বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ
বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ, সংক্ষেপে বেফাক, হলো বাংলাদেশের কওমি মাদরাসাসমূহের সবচেয়ে বৃহত্তম বোর্ড।[2] এটি বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড নামেও পরিচিত।[3] এটি ছাড়াও বাংলাদেশের কওমি মাদরাসা সমূহের ছোট-বড় আরো প্রায় আঠারোটি শিক্ষা বোর্ড আছে। বেফাকুল মাদারিস তাদের নিবন্ধিত শিক্ষাপ্রতিষ্টানের পাঠ্যসূচি প্রণয়ন, উন্নয়ন, বিভিন্ন স্তরভেদে পরীক্ষা গ্রহণ এবং সনদ প্রদানের কাজ করে। ২০১২ খ্রিষ্টাব্দের রিপোর্ট অনুযায়ী তাদের অধীনে বিশ হাজারেরও বেশি কওমি মাদরাসা রয়েছে। ১৯৩৮ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত এর অফিস ছিল জামিয়া আরাবিয়া ইমদাদুল উলূম ফরিদাবাদ, ঢাকা। ১৯৯৪ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত ছিল নয়া পল্টন, ঢাকা-১০০০; ২০০৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে কাজলা (ভাঙ্গা প্রেস), যাত্রাবাড়ি, ঢাকা-১২০৪ এলাকায় জায়গা ক্রয়করে সেখানে বেফাকের কার্যক্রম শুরু করা হয়।
বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ | |
![]() | |
গঠিত | এপ্রিল ১৯৭৮ |
---|---|
ধরণ | বেসরকারী শিক্ষা বোর্ড |
আইনি অবস্থা | চালু |
উদ্দেশ্য | বাংলাদেশের কওমি মাদরাসা সমূহের পাঠ্যসূচি প্রণয়ন, উন্নয়ন এবং সনদ প্রদান ইত্যাদি। |
অবস্থান |
|
যে অঞ্চলে কাজ করে | ![]() |
সদস্যপদ | ২০,০০০ + কওমি মাদরাসা[1] |
দাপ্তরিক ভাষা | বাংলা, আরবি |
সভাপতি | শাহ আহমদ শফি |
মহাসচিব | আব্দুল কুদ্দুস |
মূল ব্যক্তিত্ব | শাহ আহমদ শফি |
প্রধান অঙ্গ | মজলিসে শূরা, মজলিসে আমেলা |
ওয়েবসাইট | www |
রূপরেখা
৮ম শ্রেণি পর্যন্ত দ্বীন-বিজ্ঞানসহ ও বাকি ৬ বছর অর্থাৎ মাস্টার্স ডিগ্রি পর্যন্ত শুধু ধর্মীয় শিক্ষা।
ধর্মীয় শিক্ষার বিষয় সমূহ:
- আরবি ভাষা, নহব, সরফ, বালাগাত ও আরুয।
- ফিকহ ও উছুলে ফিকহ।
- তাফসির ও উছুলে তাফসির।
- হাদীস ও উছুলে হাদীস।
- তাজবীদ।
- ফারাইয
- ইসলামের রাষ্ট্র বিজ্ঞান ও সিরাত।
- ইসলামের অর্থনীতি।
- ইসলামের সমাজ বিজ্ঞান ও সিরাত।
- ইসলামের দর্শন।
- পরিবার বিজ্ঞান।
বৈষয়িক জ্ঞান-বিজ্ঞান সমূহ:
- বাংলা ভাষা এবং বাংলা ব্যাকরণ।
- ইংরেজি এবং ইংরেজি ব্যাকরণ।
- উর্দূ ও উর্দূ কাওয়ায়েদ।
- ফারসি ও ফারসি কাওয়ায়েদ।
- গণিত ও জ্যামিতি
- ইতিহাস
- ভূগোল
- বিজ্ঞান
- যুক্তিবিদ্যা
- মুনাযারা
