রূপসী বাংলা

রূপসী বাংলা বাংলা ভাষার অন্যতম প্রধান কবি জীবনানন্দ দাশের সর্বাধিক জনপ্রিয় কাব্যগ্রন্থ। কবি জীবদ্দশায় এ গ্রন্থটি বা এর অন্তর্ভুক্ত কোন কবিতা প্রকাশ করেন নি। ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দে দুঘর্টনায় অকালমৃত্যুর পর এর পাণ্ডুলিপির খাতাটি আবিষ্কৃত হয়। কবি এ গ্রন্থটির প্রচ্ছদনাম নির্বাচন করেছিলেন বাংলার ত্রস্ত নীলিমা। জীবনানন্দ কেন স্বীয় জীবদ্দশায় এ কাব্যগন্থটি প্রকাশ করেননি তা অদ্যাবধি এক পরম বিস্ময় হয়ে আছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে এর কবিতাগুলি বাঙালিদের বিশেষভাবে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছিল।

রূপসী বাংলা
রূপসী বাংলা প্রথম প্রকাশনে সত্যজিৎ রায় কর্তৃক অঙ্কিত প্রচ্ছদ
লেখকজীবনানন্দ দাশ
অনুবাদকজো উইন্টার
প্রচ্ছদ শিল্পীসত্যজিৎ রায়
ভাষাবাংলা
ধরনকাব্য
প্রকাশকসিগনেট প্রেস
প্রকাশনার তারিখ
১৯৫৭
বাংলায় প্রকাশিত
১৯৮৭
আইএসবিএন৯৭৮-০-৮৫৬৪৬-৩৯০-৭
ওসিএলসি76907525

প্রকাশনা তথ্যাদি

রূপসী বাংলা কাব্যসংকলনটির প্রথম প্রকাশ ১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দে। প্রকাশক সিগনেট প্রেস, কলকাতা। প্রতিক্ষণ পাবলিকেশনস ১৯৮৪ খ্রিষ্টাব্দে গ্রন্থটির পাণ্ডুলিপি সংস্করণ প্রকাশ করে। কৌতূহলোদ্দীপক বিষয় হলো এই যে জীবনানন্দ তার জীবদ্দশায় এ গ্রন্থটি বা এর অন্তর্ভুক্ত কোন কবিতা প্রকাশ করেন নি। মৃত্যুর পর এর পূর্ণাঙ্গ পাণ্ডুলিপির খাতা আবিষ্কৃত হয়। পাণ্ডলিপিটি সম্পূর্ণ অবস্থায় পাওয়া গেছে। তবে প্রথম মুদ্রণকারে খাতা থেকে প্রেসকপি তৈরী করে ছিলেন কবি ভূমেন্দ্র গুহ, তাকে সাহায্য করেছিরেন জীবনানন্দ’র ছোট বোন সুচরিতা দাশ। [1]

কলকাতায় অবস্থিত ভারতের জাতীয় গ্রন্থাগারের রেয়ার বুক কালেকশনে জীবনানন্দর কবিতার ৪৮টি পাণ্ডুলিপির খাতা সংরক্ষিত আছে। এর মধ্যে ছয় নম্বর খাতাটিতে রূপসী বাংলা’র কবিতাগুলো রয়েছে। এ খাতায় পৃষ্ঠা সংখ্যা ৭৫। কবির নিজ হাতে লেখা বর্ণনা অনুযায়ী কবিতাগুলো ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে লেখা (আনুমানিক ১৩৪০-৪১ বঙ্গাব্দ)। পাণ্ডুলিপির ১ম ও ২য় কবিতার পাতা দুটি কেটে নেয়া হয়েছে। ৩য় কবিতাটি হলো ‘‘যত দিন বেঁচে আছি . . ‘’।

জীবনানন্দ দাশ এ কাব্যগ্রন্থের প্রচ্ছদনাম নির্বাচন করেছিলেন ‌‌বাংলার ত্রস্ত নীলিমা‌‌ ; প্রকাশকালে রূপসী বাংলা স্থির করা হয়। এছাড়া ১৯৮৪ খ্রিষ্টাব্দে গ্রন্থটির একটি পাণ্ডুলিপি সংস্করণও প্রকাশ করা হয়। পাণ্ডুলিপির সঙ্গে প্রকাশিত গ্রন্থটির কিছু পার্থক্য ধরা পড়ে। পাণ্ডুলিপিতে কবিতার সংখ্যা ৭৩। ১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দে গ্রন্থাকারে মুদ্রণকালে গৃহীত হয় ৬২টি। প্রতীয়মান হয় কেবল সনেটগুলো নির্বাচন করা হয়েছিল। [2]

কবিতা পরিচয়

কলকাতা জাতীয় গ্রন্থাগারে সংরক্ষিত ৬ সংখ্যক পাণ্ডুলিপিতে রূপসী বাংলার সনেটগুলো লিখিত ছিল

রূপসী বাংলার কবিতাগুলোর অধিকাংশ কাঠামোগতভাবে সনেট। কবিতাগুলো লিখিত হয় মার্চ ১৯৩৪ চিহ্নিত একটি লেখার খাতায়। ঐ খাতায় ৭৩টি কবিতা ছিল যার মধ্য থেকে ৬২টি নিয়ে কবি-ভ্রাতা একটি কাব্যসংকলন প্রকাশের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।[3] লেখার খাতা থেকে মুদ্রণযোগ্য পাণ্ডুলিপি তৈরি করেন কবি ভূমেন্দ্র গুহ; সহায়তা করেন কবির বোন সুচরিতা দাশগুপ্ত। লেখায় খাতায় কবিতাগুলোর শিরোনাম দেওয়া ছিল না। গ্রন্থে সনেটের প্রথম পঙক্তি দিয়ে শিরোনাম করা হয়। এই পাণ্ডুলিপি কলকাতার জাতীয় গ্রন্থাগারে সুরক্ষিত আছে। ‌‌রূপসী বাংলার‌ কবিতাগুলো সনেট আকারে লিখিত হলেও জীবনানন্দ তার প্রিয় অক্ষরবৃত্ত ছন্দই ব্যবহার করেছেন। রূপসী বাংলার কবিতা সমূহ বিভিন্ন অনুবাদক বিচ্ছিন্নভাবে অনুবাদ করেছেন। পূর্ণ গ্রন্থটির একাধিক ইংরেজি অনুবাদ আছে। সর্বশেষ অনুবাদ করেছেন বৃটিশ কবি জো উইন্টার

তথ্যসূত্র

  1. সিগনেট প্রেসের রূপসী বাংলা বনাম জীবনানন্দ দাশের পান্ড‍ুলিপি
  2. জীবনানন্দ দাশের বাংলার ত্রস্ত নিলিমা
  3. জীবনানন্দ দাশের কবিতার সংখ্যা কত?
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.