ফারাহ পাহলভি

ফারাহ পাহলভি, বিবাহ-পূর্ব দিবা (ফার্সি: فرح پهلوی; জন্ম ১৪ অক্টোবর ১৯৩৮) ছিলেন ইরানি স্থপতি, শিল্পী এবং মুসলিম সংস্কারক, যিনি ইরানের পাহলভি রাজবংশের নির্বাসিত শাহবানু (সম্রাজ্ঞী) এবং ইরানের শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভির তৃতীয় স্ত্রী।

ফারাহ পাহলভি
সম্রাগ্গী ফারাহ
১৯৭২ সালে ফারাহ
ইরানের শাহবানু
কার্যকালে২১ ডিসেম্বর ১৯৫৯[1] – ১১ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৯
রাজ্যাভিষেক২৬ অক্টোবর ১৯৬৭
পূর্বসূরিসোরায়া এসফানদিয়ারি-বখতিয়ারি
জন্মফারাহ দিবা
(1938-10-14) ১৪ অক্টোবর ১৯৩৮
তেহরান, ইরান
দাম্পত্য সঙ্গীমোহাম্মদ রেজা পাহলভি (বি. ১৯৫৯; মৃ. ১৯৮০)
বংশধর
পূর্ণ নাম
ফারাহ দিবা
ফার্সি: فرح
রাজ্যের নাম
ফারাহ পাহলভি
রাজবংশপাহলভি (বিবাহসূত্রে)
পিতাসোহরাব দিবা
মাতাফরিদেহ ঘোটবি
পেশা
  • স্থপতি
  • শিল্পী
  • মুসলিম সংস্কারক
স্বাক্ষর

প্রাথমিক জীবন ও শৈশব

১৯৫৬ সালে প্যারিসে ইরানি ছেলে স্কাউটের সাথে ফারাহ দিবা

ফারাহ দিবা ১৪ অক্টোবর ১৯৩৮ সালে ইরানের তেহরানে উচ্চ শ্রেণীর পরিবারে জন্ম নেন।[2][3][4] তিনি ক্যাপ্টেন সোহরাব দিবা (১৮৯৯-১৯৪৮) এবং তার স্ত্রী ফরিদেহ ঘোটিবির (১৯২০-২০০০) একমাত্র সন্তান। ফারাহের পিতার পরিবার ছিল আজারবাইজান বংশোদ্ভূত ইরানি[3][4] সাবেক শাহবানু ফারাহের স্মৃতিচারনে জানা যায়, যে তার পিতার পরিবার আজারবাইজান বংশোদ্ভূত ইরানের অধিবাসী ছিল এবং তার মায়ের পরিবারের ছিল কাস্পিয়ান সাগরের ইরানি উপকূলে লাহিজান থেকে আগত গিলক বংশের।[5]

তার বাবার মাধ্যমে ফারাহ অপেক্ষাকৃত সমৃদ্ধ পরিবার থেকে এসেছিলেন। ১৯ শতকের শেষভাগে, তার পিতামহ রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে রোমানভ আদালতে ইরানি রাষ্ট্রদূত হিসেবে কর্মরত একজন সফল কূটনীতিক ছিলেন। তার পিতা ছিলেন সার্বভৌম ইরানি সশস্ত্র বাহিনীর একজন কর্মকর্তা, যিনি সেন্ট সাইরে ফরাসি সামরিক একাডেমি থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছিলেন।

ফারাহ তার স্মৃতিতে লিখেছেন যে, তার বাবার সাথে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল এবং ১৯৪৮ সালে তার অপ্রত্যাশিত মৃত্যু তাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিল।[5] সে সময়ে তার পরিবার কঠিন আর্থিক অবস্থায় ছিল। এই পরিস্থিতিতে, উত্তর তেহরানের বৃহত্তর পারিবারিক ভিলা থেকে তার মা ফরিদহ ঘটবিয়ের ভাইদের অ্যাপার্টমেন্টে যেতে বাধ্য করা হয়।

শিক্ষা ও বাগদান

ফারাহের বাগদানের আনুষ্ঠানিক ছবি
ইরানের সম্রাজ্ঞী ফারাহ
-এর রীতি
উদ্ধৃতিকরণের রীতিতার রাজকীয় মহিমা
কথ্যরীতিআপনার রাজকীয় মহিমা

তরুণ ফারাহ তেহরানের ইতালীয় বিদ্যালয়ে শিক্ষাগ্রহণ করেন, এরপর ষোল বছর বয়স পর্যন্ত তিনি ফরাসি জেইন দি'আর্ক বিদ্যালয়ে চলে যান এবং পরবর্তীতে লিকি রাজি বিদ্যালয়ে শিক্ষা গ্রহণ করেন।[6] শৈশবে ফারাহ একজন ক্রীড়াবিদ হিসেবে তার বিদ্যালয়ের বাস্কেটবল দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন।

তেহরানের লিকি রাজির পাঠ শেষে, স্থাপত্যের প্রতি আগ্রহের কারণে ফারাহ প্যারিসের ইকোলে স্পেসিয়াল ডি আর্কিটেকচারে যোগ দেন,[7] যেখানে তিনি ফরাসি স্বাস্থ্যবিজ্ঞানী আলবার্ট বেসনের শিক্ষার্থী ছিলেন।

