শিলিগুড়ি
শিলিগুড়ি, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তরভাগে দার্জিলিং এর একটি শহর ও পৌর কর্পোরেশনাধীন এলাকা। শহরটি দক্ষিণ হিমালয়ের তরাই অঞ্চলে, মহানন্দা নদীর পশ্চিমে অবস্থিত। এখানে করাতকল ও প্লাইউডের কারখানা আছে। কাছের তরাই অরণ্য থেকে কাঠের যোগান আসে। বাণিজ্য ও পরিবহন এখানকার প্রধানতম অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড। শহরটি ভারতের বাকী অংশের সাথে উত্তর-পূর্ব ভারতের কৌশলগত যোগাযোগ কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে। দক্ষিণের সমভূমিগুলি ও উত্তরের পাহাড়ি অঞ্চলগুলির মধ্যে একটি পরিবহন কেন্দ্র হিসেবেও শিলিগুড়ি ভূমিকা রাখে। এদের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা দক্ষিণে জলপাইগুড়ি শহর থেকে উত্তরে দার্জিলিং শহর পর্যন্ত বিস্তৃত। শিলিগুড়ি দিয়ে অনেকগুলি প্রধান প্রধান রেলপথ ও মহাসড়ক চলে গেছে।
শিলিগুড়ি | |
---|---|
মেট্রোপলিটান/শহর পুঞ্জ | |
![]() শিলিগুড়ি | |
ডাকনাম: উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রবেশদ্বার শহর | |
![]() ![]() শিলিগুড়ি | |
স্থানাঙ্ক: ২৬.৭১° উত্তর ৮৮.৪৩° পূর্ব | |
দেশ | ![]() |
রাজ্য | পশ্চিমবঙ্গ |
বিভাগ | জলপাইগুড়ি |
জেলা | দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি |
সরকার | |
• ধরন | পুরনিগম |
• শাসক | শিলিগুড়ি পুরনিগম |
• বিধানসভার সদস্য | অশোক ভট্টাচার্য্য (ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্ক্সবাদী)) |
• মেয়র | অশোক ভট্টাচার্য্য (ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্ক্সবাদী)) |
• পুলিশ কমিশনার | ড. ভারত লাল মিনা(ইন্ডিয়ান পুলিশ সার্ভিস), শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট |
আয়তন | |
• মেট্রোপলিটান/শহর পুঞ্জ | ২৬০ কিমি২ (১০০ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১)[1] | |
• মহানগর[2] | ৭,০৫,৫৭৯ |
বিশেষণ | শিলিগুড়িবাসী |
ভাষা | |
• স্থানীয় | বাংলা |
• দপ্তরিক | বাংলা, ইংরেজি |
সময় অঞ্চল | আইএসটি (ইউটিসি+৫:৩০) |
পিন | ৭৩৪০০১ থেকে ৭৩৪০১৭ |
টেলিফোন | ০৩৫৩ |
যানবাহন নিবন্ধন | পঃবঃ ৭৩ এবং পঃবঃ ৭৪ |
লোক সভা constituency | দার্জিলিং |
ওয়েবসাইট | www |
1The coordinates given here are in metric system and based upon the Microsoft Encarta Reference Library Map Center 2005 2 The Vehicle Code given here based upon the Siliguri Sub Divisional Court documentations. |
শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং পর্যন্ত প্রাচীন বাষ্পীয় ইঞ্জিনে টানা একটি খেলনা ট্রেনগাড়ি বা টয় ট্রেন পাহাড় দিয়ে খাড়া পথ ধরে চলাচল করে এবং পর্যটকদের বহু বিখ্যাত দৃশ্য দেখার সুযোগ করে দেয়। কাছেই বাগডোগরা শহরে একটি অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর আছে।
১৯৩১ সালে শিলিগুড়ি প্রথম একটি শহরের মর্যাদা লাভ করে। ১৯৪৭ সালে পাক-ভারত বিভাগের সময় এবং ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় এখানে প্রচুর শরনার্থীর সমাগম হয়।
অর্থব্যবস্থা
শিলিগুড়িকে ভারতের উত্তর পূর্বে গেটওয়ে হিসেবে বর্ণনা করা হয়। শিলিগুড়ি ব্যবসার জন্য একটি লাভজনক কেন্দ্র হিসেবে ধীরে ধীরে বিকশিত হয়েছে। হংকং বাজার অল্প মূল্য চীনা সামগ্রী ও দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সৌখিন সামগ্রী ক্রয় করার জন্য একটি মুখ্য বাজার। এছাড়াও বিধান মার্কেট,হকাস কর্নার প্রভৃতি বাজারগুলো অর্থব্যবস্থার অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু। শিলিগুড়ি বাণিজ্যিক দিক থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হওয়াতে, অনেক জাতীয় কোম্পানি এবং সংগঠন তাদের দপ্তব় এখানে তৈরি করেছে।
পরিবহন
