আসাদ চৌধুরী
আসাদ চৌধুরী (জন্ম: ১১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৪৩) বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত কবি ও সাহিত্যিক। তিনি মনোগ্রাহী টেলিভিশন উপস্থাপনা ও চমৎকার আবৃত্তির জন্যও জনপ্রিয়। সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় তার পদচারণা। কবিতা ছাড়াও তিনি বেশ কিছু শিশুতোষ গ্রন্থ, ছড়া, জীবনী ইত্যাদি রচনা করেছেন। কিছু অনুবাদকর্মও তিনি সম্পাদন করেছেন। ১৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দে তার রচিত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শীর্ষক বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়।
আসাদ চৌধুরী | |
---|---|
![]() জাতীয় কবিতা উৎসব, ২০১০-এর দ্বিতীয় দিনে কবি আসাদ চৌধুরী | |
জন্ম | উলানিয়া, মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা, বরিশাল, ব্রিটিশ ভারত | ১১ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৩
পেশা | কবি ও সাহিত্যিক |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
নাগরিকত্ব | বাংলাদেশ ![]() |
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার | বাংলা একাডেমী, একুশে পদক, জাতীয় কবিতা পরিষদ পুরস্কার |
দাম্পত্যসঙ্গী | সাহানা বেগম |
তিনি একজন বাংলা একাডেমী পুরস্কারপ্রাপ্ত কবি। তার কবিতা গীতিময় এবং ছন্দোদ্ভাসিত। তার ব্যঙ্গার্থক কবিতা 'কোথায় পালালো সত্য' একটি জনপ্রিয় পদ্য। সভ্যতার প্রযুক্তিগত উন্নয়নের পাশাপাশি গত কয়েক দশকে মানবিক মূল্যবোধের যে করুণ অধোগতি, তারই প্রেক্ষাপটে একটি কবিতায় তিনি আক্ষেপ করেছেন[1] -
তখন সত্যি মানুষ ছিলাম
এখন আছি অল্প।
জন্ম
আসাদ চৌধুরী ১৯৪৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার উলানিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মোহাম্মদ আরিফ চৌধুরী এবং মাতার নাম সৈয়দা মাহমুদা বেগম। আসাদ চৌধুরীর স্ত্রীর নাম সাহানা বেগম।
শিক্ষাজীবন
আসাদ চৌধুরী আরমানিটোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দে তিনি উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন বরিশালের ব্রজমোহন কলেজ থেকে। পরবর্তীকালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অধ্যয়ন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে বাংলা ১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দে স্নাতক (সম্মান) ও ১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।[2]
কর্মজীবন
বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকে যাওয়ার পর কলেজে অধ্যাপনার মধ্য দিয়ে আসাদ চৌধুরীর চাকুরিজীবন শুরু। ব্রাহ্মণবাড়িয়া কলেজে তিনি ১৯৬৪ থেকে ১৯৭২ পর্যন্ত শিক্ষকতা করেন। পরবর্তীকালে ঢাকায় স্থিত হবার পর তিনি বিভিন্ন খবরের কাগজে সাংবাদিকতা করেছেন। ১৯৮৫ থেকে ১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত তিনি ভয়েজ অব জার্মানীর বাংলাদেশ সংবাদদাতার দায়িত্ব পালন করেন। ঢাকায় বাংলা একাডেমিতে দীর্ঘকাল চাকুরীর পর তিনি এর পরিচালক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।
প্রকাশিত গ্রন্থ
কবিতা
- তবক দেওয়া পান (১৯৭৫);
- বিত্ত নাই বেসাত নাই (১৯৭৬);
- প্রশ্ন নেই উত্তরে পাহাড় (১৯৭৬);
- জলের মধ্যে লেখাজোখা (১৯৮২);
- যে পারে পারুক (১৯৮৩);
- মধ্য মাঠ থেকে (১৯৮৪);
- মেঘের জুলুম পাখির জুলুম (১৯৮৫);
- আমার কবিতা (১৯৮৫);
- ভালোবাসার কবিতা (১৯৮৫);
- প্রেমের কবিতা (১৯৮৫);
- দুঃখীরা গল্প করে (১৯৮৭);
- নদীও বিবস্ত্র হয় (১৯৯২);
- টান ভালোবাসার কবিতা (১৯৯৭);
- বাতাস যেমন পরিচিত (১৯৯৮);
- বৃন্তির সংবাদে আমি কেউ নই (১৯৯৮);
- কবিতা-সমগ্র (২০০২);
- কিছু ফল আমি নিভিয়ে দিয়েছি (২০০৩);
- ঘরে ফেরা সোজা নয় (২০০৬)।
প্রবন্ধ-গবেষণা
- কোন অলকার ফুল (১৯৮২)
শিশুসাহিত্য
- রাজার নতুন জামা (রূপান্তর, ১৯৭৯);
- রাজা বাদশার গল্প (১৯৮০);
- গ্রাম বাংলার গল্প (১৯৮০);
- ছোট্ট রাজপুত্র (অনুবাদ : ১৯৮২);
- গর্ব আমার অনেক কিছুর (১৯৯৬);
- ভিন দেশের মজার লোককাহিনী (১৯৯৯);
- তিন রসরাজের আড্ডা (১৯৯৯)
- কেশবতী রাজকন্যা (২০০০);
- গ্রাম বাংলা আরো গল্প (২০০০)
- তোমাদের প্রিয় চার শিল্পী (জীবনী, ২০০০);
- জন হেনরি (আমেরিকার লোককাহিনী, ২০০১);
- মিকালেঞ্জেনো (জীবনী, ২০০১)
- ছোটদের মজার গল্প (২০০১);
- সোনার খড়ম (২০০৬);
- মুচি-ভ’তের গল্প (২০০৬)।
জীবনী
- সংগ্রামী নায়ক বঙ্গবন্ধু (১৯৮৩);
- রজনীকান্ত সেন (১৯৮৯);
- স্মৃতিসত্তায় যুগলবন্দী (২০০১)।
ইতিহাস
- বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ (১৯৮৩)।
অনুবাদ
পুরস্কার ও সম্মাননা
- আবুল হাসান স্মৃতি পুরস্কার (১৯৭৫);
- অগ্রণী ব্যাংক শিশুসাহিত্য পুরস্কার (১৯৮২);
- বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৮৭);
- শম্ভুগঞ্জ এনায়েতপুরী স্বর্ণপদক (১৯৯৯);
- ত্রিভুজ সাহিত্য পুরস্কার,
- বরিশাল বিভাগীয় স্বর্ণপদক,
- অশ্বনী কুমার পদক (২০০১);
- জীবনানন্দ দাশ পদক;
- অতীশ দীপঙ্কর স্বর্ণপদক;
- জাতীয় কবিতা পরিষদ পুরস্কার (২০০৬)।
- বঙ্গবন্ধু সম্মাননা ১৪১৮
[3]
তথ্যসূত্র
- "তখন সত্যি মানুষ ছিলাম"। ১০ ডিসেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জানুয়ারি ২০১২।
- "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৫ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ ডিসেম্বর ২০১১।
- "কলকাতায় বঙ্গবন্ধু সম্মাননা পেলেন কবি আসাদ চৌধুরী"। ২০১২-০১-২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০১-১৪।
- দৈনিক প্রথম আলো