সিরিমাভো বন্দরনায়েকে
সিরিমা রাতওয়াত ডায়াস বন্দরনায়েকে (সিংহলি: සිරිමා රත්වත්තේ ඩයස් බණ්ඩාරනායක, তামিল: சிறிமா ரத்வத்தே டயஸ் பண்டாரநாயக்கே; জন্ম: ১৭ এপ্রিল, ১৯১৬ - মৃত্যু: ১০ অক্টোবর, ২০০০) শ্রীলঙ্কার বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও ৬ষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। এছাড়াও তিনি আধুনিক বিশ্বের প্রথম মহিলা সরকার প্রধান ছিলেন। সিরিমাভো বন্দরনায়েকে তিনবার সিলন ও শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। শ্রীলঙ্কা ফ্রিডম পার্টিকে দীর্ঘদিন নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। সমাজতন্ত্রকে ভিত্তি করে ও তার স্বামীর রাষ্ট্রনীতির সাথে মিল রেখে রাষ্ট্র পরিচালনা করেন।
সম্মানীয়া সিরিমাভো বন্দরনায়েকে | |
---|---|
![]() | |
শ্রীলঙ্কা প্রধানমন্ত্রী | |
কাজের মেয়াদ ১৪ নভেম্বর, ১৯৯৪ – ১০ আগস্ট, ২০০০ | |
রাষ্ট্রপতি | চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গা |
পূর্বসূরী | চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গা |
উত্তরসূরী | রত্নাসিরি বিক্রেমানায়েকে |
কাজের মেয়াদ ২২ মে, ১৯৭২ – ২৩ জুলাই, ১৯৭৭ | |
রাষ্ট্রপতি | উইলিয়াম গোপালয়া |
পূর্বসূরী | পদ সৃষ্ট |
উত্তরসূরী | জুনিয়াস রিচার্ড জয়েবর্ধনে |
সিলনের প্রধানমন্ত্রী | |
কাজের মেয়াদ ২৯ মে, ১৯৭০ – ২২ মে, ১৯৭২ | |
সার্বভৌম শাসক | দ্বিতীয় এলিজাবেথ |
গভর্নর জেনারেল | উইলিয়াম গোপালয়া |
পূর্বসূরী | ডাডলি সেনানায়েকে |
কাজের মেয়াদ ২১ জুলাই, ১৯৬০ – ২৫ মার্চ, ১৯৬৫ | |
সার্বভৌম শাসক | দ্বিতীয় এলিজাবেথ |
গভর্নর জেনারেল | অলিভার গুণতিলেক উইলিয়াম গোপালয়া |
পূর্বসূরী | ডাডলি সেনানায়েকে |
উত্তরসূরী | ডাডলি সেনানায়েকে |
বিরোধী দলীয় নেতা | |
কাজের মেয়াদ ৯ মার্চ, ১৯৮৯ – ২৪ জুন, ১৯৯৪ | |
রাষ্ট্রপতি | জুনিয়াস রিচার্ড জয়েবর্ধনে |
প্রধানমন্ত্রী | দীনগিরি বান্দা বিজেতুঙ্গা |
পূর্বসূরী | অনূঢ়া বন্দরনায়েকে |
উত্তরসূরী | গামিনি দেসানায়েকে |
কাজের মেয়াদ ৫ এপ্রিল, ১৯৬৫ – ২৫ মার্চ, ১৯৭০ | |
প্রধানমন্ত্রী | ডাডলি সেনানায়েকে |
পূর্বসূরী | ডাডলি সেনানায়েকে |
উত্তরসূরী | জুনিয়াস রিচার্ড জয়েবর্ধনে |
অ্যাটানাগালা শ্রীলঙ্কান সংসদ সদস্য | |
কাজের মেয়াদ ২২ মার্চ, ১৯৬৫ – ১৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৯ | |
পূর্বসূরী | জে. পি. অবিসেকেরা |
উত্তরসূরী | সংসদ বিলুপ্ত |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | সিলন | ১৭ এপ্রিল ১৯১৬
মৃত্যু | ১০ অক্টোবর ২০০০ ৮৪) (বয়স কলম্বো, শ্রীলঙ্কা |
রাজনৈতিক দল | শ্রীলঙ্কা ফ্রিডম পার্টি |
দাম্পত্য সঙ্গী | সলোমন বন্দরনায়েকে (1899–1959) |
সন্তান | সুনেত্রা চন্দ্রিকা অনূঢ়া |
ধর্ম | থেরাবাদ বৌদ্ধ |
১৯৫৯ সালে নিহত পূর্বতন প্রধানমন্ত্রী সলোমন বন্দরনায়েকের বিধবা পত্নী ছিলেন তিনি। শ্রীলঙ্কার চতুর্থ রাষ্ট্রপতি চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গা এবং সাবেক স্পিকার ও মন্ত্রী অনুঢ়া বন্দরনায়েকে তার সন্তান।
রাজনৈতিক জীবন
