নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার পার্শ্ববর্তী নারায়ণগঞ্জ জেলার নারায়ণগঞ্জ শহরের একটি স্থানীয় সরকার সংস্থা। ১৮৭৬ সালে নারায়ণগঞ্জ শহরের সার্বিক উন্নয়ন এবং ব্যবস্থাপনা করার লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১১ সালের ৫ মে নারায়নগঞ্জ পৌরসভা, সিদ্ধিরগঞ্জ পৌরসভা ও কদমরসূল পৌরসভা, এই তিনটি পৌরসভাকে বিলুপ্ত করে ২৭ টি ওয়ার্ড সমন্বয়ে গঠিত হয় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন। এটি বাংলাদেশের সপ্তম সিটি কর্পোরেশন। এর আয়তন ৭২.৪৩ বর্গ কিঃমিঃ।
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন | |
---|---|
কর্পোরেশন লোগো | |
ধরন | |
ধরন | বাংলাদেশ এর |
ইতিহাস | |
প্রতিষ্ঠাকাল | ১৮৭৬ (নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা) ৫ মে ২০১১ (নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন) |
নেতৃত্ব | |
মেয়র | ডাক্তার সেলিনা হায়াৎ আইভি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ |
নির্বাচন | |
ভোটদান ব্যবস্থা | এফপিটিপি |
সর্বশেষ নির্বাচন | ২২ ডিসেম্বর ২০১৬ |
সভাস্থল | |
নগর ভবন | |
ওয়েবসাইট | |
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ওয়েবসাইট |
ইতিহাস
নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা ঘোষণা করা হয় ১৮৭৬ সালের ৮ই সেপ্টেম্বর। পৌরসভা ঘোষণা কালে শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্ব পাড়ের এবং পশ্চিম পাড়ের স্থান সমূহকে তিনটি ওয়ার্ডে ভাগ করা হয়।এই তিনটি ওয়ার্ডের সর্বমোট আয়তন ছিলো প্রায় ৪.৫ বর্গমাইল। ওয়ার্ড গুলি যথাক্রমে
- ওয়ার্ড নং ০১ : শীতলক্ষ্যা, নয়ামাটি, নিতাইগঞ্জ, তাঁতিপাড়া, পত্নিপাড়া, সুতারপাড়া।
- ওয়ার্ড নং ০২ : কুটিপাড়া, নয়ামাটি, তাঁতিবাজার, উত্তর টানবাজার, গলাচিপা, পালপাড়া, চাষাড়া, খানপুর, মোকারবা, হাজীগঞ্জ, রওশনবাগ, বাবুরাইল।
- ওয়ার্ড নং ০৩ : মদনগঞ্জ, সোনাকান্দা, বন্দর, একরামপুর ও নবীগঞ্জ।
নারায়ণগঞ্জ ১৮৭৬ সালে পৌরসভায় পরিণত হলেও বৃটিশ ভারতে বিভিন্ন সময় জারিকৃত পৌর আইনের বিভিন্ন ধারা প্রাচীন কাল থেকেই নারায়ণগঞ্জে কার্যকর ছিল। নারায়ণগঞ্জ পৌরসভায় পরিণত হওয়ার পরই আধুনিক শহরে রূপান্তরের সুযোগ পায়। নারায়ণগঞ্জে ব্যাপক হারে ইউরোপীয়দের বসবাসের কারনে পৌরসভার পরিচালনা ভার একরকম তাদের উপর ন্যাস্ত ছিল।এই কারনে নারায়ণগঞ্জের নগরায়ন পাশ্চাত্যের অনুকরনে হতে থাকে। ১৯৫২ সালে পৌরসভাকে ৭.৫ বর্গমাইলে বিস্তৃত করা হয়। ১৯৫৭ সালে পৌরসভাকে ২০ টি ওয়ার্ডে বিভক্ত করে ১৯৫৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৭২ সালে পৌর সভাকে ১২টি ওয়ার্ডে পরিণত করা হয় এবং নারায়ণগঞ্জ ওয়ার্ডে তিনজন, বাকি সব ওয়ার্ডে দুইজন করে কমিশনার, দুইজন মনোনীত কমিশনার, একজন ভাইস চেয়ারম্যান ও একজন চেয়ারম্যান সহ সর্বমোট ২৯ জন সদস্য নিয়ে পৌর কমিটি গঠিত হয়।
