লাইমলাইট (১৯৫২-এর চলচ্চিত্র)

লাইমলাইট (ইংরেজি: Limelight, বাংলা অনুবাদ: থিয়েটারের অতি প্রখর আলো) হল ১৯৫২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত মার্কিন হাস্যরসাত্মক নাট্য চলচ্চিত্র। এটি রচনা, প্রযোজনা ও পরিচালনা করেছেন চার্লি চ্যাপলিন। চ্যাপলিনের পূর্বের চলচ্চিত্রগুলোর মত এই চলচ্চিত্রের সুর করেছেন তিনি নিজে এবং সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন রে রাশ্চ। এটি প্রথম চলচ্চিত্র যেখানে চ্যাপলিন সঙ্গীত পরিচালনা করেন নি। ছবিতে একজন বয়োজ্যেষ্ঠ কৌতুকাভিনেতা একজন আত্মহত্যা করতে যাওয়া নৃত্যশিল্পীকে বাঁচায় এবং দুজনেই কষ্টের মধ্য দিয়েও বাকি জীবন অতিবাহিত করতে চেষ্টা করে। এতে প্রধান দুটি চরিত্রে অভিনয় করেন চ্যাপলিন ও ক্লেয়ার ব্লুম। এছাড়া অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেন নাইজেল ব্রুস, সিডনি আর্ল চ্যাপলিন, হুইলার ড্রাইডেন ও নরম্যান লয়েড এবং বাস্টার কিটন

লাইমলাইট
চিত্র:লাইমলাইট ১৯৫২ পোস্টার.jpg
প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির পোস্টার
পরিচালকচার্লি চ্যাপলিন
প্রযোজকচার্লি চ্যাপলিন
চিত্রনাট্যকারচার্লি চ্যাপলিন
শ্রেষ্ঠাংশে
সুরকারচার্লি চ্যাপলিন
চিত্রগ্রাহককার্ল স্ট্রুস
সম্পাদকজো ইঞ্জ
প্রযোজনা
কোম্পানি
সেলেব্রেটেড প্রডাকশন্স
পরিবেশকইউনাইটেড আর্টিস্ট্‌স
মুক্তি
  • ২৩ অক্টোবর ১৯৫২ (1952-10-23)
দৈর্ঘ্য১৩৭ মিনিট
দেশমার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
ভাষাইংরেজি
নির্মাণব্যয়$৯০০,০০০[1]
আয়$১,০০০,০০০ (যুক্তরাষ্ট্র)
$৭,০০০,০০০ (বিশ্বব্যাপী)[1]

চলচ্চিত্রটি ১৯৫২ সালের ২৩ অক্টোবর মুক্তি পায় এবং মিশ্র সমালোচনা লাভ করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ছবিটি বর্জন করা হয় এবং ব্যবসায়িকভাবে ব্যর্থ হয়। ছবিটি ১৯৭২ সালে পুনঃমুক্তি দেওয়া হয় এবং লস অ্যাঞ্জেলেসে প্রথম প্রদর্শনী হয়। এতে করে ২০ বছর পুরনো ছবিটি ৪৫তম একাডেমি পুরস্কারে প্রতিযোগিতা করে এবং চ্যাপলিন ও তার সহযোগী রে রাশ্চ ও ল্যারি রাসেল শ্রেষ্ঠ মৌলিক সুরের পুরস্কার লাভ করেন। বর্তমান সময়ে এই চলচ্চিত্রটিকে চ্যাপলিনের অন্যতম সেরা চলচ্চিত্র বলে অভিহিত করা হয়।

কাহিনী সংক্ষেপ

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রাক্কালে ১৯১৪ সালে কালভেরো নৃত্যশিল্পী এক তরুণী থেরেজা টেরি এমব্রোসকে আত্মহত্যার হাত থেকে বাঁচায়। কালভেরো একসময় মঞ্চের প্রখ্যাত ছিল, কিন্তু মদের নেশায় তার সব ধ্বংস হয়ে গেছে। সেবাশুশ্রূষার পর কালভেরো টেরির আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনে এবং তাকে পুনরায় তার নৃত্য কর্মজীবন শুরু করতে উদ্বুদ্ধ করে। টেরিকে উদ্বুদ্ধ করতে গিয়ে সে নিজেও আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে, কিন্তু তার ফিরে আসার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। টেরি কালভেরোর সাথে তাদের বয়সের পার্থক্য থাকার পরও তাকে বিয়ে করতে চায়। তরুণ সুরকার নেভিলের সাথে টেরির বন্ধুত্ব রয়েছে, এবং কালভেরো মনে করে তাদের দুজনকে ভালো মানাবে। তাদের সুযোগ দেওয়ার জন্য কালভেরো বাড়ি ছেড়ে চলে যায় এবং রাস্তায় রাস্তায় বিনোদন প্রদান শুরু করে। টেরি ইতোমধ্যে তার নিজের শো চালায় এবং কালভেরোকে খুঁজে পেয়ে তাকে মঞ্চে ফিরে আসতে অনুরোধ করে। কালভেরো তার পুরনো এক সঙ্গীকে পেয়ে তাকে নিয়ে অনবদ্য এক পরিবেশনা উপহার দেয়। কালভেরো হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হয় এবং টেরির সেকেন্ড এক্ট অন দ্য বিল নৃত্য দেখতে দেখতে মৃত্যুবরণ করে।

কুশীলব

সঙ্গীত

চলচ্চিত্রে চ্যাপলিন সুরারোপিত "টেরিস থিম" শীর্ষক আবহ সঙ্গীতটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এটি পরবর্তীতে জিওফ পারসন্স ও জন টার্নারের গীত সম্বলিত "ইটার্নালি" গানে ব্যবহৃত হয়। ১৯৭৩ সালে চলচ্চিত্রটি মুক্তির ২০ বছর পর ১৯৭৩ সালে চ্যাপলিন ও তার সহযোগী সঙ্গীতজ্ঞ রেমন্ড রাশ্চ ও ল্যারি রাসেল শ্রেষ্ঠ মৌলিক সুরের জন্য একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। এটি চ্যাপলিন গৃহীত একমাত্র প্রতিযোগিতামূলক একাডেমি পুরস্কার, এর পূর্বে তিনি দুইবার একাডেমি সম্মানসূচক পুরস্কার লাভ করেছিলেন।[2] ল্যারি রাসেলের ব্যাপারে জ্যাজওয়াক্সের সাংবাদিক মার্ক মেয়ার বলেন যে তার পরিচয়ে ভুল ছিল এবং মূল সুরকার ছিলেন রাসেল গার্সিয়া, যাকে ১৯৭২ সালে অস্কার পুরস্কার দেওয়া উচিত ছিল।[3] ল্যারি রাসেলের পরিবার এই প্রতিবেদনটিকে অস্বীকার করেন।

তথ্যসূত্র

  1. Balio, Tino (২০০৯)। United Artists: The Company Built by the Stars (ইংরেজি ভাষায়)। ইউনিভার্সিটি অব উইসকনসিন প্রেস। পৃষ্ঠা 214। আইএসবিএন 978-0-299-23004-3।
  2. "Charlie Chaplin : Filming Limelight" (ইংরেজি ভাষায়)। Charlie Chaplin। ২০১০-১০-১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
  3. Myers, Marc (২০০৮-০৯-১৯)। "The Case of the Misplaced Oscar"Jazz Wax (ইংরেজি ভাষায়)। ২০০৯-০৪-০২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.