ধীর আলী মিয়া
ধীর আলী মিয়া (১ জানুয়ারি, ১৯২০ - ১৪ ডিসেম্বর, ১৯৮৪) ছিলেন একজন বাংলাদেশী যন্ত্রসঙ্গীত শিল্পী, সঙ্গীতশিল্পী, সঙ্গীত পরিচালক, ও সুরকার। সঙ্গীত পরিচালনার জন্য তিনি ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান সরকার কর্তৃক প্রদত্ত তমঘায়ে ইমতিয়াজ এবং যন্ত্র ও লোকসঙ্গীতে অবদানের জন্য ১৯৮৬ সালে মরণোত্তর বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত একুশে পদকে ভূষিত হন।[2]
ধীর আলী মিয়া | |
---|---|
জন্ম | [1] | ১ জানুয়ারি ১৯২০
মৃত্যু | ১৪ ডিসেম্বর ১৯৮৪ ৬৪) | (বয়স
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
পেশা | সঙ্গীতশিল্পী, সঙ্গীত পরিচালক, যন্ত্রসঙ্গীত শিল্পী |
পুরস্কার | একুশে পদক (১৯৮৬) |
প্রাথমিক জীবন
ধীর আলী ১৯২০ সালের ১ জানুয়ারি তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির (বর্তমান বাংলাদেশ) মুন্সিগঞ্জ জেলার টংগিবাড়ী উপজেলার বাঁশবাড়ি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। পরে সোনারং উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেন। শৈশব থেকেই তার পিতামহ সঙ্গীতজ্ঞ সাদেক আলীর নিকট বংশী বাদনে তালিম গ্রহণ করেন। তিনি বাঁশি ছাড়াও বেহালা, গিটার, ও ক্লারিওনেট বাজানো শিখেন। তবে তার খ্যাতি বংশী বাদনেই।[2]
কর্মজীবন
ধীর আলীর কর্মজীবন শুরু হয় ১৯৪৫ সালে অল ইন্ডিয়া রেডিওর ঢাকা কেন্দ্রে অনিয়মিত বংশীবাদক হিসেবে। ভারত বিভাগের পর ১৯৪৮ সালে ঢাকা কেন্দ্রে তিনি নিজস্ব শিল্পী হিসেবে যোগ দেন। ১৯৮৩ সালে উপপ্রধান সঙ্গীত প্রযোজক পদে থাকাকালীন চাকরি থেকে অবসর নেন। তিনি বুলবুল ললিতকলা একাডেমি ও আর্টস কাউন্সিলের প্রশিক্ষণ কোর্সের শিক্ষকতা করেন। তিনি 'ঢাকা অর্কেস্ট্রা' নামক একটি ঐকতান-বাদকদল গঠন করেন, যা বাংলাদেশের সঙ্গীতের উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।[2]
ধীর আলী চলচ্চিত্রের গানের সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক হিসেবেও কাজ করেন। তিনি বাংলার লোকসঙ্গীতে আধুনিক ধারার প্রবর্তক।[3] পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলাদেশে নির্মিত প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র মুখ ও মুখোশ-এ তিনি সমর দাসের সহকারী সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে কাজ করেন।[4] পরবর্তীতে তিনি নাচঘর, উজালা, জোয়ার এলো, কাঞ্চনমালা, আবার বনবাসে রূপবান, দস্যুরানী, কাজলরেখা চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনা করেন।[2]
মৃত্যু
ধীর আলী ১৯৮৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।[3]
সম্মাননা
- সঙ্গীত পরিচালনার জন্য ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান সরকার কর্তৃক প্রদত্ত তমঘায়ে ইমতিয়াজ।[5]
- সঙ্গীতে অবদানের জন্য ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত মরণোত্তর একুশে পদক।[2]
তথ্যসূত্র
- "আজ ১ জানুয়ারি"। দৈনিক যুগান্তর। ১ জানুয়ারি ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মে ২০১৭।
- খান, মোবারক হোসেন। "মিয়া, ধীর আলী"। বাংলাপিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মে ২০১৭।
- "ধীর আলী মিয়া"। দৈনিক ইত্তেফাক। ১৭ ডিসেম্বর ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মে ২০১৭।
- সাইফুল, রাহাত (৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫)। "'মুখ ও মুখোশ'র জানা-অজানা"। রাইজিংবিডি ডট কম। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মে ২০১৭।
- Reza, Md. Ragebul (২৯ এপ্রিল ২০১৬)। "The Forgotten Folk Bard"। ডেইলি সান (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মে ২০১৭।