দেউল (স্থাপত্য)
দেউল হল বঙ্গ অঞ্চলের একটি মন্দির স্থাপত্যশৈলী। বাংলার সবথেকে আগের মন্দিরগুলোর মধ্যে দেউল অন্যতম। খ্রিস্টিয় ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শতাব্দীর মধ্যবর্তী কোনও এক সময়ে দেউল শিল্পরীতির বিকাশ ঘটে। এরপর মুসলিম শাসনেঁর পর অন্ত-মধ্য যুগে বাংলায় দেউল শিল্পে এক নবজাগরণ আসে। খ্রিস্টীয় ১৬শ-১৯শ শতাব্দী পর্যন্ত এই শৈলীর মন্দির নির্মিত হয়েছে। বাংলায় চালা শিল্পরীতি স্থানীয় মানুষের আপন হলেও পঞ্চদশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে ১৬ শতকের মধ্যে দেউল স্থাপত্য রীতির প্রভূত উন্নতি হয়। পরবর্তীকালে নির্মিত এই শৈলীর মন্দিরগুলি ছিল সাধারণত ছোটো এবং ইসলামি স্থাপত্যের বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন।[1] একরত্ন মন্দিরের চূড়াগুলি দেউল শৈলীর অনুরূপ। পঞ্চরত্ন ও নবরত্ন মন্দিরের কেন্দ্রীয় চূড়াগুলিও দেউল শৈলীর অনুরূপ।

.jpg)
প্রকারভেদ
ডেভিড ম্যাকাচন বাংলার মন্দিরসমূহকে চারটি শ্রেণিতে ভাগ করেন যার একটি হচ্ছে দেউল মন্দির।
দেউলকে আরো তিন ভাগে ভাগ করা যায়।[2]
- রেখা দেউল
- পিড়া দেউল
- বেগুনিয়া
রেখা দেউল
মুসলিম পূর্ববর্তী যুগের বাংলার মন্দিরগুলোর মধ্যে কিছু দেউল মন্দির এখনও ভালো ভাবে টিকে আছে। তাদের মধ্যে বরাকরের সিদ্ধেশ্বরী মন্দির অন্যতম।[1]
পীর দেউল
মুঘল পূর্ববর্তী যুগে আরো একটি বিশেষ ধরনের মন্দির স্থাপত্যের নিদর্শন বাংলায় দেখা যায়। সেখানে তল বিশিষ্ঠ পিরামিডের মত কিছু মন্দির দেখা যায়। এদের পীর দেউল বা ভদ্র দেউল বলে। পরবর্তিতে রেখা দেউলের সাথে পীর দেউল মিশিয়ে আরো কিছু মন্দির গড়ে ওঠে।[1]
বেগুনিয়া
মূল নিবন্ধ: বেগুনিয়া
বরাকরে দামোদর নদের প্রায় কোল ঘেঁষে চারটি মন্দির একত্রে বেগুনিয়া নামে পরিচিত। সুপ্রাচীন-ঐতিহাসিক, নান্দনিক এবং অপরিসীম প্রত্নতাত্বিক মূল্যের নিদর্শন এই মন্দিরগুলি।আগে মোট ৫টি মন্দির ছিল। বর্তমানে চারটি অপূর্ব সুন্দর পাথরের দেউল অবশিষ্ট , এদের একত্রে সিদ্ধেশ্বর মন্দির বলা হয়। তৃতীয় মন্দিরটি পশ্চিমমুখী, বাকিগুলো সব পূর্বমুখী। চতুর্থ মন্দিরটি বাংলার সর্বপ্রাচীন দেউল স্থাপত্য।
চিত্র সম্ভার
- জটার-দেউল, পশ্চিমবঙ্গ
- ইছাই-ঘোষ-মন্দির,পশ্চিমবঙ্গ
- পুরুলিয়ার বান্দার দেউল
আরো দেখুন
তথ্যসূত্র
![]() |
উইকিমিডিয়া কমন্সে দেউল মন্দির সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে। |
- Amit Guha, Classification of Terracotta Temples, সংগ্রহের তারিখ ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬
- "Front Page - Sthapatya" (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৭-১০-৩১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১২-১৯।
বহিঃসংযোগ
- Priyanka Mangaonkar (২০১২)। "Temples of Bengal: Material Style and Technological Evolution" (PDF)। Chitrolekha International Magazine On Art And Design। 2 (1)। ২৭ আগস্ট ২০১৩ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা।