  1. "মৃৎশিল্প আজ ফের মানুষের দরবারে"24Ghanta.com (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৬-০২-২৫। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০১-১৮
  2. বিশ্ব বাংলা। বাংলার পুতুল (PDF)। বিশ্ব বাংলা।
  3. "সেদিনের বাংলার রাজধানী, আজ চরে ছাগল | Silkcity News" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০১-১৮
  4. তারাপদ সাঁতারা (ডিসেম্বর, ২০০০)। পশ্চিমবঙ্গের লোকশিল্প ও শিল্পী সমাজ। কলকাতা: লোকসংস্কৃতি ও আদিবাসী সংস্কৃতি কেন্দ্র। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  5. "কলকাতার কড়চা"anandabazar.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০১-১৮
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.