পাইলগাঁও জমিদারবাড়ী

পাইলগাঁও জমিদারবাড়ী বাংলাদেশের সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার প্রাচীন পুরাকীর্তির অন্যতম নিদর্শন। প্রায় সাড়ে ৫ একর ভূমির ওপর প্রতিষ্ঠিত তিন শত বছরেরও বেশি পুরানো এ জমিদার বাড়িটি এ অঞ্চলের ইতিহাস-ঐতিহ্যের নিদর্শন। এ জমিদার পরিবারের শেষ জমিদার ব্রজেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরী ছিলেন প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ ও রাজনীতিবিদ। তিনি ছিলেন সিলেট বিভাগের কংগ্রেস সভাপতি এবং আসাম আইন পরিষদের সদস্য[1][2]

পাইলগাঁও'র জমিদারবাড়ি
জমিদার বাড়ির প্রবেশ দোয়ার
সাধারণ তথ্য
ঠিকানাপাইলগাঁও ইউনিয়ন জগন্নাথপুর উপজেলা
শহরসুনামগঞ্জ জেলা সিলেট বিভাগ
দেশবাংলাদেশ
খোলা হয়েছে১৬ শতকে
ওয়েবসাইট
২৪.৯০০০° উত্তর ৯১.০১৬৭° পূর্ব / 24.9000; 91.0167

অবস্থান

সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলায় জগন্নাথপুর উপজেলার অধীন ৯ নম্বার পাইলগাও ইউনিয়নের পাইল গাও গ্রামে ঐতিহ্যবাহী এ জমিদারীর অবস্থান। [3]। জমিদার বাড়ির দক্ষিণ দিকে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী কুশিয়ারা নদী বহমান।

জমিদার বংশের কথা

জমিদার পরিবারের দেব ভোগ মন্দির

প্রখ্যাত ঐতিহাসিক অচ্যূতচরণ চৌধুরী পাইল গাও'র জমিদার বংশের 'রসময় বা রাসমোহন চৌধুরী' হতে প্রাপ্ত সূত্রে লিখেছেন যে; পাইল গাওয়ে বহু পূর্ব কালে পাল বংশীয় লোক বসবাস করত। এ গোষ্টিয় পদ্মলোচন নামক ব্যক্তির এক কন্যার নাম ছিল রোহিণী। কোন এক কারণে রাঢ় দেশের মঙ্গলকোট হতে আগত গৌতম গোত্রীয় কানাইলাল ধর রোহিণীকে বিবাহ করত গৃহ-জামাতা হয়ে এখানেই বসবাস শুরু করেন। কানাইলাল ধরের আট পুরুষ পরে বালক দাস নামের এক ব্যক্তির উদ্ভব হয় । এ বালক দাস থেকে এ বংশ বিস্তৃত হয় । বালক দাসের কয়েক পুরুষ পর উমানন্দ ধর ওরফে বিনোদ রায় দিল্লীর মোহাম্মদ শাহ বাদশা কর্তৃক চৌধুরী সনদ প্রাপ্ত হন। বিনোদ রায়ের মাধব রাম ও শ্রীরাম নামে দুই পুত্রের জন্ম হয়। তার মধ্যে মাধব রাম জনহিতকর কর্ম পালনে নিজ গ্রাম পাইল গাও'এ এক বিরাট দীঘি কনন করে সুনাম অর্জন করেন। তার দেয়া উক্ত দীঘি আজও ঐ অঞ্চলে মাধব রামের তালাব হিসেবে পরিচিত হচ্ছে। মাধব রামের দুই পুত্র মদনরাম ও মোহনরাম । উক্ত মোহনরামের ঘরে দুর্লভরাম, রামজীবন, হুলাসরাম ও যোগজীবন নামে চার পুত্রে জন্ম হয় । এই চার ভাই দশসনা বন্দোবস্তের সময় কিসমত আতোয়াজানের ১ থেকে ৪ নং তালুকের যতাক্রমে বন্দোবস্ত গ্রহণ করে তালুকদার নাম ধারণ করে । এদের মধ্যে হুলাসরাম বানিয়াচং রাজ্যের দেওয়ানি কার্যালয়ে উঁচ্চ পদের কর্মচারী নিযুক্ত হন। হুলাসরাম চৌধুরী বানিয়াচং রাজ্যের রাজা দেওয়ান উমেদ রজার অনুগ্রহে আতুয়াজান পরগণায় কতেক ভূমী দান প্রাপ্ত হন। হুলাসরামের প্রাপ্ত ভূমীর কিছু কিছু চাষগুয্য ও কিছু ভুমী চাষঅযুগ্য ছিল। পরবর্তিতে হুলাসরাম চাষঅযুগ্য ভূমীগুলোকে চাষযুগ্য করে তুললে এগুলোই এক বিরাট জমিদারীতে পরিণত হয়ে উঠে[3]। হুলাস রামের ভাতুষ্পুত্র বিজয়নারায়ণের একমাত্র পুত্র ব্রজনাথ চৌধুরী জমিদারি বর্ধিত করে এক প্রভাবশালী জমিদারে পরিণত হন। ব্রজনাথ চৌধুরীর দুই পুত্র রসময় ও সুখময় চৌধুরী। রসময় চৌধুরীর পুত্র ব্রজেন্দ্র নারায়নই ছিলেন এ বংশের শেষ জমিদার[4]

জমিদারদের পারিবারিক মহল

জমিদার বংশের কৃতিত্ব

আরো দেখুন

তথ্য সূত্র

  1. সিলেট বিভাগের ইতিবৃত্ত: প্রাচীন ইতিহাসে সিলেট বিভাগ নিবন্ধ, মোহাম্মদ মুমিনুল হক, গ্রন্থ প্রকাশকাল: সেপ্টেম্বর ২০০১; পৃষ্ঠা ৫০৫
  2. সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার পাইলগাঁও জমিদারবাড়ি
  3. শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত উত্তরাংশ, তৃতীয় ভাগ, পঞ্চম খণ্ড, দ্বিতীয় অধ্যায়, অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি; প্রকাশক: মোস্তফা সেলিম; উৎস প্রকাশন, ২০০৪, প্রবন্ধ -পাইল গাও'র জমিদার বংশ
  4. সিলেটের একশত একজন ফজলুর রহমান' প্রকাশক- ফখরুল কবির খাঁ, প্রকাশকাল - এপ্রিল ১৯৯৪ খ্রিস্টাব্দ, পৃষ্ঠা ১৩৫, প্রবন্ধ- সুখময় চৌধুরী
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.