১৯৭৪ সালে স্বাধীন বাংলাদেশে নারায়ণগঞ্জ পৌর নির্বাচনে শ্রমিক নেতা আলী আহম্মদ চুনকা আওয়ামী লীগের প্রার্থী খোকা মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে বিপুল ভোটে জয়ী হন। ১৬ই জানুয়ারি ২০০৩ সালে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার প্রথম মহিলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তারই মেয়ে ডাক্তার সেলিনা হায়াৎ আইভি । পৌর সভা বিলুপ্তি হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি এই পদে বহাল ছিলেন। ৫মে ২০১১সালে নারায়নগঞ্জ পৌরসভা, সিদ্ধিরগঞ্জ পৌরসভা ও কদমরসূল পৌরসভা, এই তিনটি পৌরসভাকে বিলুপ্ত করে ২৭ টি ওয়ার্ড সমন্বয়ে গঠিত হয় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন। নারায়ণঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রথম প্রশাসক শাহ কামাল। ৩০ অক্টোবর ২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জে প্রথম বারের মতো নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন' নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নারায়ণগঞ্জের প্রথম নির্বাচিত মেয়রও ডাক্তার সেলিনা হায়াৎ আইভি। তিনি বাংলাদেশের প্রথম মহিলা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র।
ওয়ার্ডসমূহ
২৭টি ওয়ার্ড সমন্বয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন গঠন করা হয়।
ওয়ার্ড নং | এলাকা | সীমানা | আয়তন | জনসংখ্যা |
---|---|---|---|---|
০১ | পাইনাদী (পূর্ব), মিজমিজি বাতান পাড়া | উত্তরে- ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ক, দক্ষিণে-তিতাস গ্যাস লাইন, পূর্বে- নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা সড়ক, পশ্চিমে- ধনুহাজী রোড | ৩.৭০ বর্গ কিলোমিটার | ৩৬,৫৯২ জন |
০২ | পাইনাদী (পশ্চিম), মিজমিজি (দক্ষিণ পাড়া), মিজমিজি (পশ্চিম পাড়া), মিজমিজি (সাহেব পাড়া) | উত্তরে- ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ক, দক্ষিণে-পানি উন্নয়ন বোর্ডের ক্যানাল পাড়/উত্তর কদমতলি, পূর্বে- ধনুহাজী রোডের পশ্চিম পাড়, পশ্চিমে- ফতুল্লাহ্ থানার ভূইগড় মৌজা | ৩.৫০ বর্গ কিলোমিটার | ২৫,৫৮৫ জন |
০৩ | নিমাই কাশারি, নয়া আটি, বাগমারা, সানার পাড় | উত্তরে- ঢাকা জেলার ডগাইর ও জোকা মৌজা, দক্ষিণে-ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ক, পূর্বে- নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা সড়ক, পশ্চিমে- ঢাকা জেলার ডগাইর মৌজা | ২.১০ বর্গ কিলোমিটার | ৩৫,৯৪৭ জন |
