ব্রহ্মেশ্বর মন্দির

ব্রহ্মেশ্বর মন্দির ভারতের ওড়িশা রাজ্যের ভুবনেশ্বরে অবস্থিত একটি শিবমন্দির।[1] মন্দিরটি ৯ম শতকের শেষভাগে নির্মিত। বিভিন্ন সংরক্ষিত নথি থেকে ধারণা করা হয় মন্দিরটি ১০৫৮ খ্রিষ্টাব্দে নির্মিত হয়। এই সময়কালের হিসাবে সোমবংশী রাজা উদ্যতকেশরির মাতা কলাবতী দেবী মন্দিরটি নির্মান করেন।[2]

ব্রহ্মেশ্বর মন্দির
ব্রহ্মেশ্বর মন্দির
ধর্ম
অন্তর্ভুক্তিহিন্দুধর্ম
শ্বরব্রহ্মেশ্বর
অবস্থান
অবস্থানভুবনেশ্বর
রাজ্যওড়িশা
দেশভারত
স্থাপত্য
সম্পূর্ণ হয়১০৫৮ খ্রিস্টাব্দ

ইতিহাস

ভুবনেশ্বর থেকে কোলকাতায় আনা একটা লিপি থেকে ঐতিহাসিকগণ মন্দিরটির নির্মাণকাল ১১ শতকের বলে মনে করেন। লিপি অনুযায়ী সোমবংশীয় রাজা উদ্যত কেশরির মা কলাবতী দেবী মন্দিরটি নির্মাণ করেন। একাম্রা’র (আধুনিককালের ভুবনেশ্বর) সিদ্ধতীর্থ নামক স্থানে চারটি নাট্যশালাসহ মন্দিরটি নির্মাণ করা হয়। যেহেতু লিপিটি তার আদি অবস্থানে ছিলো না তাই ঐতিহাসিকদের কেউ কেউ ধারণা করেন যে এটা অন্য মন্দির সম্পর্কিত তথ্য হতে পারে। কিন্তু অবস্থান ও অন্যান্য বৈশিষ্ট্যের নিরিখে শিলালিপিটি এই মন্দিরের। পানিগ্রাহীর মতে নাট্যশালা গুলো নাচঘর নয়, এগুলো অঙ্গশালা বা সহযোগী মন্দির।

স্থাপত্য

মন্দিরটিকে পঞ্চতনয়া মন্দিরশ্রেণীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয় কারণ প্রধান মন্দিরের সংগে চার কোণায় চারটি মন্দির আছে। মন্দিরটি সুপরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলা হয়েছে। মন্দিরের বিমানটি ১৮.৯৬ মিটার উঁচু। মন্দিরটিতে ঐতিহ্যবাহী কাঠখোদাই পদ্ধতিতে পাথুরে ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। মন্দিরটি সম্ভবত একটি পিরামিড আকৃতিতে তৈরী করে পরে ভেতরে বাহিরে খোদাই করা হয়।

ওড়িশার মন্দিরের সাধারণ ধরন হচ্ছে দুটো সংযুক্ত ভবন থাকবে। ছোটটি জগমোহন বা জমায়েত মিলনায়তন নামে পরিচিত। পরবর্তী মন্দিরদুটি পরবর্তী সংযোজন যার একটি নাচের জন্য এবং অন্যটি ফুলের তোড়া রাখার কাজে ব্যবহৃত হতো।

ব্রহ্মেশ্বর এর সংগে মুক্তেশ্বর মন্দিরের সাদৃশ্য আছে। যেমন জগমোহনের খোদাইকর্ম এবং মূর্তির ভাস্কর্য যেমন সিংহের মাথার মোটিফ যা সর্বপ্রথম মুক্তেশ্বর মন্দিরে দেখা যায়। একাধিকবার সংযোজন ঘটেছে যেমন বাইরের দেয়ালে বাদক ও নাচিয়েদের মূর্তি। মন্দির স্থাপত্যের ইতিহাসে এই মন্দিরেই সর্বপ্রথম লোহার বিম ব্যবহৃত হয়। চুনাপাথরের দেয়ালে প্রতীকী মূর্তি এবং দেবতাদের মূর্তি দিয়ে সাজানো যা বিশ্বাসীদের ধ্যানে সহায়তা করে। দরজার চৌকাঠের উপর খোদাই করা নকশায় ফুল এবং উড়ন্ত ব্যক্তির নকশা আছে। সেখানে তান্ত্রিকমতের মূর্তিও আছে। হারিয়ে যাওয়া একটা শিলালিপিতে উৎকীর্ণ ছিলো যে রাণী কলাবতী প্রচুর সুন্দরী মেয়ে মন্দিরে প্রদান করেন যা দেবদাসী ঐতিহ্যের প্রমাণ দেয়।

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. Lesser Known Monuments of Bhubaneswar by Dr. Sadasiba Pradhan (আইএসবিএন ৮১-৭৩৭৫-১৬৪-১)
  2. "Brahmesvara Temple Complex" (PDF)IGNCA। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৮-২৪

বহিঃসংযোগ

  • Pradhan, Sadasiba (২০০৯)। Lesser Known Monuments Of Bhubaneswar। Bhubaneswar: Lark Books। আইএসবিএন 81-7375-164-1।
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.