নিল আর্মস্ট্রং

নিল আর্মস্ট্রং (জন্ম: ৫ আগস্ট ১৯৩০-মৃত্যু: ২৫ আগস্ট ২০১২) হচ্ছেন একজন মার্কিন নভোচারী ও বৈমানিক। তিনি চাঁদে অবতরণকারী প্রথম মানুষ হিসাবে পৃথিবীর ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছেন।[1] তার প্রথম মহাকাশ অভিযান হয় ১৯৬৬ খ্রীস্টাব্দে, জেমিনি ৮ নভোযানের চালক হিসাবে। এই অভিযানে তিনি ও ডেভিড স্কট মিলে সর্বপ্রথম দুইটি ভিন্ন নভোযানকে মহাকাশে একত্রে যুক্ত করেন।

নিল আর্মস্ট্রং
USAF / NASA Astronaut
জাতীয়তামার্কিনি
জন্ম(১৯৩০-০৮-০৫)৫ আগস্ট ১৯৩০
ওয়াপাকোনেটা, ওহাইও, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
মৃত্যুআগস্ট ২৫, ২০১২(2012-08-25) (বয়স ৮২)
কলম্বাস, ওহাইও, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
পূর্বতন পেশাবৈমানিক
মহাকাশে অবস্থানকাল৮ দিন, ১৪ ঘন্টা, ১২ মিনিট, ৩১ সেকেন্ড
মনোনয়ক1958 Man In Space Soonest
1960 Dyna-Soar
1962 NASA Group 2
সর্বমোট অভিযান
সর্বমোট অভিযানের সময়কাল২ ঘন্টা ৩১ মিনিট
অভিযানজেমিনি ৮, Apollo 11
অভিযানের প্রতীক
পুরষ্কার

আর্মস্ট্রংয়ের দ্বিতীয় মহাকাশ মিশন ছিল এপোলো-১১ এর মিশন কমান্ডার হিসাবে। ১৯৬৯ সালের জুলাই মাসে এডউইন অলড্রিনকে সঙ্গে নিয়ে নিল আর্মস্ট্রং চাঁদের মাটিতে অবতরণ করেন এবং প্রায় আড়াই ঘন্টা সেখানে অবস্থান করেন। সে সময়ে মাইকেল কলিন্স মূল নভোযানে অবস্থান করেন। তারা তিনজনই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের সময়ে "প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম" পদকে ভূষিত হোন।

২০১২ সালের ২৫ আগস্ট নিল আর্মস্ট্রং ওহাইও-এর সিনসিনাটিতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।[2]

প্রাথমিক জীবন

নিল আর্মস্ট্রং ১৯৩০ সালের ৫ আগষ্ট জন্মগ্রহণ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইওর স্টেফান কনিগ আর্মস্ট্র ও ভায়োলা লুইসা দম্পতির প্রথম সন্তান নিল আর্মস্ট্রং।[3][4] তিনি বংশানুক্রিমক ভাবে স্কটিশ ও জার্মান। নিল আমস্ট্রংয়ের আরও দুজন সহোদর ছিল।[5] ছেলেবেলা থেকে নিল আর্মস্ট্রংয়ের আমেরিকার ২০ টি ভিন্ন শহরে থাকার অভিজ্ঞতা ছিল। মাত্র দুবছর বয়সে তিনি তার পিতার সাথে ক্লীভল্যান্ড এয়ার রেস দেখতে গিয়েছিলেন। ১৯৩৬ সালের ২০ জুলাই তিনি প্রথম বিমানে চড়ার অভিজ্ঞতা লাভ করেন।[6]

পড়াশুনা

আর্মস্টং পড়াশোনা করেন পার্ডু বিশ্ববিদ্যালয় এ, এবং পরে ইউনিভার্সিটি অফ সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়াতে। নভোচারী হওয়ার আগে আর্মস্ট্রং মার্কিন নৌবাহিনীর বৈমানিক ছিলেন। তিনি কোরীয় যুদ্ধে অংশ নেন। এর পর তিনি ড্রাইডেন ফ্লাইট রিসার্চ সেন্টারের পরীক্ষামূলক বিমান চালক হিসাবে যোগ দেন। বিভিন্ন পরীক্ষামূলক বিমান নিয়ে তিনি ৯০০ এর ও অধিক বার উড্ডয়ন করেন।