সে সময়ে বিদেশে অধ্যয়নরত অনেক ইরানি শিক্ষার্থী রাষ্ট্র আনুদানের উপর নির্ভরশীল ছিল। অতএব, যখন শাহ রাষ্ট্রের প্রধান হিসেবে বিদেশে আনুষ্ঠানিক সফরে যেতেন, তিনি প্রায়ই স্থানীয় নির্বাচিত ইরানি শিক্ষার্থীদের সাথে সাক্ষাত করতেন। ১৯৫২ সালে, প্যারিসের ইরানি দূতাবাসে এমন এক বৈঠকের সময় সেই প্রথম ফারাহ দিবাকে মোহাম্মদ রেজা পাহলভির কাছে উপস্থাপন করা হয়েছিল।

১৯৫৯ সালের গ্রীষ্মে ফারাহ তেহরানে ফিরে আসার পর, শাহের কন্যা রাজকন্যা শাহনাজ পাহলভির পূর্বপরিকল্পিত আয়োজনে মোহাম্মদ রেজা পাহলভি এবং ফারাহ দিবা এক আনুষ্ঠানিক নৃত্যে আংশ নেন।

১৯৫৯ সালের ২৩ নভেম্বর এই দম্পতি তাদের বাগদান ঘোষণা করেন।

বিবাহ ও পরিবার

১৯৫৯ সালের ২১ ডিসেম্বর রেজা ও ফারাহ দম্পতি তাদের বিবাহ আনুষ্ঠানে

১৯৫৯ সালের ২০ ডিসেম্বর, ফারাহ দিবা ২১ বছর বয়সে শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভিকে বিয়ে করেন। ইরানের তরুণী রানী (সে সময় তিনি আড়ম্বরপূর্ণ ছিলেন) ছিলেন অনেকের কৌতুহলের বিষয় এবং তার বিয়ের ঘটনা বিশ্বব্যাপী মনোযোগ আকর্ষণ করেছিলেন। তার গাউন ইভস সেন্ট লরেন্ট দ্বারা ডিজাইন করা হয়েছিল, যিনি তারপর দিওর-এর ডিজাইনার হয়েছিলেন এবং ফারাহ নতুন অনুমোদিত নূর-উল-আইন হীরক (আলোর চোখ) টায়রা পরেছিলেন।[8]

এই দম্পতির চার সন্তান:

  • যুবরাজ রেজা পাহলভি (জন্ম ৩১ অক্টোবর ১৯৬০)
  • রাজকন্যা ফারাহনায পাহলভি (জন্ম ১২ মার্চ ১৯৬৩)
  • যুবরাজ আলি-রেজা পাহলভি (২৮ এপ্রিল ১৯৬৬ – ৪ জানুয়ারি ২০১১)
  • রাজকন্যা লেইলা পাহলভি (২৭ মার্চ ১৯৭০ – ১০ জুন ২০০১)

তথ্যসূত্র

  1. "Shahbanou (Documentary)"। Farah Pahlavi's Official YouTube Page। ২৫ ডিসেম্বর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০১৭
  2. Afkhami, Gholam Reza। The life and times of the Shah (1 সংস্করণ)। University of California Press। পৃষ্ঠা 44। আইএসবিএন 978-0-520-25328-5।
  3. Shakibi, Zhand (২০০৭)। Revolutions and the Collapse of Monarchy: Human Agency and the Making of Revolution in France, Russia, and Iran। I.B. Tauris। পৃষ্ঠা 90। আইএসবিএন 1-84511-292-X।
  4. Taheri, Amir. The Unknown Life of the Shah. Hutchinson, 1991. আইএসবিএন ০-০৯-১৭৪৮৬০-৭; p. 160
  5. Pahlavi, Farah. 'An Enduring Love: My life with The Shah. A Memoir' 2004
  6. "Empress Farah Pahlavi Official Site - سایت رسمی‌ شهبانو فرح پهلوی"farahpahlavi.org। ১৫ জুলাই ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ নভেম্বর ২০১৮
  7. Meng, J. I. (২০১৩-০৭-২৯)। Translation, History and Arts: New Horizons in Asian Interdisciplinary Humanities Research (ইংরেজি ভাষায়)। Cambridge Scholars Publishing। আইএসবিএন 9781443851176।
  8. Snodgrass, Mary Ellen (২০১৫-০৩-১৭)। World Clothing and Fashion: An Encyclopedia of History, Culture, and Social Influence (ইংরেজি ভাষায়)। Routledge। আইএসবিএন 9781317451679।

বহিঃসংযোগ

Iranian royalty
শূন্য
Title last held by
সোরায়া এসফানদিয়ারি
ইরানের রানী সঙ্গী
১৯৫৯–১৯৬১
সম্রাগ্গী হয়ে ওঠেন
পূর্বসূরী
স্বভূমিকায় রাণী হিসেবে
ইরানের সম্রাজ্ঞী সঙ্গী
১৯৬১–১৯৭৯
রাজতন্ত্র বিলুপ্ত
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.