সুলি প্রুদোম

রনে ফ্রাঁসোয়া আরমঁ (সুলি) প্রুদোম (মার্চ ১৬, ১৮৩৯ - সেপ্টেম্বর ৬, ১৯০৭) একজন ফরাসি সাহিত্যিক। তিনি ১৯০১ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তিনিই সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রথম ব্যক্তি।

রনে ফ্রাঁসোয়া আরমঁ (সুলি) প্রুদোম
জন্ম(১৮৩৯-০৩-১৬)১৬ মার্চ ১৮৩৯
প্যারিস, ফ্রান্স
মৃত্যু৬ সেপ্টেম্বর ১৯০৭(1907-09-06) (বয়স ৬৮)
চাতেনয়-মালাব্রাই, ফ্রান্স
পেশাকবি ও প্রাবন্ধিক
জাতীয়তাফরাসী
উল্লেখযোগ্য পুরস্কারসাহিত্যে নোবেল পুরস্কার (১৯০১)

জীবনী

সুলি প্রুদোম ১৮৩৯ সালে ফ্রান্সের প্যারিসে জন্মগ্রহণ করেন। প্রায় দুই বছর বয়সে তার বাবা মারা যায়। তার শৈশব কাটে মা আর বড় বোনের স্নেহ সান্নিধ্যে। ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ছিলেন। তার বিষয় ছিল গণিত। স্কুলের পাঠ শেষে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন উচ্চতর গণিতে। এরপর প্রকৌশল বিষয়ে পড়াশোনার জন্য প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। কিন্তু অপথ্যালমিয়া রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণে এ পর্যায়ে তার পড়াশোনা ব্যাহত হয়। ফলে এখানেই শিক্ষা জীবনের ইতি টেনে তিনি প্যারিসের এক নোটারি অফিসে চাকরি নেন। সারাদিন অফিসে কাজ শেষে রাতে কবিতা লিখতেন। কিন্তু শুধু কবিতা লিখে মানসিক স্বস্তি পাননি। একই সাথে ধর্মতত্ত্ব নিয়ে উৎসাহী হয়ে পড়েন। এক্ষেত্রেও স্বস্তির সন্ধান পাননি। ঈশ্বর সম্বন্ধে কোন ধর্মের ব্যাখ্যাই তার মনঃপুত হয়নি। প্রুদোমের এক সুন্দরী খালাতো বোন ছিল। তার শৈশব কেটেছে তারই সাথে। ভালোবেসে ফেলেছিলেন মেয়েটিকে। কিন্তু মেয়েটি তাকে ভালোবাসেনি। অন্য এক ছেলের সাথে তার বিয়ে হয়। এই সব কারণ মিলিয়ে প্রুদোম একেবারে ভেঙ্গে পড়েন। সিদ্ধান্ত নেন আর কখনও বিয়ে করবেন না। এ সিদ্ধান্তের কথা কখনও ভুলে যাননি। তার কবিতাতেও তাই ঘুরে ফিরে এসেছে প্রেম ও ব্যর্থতার কথা। এর সাথে জীবন আর শূন্যতার জন্য তার হৃদয়ে যে দ্বন্দ্ব বিরাজ করতো তার প্রভাব সুস্পষ্ট ছিল তার কবিতাতে। সুলি প্রুদোমের কবিতার বিষয়বস্তু বেশ জটিল। জীবনের বাস্তব অভিজ্ঞতার সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম ব্যাখ্যা তার কবিতায় পরিস্ফুটিত ছিল। এতে বিশেষ স্থান ছিল অচেনা বাস্তব ও চেনা অভিজ্ঞতার।

প্রুদোম

১৮৬৫ সালে সুলি প্রুদোমের প্রথম কাব্যগ্রন্থ "Stanzas and Poems" প্রকাশিত হয়। এর আগে ফ্রান্সের কবিতা ছিল মূলত রোমান্টিকতায় ভরপুর। তাই একটু নতুনত্বের প্রয়োজনীয়তা ছিল। ঊনবিংশ শতাব্দীর সত্তরের দশক থেকে এ প্রয়োজন আরও প্রকট হয়ে উঠেছিল। প্রয়োজনটি পূরণ করেন প্রুদোম। ১৮৭০ সাল ছিল তার জীবনের সবচেয়ে দুঃখের বছর। এ বছর তার মা, বড় বোন এবং যে চাচার কাছে তিনি থাকতেন তারা সবাই একে একে মৃত্যুবরণ করেন। প্রুদোম হয়ে পড়েন সম্পূর্ণ স্নেহহীন। এ বছরই তিনি ফ্রাঙ্কো-প্রুশিয়ান যুদ্ধে যোগ দেন। এই যুদ্ধের অভিজ্ঞতা থেকে "ইমপ্রেশন্‌স অফ ওয়ার" নামক কাব্যগ্রন্থটি রচনা করেছিলেন। ১৮৭০ সালেই চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসার কারণে প্রুদোম চিরদিনের জন্য পঙ্গু হয়ে যান। ১৮৮৮ সালে তার সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হ্যাপিনেস প্রকাশিত হয়। এটি অমর মহাকাব্যের মর্যাদা পেয়েছে। তার কবিতা পাঠ করে প্রখ্যাত কাব্য সমালোচক জাঁ আলবার্ত বেদে মন্তব্য করেছিলেন,

তার জীবনের শেষ রচনা ছিল "দ্য সাইকোলজি অফ ফ্রি উইল" যা ১৯০৬ সালে প্রকাশিত হয়। ১৯০৭ সালের ৭ সেপ্টেম্বর তারিখে প্যারিসের দক্ষিণে অবস্থিত নিজ বাসভবন "Chatenay Malabry"-তে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুর পূর্বে নোবেল পুরস্কার থেকে প্রাপ্ত সব অর্থ দিয়ে একটি অনুদানমূলক পুরস্কারের ব্যবস্থা করে যান। এটি নবীন লেখকদের উৎসাহ দেয়ার জন্য প্রদান করা হয়। এখনও ফ্রান্সে এই পুরস্কারের রীতি চালু আছে।

পুরস্কার

  • ১৮৮১ সালে ফ্রেঞ্চ একাডেমির সদস্য হন।
  • ১৯০১ সালে তার নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পিছনে কবিতার মান ও বিষয়বস্তু বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে। ঐ সালের ডিসেম্বর ১০ তারিখে নোবেল পুরস্কারের অনুষ্ঠানে প্রুদোম উপস্থিত থাকতে পারেননি অসুস্থতার জন্য।

সাহিত্যকর্মসমূহ

কাব্যগ্রন্থ

প্রবন্ধ

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.