এস ফোর্স (বাংলাদেশ)

এস ফোর্স ছিল মেজর কে এম সফিউল্লাহের নেতৃত্বে গঠিত বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী এর সামরিক ব্রিগেড। এটি ১ অক্টোবর ১৯৭১ গঠন করা হয়, ব্রিগেডটি ২য় ও ১১তম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট এর সমন্বয়ে গঠিত হয়েছিল।[1]

এস ফোর্স
সক্রিয়১লা অক্টোবর, ১৯৭১ - ১৬ই ডিসেম্বর, ১৯৭১
দেশ বাংলাদেশ
আনুগত্যঅস্থায়ী বাংলাদেশ সরকার
ধরনব্রিগেড
গ্যারিসন/সদরদপ্তরফটিকছড়ি
কমান্ডার
ব্রিগেড কমান্ডার= কাজী মুহাম্মদ সফিউল্লাহ

পটভূমি

২৫ মার্চ ১৯৭১, পাকিস্তান সেনাবাহিনী নির্দয় ভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠীর (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান)। তাদের পূর্ব পাকিস্তান এর রাজধানীতে উন্মাদের মতো হত্যাযজ্ঞ পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কর্মরত বাঙালি সামরিক কর্মকর্তাদের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী করে তোলে এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ যোগ দেন।

২৮ মার্চ কে এম সফিউল্লাহ এর নেতৃত্বে ২য় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট এর কর্মকর্তারা যাদের অবস্থান ছিল রাজধানী ঢাকা সংলগ্ন জয়দেবপুর ক্যান্টনমেন্ট, অন্যান্য সৈন্যদল এবং বাকি ক্যান্টনমেন্ট বিদ্রোহ ঘোষণা করে। প্রাথমিকভাবে মেজর সফিউল্লাহ সেক্টর-৩ এর অধিনায়ক হিসেবে নির্বাচিত হন.[2]

সুত্রপাত

স্বাধীনতাযুদ্ধের দীর্ঘায়নের সম্ভাবনা বিবেচনায় এনে বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার বিপক্ষের অস্ত্র সংগ্রামের প্রতিরোধ এর জন্যে নিয়মিত সামরিক বাহিনী নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত নেয়।

পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সরকারের নির্দেশে কর্নেল আতাউল গনি ওসমানী তিনটি ব্রিগেড আকারের ফোর্স গঠন করেন। যেগুলোর নামকরণ করা হয় তাদের অধিনায়কদের নামের অদ্যাংশ দিয়ে। যা এস ফোর্স, কে ফোর্স, জেড ফোর্স নামে পরিচিত। [3]

সরকারের নির্দেশনা অনুসারে, মেজর খালেদ মোশাররফ সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে গঠন করেন কে ফোর্স এবং মেজর জিয়াউর রহমান জেড ফোর্স এবং মেজর কে এম শফিউল্লাহ গঠন করেন এস ফোর্স

এস ফোর্স এর ব্রিগেড সদর দপ্তর ছিল হেজামারা।[3]

গঠন

ব্রিগেড এর কাঠামো

  • ব্রিগেড কমান্ডার - মেজর কে এম সফিউল্লাহ
  • ব্রিগেড মেজর – ক্যাপ্টেন আজিজুর রহমান
  • ডি-কিউ অফিসার - ক্যাপ্টেন আবুল হোসেন
  • সিগন্যাল অফিসার - ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট রউফ

২য় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট

  • কমান্ডিং অফিসার - মেজর মঈনুল হোসেন চৌধুরী
  • সহকারী - লেফটেন্যান্ট মোহাম্মদ সাঈদ
  • এ কোম্পানি কমান্ডার – মেজর মতিউর রহমান
  • বি কোম্পানী কমান্ডার – লেফটেন্যান্ট বদিউজ্জামান
  • সি কোম্পানি কমান্ডার - লেফটেন্যান্ট সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম
  • ডি কোম্পানি কমান্ডার – লেফটেন্যান্ট গোলাম হেলাল মোর্শেদ
  • এ কোম্পানির কর্মকর্তা – সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট আনিসুল হাসান
  • বি কোম্পানির কর্মকর্তা - সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট সেলিম মোহাম্মদ কামরুল হাসান
  • মেডিকেল অফিসার - লেফটেন্যান্ট আবুল হোসেন

১১তম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট

  • কমান্ডিং অফিসার - মেজর আবু সালেহ মোহাম্মদ নাসিম
  • সহকারী - লেফটেন্যান্ট নাসির
  • এ কোম্পানি কমান্ডার - লেফটেন্যান্ট শামসুল হুদা বাচ্চু
  • বি কোম্পানি কমান্ডার ক্যাপ্টেন সুবিদ আলী ভুঁইয়া
  • সি কোম্পানি কমান্ডার - সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট নজরুল ইসলাম
  • ডি কোম্পানি কমান্ডার - সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট আবুল হোসেন
  • বি কোম্পানির কর্মকর্তা - সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট কবির
  • মেডিকেল অফিসার - লেফটেন্যান্ট মঈনুল হোসেন

প্রধান অভিযান

নভেম্বরের শেষভাগে এস ফোর্স যুদ্ধের জন্যে প্রস্তুত হয়। এটির পরিচালিত অপারেশন আখাউড়া, মুকুন্দপুর, ধর্মনগর এবং নভেম্বর থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার আগ পর্যন্ত আরো বহু স্থানে অভিযান চালিয়ে গেছে।

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিলপত্র: দশম খণ্ড। হাক্কানী পাবলিশার্স। মার্চ ২০১৩। পৃষ্ঠা ২০৯। আইএসবিএন 984-433-091-2।
  2. সফিউল্লাহ, কে এম (২০০৫) [১৯৮৯]। বাংলাদেশ অ্যাট ওয়ারআগামী প্রকাশনী। পৃষ্ঠা ২১১। আইএসবিএন 9844013224।
  3. "সেক্টর এন্ড আর্মড ফোরসেস অব লিবারেশন ওয়ার" (ইংরেজি ভাষায়)। দ্যা ডেইলি স্টার। সংগ্রহের তারিখ ১২ জানুয়ারি ২০১৭
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.