সৈয়দ মাইনুল হোসেন
স্থপতি সৈয়দ মাইনুল হোসেন (জন্ম: ৫ মে, ১৯৫২ এবং মৃত্যু: ১০ নভেম্বর, ২০১৪)[4] বাংলাদেশের প্রখ্যাত স্থপতি। তিনি জাতীয় স্মৃতিসৌধের ও বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের স্থপতি।[5]
সৈয়দ মাইনুল হোসেন | |
---|---|
![]() | |
জন্ম | ৫ মে ১৯৫২ |
মৃত্যু | ১০ নভেম্বর, ২০১৪[1] |
পেশা | স্থপতি |
পরিচিতির কারণ | জাতীয় স্মৃতিসৌধের স্থপতি |
সন্তান |
|
পিতা-মাতা |
|
পুরস্কার | একুশে পদক, শেলটেক পদক |
জন্ম ও শিক্ষাজীবন
সৈয়দ মাইনুল হোসেনের জন্ম ১৯৫১ সালের ১৭ মার্চ ঢাকায়।[6] তার পিতার নাম সৈয়দ মুজিবুল হক এবং মায়ের নাম সৈয়দা রাশিদা হক। বাবার চাকুরীর সুবাদে তার জীবনের অনেকটা গুরুত্বপূর্ণ সময় কেটেছে এই ফরিদপুর শহরে৷ ফরিদপুর মিশন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষার শুরু হয়েছিল তার৷ প্রাথমিক শিক্ষা শেষে ১৯৬২ সালে ভর্তি হন ফরিদপুর জেলা স্কুলে ৷ ১৯৬৭ সালে মাধ্যমিক পাশ করেন৷ ১৯৬৯ সালে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন তিনি। ১৯৭০ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপত্য বিদ্যায় (নকশা) ভর্তি হন। ১৯৭৬ সালে প্রথম শ্রেণীতে স্থাপত্য বিদ্যা পাশ করেন তিনি৷
কর্মজীবন
১৯৭৬ সালের এপ্রিল মাসে 'ইএএইচ কনসালটেন্ট লিমিটেড এ জুনিয়র স্থপতি হিসাবে যোগদান করেন সৈয়দ মাইনুল হোসেন৷ কয়েক মাস পর ওই চাকরি ছেড়ে একই বছরের আগষ্টে 'বাংলাদেশ কনসালট্যান্ট লিমিটেড' এ জুনিয়র স্থপতি হিসাবে যোগদান করেন। তিনি বাংলাদেশের জাতীয় স্মৃতিসৌধের স্থপতি। ১৯৭৮ সালের ডিসেম্বরে এ চাকুরি ছেড়ে দিয়ে ১৯৭৯ এর জানুয়ারিতে যোগ দেন 'স্থপতি সংসদ লিমিটেড' এ জুনিয়র স্থপতি হিসাবে৷ ১৯৭৯ সাল থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত তিনি আরো বেশ কয়েকটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের জুনিয়র হিসাবে কাজ করেন। ১৯৮১ সালের এপ্রিল মাসে তিনি যোগদান করেন 'শহীদুল্লাহ এন্ড এসোসিয়েট লিমিটেড' এ৷ এখানেও জুনিয়র স্থপতি হিসেবে কাজ করেন তিনি ৷ 'ঢাকা মিউজিয়াম', 'জাতীয় স্মৃতিসৌধ' সহ আরো অনেক কাজের নকশা বাস্তবায়ন করে খ্যাতি অর্জন করেন তিনি। ১৯৭৬-৯৮ সালের মধ্যে বেশ কিছু বড় স্থাপত্যকর্ম করেছিলেন তিনি। এর মধ্যে রয়েছে কারওয়ান বাজারের আইআরডিপি ভবন, ভোকেশনাল টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ও ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টার, চট্টগ্রাম ইপিজেড, ঢাকার অ্যাডভোকেট বার কাউন্সিল ইত্যাদি। মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মরণে ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর সাভারে স্মৃতিসৌধের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। নকশা আহ্বান করা হয় ১৯৭৮ সালে। মোট ৫৭টি নকশার মধ্যে থেকে সে সময়ের তরুণ স্থপতি সৈয়দ মাইনুল হোসেনের নকশাটি গৃহীত হয়। নির্মাণকাজ শেষ হয় ১৯৮৮ সালে।[7]
উল্লেখযোগ্য কাজ
১৯৭৬ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত সৈয়দ মাইনুল হোসেন ৩৮টি বড় বড় স্থাপনার নকশা করেছেন৷ এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য-
- জাতীয় স্মৃতিসৌধ (১৯৭৮)
- বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর (১৯৮২)
- ভোকেশনাল টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ও ভোকেশনাল ট্রেনিং ইস্টিটিউট (১৯৭৭)
- বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ভবন (১৯৭৮)
- চট্টগ্রাম ইপিজেড এর অফিস ভবন (১৯৮০)
- শিল্পকলা একাডেমীর বারো'শ আসন বিশিষ্ট অডিটোরিয়াম
- উত্তরা মডেল টাউন (আবাসিক প্রকল্প ) (১৯৮৫)
চিত্রমালা
- জাতীয় স্মৃতিসৌধ
- বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর
পুরস্কার ও স্বীকৃতি
- একুশে পদক (১৯৮৮)
- শেলটেক পদক (২০০৭)
তথ্যসূত্র
- "National Monument architect Mainul passes away"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ১৩ নভেম্বর ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ৫ ডিসেম্বর ২০১৪।
- "Syed Mainul Hossain laid to rest"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ১৩ নভেম্বর ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ৫ ডিসেম্বর ২০১৪।
- "Last tribute to architect Mainul"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ১১ নভেম্বর ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ৫ ডিসেম্বর ২০১৬।
- পারভেজ, কামরান। "সৈয়দ মাইনুল হোসেন"। গুণীজন। সংগ্রহের তারিখ ৫ ডিসেম্বর ২০১৬।
- ইউসুফ, অনন্ত (২১ নভেম্বর ২০১৪)। "A Belated Tribute"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৫ ডিসেম্বর ২০১৬।
- "বাবা সম্পর্কে অনেকেই ভুল তথ্য দেন: সৈয়দা তানজিনা"। দৈনিক প্রথম আলো। ২৪ নভেম্বর ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।
- "চিরনিদ্রায় জাতীয় স্মৃতিসৌধের স্থপতি"। দৈনিক প্রথম আলো। ১১ নভেম্বর ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।