মার্কসবাদ-লেনিনবাদ

মার্কসবাদ-লেনিনবাদ হচ্ছে একটি রাজনৈতিক মতবাদ যেটি যুক্ত করেছে মার্কসবাদ (কার্ল মার্কস এবং ফ্রিডরিখ এঙ্গেলস প্রদত্ত বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রীদের তাত্ত্বিক ধারনা) এবং লেনিনবাদকে (মার্কসবাদের ভ্লাদিমির লেনিন কর্তৃক তাত্ত্বিক বিস্তারন যা অন্তর্ভুক্ত করে সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধিতা, গণতান্ত্রিক কেন্দ্রিকতা এবং ভ্যানগার্ডবাদী দল-গঠন নীতিসমূহ[1]

মার্কসবাদ-লেনিনবাদ হলও চিরজীবী তত্ত্বকোষ, জনগণের সংগ্রাম আর গঠনকর্মের অভিজ্ঞতা নিয়ে সৃজনশীল ভাবনাচিন্তার একটা সার্থক প্রণালী, কর্মের অবিচল দিশারি। মার্কসবাদ-লেনিনবাদের প্রাণশক্তির রহস্য এইখানে যে মার্কস, এঙ্গেলস, লেনিনের মতবাদ, তার পদ্ধতি, নীতি আর আদর্শ কোটি কোটি জনগণের কাছে বোধগম্য, তাদের মনের মতো। প্রতিটি নতুন প্রজন্ম যে প্রশ্নে আলোড়িত, এতে তারা খুঁজে পায় তার উত্তর। মানবজাতির ভবিষ্যতের পথ তা আলোকিত করছে সারা বিশ্বে নিয়ে আসছে শান্তি আর প্রগতি।[2]

ইতিহাস

জার্মান দর্শন, ব্রিটিশ অর্থনীতি এবং কল্পলৌকিক সমাজতন্ত্র রূপে মানবজাতির শ্রেষ্ঠ যা কিছু সৃষ্টি, তার বৈধ উত্তরাধিকারী হলও মার্কসবাদ। তবে মার্কস, এঙ্গেলস তাদের তাত্ত্বিক পূর্বসূরিদের ধারাবাহকই ছিলেন না, তারা বিচার করে সেগুলি ঢেলে সাজিয়েছেন, গড়ে তুলেছেন নতুন মতবাদ। তাদের মতবাদে প্রকাশ পায় সবচেয়ে প্রগতিশীল ও বৈপ্লবিক শ্রেণী, প্রলেতারিয়েতের মৌলিক স্বার্থ। মেহনতিদের সামাজিক মুক্তির ইতিহাসে তারা সত্যিকারের এক বিপ্লব ঘটান।[2] তাদের বৈপ্লবিক ক্রিয়াকলাপের অনুসারি লেনিনের বৈপ্লবিক তত্ত্বে নানা বিষয়ের অবদান এতোই বিপুল যে উত্তরকালে তার নাম হয়েছে মার্কসবাদ-লেনিনবাদ। এটি হল সারা বিশ্বের প্রলেতারিয়েতের আন্তর্জাতিক মতবাদ।[2]

অক্টোবর বিপ্লব ও সোভিয়েত ইউনিয়নের সৃষ্টি

১৯১৭ সালের ২৫ অক্টোবর সন্ধ্যায় গর্জন করে উঠলো "অরোরা" যুদ্ধজাহাজের কামান, শুরু হলো রুশ বুর্জোয়া সরকারের শেষ ঘাঁটি শীত প্রাসাদের ওপর বিজয়ী আক্রমণ। একই সময়ে স্মোলনির সমাবেশ হলে উদ্বোধন হলো পেত্রগ্রাদ সোভিয়েতের জরুরি অধিবেশন। চূড়ান্ত স্পষ্টতা, সুনির্দিষ্টতা আর সাদাসিধে ভাষায় লেনিন ঘটনাবলীর সারসংক্ষেপ করলেনঃ 'যে শ্রমিক ও কৃষক বিপ্লবের প্রয়োজনীয়তার কথা বলশেভিকরা সর্বদা বলে এসেছে তা ঘটল'। অক্টোবর সমাজতান্ত্রিক মহাবিপ্লব ছিলো সামাজিক বিকাশের, একচেটিয়া পুঁজিবাদের পরিস্থিতিতে শ্রেণিসংগ্রামের নিয়মসঙ্গত উপায়। এর বিজয়ে দেখা দিলো পৃথিবীতে প্রথম সমাজতন্ত্র অভিমুখী রাষ্ট্র।[2]

আরো দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. Marxism–Leninism. The American Heritage Dictionary of the English Language, Fourth Edition. Houghton Mifflin Company.
  2. ভ. বুজুয়েভ ও ভ. গরোদনভ, মার্কসবাদ-লেনিনবাদ প্রগতি প্রকাশন, মস্কো, ১৯৮৮, পৃষ্ঠা-৩৭, ৫১-৫২, ১৯২-১৯৩।

পুস্তকসমূহ

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.