১৯৪৬ সালে প্রতিষ্ঠিত ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টি'র (ইউএনপি) প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ছিলেন তার স্বামী সলোমন। ১৯৪৭ সালে সংসদের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি সভার সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ইউএনপি থেকে সম্পর্ক ছেদ করে শ্রীলঙ্কা ফ্রিডম পার্টি (এসএলএফপি) দলে নেতৃত্ব দেন।[1] ১৯৫৬ সালের সাধারণ নির্বাচনে প্রতিনিধি সভায় এসএলএফপি সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন লাভ করে। এরফলে সলোমন প্রধানমন্ত্রী মনোনীত হন। কিন্তু সমাজতান্ত্রিক ও জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক ধারার পরিবর্তন ঘটায় তার সরকারের পতন ঘটে। ২৬ সেপ্টেম্বর, ১৯৫৯ তারিখে এক বৌদ্ধ সন্ন্যাসী কর্তৃক তিনি নিহত হন।
তার হত্যাকাণ্ডের ফলে সরকারে শূন্যতা সৃষ্টি হয়। সম্ভাব্য উত্তরাধিকারী সি. পি. ডি সিলভা গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় লন্ডনে চিকিৎসার্থে গমন করলে শিক্ষামন্ত্রী বিজেনন্দ দাহানায়েকে আপদকালীন প্রধানমন্ত্রী মনোনীত হন। অস্থিতিশীল সরকার পদত্যাগ করতে বাধ্য হন ও মার্চ, ১৯৬০ সালের নির্বাচনে এসএলএফপি পরাজিত হয়।
এ সময় সিরিমাভো অগ্রসর হন ও তার স্বামীর দলে নেতৃত্ব দেন। এভাবেই তিনি রাজনীতি অঙ্গনে প্রবেশ করেন। ১৯৬০ সালে এম. পি. ডি জয়সা, জুনিয়র সিনেট থেকে পদত্যাগ করলে সিরিমাভো এসএলএফপি'র পক্ষ থেকে সিনেট সদস্য হন। জুলাই, ১৯৬০ সালের নির্বাচনে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে জয়লাভ করান। ২১ জুলাই, ১৯৬০ তারিখে সিনেটর থেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন সিরিমাভো। এরফলে তিনি বিশ্বের প্রথম নির্বাচিত মহিলা প্রধানমন্ত্রী হন।[2][3]
নভেম্বর, ১৯৯৪ সালে সিরিমাভো'র কন্যা চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গা জোটবদ্ধ পিপলস অ্যালায়েন্স দলের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। তন্মধ্যে শ্রীলঙ্কা ফ্রিডম পার্টির নেতৃত্বে থাকা সিরিমাভোকে তার নবগঠিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী মনোনীত করেন।
ব্যক্তিগত জীবন
প্রখ্যাত রাদালা পরিবারের সন্তান হিসেবে সিরিমাভো বন্দরনায়েকে জন্মগ্রহণ করেন। চার ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি বড় সন্তান ছিলেন। বাবা স্টেট কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন। কলম্বোর সেন্ট ব্রিজেট'স কনভেন্টে পড়াশোনা করেন তিনি। ১৯৪০ সালে সলোমন ওয়েস্ট রিজওয়ে ডায়াস বন্দরনায়েকের সাথে বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হন। সুনেত্রা, চন্দ্রিকা ও অনুঢ়া নামে তাদের তিন সন্তান ছিল।
প্রায় চল্লিশ বছর রাজনৈতিক জীবনের সাথে সম্পৃক্ত সিরিমাভো ১০ আগস্ট, ২০০০ তারিখে রাজনীতি থেকে দূরে সরে যান। এর ঠিক দুই মাস পর ৮৪ বছর বয়সে হৃদযন্ত্রক্রিয়ায় আক্রান্ত হলে দেহাবসান ঘটে তার।
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
- The Ratwatte Ancestry
- The Bandaranaike Ancestry
- Golden memories of a political prodigy
- Website of the Parliament of Sri Lanka
- New York Times: Sirimavo Bandaranaike of Sri Lanka Dies at 84; First Woman Premier
- Sirimavo Bandaranaike
রাজনৈতিক দপ্তর | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী ডাডলি সেনানায়েকে |
সিলনের প্রধানমন্ত্রী ১৯৬০-১৯৬৫ |
উত্তরসূরী ডাডলি সেনানায়েকে |
সিলনের প্রধানমন্ত্রী ১৯৭০-১৯৭২ |
পদ বিলুপ্ত | |
নতুন অফিস | শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী ১৯৭২-১৯৭৭ |
উত্তরসূরী জুনিয়াস জয়েবর্ধনে |
পূর্বসূরী চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গা |
শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী ১৯৯৪-২০০০ |
উত্তরসূরী রত্নাসিরি বিক্রেমানায়েকে |