চন্দ্র অভিযান

আর্মস্ট্রং এর পরবর্তী ও শেষ অভিযান হয় এপোলো ১১ নভোযানের অভিযান নেতা হিসাবে। [1][7] এই অভিযানে তিনি ১৯৬৯ খ্রীস্টাব্দের [[জুলাই ২০]।] তারিখের গ্রীনউইচ মান সময় ১২:৩৬ পিএম এ চাঁদে অবতরণ করেন। প্রথম মানুষ হিসাবে চাঁদে পা রাখার সময় তিনি মন্তব্য করেন:

This is a small step for (a) man, but a giant leap for mankind

অর্থাৎ,

এটি একজন মানুষের জন্য ক্ষুদ্র একটি পদক্ষেপ, কিন্তু মানবজাতির জন্য এক বিশাল অগ্রযাত্রা

চাঁদে আর্মস্ট্রং ও এডুইন অল্ড্রিন জুনিয়র অবতরণ করেন, ও ২.৫ ঘণ্টা কাটান।

জীবন

অ্যাপোলো ১১ এর পরে আর্মস্ট্রং আর মহাকাশ অভিযানে যান নাই। তিনি ১৯৭৯ খ্রীস্টাব্দ পর্যন্ত ইউনিভার্সিটি অফ সিনসিনাটির ঊড্ডয়ন প্রকৌশলের অধ্যাপক হিসাবে কাজ করেন।

নীল আর্মস্ট্রংয়ের ঢাকায় আগমন

১৯৬৯ সালের ২৭ অক্টোবর বিকালে ঢাকা এয়ারপোর্টের (বর্তমান তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দর) অবতরণ করে চন্দ্র বিজয়ীদের বহনকারী বিমান। ভারতের মুম্বাই থেকে পূর্ব পাকিস্তানের প্রশাসনিক রাজধানী ঢাকা এসে পৌঁছায় তারা। সেই সময় তেজগাঁও এয়ারপোর্টের টার্মিনাল বিল্ডিংয়ের পশ্চিম দিকে ছিল ভিআইপি লাউঞ্জ। সেখানেই সামান্য সময় অবস্থান করেন তারা। নভোচারীদের সঙ্গে ছিলেন তাদের স্ত্রী। বিমানবন্দরে ঢাকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের কর্মকর্তারা আর এক ঝাঁক সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষ উপস্থিতি ছিল। তুমুল করতালি ও মুহুর্মুহু আনন্দ ধ্বনির মধ্যে তাদের মোটর শোভাযাত্রা করে নিয়ে যাওয়া হয় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে।

মৃত্যু

৮২ বছরে বাইপাস সার্জারির কিছুদিন পর ২০১২ সালের ২৫ আগষ্ট তিনি মৃত্যুবরন করেন।[8]

সম্মাননা

নভেম্বর ২০১১ তে আরো তিন নভোচারীর সঙ্গে নিল আর্মস্ট্রং যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক পদক কংগ্রেসনাল গোল্ড মেডেল অর্জন করেছেন।

তথ্যসূত্র

  1. "Space legend Neil Armstrong dies"। CNN। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ২৬, ২০১২
  2. "History of Wapakoneta (or is it Wapaghkonnetta?)"City of Wapakoneta, Ohio। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ২৫, ২০১২
  3. Hansen 2005, pp. 49–50.
  4. "Neil Armstrong grants rare interview to accountants organization", CBC News, May 24, 2012. Retrieved May 24, 2012.
  5. "Project Apollo: Astronaut Biographies"। NASA। সংগ্রহের তারিখ মে ১২, ২০১১
  6. Astronaut Neil Armstrong dies at 82

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.