ফ্লোরেন্স গ্রিফিথ জয়নার

ফ্লোরেন্স দেলোরেজ গ্রিফিথ-জয়নার[1] (ইংরেজি: Florence Delorez Griffith-Joyner; জন্ম: ২১ ডিসেম্বর, ১৯৫৯ - মৃত্যু: ২১ সেপ্টেম্বর, ১৯৯৮) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড ইভেন্টের ক্রীড়াবিদ। ক্রীড়াজগতে তিনি ফ্লো-জো নামে পরিচিত ছিলেন। তাকে সকল সময়ের সবচেয়ে দ্রুতগামী নারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।[2][3][4] ১৯৮৮ সালে ১০০ মিটার এবং ২০০ মিটার দৌঁড়ের উভয় বিভাগে বিশ্বরেকর্ড স্থাপন করেন যা অদ্যাবধি অক্ষত রয়েছে। মাত্র ৩৮ বছর বয়সে মস্তিকের রক্তক্ষরণজনিত কারণে ঘুমন্ত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন ফ্লোরেন্স গ্রিফিথ জয়নার

ফ্লোরেন্স গ্রিফিথ জয়নার
১৯৮৮ সালে ফ্লোরেন্স গ্রিফিথ
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামফ্লোরেন্স দেলোরেজ গ্রিফিথ-জয়নার
জাতীয়তাআমেরিকান
জন্ম(১৯৫৯-১২-২১)২১ ডিসেম্বর ১৯৫৯
লস অ্যাঞ্জেলেস, ক্যালিফোর্নিয়া
মৃত্যু২১ সেপ্টেম্বর ১৯৯৮(1998-09-21) (বয়স ৩৮)
মিশন ভাইজো, ক্যালিফোর্নিয়া
উচ্চতা১.৬৯ মিটার (৫ ফুট ৭ ইঞ্চি)
ওজন৫৯ কিলোগ্রাম (১৩০ পাউন্ড)
ক্রীড়া
দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
ক্রীড়াদৌড়
ঘটনাসমূহ১০০ মিটার, ২০০ মিটার
অবসর১৯৮৮

প্রারম্ভিক জীবন

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেস এলাকায় জন্মগ্রহণ করলেও তিনি জর্দান ডাউনসে শৈশবকাল অতিক্রমণ করেন। ১৯৮০-এর দশকের শেষার্ধ্বে বেশকিছু বিশ্বরেকর্ড গড়ার ফলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বেশ সাড়া ফেলেন এই উজ্জ্বল ব্যক্তিত্বসম্পন্ন নারী। ট্রিপল জাম্পার এল জয়নারের পত্নী ছিলেন ফ্লোরেন্স। হেপ্টাথলন এবং দীর্ঘলম্ফের রাণী জ্যাকি জয়নার-কার্সি'র ননদিনী ছিলেন তিনি।

১৯৯০ সালে মেরি রুথ জয়নার নাম্নী এক কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করে। শৈশবে অনেক ধরনের ক্রীড়ায় আগ্রহ দেখালেও পরবর্তীতে সঙ্গীতনৃত্যের দিকে ঝুঁকে পড়ে মেরি। তার বাবা মেয়ের আগ্রহের দিকেই অবস্থান নেন। জুন, ২০১২ সালে মেরি গায়িকাদের প্রতিভা অন্বেষণ 'আমেরিকাজ গট ট্যালেন্ট' প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে ও লাস ভেগাসে ২য় রাউন্ডের জন্যে অবতীর্ণ হয়।

লস অ্যাঞ্জেলেসের জর্দান হাই স্কুলে অধ্যয়নকালীন ট্র্যাকে দৌঁড়ান তিনি। বড়দের দলে ১৯৭৮ সালের সিআইএফ ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট মীটে তিনি ভবিষ্যতের সহ-খেলোয়াড় এলাইস ব্রাউন এবং প্যাম মার্শালের পিছনে থেকে ৬ষ্ঠ স্থান অধিকার করেছিলেন।[5] নর্থরিজের ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়নকালে তিনি জয়নার-কার্সির ভবিষ্যতের স্বামী বব কার্সির কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নেন। এসময় তার দলের সাথে ব্রাউনসহ জিনেথ বোল্ডেন ছিলেন। কিন্তু পরিবারের কাছ থেকে আশানুরূপ সাড়া না পাওয়ায় দল থেকে বাদ পড়েন। কার্সি আর্থিকভাবে সহযোগিতা করায় তিনি কলেজে ফিরে যান।[6]

