ঝুলন গোস্বামী
ঝুলন গোস্বামী (ইংরেজি: Jhulan Goswami) (জন্মঃ ২৫ নভেম্বর ১৯৮২, নদিয়া, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত) হলেন একজন অল-রাউন্ডার ক্রিকেটার যিনি ভারতের জাতীয় মহিলা ক্রিকেটে দল, বেঙ্গল উমেন, ইস্ট জোন উমেন এবং এশিয়ান উমেন এলেভেন দলের হয়ে ক্রিকেট খেলেন।
![]() | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যক্তিগত তথ্য | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | ঝুলন গোস্বামী | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | নদিয়া, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত | ২৫ নভেম্বর ১৯৮২||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ডাকনাম | বাবুল | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উচ্চতা | ৫ ফুট ১১ ইঞ্চি (১.৮০ মিটার) | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডান-হাতি | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডান-হাতি মিডিয়াম ফাস্ট | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় পার্শ্ব | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ৮) | ১৪ জানুয়ারী ২০০২ বনাম ইংল্যান্ড | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ১৯ নভেম্বর ২০১৪ বনাম সাউথ আফ্রিকা | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ওডিআই অভিষেক (ক্যাপ ১৬৪) | ৬ জানুয়ারী ২০০২ বনাম ইংল্যান্ড | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ ওডিআই | ২৩ জুলাই ২০১৭ বনাম ইংল্যান্ড | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে ঝুলন তার ব্যাটিং ও বোলিং (ডান হাত মাঝারি) উভয়েরই উল্লেখযোগ্য ক্ষমতা রয়েছে। তার টেস্ট বোলিং এভারেজ ২০ এরও কম। ২০০৬-০৭ মৌসুমে তিনি ইংল্যান্ডে বিরুদ্ধ প্রথম টেস্ট সিরিজ জয়ে ভারতীয় দলের হয়ে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
তিনি ২০০৭ সালের বর্ষসেরা আইসিসি নারী খেলোয়াড় পুরস্কার লাভ করেন এবং ২০১১ সালের শ্রেষ্ঠ নারী ক্রিকেটার হিসেবে এম এ চিদাম্বরম ট্রফি জিতে নেন। [1] সাম্প্রতিক সময়ে তিনি ভারতীয় নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক থেকে সরে এসেছেন। তিনি মিতালী রাজ কর্তৃক অনুসৃত হয়েছেন।
জন্ম ও শৈশব
১৯৮২ সালের ২৫শে নভেম্বর ঝুলন গোস্বামী জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা নিশীথ গোস্বামী এয়ার ইন্ডিয়ার একজন ক্যান্টিন কর্মী ছিলেন। তার মাতা ঝর্ণা গোস্বামী গৃহবধূ। ঝুলনের এক ভাই ও এক বোন কুনাল ও ঝুম্পা। শৈশবে ঝুলন পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার চাকদাহ নামক ছোট্ট শহরের বসবাস করতেন।
শুরুর ক্রিকেট জীবন
ছোটবেলা থেকেই ঝুলন ক্রিকেট খেলায় আকৃষ্ট। স্থানীয় খেলার মাঠ ফ্রেন্ডস ক্লাব এবং নবারুণ সমিতিতে ঝুলনের ক্রিকেট খেলার হাতেখড়ি। এরপর চাকদহ থেকে ভোরের ট্রেনে কলকাতায় এসে বিবেকানন্দ পার্কে নিয়মিত প্র্যাকটিস শুরু। কোচ স্বপন সাধুর কাছ থেকে ক্রিকেটের প্রথাগত প্রশিক্ষণ শুরু বিবেকানন্দ পার্কে।বোলার হিসেবে খেলা শুর করার পরামর্শ দেন কোচ স্বপন সাধু।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
মহিলা ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডে ক্রিকেটে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী এখন ভারতের ডানহাতি ফাস্ট বোলার ঝুলন গোস্বামী। এই রেকর্ড গড়তে তিনি পিছনে ফেলেছেন অস্ট্রেলিয়ার ক্যাথরিন ফিটজপ্যাট্রিককে। ফিটজপ্যাট্রিকের উইকেটসংখ্যা ছিল ১৮০। পোচেস্ট্রুমে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজে ঝুলন এই রেকর্ড গড়েন। রেইসিবে এসতোজাকেকে আউট করার মাধ্যমে দারুন এই রেকর্ডের অধিকারী হয়েছেন ঝুলন। ম্যাচে তিনি ৭.৩ ওভারে মাত্র ২০ রানে ৩ উইকেট দখল করেছেন।