- পাশ্চাত্য দর্শন
ধর্মীয় জ্ঞান - বিজ্ঞানের সাধারণ ধারা হচ্ছে দাওরায়ে হাদীস তথা মাস্টার্স ডিগ্রি পর্যন্ত। তদুপরি রয়েছে ডিপ্লোমা কোর্স। যেমন: হাদীস, তাফসীর, ফিকহ, আরবি ভাষা, ইসলামি অর্থনীতি, ইসলামী রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও মুকারানাতুল আদইয়ান প্রভৃতি।
বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা
বেফাক কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত শিক্ষা ব্যবস্থা তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত। প্রথম পর্যায়: এ পর্যায়ে রয়েছে দু'টি স্তর।
- প্রথম স্তর: প্রাথমিক শিক্ষা। কুরআন তিলাওয়াত ও ইসলামিয়াতসহ গণিত, বাংলা, ইংরেজী এ সমাজ বিজ্ঞান প্রভৃতি ৫ম শ্রেনীর মান পর্যন্ত। একে বলা হয় আল মারহালাতুল ইবতিদাইয়্যাহ বা কওমী প্রাইমারি/ প্রাইমারি মাদরাসা।
- দ্বিতীয় স্তর: এতে রয়েছে সাধারন শিক্ষা সহ ইসলামিক শিক্ষা। অর্থাৎ আরবি ভাষা, আরবি ব্যকরণ ও ফিকাহশাস্ত্র, গণিত, বাংলা, ইংরেজি এ সমাজ বিজ্ঞান। একে বলা হয় মারহালাতুল মুতাওয়াসসিতাহ। এর মধ্যে রয়েছেঃ- ৩ বছর। অর্থাৎ: ৬ষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি।
দ্বিতীয় পর্যায়: এপর্যায়ে রয়েছে ৪টি স্তর।
- ১ম স্তর:- আল - মারহালাতুস সানাবিয়াতুল(মাধ্যমিক স্তর): এতে রয়েছে দু'বছর (৯ম-১০ম)
- ২য় স্তর: আল - মারহালাতুস সানাবিয়াহ্ আল উলইয়া (উচ্চ মাধ্যমিক স্তর): এতে রয়েছে দু'বছর (একাদশ শ্রেনী থেকে দ্বাদশ শ্রেণি)।
- ৩য় স্তর: মারহালাতুল ফজিলাত (স্নাতক ডিগ্রি)। এতে রয়েছে দু'বছর (১৩শ শ্রেণি থেকে ১৪শ শ্রেনী)।
- ৪র্থ স্তর:- মারহালাতুল তাকমিল (মাস্টার্স ডিগ্রি)। এতে রয়েছে দু'বছর। এ স্তরকে দাওরায়ে হাদীস বলা হয়।
তৃতীয় পর্যায়: এ পর্যায়ে রয়েছে বিষয়ভিত্তিক ডিপ্লোমা ও গবেষণামূলক শিক্ষা কোর্স। যথা: হাদীস, তাফসির, ফিকহ, ফতওয়া, তাজবিদ, আরবিসাহিত্য, বাংলা সাহিত্য, ইংরেজি, উর্দূ ও ফারসি ভাষা, ইসলামের ইতিহাস, ও সীরাত, ইলমুল কালাম, ইসলামি দর্শন, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, পৌর বিজ্ঞান ও সমাজ বিজ্ঞান ইত্যাদি বিষয়ের গবেষণামূলক শিক্ষা।
তথ্যসূত্র
- "Information" (PDF)। befaq-bd.com। সংগ্রহের তারিখ ৯ মে ২০১৪।
- "What Do Bangladesh's Deobandi Qawmi Madrasas Want?"। wikileaks.org। সংগ্রহের তারিখ ৮ মে ২০১৪।
- "Hefazat-e-Islam: A united front for a divided lot"। সংগ্রহের তারিখ ৮ মে ২০১৪।