মহিন্দ রাজাপক্ষ

পার্সি মহেন্দ্র "মহিন্দ" রাজাপক্ষ (সিংহলি: මහින්ද රාජපක්ෂ, উচ্চারণ: [maˈhində ˈraːɟəˌpakʂə], তামিল: மகிந்த ராசபக்ச; জন্ম: ১৮ নভেম্বর, ১৯৪৫) বীরকাটিয়ায় জন্মগ্রহণকারী শ্রীলঙ্কার বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ। তিনি শ্রীলঙ্কার ৬ষ্ঠ রাষ্ট্রপতি ও শ্রীলঙ্কার সামরিক বাহিনীর সর্বাধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। পেশায় তিনি একজন আইনজীবী। ১৯৭০ সালে প্রথমবারের মতো শ্রীলঙ্কার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ৬ এপ্রিল, ২০০৪ থেকে ২০০৫ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পূর্ব পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯ নভেম্বর, ২০৫ তারিখে রাষ্ট্রপতি হিসেবে ৬ বছরের মেয়াদে ক্ষমতায় আসীন হন। এরপর ২৭ জানুয়ারি, ২০১০ তারিখে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের মাধ্যমে ২য় মেয়াদে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন।[2]

মহিন্দ রাজাপক্ষ
শ্রীলঙ্কার ৬ষ্ঠ রাষ্ট্রপতি
কাজের মেয়াদ
১৯ নভেম্বর, ২০০৫  ৯ জানুয়ারি, ২০১৫
প্রধানমন্ত্রীডি. এম. জয়ারত্নে
পূর্বসূরীচন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গা
উত্তরসূরীমৈত্রীপাল সিরিসেন
শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
৬ এপ্রিল, ২০০৪  ১৯ নভেম্বর, ২০০৫
রাষ্ট্রপতিচন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গা
পূর্বসূরীরনীল বিক্রমাসিংহে
উত্তরসূরীরত্নাসিরি বিক্রমানায়েকে
বিরোধী দলীয় নেতা
কাজের মেয়াদ
৯ ডিসেম্বর, ২০০১  ২ এপ্রিল, ২০০৪
প্রধানমন্ত্রীরনীল বিক্রমাসিংহে
পূর্বসূরীরনীল বিক্রমাসিংহে
উত্তরসূরীরনীল বিক্রমাসিংহে
মৎস্য ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়
কাজের মেয়াদ
১৯৯৭  ২০০১
শ্রম মন্ত্রণালয়
কাজের মেয়াদ
১৯৯৪  ১৯৯৭
হাম্বানতোতা শ্রীলঙ্কান সংসদ সদস্য
কাজের মেয়াদ
১৯৮৯  ২০০৫
হাম্বানতোতা শ্রীলঙ্কান সংসদ সদস্য
কাজের মেয়াদ
১৯৭০  ১৯৭৭
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্মপার্সি মহেন্দ্র রাজাপক্ষ
(1945-11-18) ১৮ নভেম্বর ১৯৪৫
বীরকাটিয়া, ব্রিটিশ সিলন
(বর্তমানে শ্রীলঙ্কা)
রাজনৈতিক দলইউনাইটেড পিপল’স ফ্রিডম অ্যালায়েন্স
ফ্রিডম পার্টি
দাম্পত্য সঙ্গীশিরান্থি রাজাপক্ষ
(বিবাহ-পূর্ব বিক্রমেসিংহে)
সন্তাননমল
যোশিথা
রোহিথা
প্রাক্তন শিক্ষার্থীরিচমন্ড কলেজ
নালন্দা কলেজ কলম্বো
থার্স্টান কলেজ
শ্রীলঙ্কা ল কলেজ
জীবিকারাজনীতিবিদ, আইনজীবী
ধর্মথেরবাদ[1]
ওয়েবসাইটOfficial website

প্রারম্ভিক জীবন

হাম্বানতোতার দক্ষিণাংশের বীরকাটিয়া গ্রামে রাজাপক্ষের জন্ম।[3] শ্রীলঙ্কার স্বনামধন্য রাজনৈতিক পরিবারে তার জন্ম। তার বাবা ডি. এ. রাজাপক্ষ প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ, স্বাধীনতাকামী, সংসদ সদস্য এবং বিজেনন্দা ডাহানায়েকে সরকারের কৃষি ও ভূমিমন্ত্রী ছিলেন। তার দাদা ডি.এম. রাজাপক্ষ ১৯৩০-এর দশকে হাম্বানতোতা’র স্টেট কাউন্সিলর ছিলেন।

রাজাপক্ষ গলের রিচমন্ড কলেজে অধ্যয়ন করেন। এরপর কলম্বোর নালন্দা কলেজ এবং পরবর্তীতে থার্স্টটান কলেজে পড়াশোনা করেন। এছাড়াও তিনি সিংহলি চলচ্চিত্রে অভিনয়সহ বিদ্যোদয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রন্থাগার সহকারীর দায়িত্ব পালন করেন।

রাজনৈতিক জীবন

১৯৬৭ সালে পিতার মৃত্যুর পর এসএলএফপি দলের প্রার্থী হিসেবে বেলিয়াতা নির্বাচনী এলাকা থেকে প্রার্থী হন ও ১৯৭০ সালের নির্বাচনে মাত্র ২৪ বছর বয়সে সর্বকনিষ্ঠ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[4] এরপর শ্রীলঙ্কা ল কলেজে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করে নভেম্বর, ১৯৭৭ সালে অ্যাটর্নি এট ল হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন[5]। ১৯৯৪ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত মন্ত্রীত্ব থাকাকালীন সময় বাদে সংসদ সদস্যের বাকী সময়টুকু টাঙ্গালে আইনচর্চা করেন।