২০০২ সালের ৬ই জানুয়ারী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে একদিনের ক্রিকেটে ঝুলনের আন্তর্জাতিক অভিষেক হয়েছিল। মহিলাদের ক্রিকেটে অন্যতম দ্রুততম বোলার হিসেবে তাকে বিবেচনা করা হয়। ক্যারিয়ারে তার সেরা বোলিং পরিসংখ্যান ৩১ রানে ৬ উইকেট। ভারতীয় এই পেসারের সংগ্রহে এখন ১৯৫টি উইকেট, এখনও পর্যন্ত খেলেছেন ১৬৪টি ম্যাচ। ২০০৫ এবং ২০১৭ এই দুইবছর মহিলা বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ফাইনালে পৌছায় ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দল। ২০১৭ বিশ্বকাপ ফাইনালে ১০ ওভারে, ৩টে মেডেন ওভার সহ ২৩ রান দিনে ৩ উইকেট পান ঝুলন। তবে দুইবার বিশ্বকাপ ফাইনালে পৌঁছালেও বিশ্বকাপ জয় এখনও অধরা ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের। একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৬৪টি ম্যাচ খেলে ঝুলনের ঝুলিতে ৯৯৫ রান।
টেস্ট ক্রিকেট ও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট
১০ টি টেস্টে ঝুলনের উইকেট সংখ্যা ৪০টি এবং মোট রান ২৮৩। টি-টোয়েন্টিতে ৬০ টি ম্যাচ খেলে ঝুলনের সংগ্রহ ৫০ টি উইকেট, মোট রান ৩৯১।
সব ধরনের ক্রিকেট মিলিয়ে ৩৪ বছর বয়সী এই পেসারের সংগ্রহে রয়েছে ২৮৫টি আন্তর্জাতিক উইকেট।
পুরস্কার ও সম্মান
- ২০০৬ ক্যাস্ট্রল অ্যাওয়ার্ড , মুম্বাই
২০০৬ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন ঝুলন। প্রথম টেস্ট ম্যাচে নাইটওয়াচম্যান হিসেবে ব্যাট করতে নেমে অর্ধশত রান করেন। দ্বিতীয় টেস্টে দুই ইনিংস মিলিয়ে ১০ টি উইকেট দখল করেন। প্রথম ইনিংসে ৩৩ রান দিয়ে ৫ উইকেট এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৫ রান দিয়ে ৫ উইকেট দখল করেন ঝুলন। ভারত এই টেস্ট সিরিজটি জয়লাভ করে। টেস্ট সিরিজে ঝুলনের কৃতিত্বকে সম্মান জানিয়ে ঝুলনকে বিশেষ পুরস্কার হিসেবে মুম্বাইতে ক্যাস্ট্রল অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।
- ২০০৭ - আইসিসি বর্ষসেরা মহিলা ক্রিকেটার
প্রথম ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটার হিসেবে আইসিসি বর্ষসেরা মহিলা ক্রিকেটার পুরষ্কার পান ঝুলন গোস্বামী। সাউথ অফ্রিকার জোহেনসবার্গে এই পুরস্কারটি গ্রহণ করেন ঝুলন।
- ২০১০ - অর্জুন পুরস্কার
২০১০ সালের ২৯, অগাস্ট ক্রীড়া ক্ষেত্রের সর্বোচ্চ সরকারি সম্মান পান ঝুলন গোস্বামী। তৎকালীন মাননীয়া রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাতিল দিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনে ঝুলনের হাতে এই সম্মান তুলে দেন।
ক্রীড়া ক্ষেত্রের বিশেষ অবদানের জন্য ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান পদ্মশ্রী পুরষ্কার লাভ করেন ঝুলন। ২০১২ সালে তিনি রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে পুরস্কারটি গ্রহণ করেন।
- ২০১৭- সাম্মানিক ডিলিট, কল্যাণী ইউনিভার্সিটি, পশ্চিমবঙ্গ
২০১৭ সালে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় ডি লিট সন্মান দিয়ে সন্মানিত করে প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক এবং বর্তমানে একদিনের ম্যাচে বিশ্বে সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক ঝুলন গোস্বামীকে। রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী সান্মানিক ডি লিট তুলে দেন নদীয়া জেলার চাকদার মেয়ে ঝুলন গোস্বামীর হাতে। বাংলা তো বটেই, ভারতে প্রথম কোনও মহিলা ক্রিকেটার এই ডি লিট সন্মান পেয়েছেন।
তথ্যচিত্রে ঝুলন
ভারতের মহিলা ক্রিকেট দলের দাপুটে পেসার ঝুলন গোস্বামীর বায়োপিক তৈরি হতে চলেছে। বাংলার ক্রিকেটার ঝুলন গোস্বামীর জীবন সেলুলয়েডে তুলে ধরার উদ্যোগ নিয়েছেন পরিচালক সুশান্ত দাস। সিনেমাটি হবে হিন্দিতে। সিনেমার নাম প্রাথমিকভাবে ‘চাকদা এক্সপ্রেস’ হবে বলে ঠিক হয়েছে।
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
- "Making Giant Strides"। The Hindu। ডিসেম্বর ১৪, ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০১-৩১।
- "Padma Awards"। pib। জানুয়ারি ২৫, ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০১-৩১।