দৃষ্টিপ্রদীপ (উপন্যাস)

দৃষ্টিপ্রদীপ প্রখ্যাত সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত একটি উপন্যাস। প্রবাসী মাসিকপত্রে ১৩৪০ সালের ফাল্গুন সংখ্যা থেকে ১৩৪১ সালের চৈত্র সংখ্যা পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছিল। এটি বই আকারে প্রকাশিত হয় ১৩৪২ সালের ভাদ্র মাসে (সেপ্টেম্বর ১৯৪৫)। এর প্রকাশক ছিলেন পি. সি. সরকার এন্ড সন্স আর এর দাম রাখা হয়েছিল আড়াই টাকা। এটি জিতু নামের একটি ছেলের জীবনধর্মী কাহিনি।[1]

ব্যক্তি ও শিল্পী বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশ্বাসের জগত ও আধ্যাত্মদর্শন সম্পর্কে প্রথম আলো ফেলে এই উপন্যাসটি।

কাহিনী

এই উপন্যাসের নায়ক জিতু। জিতু এক ব্যতিক্রমধর্মী চরিত্র। এই উপন্যাসে জিতু তার বড় ভাই নিতাই ও বোন সীতাসহ তার পরিবারকে দেখা যায় দার্জিলিং-এ। সেখানে তাদের সাথে মিস নর্টন নামের এক খ্রিস্টান ধর্মপ্রচারক মহিলার পরিচয় হয়। সেখানে তাদের বেশ ভালো কাটলেও জিতুর বাবার চাকরি চলে যাওয়ার দরুন তারা আটঘরায় তাদের জ্যাঠামশায়ের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। তবে সেখানে জিতুর পরিবারের উপর কেউ বিশেষ খুশি ছিল না। এখানে জিতুর জ্যাঠাইমার উদ্ধত ধনগর্ব ও শুচিতার অহংকার দেখা যায়। জিতু কিছুটা বড় হলে সে শৈলদিদির বাসায় থেকে পড়াশোনা করে এবং সেখানে তার সাথে ছোট বৌঠাকরুনের পরিচয় হয়। এর কিছুকাল পর জিতু কলকাতায় নীলাম্বর রায়ের বাড়িতে চাকরি পায়। তবে সে বেশিদিন ঐ জায়গায় চাকরি করে না। এরই মাঝে জিতুর অমতে এক বিপত্নীক লোকের সাথে সীতার বিয়ে দেয় জিতুর জ্যাঠামশায় এবং নিতাই বিয়ে করে। এর কিছুদিন পর জিতুর মা মারা যায়। জিতু কিছুসময় দাদার সাথে কাটিয়ে ঘুরতে ঘুরতে দ্বারবাসিনী গ্রামে এক আখড়াবাড়ির সন্ধান পায়। এখানকার বৈষ্ণবী মালতীর সঙ্গে জিতুর একধরনের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু এটি মালতীর বাবার বন্ধু উদ্ধবদাস বাবাজী ভাল চোখে না দেখার কারণে জিতু আখড়া ছেড়ে চলে যায়। এরপর জিতু বটেশ্বরনাথ পাহাড়ে এক সাধুর সঙ্গে কিছুকাল কাটায়। এখানে থাকাকালীন সময়ে কলকাতা হতে দাদার অসুস্থতার চিঠি পায় এবং কলকাতা যায়। কিন্তু সে তার দাদাকে বাঁচাতে পারে না। এরপর সে তার বৌদি এবং তার ছেলে মেয়ের দায়িত্ব নিয়ে কামালপুর নামক স্থানে পাঠশালায় পড়াতে যায় এবং সেখানে হিরন্ময়ী নামক এক মেয়ের বাবার অনুরোধে তাকে বিয়ে করে। এর কিছুকাল পরে রানাঘাট স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে সে তার এক পরিচিতজনের কাছে মালতীর মৃত্যুসংবাদ পায়।[2]

তথ্যসূত্র

  1. বিভুতিভূষনের শ্রেষ্ঠ উপন্যাস;পৃষ্ঠা-৬
  2. বিভুতিভূষনের শ্রেষ্ঠ উপন্যাস;পৃষ্ঠা ৩৭৯-৪৯৪
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.