১৯৭৭ সালে সংসদ নির্বাচনে পরাজিত হন এবং ১৯৮৯ সালে পুণরায় নির্বাচিত হন ও সংসদে হাম্বানতোতা জেলার প্রতিনিধিত্ব করেন। ১৯৯৪ সালে শ্রীলঙ্কার নির্বাচনে চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গা’র নেতৃত্বাধীন পিপলস অ্যালায়েন্স বিজয়ী হলে রাজাপক্ষ শ্রমমন্ত্রী নিযুক্ত হন। ১৯৯৭ সালে মন্ত্রণালয় পুণর্গঠনের পূর্ব পর্যন্ত এ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। এরপর তিনি মৎস্য ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান।[3] ২০০১ সালে ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টি (ইউএনপি) পিপলস অ্যালায়েন্সকে পরাজিত করলে তিনি সরকার থেকে পদচ্যুত হন। মার্চ, ২০০২ সালে সংসদে বিরোধী দলীয় নেতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হন।

২০০৪ সালের সংসদ নির্বাচনে স্বল্প ব্যবধানে বিজয় লাভ করে সরকার গঠন করে। এতে রাজাপক্ষ শ্রীলঙ্কা’র ত্রয়োদশ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন ৬ এপ্রিল, ২০০৪ তারিখে।[3] প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি রাজপথ মন্ত্রণালয়েরও দায়িত্ব পান।

শ্রীলঙ্কা ফ্রিডম পার্টির পক্ষ থেকে ২০০৫ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তার প্রতিপক্ষ ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা ও ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টি প্রধান রনীল বিক্রমাসিংহে। ইউএনপি ব্যাপক নির্বাচনী প্রচারণা চালানো স্বত্ত্বেও মহিন্দ রাজাপক্ষ ১৯০,০০০ ভোটের স্বল্প ব্যবধানে জয়যুক্ত হন। বিরোধীরা দাবী করে যে, এলটিটিই নির্বাচন বয়কট করায় উত্তর ও পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর তামিল অধ্যুষিত এলাকায় ভোটারদের জন্যই তাদের পরাজয়বরণ করতে হয়েছে। অধিকাংশ ভোটারদেরকেই জোরপূর্বক ভোটদান থেকে বিরত রাখা হয়েছে যা রনীল বিক্রমাসিংহের সমর্থক ছিল।[6] রাজাপক্ষ ৫০.৩% ভোট পান। শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি হিসেবে ক্ষমতায় আরোহণের পর রাজাপক্ষ মন্ত্রণালয় পুণর্গঠন করেন এবং প্রতিরক্ষা ও অর্থমন্ত্রণালয়ের দায়িত্বেও সম্পৃক্ত হন।

পরাজয়বরণ

৮ জানুয়ারি, ২০১৫ তারিখে অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মৈত্রীপাল সিরিসেনে’র কাছে ৪৭.৬% ভোট পেয়ে পরাজিত হন।[7] ক্রমবর্ধমান নিয়ন্ত্রণ, অকল্যাণকর সরকার, দূর্নীতির প্রেক্ষিতে তিনি পরাজিত হয়েছেন বলে ধারণা করা হয়।[8] শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি নির্বাচনের ফলাফল বানচাল ও সেনাবাহিনী প্রধান জগৎ জয়াসুরিয়াকে বশে রাখতে চাইলে তা ব্যর্থ হয় বলে এমপি রজিত সেনারত্নে জানান।[9][10]

তথ্যসূত্র

  1. "Mahinda – The early years"। President.gov.lk। ২০১২-০৯-২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৯-২৮
  2. "(BBC)"। BBC News। ২০১০-০১-২৭। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৯-২৮
  3. President's Fund of Sri Lanka, President's Profile ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৪ জুলাই ২০০৭ তারিখে
  4. When Mahinda became the youngest MP ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৭ তারিখে Thilakarathne, Indeewara, The Sunday Observer
  5. "President Mahinda Rajapaksa"। President.gov.lk। ২০১২-০১-০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৯-২৮
  6. "Hardliner wins Sri Lanka election"। BBC News। November 2005 18, 2005। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  7. "Sri Lanka's Rajapaksa suffers shock election defeat"। BBC। সংগ্রহের তারিখ ১০ জানুয়ারি ২০১৫
  8. "Sirisena dethrones Rajapaksa in Sri Lanka"। Khaleej Times। সংগ্রহের তারিখ ১০ জানুয়ারি ২০১৫
  9. ""Army Refused Last Minute Orders To Deploy Troops In Capital City" - Rajitha"। AsiaMirror.lk। ১০ জানুয়ারি ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১০ জানুয়ারি ২০১৫
  10. "Army refused orders to deploy in Colombo- Rajitha"। ১০ জানুয়ারি ২০১৫। ১০ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ জানুয়ারি ২০১৫

বহিঃসংযোগ

প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট
সংবাদ গণমাধ্যম
অন্যান্য সংযোগ
রাজনৈতিক দপ্তর
পূর্বসূরী
রনীল বিক্রমাসিংহে
শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী
২০০৪-২০০৫
উত্তরসূরী
রত্নাসিরি বিক্রমানায়েকে
পূর্বসূরী
চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গা
শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি
২০০৫-২০১৫
উত্তরসূরী
মৈত্রীপাল সিরিসেন
কূটনৈতিক পদবী
পূর্বসূরী
এ পি জে আবদুল কালাম
সার্ক সভাপতি
২০০৮-২০১৫
নির্ধারিত হয়নি
পূর্বসূরী
মাহমুদ আহমাদিনেজাদ
জি-১৫ সভাপতি
২০১০-২০১৫
নির্ধারিত হয়নি
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.