০৪ | শিমরাইল, আটি, উত্তর আজিবপুর | উত্তরে- ঢাকা জেলারজোকা মৌজা, দক্ষিণে-আজিবপুর রোড (শীতলক্ষ্যা নদী পর্যন্ত), পূর্বে- শীতলক্ষ্যা নদী, পশ্চিমে- নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা সড়ক | ৩.৬৫ বর্গ কিলোমিটার | ২৩,৩৮৫ জন |
০৫ | দক্ষিণ আজিবপুর, সিদ্ধিরগঞ্জ কলাবাগ (দক্ষিণ), সিদ্ধিরগঞ্জ কলাবাগ পশ্চিম), সিদ্ধিরগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন, সিদ্ধিরগঞ্জ সাইলো | ২.০৯ বর্গ কিলোমিটার | ১৮,৪২১ জন | |
০৬ | শুমিলপাড়া (আদমজী ই পি জেড সহ), বাগপাড়া, মন্ডলপাড়া | ৩.১৭ বর্গ কিলোমিটার | ২৫,১০০ জন | |
০৭ | কদমতলি উত্তরপাড়া, কদমতলি দক্ষিণ পাড়া, নয়া পাড়া | ২.৬২ বর্গ কিলোমিটার | ২১,৮৮৮ জন | |
০৮ | ভূঁইয়াপাড়া, আরাম্বাগ, টাকখানা, বাড়ইপাড়া, এনায়েতনগর, ধনকুন্ডা | ৩.৪৩ বর্গ কিলোমিটার | ১০,৫৬৮ জন | |
০৯ | জালকুড়ি পশ্চিম পাড়া, জালকুড়ি মধ্য পাড়া, জালকুড়ি উত্তর পাড়া | ৬.১০ বর্গ কিলোমিটার | ২৭,১৩৮ জন | |
১০ | বাগপাড়া, ২ নং ঢাকেশ্বরী কটন মিলস, আরামবাগ,রসুলবাগ, মীরপাড়া,চিত্তরঞ্জন কটন মিল এলাকা, আজিম মার্কেট,কো-অপারেটিভ, পাঠানটুলী, ওয়াটার ওয়ার্কস সড়কের অংশ বিশেষ যা আজিম মার্কেটের, খাল হতে এসিআই এর উত্তর পার্শ্ব পর্যন্ত | ১.৫৫ বর্গ কিলোমিটার | ২০,৪৮৯ জন | |
১১ | ১.৭৩ বর্গ কিলোমিটার | ২৪,৫৫০ জন | ||
১২ | ১.৬১ বর্গ কিলোমিটার | ৪০,১৮৭ জন | ||
১৩ | ২.১৭ বর্গ কিলোমিটার | ৪৭,০৭৯ জন | ||
১৪ | ১.২৭ বর্গ কিলোমিটার | ২৯,৪৩১ জন | ||
১৫ | ১ নং গেট, ২নং গেট, রেলী বাগান, ডাইলপট্টি, টানবাজার, মীনাবাজার, নয়ামাটি, থানা-পুকুরপাড়, সাহা পাড়া, ডিআইটি | ১.৬৮ বর্গ কিলোমিটার | ২৪,০৯৬ জন | |
১৬ | দেওভোগ, তাঁতীপাড়া, বাবুরাইল, বউ-বাজার, জিমখানা, বেপারীপাড়া | ১.৪৯ বর্গ কিলোমিটার | ৩৪,৪৯৬ জন | |
১৭ | পাইকপাড়া, ভূইয়াপাড়া, জল্লারপাড়া, নামাপাড়া, নয়াপাড়া, কাচারি গল্লি, ঋৃষিপাড়া্ | |||
১৮ | শহীদ নগর, নিতাইগঞ্জ, তামাকপট্টি, শহীদ বাপ্পী সড়ক | |||
১৯ | ||||
২০ | ||||
২১ | ||||
২২ | ||||
২৩ | ||||
২৪ | ||||
২৫ | উওর লক্ষনখোলা, দক্ষিণ লক্ষনখোলা, সোমবাড়ীয়া বাজার, চৌরাপাড়া'র একাংশ নিয়ে গঠিত | |||
২৬ | ||||
২৭ | ||||
যোগাযোগ
নারায়ণগঞ্জ এর যোগাযোগ ব্যবস্থা এখন এখন প্রায় বেশ উন্নত। ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ আসতে মহাসড়ক এবং সিদ্দিরগঞ্জ রোড ব্যবহার করা হয়।
তথ্যসূত্র
- "Narayanganj City Corporation"। ncc.gov.bd।