দেওয়ান মোহাম্মদ আজরফ

দেওয়ান মোহাম্মদ আজরফ (২৫ অক্টোবর ১৯০৬ - ১ নভেম্বর ১৯৯৯)[1] ছিলেন বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ, দার্শনিক., সাহিত্যিক ও সমালোচক। তিনি বাংলাদেশের সুনামগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯৩ সালে তিনি বাংলাদেশের জাতীয় অধ্যাপক হিসাবে সম্মাণিত হয়েছিলেন এবং একুশে পদক, স্বাধীনতা পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছিলেন।[2]

দেওয়ান মোহাম্মদ আজরফ
জন্ম(১৯০৬-১০-২৫)২৫ অক্টোবর ১৯০৬
মৃত্যু১ নভেম্বর ১৯৯৯(1999-11-01) (বয়স ৯৩)
জাতীয়তাবাংলাদেশী
যেখানের শিক্ষার্থীঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
পুরস্কারএকুশে পদক, স্বাধীনতা পুরস্কার

তিনি বাংলা ভাষা আন্দোলনের একজন সমর্থক ছিলেন। আন্দোলনে সমর্থনের দায়ে, ১৯৫৪ সালে সুনামগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষের পদ থেকে তাকে বরখাস্ত করা হয়, যদিও একই বছর আবার তাকে বহাল করা হয়। তার সমর্থন খুব জোরালো ছিল ১৯৪৮ সালে যখন তিনি নাও বেলাল লিখেন। তিনি কায়কোবাদ সাহিত্য মজলিসের (১৯৭২–৯৯) সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন।[3]

শিক্ষা এবং কর্মজীবন

আজরফ মুরারিচাঁদ কলেজ, সিলেট থেকে ১৯৩০ সালে সম্মানের সহিত বিএ পাশ করেন এবং ১৯৪৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে এমএ ডিগ্রী অর্জন করেন। ১৯৪৮ সালে তিনি সুনামগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষ হয়ে চাকরিতে যোগদান করেন। সুনামগঞ্জ কলেজ থেকে চাকরি শেষে তিনি বিভিন্ন কলেজে শিক্ষাদান করেছেন। এমনকি তিনি ঢাকার আবুজর গিফারি কলেজে ১৯৬৭ সাল থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত অধ্যক্ষের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন এবং ইসলাম শিক্ষা বিভাগে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে ১৯৭৩ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত পাঠদান করেন। আবদুল হামিদ খান ভাসানীর একজন সমর্থক হয়ে, আসামে মুসলিম অভিবাসীদের উপর হস্তক্ষেপের প্রতিবাদে ১৯৪৬ সালে তিনি মুসলিম লীগে যোগ দেন। এবং পরবর্তীতে আসাম প্রাদেশিক কমিটিতে নির্বাচিত হন। ১৪৪ ধারা লঙ্ঘনের দায়ে তাকে ১০ মাসের জন্য কারাদণ্ড দেয়া হয়।

তিনি কিছুদিনের জন্য, পাকিস্তান দার্শনিক কংগ্রেসের একজন সদস্য, এবং কোষাধ্যক্ষও ছিলেন। ১৯৮৪ থেকে ১৯৮৯ পর্যন্ত, তিনি বাংলাদেশ দার্শনিক এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছিলেন।

রচনাবলী

দেওয়ান আজরফের অসংখ্য গ্রন্থাবলী এবং রচনা রয়েছে। এদের মধ্যে:

  • তমদ্দুনের বিকাশ,
  • সত্যের সৈনিক আবুজর,
  • ইতিহাসের ধারা,
  • নতুন সূর্য (গল্প গ্রন্থ),
  • ব্যাকগ্রাউন্ড অব দি কালচার অব বেঙ্গল,
  • জীবন সমস্যার সমাধানে ইসলাম,
  • ফিলোসফী অব হিস্টোরি,
  • সাইন্স এন্ড রেভেলিউশন,
  • ইসলামী আন্দোলন যুগে যুগে,
  • আবুজর গিফারী (ইংরেজি),
  • ইসলাম ও মানবতাবাদ,
  • সন্ধানী দৃষ্টিতে ইসলাম,
  • দর্শনের নানা প্রসঙ্গ,
  • আজাদী আন্দোলনের তিন অধ্যায়,
  • আমাদের জাতীয়তাবাদ,
  • মরমী কবি হাসন রাজা,
  • ইতিহাসে উপেক্ষিত একটি চরিত্র,
  • ইসলামিক মুভমেন্ট,
  • ধর্ম ও দর্শন,
  • অতীত জীবনের স্মৃতি,
  • নয়া জিন্দেগী (উপন্যাস),
  • বিজ্ঞান ও দর্শন (৩ খন্ডে),
  • অতীত দিনের স্মৃতি,
  • সিলেটে ইসলাম প্রভৃতি প্রধান।

এছাড়াও তার ৪০টিরও অধিক অপ্রকাশিত গ্রন্থ রয়েছে।[1]

পুরস্কার ও সম্মাননা

  • স্বাধীনতা পুরস্কার (১৯৮১)
  • নাসির উদ্দীন স্বর্ণপদক (১৯৮৪),
  • আন্তর্জাতিক মুসলিম সংহতি পুরস্কার (১৯৮৫),
  • ড. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ স্বর্ণপদক (১৯৮৯),
  • ইসলামিক ফাউন্ডেশন পুরস্কার (১৯৯১),
  • কবি মোজাম্মেল হক পুরস্কার (১৯৯১),
  • বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ব একুশে পদক (১৯৯২),
  • জাতীয় অধ্যাপকরূপে নিযুক্তি (১৯৯৩),
  • মাওলানা আকরাম খাঁ স্বর্ণপদক (১৯৯৩),
  • জালালাবাদ স্বর্ণপদক (১৯৯৪),
  • ভাসানী পুরস্কার (১৯৯৫),
  • শ্রীজ্ঞান অতীশ দীপংকর পুরস্কার
  • স্বপ্লাবেশ পুরস্কার প্রভৃতি।

তথ্যসূত্র

  1. "দেওয়ান মোহাম্মদ আজরফ : কর্ম ও জীবন"। দৈনিক সংগ্রাম। ৫ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৫
  2. "স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের পরিচিতি"। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ৭ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৫
  3. Islam, Sirajul (২০১২)। "Azraf, Dewan Mohammad"Islam, Sirajul; Roy, Pradip K.। Banglapedia: National Encyclopedia of Bangladesh (Second সংস্করণ)। Asiatic Society of Bangladesh

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.