অলিম্পিক ক্রীড়া

ব্রাউন, বোল্ডেন এবং গ্রিফিথ ১০০ মিটার দৌঁড়ের অনুশীলনী পর্যায়ে যোগ্যতা অর্জন করে ১৯৮০ সালের অলিম্পিক গেমসের জন্যে মনোনীত হন। গ্রিফিথ ২০০ মিটারেও দৌঁড়েন এবং স্বল্প ব্যবধানে ৪র্থ স্থান দখল করেছিলেন। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকার অলিম্পিক বয়কটের ঘোষণা দেয়।[7] ঐ মৌসুমের পর কার্সি ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান কোচ মনোনীত হন। এরফলে গ্রিফিথও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে যোগ্যতা অর্জন করায় সেখানে স্থানান্তরিত হন। ১৯৮২ সালে মনোবিদ্যায় স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন।

১৯৮৪ সালের অলিম্পিকে গ্রিফিথ রৌপ্যপদক জয় করেন। কিন্তু প্রচারমাধ্যমে তিনি তার খুবই লম্বা এবং রঙিন নখের কারণে বিখ্যাত হয়েছিলেন। এ অলিম্পিকের পর তিনি দৌঁড়ে অল্প সময় ব্যয় করতেন। ১৯৮৭ সালে এল জয়নার নামীয় ১৯৮৪ সালের অলিম্পিকের ট্রিপল জাম্পের চ্যাম্পিয়নকে বিয়ে করেন।

গ্রিফিথ-জয়নারের অবিস্মরণীয় মুহুর্ত ছিল ১৯৮৮ সালের গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকের দৌঁড়ে স্বর্ণপদক জয় করা। ১০০ মিটারে তিনি বাতাসের অনুকূলে ১০.৫৪ সেকেন্ড সময় নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী ইভলিন অ্যাশফোর্ডকে পরাভূত করেন। ২০০ মিটারের সেমি-ফাইনালে ২১.৫৬ সেকেন্ডে বিশ্বরেকর্ড করেন। পুণরায় ফাইনালে ২১.৩৪ সেকেন্ড সময় নিয়ে নিজেরই করা বিশ্বরেকর্ড ভেঙ্গে ফেলেন।

তথ্যসূত্র

  1. Whitaker, Matthew C. (২০১১)। Icons of Black America: Breaking Barriers and Crossing Boundaries, Volume 11। ABC-CLIO। পৃষ্ঠা 520। আইএসবিএন 0-313-37642-5।
  2. http://sportsillustrated.cnn.com/olympics/features/joyner/gallery/
  3. http://usatoday30.usatoday.com/sports/olympics/2011-06-22-carmelita-jeter-womens-100_n.htm
  4. http://www.legacy.com/ns/news-story.aspx?t=florence-griffith-joyner--the-fastest-woman-on-earth&id=196
  5. http://archive.dyestatcal.com/ATHLETICS/TRACK/stateres.htm%5B%5D
  6. http://sports.jrank.org/pages/1834/Griffith-Joyner-Florence-Olympic-Dreams.html
  7. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি" (PDF)। ২৭ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ ডিসেম্বর ২০১২

বহিঃসংযোগ

রেকর্ড
পূর্বসূরী
এভলিন অ্যাশফোর্ড
মহিলাদের ১০০ মিটারে বিশ্বরেকর্ডধারী
১৬ জুলাই, ১৯৮৮ - বর্তমান
উত্তরসূরী
নির্ধারিত হয়নি
পূর্বসূরী
মারিতা কোচ
মহিলাদের ২০০ মিটারে বিশ্বরেকর্ডধারী
২৯ সেপ্টেম্বর, ১৯৮৮ - বর্তমান
উত্তরসূরী
নির্ধারিত হয়নি
পুরস্কার ও স্বীকৃতি
পূর্বসূরী
স্টেফি গ্রাফ
বর্ষসেরা ইউনাইটেড প্রেস ইন্টারন্যাশনাল অ্যাথলেট
১৯৮৮
উত্তরসূরী
স্টেফি গ্রাফ
পূর্বসূরী
জ্যাকি জয়নার কার্সি
বর্ষসেরা মহিলা ট্র্যাক এন্ড ফিল্ড অ্যাথলেট
১৯৮৮
উত্তরসূরী
আনা ফিদেলিয়া কুইরট
পূর্বসূরী
বেন জনসন
লা’ইকুইপ চ্যাম্পিয়ন অব চ্যাম্পিয়ন্স
১৯৮৮
উত্তরসূরী
গ্রেগ লেমন্ড
পূর্বসূরী
সিল্কে মোলার
মহিলাদের ২০০ মিটারে বর্ষসেরা ক্রীড়াপ্রদর্শন
১৯৮৮
উত্তরসূরী
ডন সোয়েল
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.