ব্যান্ডেল গির্জা
ব্যান্ডেল গির্জা বা ব্যান্ডেল চার্চ পশ্চিমবঙ্গের প্রাচীনতম খ্রিষ্টান গির্জাগুলির একটি। এই গির্জার পোষাকি নাম দ্য ব্যাসিলিকা অফ দ্য হোলি-রোসারি, ব্যান্ডেল। ১৬৬০ খ্রিষ্টাব্দ নাগাদ নির্মিত এই গির্জাটি মেরিমাতা (নোসা সেনোরা দি রোজারিও, আওয়ার লেডি অফ দ্য রোজারি) প্রতি উৎসর্গিত।
.jpg)
ইতিহাস
ষোড়শ শতাব্দীর মধ্যভাগ থেকে পর্তুগিজরা ব্যান্ডেল শহরটিকে বন্দর হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করে। ১৫৭১ খ্রিষ্টাব্দে তারা মুঘল সম্রাট আকবরের নিকট থেকে হুগলিতে একটি শহর নির্মাণের অনুমতি পায়। এখানে বসবাস শুরু করলে, তাদের পাদ্রিরা স্থানীয় লোকেদের ধর্মান্তরিত করতে শুরু করেন। ১৫৯৮ খ্রিষ্টাব্দ নাগাদ হুগলিতে ক্যাথলিক খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীর সংখ্যা ছিল প্রায় পাঁচ হাজার। এদের মধ্যে যেমন স্থানীয় অধিবাসীরা ছিল, তেমনি ছিল মিশ্র জাতির লোকজনও।
Cotton, H.E.A (1909)
১৫৭৯ খ্রিষ্টাব্দে পর্তুগিজেরা হুগলি নদীর তীরে একটি বন্দর ও দুর্গ নির্মাণ করে এবং অগাস্টিনিয়ান ফ্রেয়ারদের একটি দলের সার্ভিস তালিকাভুক্ত করে। এই দলটি ছল গোয়ার বৃহত্তম ধর্মীয় সংস্থা। পরের বছর ক্যাপ্টেন পেদ্রো তাভারেস সর্বসমক্ষে ক্যাথলিক ধর্মপ্রচার ও গির্জা নির্মাণ করার জন্য সম্রাটের অনুমতি লাভ করেন। এরপর ১৫৯৯ খ্রিষ্টাব্দে ব্যান্ডেল চার্চ নির্মিত হয়।
১৬৩২ খ্রিষ্টাব্দে মুরেরা হুগলি আক্রমণ করলে প্রথম গির্জাটি ভষ্মীভূত হয়। এরপর ১৬৬০ খ্রিষ্টাব্দে গোমেজ দে সোতো একটি নতুন গির্জা নির্মাণ করেন। মঠের পূর্ব দ্বারে এখনও পুরনো গির্জার কীস্টোন বা ভিত্তিপ্রস্তরটি দেখা যায়।
দ্রষ্টব্য
গির্জার সম্মুখে একটি জাহাজের মাস্তুল রয়েছে। কথিত আছে, বঙ্গোপসাগরে একটি পর্তুগিজ জাহাজ প্রবল ঝড়ের মুখে পড়লে মেরিমাতা জাহাজটিকে রক্ষা করেন। এরপর কৃতজ্ঞতাস্বরূপ জাহাজের কাপ্তান মাস্তুলটি গির্জায় দান করেন। গির্জায় তিনটি পূজাবেদি, কয়েকটি সমাধিপ্রস্তর, একটি পাইপ অর্গ্যান ও মেরির একটি সিংহাসন রয়েছে।
বহিঃসংযোগ
তথ্যসূত্র
- Cotton, H.E.A., Calcutta Old and New, 1909/1980, pp 820-821, General Printers and Publishers Pvt. Ltd.