নগণের পরিবহন ব্যবস্থা রিক্সা, স্থানীয় বাস এবং টেম্পো অন্তর্ভুক্ত করে। কোনও মিটার যুক্ত যানবাহন নেই। ৬ সিটের ডিজেল চালিত টেম্পো প্রায় সময় ১০–১৫ কিমির দুই গন্তব্যের মধ্যে নিয়মিতভাবে চলাচল করে পৌরনিগম কর্তৃপক্ষের দ্বারা নিরদিশ্ট ভাড়াতে। পেট্রোল চালিত অটোরিক্সাও ভাড়া করা যেতে পারে। মোট, ১৬,০০০ রিক্সা পৌরনিগম সম্বন্ধীয় কর্পোরেশন দ্বারা লাইসেন্স দিয়েছিল এবং আরও অতিরিক্ত ৫৫,০০০ বেআইনি রিক্সা এই ক্রমবর্ধমানভাবে ঘিঞ্জি শহরটিতে নিয়মিতভাবে চলাচল করে। শিলিগুড়ি রাজ্যের এক প্রধান শহর। শিলিগুড়ি ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির যোগাযোগের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে কাজ করে। একটি মূল বাণিজ্য কেন্দ্র হিসাবে, এই শহর বিমান, সড়ক ও রেল পথের একটি উন্নত পরিবহন জালবিন্যাস দ্বারা সু-সজ্জিত। আপনি যদি পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং, কালিম্পং এবং সিকিমের গ্যাংটক এর মত শহরগুলি ভ্রমণ করতে আসেন, শিলিগুড়ি হল এই প্রতিটি জায়গার প্রবেশদ্বার।
বিমানপথ
বাগডোগরায় একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আছে যা শহরের কেন্দ্র থেকে প্রায় ১৭ কিমি দূরে অবস্থিত। বাগডোগরা বিমানবন্দর দিল্লি, কলকাতা গুয়াহাটি সহ অন্য শহরের সাথে নিয়মিত বিমান দ্বারা সংযুক্ত। বেশ কিছু সরকারি ও বেসরকারি বিমান পরিবহন সংস্থা এই বিমানবন্দরে পরিষেবা প্রদান করে। এই অঞ্চলে একটি বিমানঘাঁটি রয়েছে, যেখান থেকে গ্যাংটক, সিকিমের নিয়মিত হেলিকপ্টার পরিষেবা পাওয়া যায়।
রেলপথ
শিলিগুড়িতে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ রেলওয়ে স্টেশন আছে; শিলিগুড়ি টাউন, শিলিগুড়ি জংশন এবং নিউ জলপাইগুড়ি জংশন। নিউ জলপাইগুড়ি রেলওয়ে স্টেশন বর্তমানে এই অঞ্চলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন। এটি দেশের প্রতিটি প্রধান রেলপথের সাথে সংযুক্ত। এই শহরের সবচাইতে আকর্ষণীয় রেলপথ হল ট্রয় ট্রেন যা শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং যাওয়ার একমাত্র রেলওয়ে।Mi
সড়কপথ
শিলিগুড়ি একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য কেন্দ্র তথা ভারতের উত্তর-পূর্বের প্রবেশদ্বার। একটি বিস্তৃত সড়ক জালবিন্যাস শিলিগুড়িকে কলকাতার সাথে সংযুক্ত করে,যা দেশের বাকি অংশের সাথেও সংযোগস্থাপনের একটি প্রধান বিন্দু। শিলিগুড়ি, সড়ক দ্বারা ভারতীয় রাজ্য গ্যাংটক ও নেপাল ও ভুটান দেশের সাথে সংযুক্ত। জাতীয় মহাসড়ক ১০, ১১০, ২৭ এবং ১২ নং ও ১২এ নং রাজ্যসড়ক শিলিগুড়িকে প্রতিবেশী শহর এবং রাজ্যের সঙ্গে সংযুক্ত করে। তেনজিং নোরগে সেন্ট্রাল বাস টার্মিনাস বেসরকারি এবং সরকারি(উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন দপ্তর NBSTC) মালিকানাধীন বাসের একটি প্রধান কেন্দ্রস্থল।রয়েছে পি.সি. মিত্তাল বাস টার্মিনাল। এছাড়াও ভুটানের সরকার শিলিগুড়ি থেকে তার সীমান্ত শহর ফুন্টসোলিং পর্যন্ত বাস পরিষেবা প্রদান করে। ভাড়ার জিপ গাড়িগুলিও এই শহরকে তার প্রতিবেশী শৈল শহর দার্জিলিং, কালিম্পং, গ্যাংটক, কার্শিয়াং ইত্যাদির সাথে সংযুক্ত করে। সিকিম সরকারের সিকিম রাষ্ট্রায়ত্ত পরিবহন, বাস স্টেশন থেকে সিকিমের বিভিন্ন গন্তব্যস্থলে বাস পরিচালনা করে।
জনসংখ্যার উপাত্ত
ভারতের ২০০১ সালের আদমশুমারি অনুসারে শিলিগুড়ি শহরের জনসংখ্যা ছিল ৪,৭০,২৭৫ জন।[3] এর মধ্যে পুরুষ ৫৩% এবং নারী ৪৭%।
২০১১ সালের আদম শুমারি অনুসারে শিলিগুড়ি শহর সমাগমের জনসংখ্যা হল ৭০১, ৪৮৯ জন।
এখানে সাক্ষরতার হার ৭০%। পুরুষদের মধ্যে সাক্ষরতার হার ৭৫% এবং নারীদের মধ্যে এই হার ৬৫%। সারা ভারতের সাক্ষরতার হার ৫৯.৫%, তার চাইতে শিলিগুড়ি এর সাক্ষরতার হার বেশি।
এই শহরের জনসংখ্যার ১০% হল ৬ বছর বা তার কম বয়সী।
স্টেডিয়াম
তথ্যসূত্র
- http://www.census2011.co.in/census/city/192-siliguri.html
- http://www.census2011.co.in/census/metropolitan/186-siliguri.html
- "ভারতের ২০০১ সালের আদমশুমারি" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ১৫, ২০০৬।